পবিত্র কোরআনের আলো-আল্লাহর নামে মিথ্যা রটনাকারীদের তিনি কঠোর শাস্তি দেন
১৫২. ইন্নাল্লাযীনাত্তাখাযুল ই'জলা ছাইয়ানা-লুহুম গাদ্বাবুম্ মির্ রাবি্বহিম ওয়া যিল্লাতুন ফিল হায়া-তিদ্ দুনিয়া; ওয়া কাযা-লিকা নাজযিল মুফ্তারীন।১৫৩. ওয়াল্লাযীনা আ'মিলুস ছায়্যিআ-তি ছুম্মা তা-বূ মিম্ বা'দিহা- ওয়া আ-মানূ; ইন্না রাব্বাকা মিম্ বা'দিহা- লাগাফূরুর্ রাহীম।১৫৪. ওয়া লাম্মা ছাকাতা আ'ন মূছাল গাদ্বাবু আখাযাল আলওয়া-হা; ওয়া ফী নুছখাতিহা- হুদান ওয়া রাহ্মাতুল্ লিল্লাযীনা হুম লিরাবি্বহিম ইয়ারহাবূন।
১৫৫. ওয়াখতা-রা মুসা ক্বাওমাহু ছাবয়িনা রাজুলান লিমিক্বাতিনা, ফালাম্মা আখাজাতহুমুর রাজফাতু, ক্বালা রাবি্ব লাও শি'য়তা আহলাকতাহুম মিন ক্বাবলু ওয়া ইয়্যায়া আতুহলিকুনা বিমা ফাআলাস সুফাহাউ মিন্না ইন হিয়া ইল্লা ফিতনাতুকা তুদ্বিল্লু বিহা মান তাশাউ ওয়া তাহদী মান তাশাউ আনতা ওয়ালিউনা- ফাগফিরলানা- ওয়ারহামনা ওয়া খাইরুল গাফিরীন।
[সুরা : আল-আ'রাফ, আয়াত : ১৫২-১৫৫]
অনুবাদ : ১৫২. (আল্লাহ তায়ালা মুসাকে বললেন) যেসব লোক বাছুরের মূর্তিকে মাবুদ বানিয়েছে, তাদের ওপর অচিরেই তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে গজব আসবে, আর পার্থিব জীবনেও তারা পাবে অপমান ও লাঞ্ছনা। আল্লাহর নামে মিথ্যা কথা রটনাকারীদের জন্য আমি এভাবেই শাস্তি দিয়ে থাকি।
১৫৩. যেসব লোক অন্যায় কাজ করেছে, এরপর তওবা করেছে এবং ইমান এনেছে। নিশ্চয়ই এ তওবার পর তোমার প্রভু ক্ষমাশীল ও দয়ালু হিসেবেই তোমাদের দেখবেন।
১৫৪. পরে যখন মুসার ক্রোধ কমল, তখন তিনি তাওরাতের সেই ফলকগুলো সযত্নে তুলে রাখলেন। এর পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় হেদায়েত ও রহমত-সংক্রান্ত কথাবার্তা লিখিত ছিল। আর সেগুলো এমন লোকদের জন্য, যারা তাদের প্রতিপালকের ব্যাপারে সজাগ।
১৫৫. মুসা তার সম্প্রদায়ের সত্তর জন লোককে আমার স্থিরীকৃত সময়ে তুর পাহাড়ে আনার জন্য মনোনীত করল। অতঃপর যখন তাদের ভূমিকম্প আক্রান্ত করল, তখন মুসা বলল_হে আমার পতিপালক! আপনি চাইলে তো আগেই তাদের এবং আমাকেও ধ্বংস করতে পারতেন। আমাদের মধ্যকার কিছু নির্বোধ লোকের কর্মকাণ্ডের কারণে কি আমাদের সবাইকে ধ্বংস করে দেবেন? আমরা বিশ্বাস করি, এ ঘটনা আপনার পক্ষ থেকে এক পরীক্ষা মাত্র। এর মাধ্যমে আপনি যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট হওয়ার সুযোগ দেন, আবার যাকে ইচ্ছা হেদায়েত দান করেন। আপনি তো আমাদের অভিভাবক। সুতরাং আমাদের ক্ষমা করে দিন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন। আপনিই তো ক্ষমার আধার।
