অর্থ নেই, তাই বাদ পড়ছে ১১৪ উন্নয়ন প্রকল্প-কম গুরুত্বপূর্ণের তালিকায় বুড়িগঙ্গা উদ্ধার প্রকল্প by আরিফুর রহমান
দূষণকবলিত বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধারের প্রকল্পটি গুরুত্ব দিয়েই হাতে নেওয়া হয়েছিল দেড় বছরেরও বেশি সময় আগে। ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯৪৪ কোটি টাকা। আর্থিক সংকট ও কম গুরুত্বপূর্ণ কারণ দেখিয়ে প্রকল্পটির কাজ এখন স্থগিত করে দেওয়া হচ্ছে। একই কারণ দেখিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে এক হাজার ৩০০ কোটি টাকার নদী ড্রেজিং প্রকল্পের কাজ। দুটি প্রকল্পই গত বছরের এপ্রিলে একনেকের অনুমোদন পেয়েছিল।
পরিকল্পনা কমিশনের বাদের তালিকায় রয়েছে আহছানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতাল ও এতিমদের জন্য প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপনের মতো প্রকল্পগুলোও।\চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) অন্তর্ভুক্ত এমন ১১৪টি 'কম গুরুত্বপূর্ণ' উন্নয়ন প্রকল্প চিহ্নিত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। প্রকল্পগুলো বন্ধ করলে সরকারের এক হাজার ১৭১ কোটি টাকা বাঁচবে। কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবশ্য বলেছেন, প্রকল্পগুলো বন্ধ করা হবে না, এগুলোর কাজ স্থগিত থাকবে। 'অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ' এসব প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ এডিপি সংশোধনের সময় অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তাঁরা জানান, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো থেকেই এসব প্রকল্পকে 'কম গুরুত্বপূর্ণ' হিসেবে বাছাই করা হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন কেবল সেগুলো সমন্বয় করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠিয়েছে।
গত ২৪ অক্টোবর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারের আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হারসংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল সভার আলোকে কম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ স্থগিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কমিটির আগামী সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে সরকারের সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারক সভায় অনুমোদন পাওয়া এসব প্রকল্প কেন এখন কম গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বাদ পড়ছে_এ প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগের উপপ্রধান ফরিদ আজিজ বলেন, কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প নির্ধারণ করেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। কমিশন শুধু সমন্বয় করে প্রকল্পগুলোর তালিকা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে কমিশনের কিছুই করার নেই। কাজ স্থগিত হলে প্রকল্পের গতি কমে যাবে। এতে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না। প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়ে যাবে। তিনি বলেন, জানুয়ারিতে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (আরএডিপি) অনুমোদনের আগেই প্রকল্পের কাজ স্থগিত করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। চলমান আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। কমিশনের অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, কাজ স্থগিত করার জন্য প্রস্তাবিত ১১৪টি প্রকল্পের মধ্যে বেশ কয়েকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আর্থিক সংকট ও কম গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো প্রকল্পের কাজ স্থগিত করার প্রস্তাব দিয়েছে। এ ছাড়া চলমান ১১৪ প্রকল্পের মধ্যে বেশ কয়েকটি আছে মাঝামাঝি পর্যায়ে। সেসব প্রকল্পের কাজও স্থগিত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে খরচ হওয়া অর্থের অপচয় ও প্রকল্পের গুণগত মান নষ্ট হওয়ারও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম জানান, অর্থের সীমাবদ্ধতার কারণেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সব প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ নয়। অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজ স্থগিত থাকবে।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এতিম ও প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য ছয় বিভাগে ছয় কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পটি ২০০৬ সালে অনুমোদিত হয়েছিল। এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধেক অর্থ খরচ হয়েছে। তবু স্থগিত করা হচ্ছে এ প্রকল্পের কাজ। ১৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আহছানিয়া মিশন ক্যান্সার ও জেনারেল হাসপাতাল প্রকল্পটি ২০০৯ সালে অনুমোদন পেয়েছিল। কিছু অর্থও খরচ হয়েছে এ প্রকল্পে। এটিও স্থগিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে চান্দনা-বারাসিয়া নদী খনন, ৬০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে কালনী-কুশিয়ারা নদী ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের কাজও থেমে যাবে।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, স্থগিত করে দেওয়ার জন্য প্রস্তাবিত ১১৪টি প্রকল্পে চলতি অর্থবছরে মোট এক হাজার ১৭১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া আছে। এর মধ্যে সরকারি কোষাগার থেকে এক হাজার ৫৭ কোটি ৭৩ লাখ এবং প্রকল্প সাহায্য বাবদ ১১৩ কোটি ৭১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া আছে।
