ইলিশের পেটে মার্বেল-প্রতারণার শেষ কোথায়?
ইলিশ যে বাঙালির প্রিয়তম মাছ সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। অনেক বাঙালির কাছে ইলিশই সুস্বাদুতম মাছ। ইলিশের মৌসুম এলে তাই বাঙালির ঘরে ঘরে ঘটা করে ইলিশের নানা পদ রান্না হতে থাকে। বাহারি নামের নানা পদ রসনা পরিতৃপ্ত করে। শুধু মৌসুমে নয়, মৌসুমের বাইরেও উৎসব এলে খোঁজ পড়ে ইলিশের। বৈশাখ ইলিশের মৌসুম নয়, এ সময় ইলিশ দুর্মূল্য, তবু বৈশাখ এলে বাঙালি ইলিশের আবদার করে বসে।
ইলিশ এতটাই জনপ্রিয় যে, বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সম্পর্কসূত্রে ইলিশের বিশেষ গুরুত্ব আছে। এ মাছটির যে কোনো দুঃসংবাদে বাঙালিমাত্রই ব্যথিত হয়, সন্দেহ নেই। কোনো বছর মাছ কম ধরা পড়লে খাদ্যরসিকদের কপালে কুঞ্চন দেখা যায়। পুকুরে হাইব্রিড জাত হিসেবে ইলিশের চাষাবাদ শুরু হওয়ার খবরে অনেকেই চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। তবে কি বিশিষ্ট স্বাদ-গন্ধের ইলিশও তার গুরুত্ব হারাবে এ প্রশ্নও উঠেছে। শুধু এই নয়, ইলিশের সঙ্গে আরও অনেক দুঃসংবাদ জড়িত হয়ে পড়েছে। মাছ টাটকা আর ঝকঝকে দেখাতে ফরমালিনের ব্যবহার চলছে। ওজন বাড়াতে পানি আর বরফের অত্যধিক ব্যবহার তো আছেই। এখন যুক্ত হলো মার্বেল পদ্ধতি। ওজন বাড়াতে প্রতারক ব্যবসায়ীরা এবার মাছের পেটে মার্বেল ঢোকাতে শুরু করেছে। মনে পড়বে, এক সময় রফতানিযোগ্য চিংড়ির পেটে লোহা ঢুকিয়ে কেলেঙ্কারির জন্ম দিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। ইউরোপে চিংড়ি রফতানি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। প্রতারকরা এবার বাঙালির প্রিয় মাছটিকে ছাড়ল না। খবর অবশ্য জানাজানি হয়ে গেছে। ইলিশের পেটে মার্বেলের খবর গণমাধ্যমে গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়েছে। এবার আমরা আশা করব, প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু মার্বেল প্রয়োগ নয়, বাঙালির ভালোবাসার ইলিশকে কলুষমুক্ত করতে ফরমালিন প্রয়োগ বন্ধ করার উদ্যোগও আসুক। সর্বগ্রাসী প্রতারণা থেকে অন্তত ইলিশ রেহাই পাক। মৌসুমে বাঙালি নিরাপদ ইলিশের স্বাদ পাক। ইলিশের বিশেষ সৌরভে আনন্দময় হয়ে উঠুক বাঙালির
প্রতিটি রান্নাঘর।
প্রতিটি রান্নাঘর।
No comments