ব্যাখ্যা : ১৫২-১৫৪ নম্বর আয়াত পর্যন্ত আগের আয়াতগুলোর ধারাবাহিকতায় আগের প্রসঙ্গ অর্থাৎ বাছুর পূজার প্রসঙ্গ আলোচিত হয়েছে। একত্ববাদের লঙ্ঘনও যে এক মহা পাপ, সে বিষয়টা এখানে আরো স্পষ্ট করা হয়েছে। ১৫৫ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে মুসার সম্প্রদায়ের আরেকটি ঘটনার প্রসঙ্গ। আল্লাহর নির্দেশে মুসা (আ.) তাঁর সম্প্রদায় থেকে সত্তরজন প্রতিনিধিকে তুর পাহাড়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। সত্তরজন লোককে কী কারণে তুর পাহাড়ে আনা হয়েছিল, সে সম্পর্কে মুফাসসিররা বিভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। সর্বাপেক্ষা সঠিক ব্যাখ্যা সম্ভবত এটাই যে মুসা (আ.) যখন তাওরাত কিতাব নিয়ে এলেন এবং বনিইসরাইলকে তা অনুসরণ করার হুকুম দিলেন, তখন তাদের মধ্যকার কেউ কেউ প্রশ্ন তুলল, আমরা এটা কি বিশ্বাস করব যে এ কিতাব আল্লাহ নাজিল করেছেন? তখন আল্লাহ তায়ালা মুসা (আ.)-কে বললেন, তিনি যেন কওমের সত্তরজন প্রতিনিধিকে বাছাই করে তুর পাহাড়ে নিয়ে আসেন। সেখানে তাদের আল্লাহর নিজ কালাম শুনিয়ে দেওয়া হলো। এতে তাদের দাবি আরো বেড়ে গেল। তারা বলল, আমরা যতক্ষণ আল্লাহকে চাক্ষুষ না দেখব, ততক্ষণ বিশ্বাস করব না। এই হঠকারিতাপূর্ণ দাবির কারণে তাদের ওপর এমন বজ্রধ্বনি হলো যে তাতে ভূমিকম্পের মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়ে গেল এবং তারা সবাই বেহুঁশ হয়ে গেল। এই বেহুঁশ অবস্থা থেকে তারা চৈতন্য ফিরে পেয়েছিল। অর্থাৎ তাদের মৃত্যু হয়নি। ঘটনার এ বিবণ কোরআন মজিদের অন্যান্য বিবরণের সঙ্গেও সংগতিপূর্ণ। সুরা বাকারায় বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের কারণে সেই সত্তর ব্যক্তির মৃত্যুবৎ অবস্থা হয়েছিল। অন্ততপক্ষে দর্শকের এটাই মনে হওয়ার কথা। কিন্তু এভাবে তাদের মৃত্যু দেওয়া আল্লাহর ইচ্ছা নয়; মুসা (আ.)ও তা জানতেন। আসলে এটা ছিল একটা পরীক্ষা মাত্র।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
[সুরা : আল-আ'রাফ, আয়াত : ১৫২-১৫৫]
অনুবাদ : ১৫২. (আল্লাহ তায়ালা মুসাকে বললেন) যেসব লোক বাছুরের মূর্তিকে মাবুদ বানিয়েছে, তাদের ওপর অচিরেই তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে গজব আসবে, আর পার্থিব জীবনেও তারা পাবে অপমান ও লাঞ্ছনা। আল্লাহর নামে মিথ্যা কথা রটনাকারীদের জন্য আমি এভাবেই শাস্তি দিয়ে থাকি।
১৫৩. যেসব লোক অন্যায় কাজ করেছে, এরপর তওবা করেছে এবং ইমান এনেছে। নিশ্চয়ই এ তওবার পর তোমার প্রভু ক্ষমাশীল ও দয়ালু হিসেবেই তোমাদের দেখবেন।
১৫৪. পরে যখন মুসার ক্রোধ কমল, তখন তিনি তাওরাতের সেই ফলকগুলো সযত্নে তুলে রাখলেন। এর পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় হেদায়েত ও রহমত-সংক্রান্ত কথাবার্তা লিখিত ছিল। আর সেগুলো এমন লোকদের জন্য, যারা তাদের প্রতিপালকের ব্যাপারে সজাগ।
