অর্থনীতিতে কালো ছায়া-দেশের স্বার্থে সৎ ও আন্তরিক চেষ্টা চাই
বিশ্বমন্দার রেশ এখনো কাটেনি। কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো ক্রেডিট রেটিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিম্নগামী হয়েছে। উন্নত দেশগুলোর শেয়ারবাজারেও রীতিমতো ধস নেমেছে; এবং তা নিয়ে জি-৭-এর দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। বিশ্বমন্দায় বাংলাদেশ তুলনামূলকভাবে কম আক্রান্ত হলেও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং মন্ত্রী-আমলাদের অদক্ষতার কারণে দেশটির অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। দ্রব্যমূল্য ক্রমাগত বাড়ছেই। বাড়ছে মূল্যস্ফীতি।
পাশাপাশি বাংলাদেশের আমদানিনির্ভরতা বেড়ে গেছে বহুল পরিমাণে। ফলে সারা দুনিয়ায় ডলারের দরপতন হলেও বাংলাদেশে ডলারের তুলনায় টাকার অবমূল্যায়ন হচ্ছে বেশি। আর এরও প্রভাব পড়ছে দ্রব্যমূল্যে। মানুষের মধ্যে ক্ষোভ-অসন্তোষ বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা। এর ফলে উন্নয়ন প্রচেষ্টা যেমন মুখ থুবড়ে পড়ছে, তেমনি দেশে বিনিয়োগও নিরুৎসাহ হচ্ছে। এ অবস্থার পরিবর্তন করা না গেলে বাংলাদেশ অচিরেই চরম সংকটের মুখোমুখি হবে।
দেশের অর্থনীতির খারাপ অবস্থার কথা স্বীকার করেছেন স্বয়ং অর্থমন্ত্রীও। গত শনিবার দেশের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, 'অর্থনীতিতে কালো ছায়া নেমে এসেছে।' তিনি এ জন্য বিরোধী দলগুলোর কাছে আরো কমপক্ষে দেড়টি বছর সময় চেয়েছেন। তিনি বর্তমান সরকারের পাঁচ বছর মেয়াদের শেষ বছরে তাদের রাজনীতিতে ঝাঁপিয়ে পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন। ২০১২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়ে তিনি বলেছেন, তা না হলে এই দেড় বছরে দেশের কমপক্ষে আড়াই হাজার কোটি ডলার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে আমরাও একমত। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা কিংবা হরতাল ও দ্বন্দ্ব-সংঘাতের রাজনীতি দেশের উন্নয়ন ব্যাহত করে। এমনকি অর্থনীতিকে পেছনেও ঠেলে দেয়। কিন্তু এই রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা কেন হচ্ছে? কথায় বলে, এক হাতে তালি বাজে না। কাজেই দেশের রাজনীতিতে অস্থিতিশীলতার তালি যখন বাজছে, তখন ধরে নিতে হবে, কেবল বিরোধী দল নয়, সরকারি দলও এর জন্য কমবেশি দায়ী। অর্থমন্ত্রী সরকারি দলের সেই ভূমিকাটি একেবারেই এড়িয়ে গেছেন। এই একচোখা দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিরোধী দলের প্রতি কোনো আহ্বান জানালে তা কোনো কাজে আসবে না। সরকারি দল একতরফাভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানটি বাদ না দিয়ে আরো কিছুটা সময় নিয়ে এবং বিরোধী দলের সঙ্গে সমঝোতার জন্য সৎ ও আন্তরিক চেষ্টা চালাতে পারত। কিন্তু তা না করে তারাই অস্থিতিশীলতাকে উসকে দিয়েছে। আবার বিরোধী দলও যে খুব যৌক্তিকভাবে তাদের আন্দোলন পরিচালনা করে আসছে, সেই দাবিও আমরা করতে পারি না। নানা রকম দাবি তুলে প্রথম থেকেই তারা সংসদ বর্জন করে আসছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুটি নিয়ে তারা আজ পর্যন্ত রাজপথে যত সময় ব্যয় করেছে, তার এক শতাংশ সময়ও যদি সংসদে যুক্তিতর্ক তুলে ধরার কাজে ব্যয় করত, তাহলে দেশের মানুষের কাছে তা অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হতো। কাজেই দেশের স্বার্থে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার ও বিরোধী দল_উভয়কেই চেষ্টা চালাতে হবে, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও আন্তরিকতা প্রদর্শন করতে হবে এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধারণ করে আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালাতে হবে।
দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য সুশাসন অনিবার্য। আমাদের মনে রাখা দরকার, সুশাসনের অভাব হলে কিংবা জনগণের মৌলিক অধিকারগুলো হুমকির মুখে পড়লে জনগণ প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে। যেমন_সম্প্রতি দ্রব্যমূল্য, পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস পরিস্থিতি নিয়ে মানুষ প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছে। যৌক্তিক হোক আর অযৌক্তিক হোক, তার ফসল তোলার চেষ্টা বিরোধী দলগুলো করবেই। তাই দেশের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য কেবল বিরোধী দলকে আহ্বান জানিয়ে লাভ হবে না, নিজেদেরও সংশোধন করতে হবে। দেশে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। মন্ত্রী, আমলা, তথা প্রশাসনকে দক্ষ করতে হবে। মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে মন্ত্রীদের নিষ্ঠুর রসিকতা বন্ধ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, নিজেকে সংশোধন করার পরই কেবল অন্যকে সংশোধনের উপদেশ দেওয়া সাজে।
দেশের অর্থনীতির খারাপ অবস্থার কথা স্বীকার করেছেন স্বয়ং অর্থমন্ত্রীও। গত শনিবার দেশের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, 'অর্থনীতিতে কালো ছায়া নেমে এসেছে।' তিনি এ জন্য বিরোধী দলগুলোর কাছে আরো কমপক্ষে দেড়টি বছর সময় চেয়েছেন। তিনি বর্তমান সরকারের পাঁচ বছর মেয়াদের শেষ বছরে তাদের রাজনীতিতে ঝাঁপিয়ে পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন। ২০১২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়ে তিনি বলেছেন, তা না হলে এই দেড় বছরে দেশের কমপক্ষে আড়াই হাজার কোটি ডলার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে আমরাও একমত। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা কিংবা হরতাল ও দ্বন্দ্ব-সংঘাতের রাজনীতি দেশের উন্নয়ন ব্যাহত করে। এমনকি অর্থনীতিকে পেছনেও ঠেলে দেয়। কিন্তু এই রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা কেন হচ্ছে? কথায় বলে, এক হাতে তালি বাজে না। কাজেই দেশের রাজনীতিতে অস্থিতিশীলতার তালি যখন বাজছে, তখন ধরে নিতে হবে, কেবল বিরোধী দল নয়, সরকারি দলও এর জন্য কমবেশি দায়ী। অর্থমন্ত্রী সরকারি দলের সেই ভূমিকাটি একেবারেই এড়িয়ে গেছেন। এই একচোখা দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিরোধী দলের প্রতি কোনো আহ্বান জানালে তা কোনো কাজে আসবে না। সরকারি দল একতরফাভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানটি বাদ না দিয়ে আরো কিছুটা সময় নিয়ে এবং বিরোধী দলের সঙ্গে সমঝোতার জন্য সৎ ও আন্তরিক চেষ্টা চালাতে পারত। কিন্তু তা না করে তারাই অস্থিতিশীলতাকে উসকে দিয়েছে। আবার বিরোধী দলও যে খুব যৌক্তিকভাবে তাদের আন্দোলন পরিচালনা করে আসছে, সেই দাবিও আমরা করতে পারি না। নানা রকম দাবি তুলে প্রথম থেকেই তারা সংসদ বর্জন করে আসছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুটি নিয়ে তারা আজ পর্যন্ত রাজপথে যত সময় ব্যয় করেছে, তার এক শতাংশ সময়ও যদি সংসদে যুক্তিতর্ক তুলে ধরার কাজে ব্যয় করত, তাহলে দেশের মানুষের কাছে তা অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হতো। কাজেই দেশের স্বার্থে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার ও বিরোধী দল_উভয়কেই চেষ্টা চালাতে হবে, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও আন্তরিকতা প্রদর্শন করতে হবে এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধারণ করে আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালাতে হবে।
দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য সুশাসন অনিবার্য। আমাদের মনে রাখা দরকার, সুশাসনের অভাব হলে কিংবা জনগণের মৌলিক অধিকারগুলো হুমকির মুখে পড়লে জনগণ প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে। যেমন_সম্প্রতি দ্রব্যমূল্য, পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস পরিস্থিতি নিয়ে মানুষ প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছে। যৌক্তিক হোক আর অযৌক্তিক হোক, তার ফসল তোলার চেষ্টা বিরোধী দলগুলো করবেই। তাই দেশের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য কেবল বিরোধী দলকে আহ্বান জানিয়ে লাভ হবে না, নিজেদেরও সংশোধন করতে হবে। দেশে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। মন্ত্রী, আমলা, তথা প্রশাসনকে দক্ষ করতে হবে। মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে মন্ত্রীদের নিষ্ঠুর রসিকতা বন্ধ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, নিজেকে সংশোধন করার পরই কেবল অন্যকে সংশোধনের উপদেশ দেওয়া সাজে।
No comments