পরিকল্পনা কমিশন থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো স্থগিত করার জন্য প্রস্তাবিত প্রকল্পের মধ্যে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৪৫টি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০টি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ১০টি, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের ৯টি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আটটি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আটটি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাতটি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চারটি, আইন ও বিচার বিভাগের একটি, তথ্য মন্ত্রণালয়ের একটি এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প রয়েছে। কাজ স্থগিত করার জন্য প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বৃহত্তর যশোর জেলার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ প্রকল্প, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সামাজিক বনায়ন প্রকল্প, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রবর্তন প্রকল্প ও রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমী আধুনিকায়ন প্রকল্প।
গত ২৪ অক্টোবর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারের আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হারসংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল সভার আলোকে কম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ স্থগিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কমিটির আগামী সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে সরকারের সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারক সভায় অনুমোদন পাওয়া এসব প্রকল্প কেন এখন কম গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বাদ পড়ছে_এ প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগের উপপ্রধান ফরিদ আজিজ বলেন, কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প নির্ধারণ করেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। কমিশন শুধু সমন্বয় করে প্রকল্পগুলোর তালিকা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে কমিশনের কিছুই করার নেই। কাজ স্থগিত হলে প্রকল্পের গতি কমে যাবে। এতে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না। প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়ে যাবে। তিনি বলেন, জানুয়ারিতে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (আরএডিপি) অনুমোদনের আগেই প্রকল্পের কাজ স্থগিত করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। চলমান আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। কমিশনের অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, কাজ স্থগিত করার জন্য প্রস্তাবিত ১১৪টি প্রকল্পের মধ্যে বেশ কয়েকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আর্থিক সংকট ও কম গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো প্রকল্পের কাজ স্থগিত করার প্রস্তাব দিয়েছে। এ ছাড়া চলমান ১১৪ প্রকল্পের মধ্যে বেশ কয়েকটি আছে মাঝামাঝি পর্যায়ে। সেসব প্রকল্পের কাজও স্থগিত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে খরচ হওয়া অর্থের অপচয় ও প্রকল্পের গুণগত মান নষ্ট হওয়ারও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম জানান, অর্থের সীমাবদ্ধতার কারণেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সব প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ নয়। অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজ স্থগিত থাকবে।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এতিম ও প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য ছয় বিভাগে ছয় কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পটি ২০০৬ সালে অনুমোদিত হয়েছিল। এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধেক অর্থ খরচ হয়েছে। তবু স্থগিত করা হচ্ছে এ প্রকল্পের কাজ। ১৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আহছানিয়া মিশন ক্যান্সার ও জেনারেল হাসপাতাল প্রকল্পটি ২০০৯ সালে অনুমোদন পেয়েছিল। কিছু অর্থও খরচ হয়েছে এ প্রকল্পে। এটিও স্থগিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে চান্দনা-বারাসিয়া নদী খনন, ৬০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে কালনী-কুশিয়ারা নদী ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের কাজও থেমে যাবে।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, স্থগিত করে দেওয়ার জন্য প্রস্তাবিত ১১৪টি প্রকল্পে চলতি অর্থবছরে মোট এক হাজার ১৭১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া আছে। এর মধ্যে সরকারি কোষাগার থেকে এক হাজার ৫৭ কোটি ৭৩ লাখ এবং প্রকল্প সাহায্য বাবদ ১১৩ কোটি ৭১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া আছে।
পরিকল্পনা কমিশন থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো স্থগিত করার জন্য প্রস্তাবিত প্রকল্পের মধ্যে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৪৫টি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০টি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ১০টি, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের ৯টি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আটটি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আটটি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাতটি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চারটি, আইন ও বিচার বিভাগের একটি, তথ্য মন্ত্রণালয়ের একটি এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প রয়েছে। কাজ স্থগিত করার জন্য প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বৃহত্তর যশোর জেলার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ প্রকল্প, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সামাজিক বনায়ন প্রকল্প, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রবর্তন প্রকল্প ও রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমী আধুনিকায়ন প্রকল্প।
No comments