প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নীতিনির্ধারকদের বৈঠক-আর কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নয়
আর কোনো কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সরকারের অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারকদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভর্তুকির চাপ কমাতেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা যায়।প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এ বৈঠক চলে। বৈঠকে জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম আরো বাড়িয়ে ভর্তুকি কমানো যায়
কি না, সে বিষয়েও আলোচনা করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে ভারসাম্য রাখতে বিদেশি সহায়তাপুষ্ট উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া সার্বভৌমত্ব বন্ড বিক্রির মাধ্যমে বিদেশ থেকে অর্থ সংগ্রহের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পরিকল্পনামন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকার, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান, অর্থসচিব ড. মোহাম্মদ তারেক, পরিকল্পনাসচিব শফিকুল ইসলাম. রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. নাসিরউদ্দিন, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. শামসুল আলমসহ সরকারের অর্থনৈতিক বিষয়ক নীতিনির্ধারকরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান বলেন, 'আর কোনো কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর পরিবর্তে বিওওটি (বিল্ড, ওন, অপারেট ও ট্রান্সফার) পদ্ধতিতে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এতে বিদ্যুৎখাতে বৈদেশিক বিনিয়োগ আসবে।'
সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য শামসুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বৈঠকে সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ভর্তুকি কিভাবে কমানো যায়, সেসব নিয়েও পর্যালোচনা হয়েছে। তবে সার্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় প্রধানমন্ত্রী সন্তুষ্ট।'
শামসুল আলম আরো বলেন, 'ইতিমধ্যে মূল্যস্ফীতি কমতে শুরু করেছে। এটি আরো কমবে। শস্যের ফলন ভালো হওয়ায় আগামীতে খাদ্য আমদানি খরচও কমে যাবে। বৈদেশিক সহায়তা রয়েছে_এমন উন্নয়ন প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।'
বৈঠকে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নীতিনির্ধারক কালের কণ্ঠকে জানান, চলতি অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা। কিন্তু জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক বেড়েছে। সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা খসড়া এক হিসাবে দেখা গেছে, বিদ্যমান হারে ভর্তুকি দিতে থাকলে অর্থবছর শেষে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৪৭ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা। বিশাল এই ভর্তুকি মোকাবিলা সরকারের পক্ষে দুরূহ হয়ে পড়বে।
ওই নীতিনির্ধারক আরো জানান, বৈঠকে জ্বালানি তেল ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোসহ ভর্তুকি কমানোর নানা পন্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম লিটারপ্রতি পাঁচ টাকা বাড়ানোর পরও এখাতে সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ১১ হাজার কোটি টাকা। সরকার ভর্তুকির এই অঙ্ক পাঁচ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে। আর তা করতে হলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম না কমলে, বিভিন্ন সময় কয়েক দফায় দাম সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে ভর্তুকি কমানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এঙ্টেনডেট ক্রেডিট সাপোর্ট হিসেবে সরকারকে ১০০ কোটি বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার শর্ত হিসেবে ভর্তুকির পরিমাণ কমাতে বলেছে। আইএমএফের এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিনিধি দল এখন ঢাকায় অবস্থান করছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে দাতা সংস্থাগুলোর ভূমিকা নিয়েও আলোচনা হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সাধারণ আমদানি-রপ্তানির বাইরে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য বিপুল পরিমাণ মেশিনারি আমদানি ব্যয় মেটাতেই রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়ছে। এ জন্য বিওওটি পদ্ধতিতে বৈদেশিক বিনিয়োগ সহযোগে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক সহায়তা পাইপলাইনে থাকলেও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে ব্যর্থতার কারণে সহায়তার অর্থ ছাড় করছে না দাতারা। বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হলে সরকারের নেওয়া অভ্যন্তরীণ ঋণের পরিমাণও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। এ জন্যই বৈদেশিক সমর্থনপুষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পরিকল্পনামন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকার, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান, অর্থসচিব ড. মোহাম্মদ তারেক, পরিকল্পনাসচিব শফিকুল ইসলাম. রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. নাসিরউদ্দিন, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. শামসুল আলমসহ সরকারের অর্থনৈতিক বিষয়ক নীতিনির্ধারকরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান বলেন, 'আর কোনো কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর পরিবর্তে বিওওটি (বিল্ড, ওন, অপারেট ও ট্রান্সফার) পদ্ধতিতে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এতে বিদ্যুৎখাতে বৈদেশিক বিনিয়োগ আসবে।'
সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য শামসুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বৈঠকে সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ভর্তুকি কিভাবে কমানো যায়, সেসব নিয়েও পর্যালোচনা হয়েছে। তবে সার্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় প্রধানমন্ত্রী সন্তুষ্ট।'
শামসুল আলম আরো বলেন, 'ইতিমধ্যে মূল্যস্ফীতি কমতে শুরু করেছে। এটি আরো কমবে। শস্যের ফলন ভালো হওয়ায় আগামীতে খাদ্য আমদানি খরচও কমে যাবে। বৈদেশিক সহায়তা রয়েছে_এমন উন্নয়ন প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।'
বৈঠকে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নীতিনির্ধারক কালের কণ্ঠকে জানান, চলতি অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা। কিন্তু জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক বেড়েছে। সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা খসড়া এক হিসাবে দেখা গেছে, বিদ্যমান হারে ভর্তুকি দিতে থাকলে অর্থবছর শেষে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৪৭ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা। বিশাল এই ভর্তুকি মোকাবিলা সরকারের পক্ষে দুরূহ হয়ে পড়বে।
ওই নীতিনির্ধারক আরো জানান, বৈঠকে জ্বালানি তেল ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোসহ ভর্তুকি কমানোর নানা পন্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম লিটারপ্রতি পাঁচ টাকা বাড়ানোর পরও এখাতে সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ১১ হাজার কোটি টাকা। সরকার ভর্তুকির এই অঙ্ক পাঁচ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে। আর তা করতে হলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম না কমলে, বিভিন্ন সময় কয়েক দফায় দাম সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে ভর্তুকি কমানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এঙ্টেনডেট ক্রেডিট সাপোর্ট হিসেবে সরকারকে ১০০ কোটি বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার শর্ত হিসেবে ভর্তুকির পরিমাণ কমাতে বলেছে। আইএমএফের এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিনিধি দল এখন ঢাকায় অবস্থান করছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে দাতা সংস্থাগুলোর ভূমিকা নিয়েও আলোচনা হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সাধারণ আমদানি-রপ্তানির বাইরে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য বিপুল পরিমাণ মেশিনারি আমদানি ব্যয় মেটাতেই রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়ছে। এ জন্য বিওওটি পদ্ধতিতে বৈদেশিক বিনিয়োগ সহযোগে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক সহায়তা পাইপলাইনে থাকলেও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে ব্যর্থতার কারণে সহায়তার অর্থ ছাড় করছে না দাতারা। বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হলে সরকারের নেওয়া অভ্যন্তরীণ ঋণের পরিমাণও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। এ জন্যই বৈদেশিক সমর্থনপুষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
No comments