বিমানবাহিনী পেল এয়ার মিসাইল সশস্ত্র বাহিনী আধুনিকায়ন অব্যাহত থাকবে :প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সশস্ত্র বাহিনী আধুনিকায়নে তার সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখতে সব সময় প্রস্তুত থাকার জন্য তিনি বিমানবাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান। গতকাল রোববার বিমানবাহিনীর কুর্মিটোলা ঘাঁটিতে বিমানবাহিনীতে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র (এয়ার মিসাইল) ব্যবস্থা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখেন। বিমানবাহিনীতে এই প্রথম এয়ার মিসাইল যোগ হলো।


এফএম-৯০ ক্যাটাগরির এ ব্যবস্থা হচ্ছে স্বল্পপাল্লার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (এসআরএডিএস)। চীনের সহায়তায় ভূমিতে স্থাপিত এ মিসাইল নিচু দিয়ে উড্ডিন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। সব ধরনের আবহাওয়ায় এটি কার্যকর। ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর উলেল্গখযোগ্য উন্নতি হয়েছে এবং এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, আজ এক ঐতিহাসিক দিন। এই বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে তিনি বিমানবাহিনীর আধুনিকায়নে বড় ধরনের অগ্রগতি বলে বর্ণনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বিমানবাহিনীর আধুনিকায়নে ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন ব্যবস্থার কথা উলেল্গখ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ইতিমধ্যে কক্সবাজারে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বিমান ঘাঁটি ও রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিটের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া আরও অনেক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই আধুনিক ও সুসজ্জিত সশস্ত্র বাহিনী গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তার উদ্যোগে বিমানবাহিনীতে মিগ-২১ জঙ্গি বিমান ও কার্গো এয়ারক্র্যাফট এবং রাডার ব্যবস্থার প্রবর্তন করা হয়। ওই প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতায় তার (শেখ হাসিনা) নেতৃত্বাধীন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিমানবাহিনীতে মিগ-২৯, এফ-৭ জঙ্গি বিমান, প্রশিক্ষণের জন্য নতুন এয়ারক্র্যাফট ও হেলিকপ্টারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ও জঙ্গি বিমান যুক্ত হয়।
প্রধানমন্ত্রী পেশাগত দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে দক্ষ বৈমানিক, প্রকৌশলী ও বিমানসেনা হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে বিমানবাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আধুনিক বিমানবাহিনীর জন্য প্রয়োজন হচ্ছে কঠোর পরিশ্রম, নতুন প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্তি এবং অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার সঠিক প্রয়োগ। কুর্মিটোলা বিমান ঘাঁটিতে বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল শাহ এম জিয়াউর রহমান প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। এ উপলক্ষে বিমানবাহিনীর এক বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। কুচকাওয়াজ পরিচালনা করেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন কাজী মাজহারুল করিম। এরপর বিমানবাহিনীর বিভিন্ন ধরনের বিমানের আকর্ষণীয় 'ফ্লাইপাস্ট' অনুষ্ঠিত হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী কুর্মিটোলা ঘাঁটিতে চীনের সহযোগিতায় স্থাপিত বঙ্গবন্ধু অ্যারোনটিক্যাল সেন্টারের উদ্বোধন করেন। বিমানবাহিনী সূত্র জানায়, এ কারিগরি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিমান ও হেলিকপ্টারের মেরামত এবং কাঠামোগত পরিবর্তনসহ বিমানের ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ তৈরি করা সম্ভব হবে, যা বিমানবাহিনীকে স্বনির্ভরতার দিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধু অ্যারোনটিক্যাল সেন্টার উদ্বোধনের ফলে বিমানবাহিনীর সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পেল এবং এ প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সাল নাগাদ হালকা বিমানের প্রোটোটাইপ তৈরি করতে সক্ষম হবে। পরে প্রধানমন্ত্রী অ্যারোনটিক্যাল সেন্টার প্রাঙ্গণে একটি গাছের চারা রোপণ করেন। তিনি সেখানে পরিদর্শন বইতেও স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান, চীনের রাষ্ট্রদূত, সেনা ও নৌবাহিনী প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার এবং ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.