চাঁদার দাবিতে হামলা-ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক জিম্মি

চাঁদার দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চার লেন প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে একটি গোষ্ঠী_ এই খবর কেবল উদ্বেগজনক নয়, বিস্ময়করও। উন্নয়ন প্রকল্পে কমিশন কিংবা চাঁদাবাজির ঘটনা আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে নতুন কি? কিন্তু তা যে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্পকেও জিম্মি করে ফেলতে পারে, আমাদের ধারণা ছিল না। প্রকল্পটির সঙ্গে বিদেশি কোম্পানি যুক্ত থাকায় এই পরিস্থিতি দেশের বাইরেও আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবে।


আমাদের এখানে বিনিয়োগ, প্রকল্প বাস্তবায়ন ও কর্মসংস্থানের ব্যাপারে বহির্বিশ্বে যে নেতিবাচক প্রচারণা রয়েছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সম্প্রসারণ কাজ বন্ধ হওয়ার অঘটন তাতে ঘৃতাহুতিই দেবে। চীনা কোম্পানি সেনোহাইড্রোর প্রকল্প পরিচালকের এই অভিযোগও কম বিস্ময়কর নয় যে, তারা প্রশাসনের কাছে প্রতিকার চেয়েও পাচ্ছেন না। তাহলে কি আমরা ধরে নেব, চাঁদাবাজ গোষ্ঠীর সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের যোগসাজশ রয়েছে? শুক্রবার ফেনী নদীতে বালু উত্তোলনকারী বোটে যেভাবে সশস্ত্র হামলা হয়েছে এবং তাতে করে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে এর নেপথ্য নায়করা সন্ত্রাসীই। তাদের অন্য কোনো পরিচয় থাকতে পারে না। আমরা আশা করি, এই হামলায় জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা হবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাজও যেন ভবিষ্যতে এক মুহূর্তের জন্য বন্ধ না থাকে, সে নিশ্চয়তা প্রশাসনকেই দিতে হবে। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের যোগসাজশের বিষয়টিও অবিলম্বে খতিয়ে দেখার আহ্বান জানাই আমরা। মনে রাখা জরুরি, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করার যে প্রক্রিয়া প্রায় পাঁচ বছর আগে সূচিত হয়েছিল, তা আরও বিলম্বিত করা কারও জন্য কল্যাণকর হতে পারে না। দরপত্র-পুনঃদরপত্র আহ্বানের দুষ্টচক্রে ইতিমধ্যেই অনেক সময় পার হয়ে গেছে। এখন চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যে দেশের 'লাইফলাইন' খ্যাত মহাসড়কটির উন্নয়নে স্থবিরতা মেনে নেওয়া কঠিন। আমরা জানি, চট্টগ্রাম নৌ-বন্দরের আঞ্চলিক ব্যবহারের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বর্তমান সরকার উদ্যোগী হয়েছে। কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উন্নয়ন কাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে তা দূর অস্তই থেকে যাবে।

No comments

Powered by Blogger.