জনগণের টাকার সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করুন-কর ও সেবা
কোনো দেশের নাগরিকেরা সরকারকে কর দেন এই প্রত্যাশা থেকে যে তাঁদের অর্থের সদ্ব্যবহার করা হবে; কর প্রদানের বিনিময়ে তাঁরা প্রয়োজনীয় সেবা পাবেন। বাংলাদেশে করের বিপরীতে সেবার মান ও মাত্রা নাগরিকদের সেই প্রত্যাশা পূরণ করে না। তাহলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে: জনগণের করের অর্থ ব্যয় করার ক্ষেত্রে সরকারের নীতিনির্ধারকদের অগ্রাধিকারমূলক বিবেচনাগুলো কী?
দক্ষিণ এশীয় সোশ্যাল ফোরামের পাঁচ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে গত সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘কর সুশাসন ও প্রয়োজনীয় সেবা’ শীর্ষক এক সেমিনারে জনগণের করের অর্থের ব্যবহার সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মতামত ব্যক্ত হয়েছে। প্রায় সব বক্তারই অভিন্ন বক্তব্য হলো, জনগণের করের টাকা যেন কোনোভাবেই অপব্যবহার করা না হয়, সেদিকে সরকারকে সজাগ থাকতে হবে। অর্থ ব্যয় করে সরকারের বিভিন্ন বিভাগ; অপব্যবহারের বিষয়টিও তাদের সঙ্গেই সম্পর্কিত। যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো জনগণের করের অর্থের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকারকে বাধ্য করা। তার মানে, যে খাতে যে পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন তা বরাদ্দ করা এবং সেই অর্থ খরচের ক্ষেত্রে অপচয় ও দুর্নীতি রোধ করা, কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করা। অর্থাৎ শাসনব্যবস্থায় সামগ্রিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার মাধ্যমেই নিশ্চিত হতে পারে জনগণের করের অর্থের সদ্ব্যবহার।
সংবিধানের নির্দেশনা ও জনসাধারণের ন্যূনতম প্রত্যাশা হলো জনগণের করের টাকায় রাষ্ট্র নাগরিকদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা—এই মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে আমাদের সাফল্য উৎসাহব্যঞ্জক নয়। অন্নাভাবে মানুষ আর মারা যায় না বটে, কিন্তু অন্নকষ্টে ভোগে, এমন মানুষের সংখ্যা এখনো বিপুল। গৃহহীন মানুষের সংখ্যাও বিপুল। শিক্ষা খাতে জাতীয় বাজেট থেকে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়ার পরেও দেশের শিক্ষার হার ৫০ শতাংশের সামান্য বেশি। সরকারি চিকিৎসাসেবার মানও খুব নির্ভরযোগ্য নয়। দেশটি ছোট, জনসংখ্যা বিপুল, সম্পদ সীমিত—এসবই সত্য। কিন্তু এই সীমিত সম্পদেরই সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হলে মৌলিক ক্ষেত্রগুলোতে আরও অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব।
বড় আকারের সরকার ও শ্বেতহস্তীর মতো বিশাল আমলাতন্ত্র পরিচালনার ব্যয় বেশি। তার ওপর ব্যয় নির্ধারণে যদি বাস্তবিক ও প্রায়োগিক সুবিবেচনার অভাব থাকে, তাহলে অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হয় না। তার সঙ্গে যদি অপচয় ও দুর্নীতি যুক্ত হয়, তবে সরকারি সেবা অপর্যাপ্ত ও অপ্রতুল হতে বাধ্য। আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্যাক্স জাস্টিস নেটওয়ার্কের তরফ থেকে ‘বাংলাদেশের করব্যবস্থা’ শীর্ষক এক গবেষণার তথ্য বলছে, এ দেশে করের বিপরীতে সরকারি সেবার মান অপর্যাপ্ত ও অপ্রতুল। সরকারের আকার ছোট করা, আমলাতন্ত্র পরিচালনার ব্যয়সংকোচন এবং অপব্যয়-অপচয় ও চুরি-দুর্নীতি বন্ধ করার পাশাপাশি সরকারি সেবার মান উন্নত করার জন্য জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা প্রয়োজন। তার জন্য প্রয়োজন জাতীয় সংসদ এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত স্থায়ী সংসদীয় কমিটিগুলোর আরও সক্রিয়তা; জনগণের সেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে সত্যিকারের উপলব্ধি ও অঙ্গীকার।
সংবিধানের নির্দেশনা ও জনসাধারণের ন্যূনতম প্রত্যাশা হলো জনগণের করের টাকায় রাষ্ট্র নাগরিকদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা—এই মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে আমাদের সাফল্য উৎসাহব্যঞ্জক নয়। অন্নাভাবে মানুষ আর মারা যায় না বটে, কিন্তু অন্নকষ্টে ভোগে, এমন মানুষের সংখ্যা এখনো বিপুল। গৃহহীন মানুষের সংখ্যাও বিপুল। শিক্ষা খাতে জাতীয় বাজেট থেকে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়ার পরেও দেশের শিক্ষার হার ৫০ শতাংশের সামান্য বেশি। সরকারি চিকিৎসাসেবার মানও খুব নির্ভরযোগ্য নয়। দেশটি ছোট, জনসংখ্যা বিপুল, সম্পদ সীমিত—এসবই সত্য। কিন্তু এই সীমিত সম্পদেরই সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হলে মৌলিক ক্ষেত্রগুলোতে আরও অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব।
বড় আকারের সরকার ও শ্বেতহস্তীর মতো বিশাল আমলাতন্ত্র পরিচালনার ব্যয় বেশি। তার ওপর ব্যয় নির্ধারণে যদি বাস্তবিক ও প্রায়োগিক সুবিবেচনার অভাব থাকে, তাহলে অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হয় না। তার সঙ্গে যদি অপচয় ও দুর্নীতি যুক্ত হয়, তবে সরকারি সেবা অপর্যাপ্ত ও অপ্রতুল হতে বাধ্য। আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্যাক্স জাস্টিস নেটওয়ার্কের তরফ থেকে ‘বাংলাদেশের করব্যবস্থা’ শীর্ষক এক গবেষণার তথ্য বলছে, এ দেশে করের বিপরীতে সরকারি সেবার মান অপর্যাপ্ত ও অপ্রতুল। সরকারের আকার ছোট করা, আমলাতন্ত্র পরিচালনার ব্যয়সংকোচন এবং অপব্যয়-অপচয় ও চুরি-দুর্নীতি বন্ধ করার পাশাপাশি সরকারি সেবার মান উন্নত করার জন্য জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা প্রয়োজন। তার জন্য প্রয়োজন জাতীয় সংসদ এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত স্থায়ী সংসদীয় কমিটিগুলোর আরও সক্রিয়তা; জনগণের সেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে সত্যিকারের উপলব্ধি ও অঙ্গীকার।
No comments