মুখোমুখি প্রতিদিন-একটি ঘটনা আমার জীবন শেষ করে দিয়েছে
এসএ গেমসে প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ সাইক্লিং ফেডারেশন থেকে এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছিলেন তিনি। এনসিসি ব্যাংক ৩৫তম জাতীয় সাইক্লিং দিয়ে আবারও ট্র্যাকে ফিরছেন চিংবাই মারমা। সাইক্লিং থেকে দূরে থাকার কষ্ট ও তাঁর ভবিষ্যতের স্বপ্ন জানতেই কালের কণ্ঠ স্পোর্টস মুখোমুখি হয়েছিল আনসারের এ সাইক্লিস্টেরকালের কণ্ঠ স্পোর্টস : কত দিন পর সাইক্লিং ট্র্যাকে ফিরতে যাচ্ছেন?
চিংবাই মারমা : এসএ গেমস শেষ হয়েছে প্রায় দুই বছর হলো। এর মধ্যে সাইক্লিং ট্র্যাকে নামিনি। জাতীয় সাইক্লিং চ্যাম্পিয়নশিপ উপলক্ষে পাঁচ দিন ধরে প্র্যাকটিস করছি। এর মধ্যে আমার শাস্তির মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। আশা করছি ভালো কিছুই করতে পারব।
প্রশ্ন : এত কম প্র্যাকটিস করে কি ভালো করা সম্ভব?
চিংবাই : মনের মধ্যে একটা জেদ কাজ করছে। আমার জন্য অবশ্যই আনসার শক্ত প্রতিপক্ষ। ওরা সব সময় প্র্যাকটিসের মধ্যে ছিল। সোনা জিততে না পারলেও একেবারে খালি হাতে ফিরব না। কমপক্ষে রুপা অথবা ব্রোঞ্জ জিতবই।
প্রশ্ন : এত কম প্রস্তুতি নিয়ে কেন এলেন?
চিংবাই : আমাদের আনসারের একজন সাইক্লিস্ট ছিলেন। তিনি অসুস্থ হয়ে যাওয়াতে কোনোভাবেই শূন্যস্থান পূরণ করা যাচ্ছিল না। তাই বাধ্য হয়েই আমাকে আসতে হয়েছে। তবে কথা দিচ্ছি, ভবিষ্যতের কোনো টুর্নামেন্টে পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েই আমি ট্র্যাকে আসব।
প্রশ্ন : মাঝের এ সময়টুকু কিভাবে কাটিয়েছেন?
চিংবাই : আমি নিজেও অসুস্থ ছিলাম। ছয় মাস আগে মা হয়েছি। সাইকেল নিয়ে এ সময় আমি কোনো চিন্তাই করিনি। এখন যেহেতু শুরু করেছি সাইক্লিংই হবে আমার ধ্যান-জ্ঞান।
প্রশ্ন : সাইক্লিংই যেহেতু আপনার ধ্যান-জ্ঞান, তাই এর থেকে দূরে থাকতে কি কষ্ট হয়নি?
চিংবাই : আসলে এ কষ্টের কথা আমি কাউকে বলে বোঝাতে পারব না। তাই আমার কষ্ট আমার মধ্যেই থাক।
প্রশ্ন : নিশ্চয়ই এসএ গেমসের সেই ঘটনার কথা মনে আছে? সোনা জেতানোর জন্য পেছন থেকে আপনাকে ধাক্কা দেওয়া হয়েছিল?
চিংবাই : সব কিছুই মনে আছে। তবে সব ভুলে গিয়ে আবারও স্বপ্ন দেখছি ভালো কিছু করার।
প্রশ্ন : আপনার কি মনে হয় ওই ঘটনার জন্য আপনি দায়ী?
চিংবাই : আমার কোনো দোষ নেই বলেই আবারও সাইক্লিংয়ে ফিরে এসেছি। যদি ওই ঘটনায় আমার সরাসরি কোনো দায় থাকত তাহলে লোকলজ্জার ভয়ে আমি আর ফিরে আসতে পারতাম না।
প্রশ্ন : পেছন থেকে ধাক্কা দেওয়া না হলে আপনি কি সোনা জিততে পারতেন?
চিংবাই : আমি কিন্তু প্রথমই ছিলাম। সোনা না হোক রুপা অথবা ব্রোঞ্জ তো জিততেই পারতাম। সমাজে আমাকে এত প্রশ্নের সম্মুখীনও হতে হতো না।
প্রশ্ন : ব্যাপারটা কি একটু খুলে বলা যায়?
চিংবাই : যার সঙ্গে দেখা হতো সে-ই আমার কাছে ওই ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইত। সবাই আমার দিকে আড় চোখে তাকাত।
প্রশ্ন : আবারও কি এসএ গেমসে সোনা জয়ের স্বপ্ন দেখেন?
চিংবাই : সব কিছু শরীরের ওপর নির্ভর করবে। শরীর এখন অনেক ভারী হয়ে গেছে। সাইকেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে কষ্ট হয়ে যায়। আসলে একটি ঘটনা আমার জীবনকে শেষ করে দিয়েছে।
No comments