১৫৫. মুসা তার সম্প্রদায়ের সত্তর জন লোককে আমার স্থিরীকৃত সময়ে তুর পাহাড়ে আনার জন্য মনোনীত করল। অতঃপর যখন তাদের ভূমিকম্প আক্রান্ত করল, তখন মুসা বলল_হে আমার পতিপালক! আপনি চাইলে তো আগেই তাদের এবং আমাকেও ধ্বংস করতে পারতেন। আমাদের মধ্যকার কিছু নির্বোধ লোকের কর্মকাণ্ডের কারণে কি আমাদের সবাইকে ধ্বংস করে দেবেন? আমরা বিশ্বাস করি, এ ঘটনা আপনার পক্ষ থেকে এক পরীক্ষা মাত্র। এর মাধ্যমে আপনি যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট হওয়ার সুযোগ দেন, আবার যাকে ইচ্ছা হেদায়েত দান করেন। আপনি তো আমাদের অভিভাবক। সুতরাং আমাদের ক্ষমা করে দিন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন। আপনিই তো ক্ষমার আধার।
ব্যাখ্যা : ১৫২-১৫৪ নম্বর আয়াত পর্যন্ত আগের আয়াতগুলোর ধারাবাহিকতায় আগের প্রসঙ্গ অর্থাৎ বাছুর পূজার প্রসঙ্গ আলোচিত হয়েছে। একত্ববাদের লঙ্ঘনও যে এক মহা পাপ, সে বিষয়টা এখানে আরো স্পষ্ট করা হয়েছে। ১৫৫ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে মুসার সম্প্রদায়ের আরেকটি ঘটনার প্রসঙ্গ। আল্লাহর নির্দেশে মুসা (আ.) তাঁর সম্প্রদায় থেকে সত্তরজন প্রতিনিধিকে তুর পাহাড়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। সত্তরজন লোককে কী কারণে তুর পাহাড়ে আনা হয়েছিল, সে সম্পর্কে মুফাসসিররা বিভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। সর্বাপেক্ষা সঠিক ব্যাখ্যা সম্ভবত এটাই যে মুসা (আ.) যখন তাওরাত কিতাব নিয়ে এলেন এবং বনিইসরাইলকে তা অনুসরণ করার হুকুম দিলেন, তখন তাদের মধ্যকার কেউ কেউ প্রশ্ন তুলল, আমরা এটা কি বিশ্বাস করব যে এ কিতাব আল্লাহ নাজিল করেছেন? তখন আল্লাহ তায়ালা মুসা (আ.)-কে বললেন, তিনি যেন কওমের সত্তরজন প্রতিনিধিকে বাছাই করে তুর পাহাড়ে নিয়ে আসেন। সেখানে তাদের আল্লাহর নিজ কালাম শুনিয়ে দেওয়া হলো। এতে তাদের দাবি আরো বেড়ে গেল। তারা বলল, আমরা যতক্ষণ আল্লাহকে চাক্ষুষ না দেখব, ততক্ষণ বিশ্বাস করব না। এই হঠকারিতাপূর্ণ দাবির কারণে তাদের ওপর এমন বজ্রধ্বনি হলো যে তাতে ভূমিকম্পের মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়ে গেল এবং তারা সবাই বেহুঁশ হয়ে গেল। এই বেহুঁশ অবস্থা থেকে তারা চৈতন্য ফিরে পেয়েছিল। অর্থাৎ তাদের মৃত্যু হয়নি। ঘটনার এ বিবণ কোরআন মজিদের অন্যান্য বিবরণের সঙ্গেও সংগতিপূর্ণ। সুরা বাকারায় বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের কারণে সেই সত্তর ব্যক্তির মৃত্যুবৎ অবস্থা হয়েছিল। অন্ততপক্ষে দর্শকের এটাই মনে হওয়ার কথা। কিন্তু এভাবে তাদের মৃত্যু দেওয়া আল্লাহর ইচ্ছা নয়; মুসা (আ.)ও তা জানতেন। আসলে এটা ছিল একটা পরীক্ষা মাত্র।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments