জেএসসিতে এমসিকিউ থাকছে, কমছে ২০০ নম্বর by নূর মোহাম্মদ
প্রাথমিক
সমাপনীতে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন তুলে দেয়া হলেও বহাল থাকছে জুনিয়র স্কুল
সার্টিফিকেট পরীক্ষা (জেএসসিতে)। শিক্ষাবিদ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন
মহল থেকে এমসিকিউ তুলে দেয়ার চাপ থাকলেও তা আপাতত বাতিল করছে না শিক্ষা
মন্ত্রণালয়। তবে আসন্ন জেএসসি ২০০ নম্বরের পরীক্ষা কমিয়ে নতুন মানবণ্টন করা
হচ্ছে। এর মধ্যে বাংলা ও ইংরেজি দুটি বিষয়ে ৫০ নম্বর করে ১০০ নম্বরের
পরীক্ষা কমানোর সিদ্ধান্ত হবে। তবে কত নম্বরের এমসিকিউ থাকছে তা এখনও
পরিষ্কার করতে পারেনি কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য
আগামী রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বৈঠক
ডাকা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জেএসসিতে ঐচ্ছিক বিষয়ের (গার্হস্থ
অর্থনীতি/কৃষি) পরীক্ষা তুলে দেয়া হবে। শিক্ষার্থীদের ওপর পরীক্ষার চাপ
কমাতে গত ৮ই মে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক উপকমিটির সভায় এসব
সিদ্ধান্ত হয়। প্রস্তাবটি এখন মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায়। অনুমোদন হলে
আগামী ১লা নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষা ৬৫০ নম্বরের
হবে।
বিষয়টি স্বীকার করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য (কারিকুলাম) প্রফেসর ড. মসিউজ্জামান মানবজমিনকে বলেন, এমসিকিউ যেভাবে আছে সেভাবেই থাকবে। এ বছরের পরীক্ষায় এমসিকিউতে কোনো পরিবর্তন আসছে না। তিনি আরো বলেন, আমি শুনেছি আন্তঃবোর্ডের সমন্বয় সভায় বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে ৫০ নম্বর কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আন্তঃবোর্ড আসলে আমাদের বলবে না। তারা মন্ত্রণালয়কে বলবে। মন্ত্রণালয় আমাদের নির্দেশ দিলে তখন আমরা নম্বর বণ্টনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবো। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১৫০ নম্বরের পরীক্ষা ১০০ নম্বরের হলে ৩০ নম্বর এমসিকিউ প্রশ্ন থাকবে। তবে আগের ১৫০ নম্বরের পরীক্ষার কোনো অংশ থেকে কত এমসিকিউ থাকবে তা নির্ধারণ করতেই হয়তো মন্ত্রণালয় সভা ডেকেছে। আর আন্তঃবোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মু. জিয়াউক হক মানবজমিনকে বলেন, আমাদের মতামত শিগগিরই মন্ত্রণালয়কে পাঠাবো। তবে চলতি বছর এমসিকিউ রেখেই আমরা প্রস্তাব পাঠাবো। বোর্ড কর্মকর্তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর পরীক্ষার চাপ কমাতে বাংলা ও ইরেজি বিষয়ে ৫০ নম্বর করে কমাতে এবং চতুর্থ বিষয়ের পরীক্ষা তুলে দিতে সবাই একমত হয়েছেন। মন্ত্রণালয় আমাদের প্রস্তাব অনুমোদন দিলে চলতি বছরের জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা থেকে তা কার্যকর হবে। উপকমিটির সভায় সাতটি বিষয়ের পরীক্ষা নেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকরা। আর বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ের দুই পত্রের ১৫০ নম্বরের পরিবর্তে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। গার্হস্থ্য অর্থনীতি বা কৃষি দুটি বিষয়ের একটি শিক্ষার্থী নিজেদের পছন্দমতো নিতে পারতেন। এবার থেকে এ বিষয়ের পরীক্ষা না নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অর্থাৎ ২০০ নম্বরের পরীক্ষা তুলে দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তুলে দেয়া ২০০ নম্বর শ্রেণিকক্ষে ধারাবাহিক মূল্যায়ন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের জিপিএ নির্ধারণের ক্ষেত্রে এর কোনো প্রভাব থাকবে না। এর আগে গত বছর জেএসসি ও জেডিসিতে ১৩টি বিষয়ের মধ্যে তিনটি বিষয়ের ওপর পরীক্ষা তুলে দেয়া হয়। বিষয়গুলো হচ্ছে- চারু ও কারুকলা, শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য এবং কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা। এই তিনটি বিষয়ে ৫০ নম্বর গত বছর থেকে শ্রেণিকক্ষে ধারাবাহিক মূল্যায়ন হচ্ছে। বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত বছর জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় ১০টি বিষয়ে মোট ৮৫০ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়েছে। এর মধ্যে বাংলা প্রথমপত্র ১০০; দ্বিতীয়পত্র ৫০; ইংরেজি প্রথমপত্র ১০০; দ্বিতীয়পত্র ৫০; গণিত এবং বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং ধর্ম, গার্হস্থ অর্থনীতি/কৃষি বিষয়ে ১০০ করে ৮০০ নম্বর এবং তথ্যপ্রযুক্তিতে ৫০ নম্বরসহ মোট ৮৫০ নম্বরের পরীক্ষা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দিতে ২০১৬ সালে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যদের নিয়ে ওই বছরের ২৫ ও ২৬শে নভেম্বর কক্সবাজারে দুই দিনের আবাসিক কর্মশালার আয়োজন করে মন্ত্রণালয়। এতে শিক্ষাবিদরা বেশকিছু সুপারিশ করেন। সুপারিশ বাস্তবায়নে কয়েকটি সাব কমিটিও গঠন করা হয়। সুপারিশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে গত ৩০শে নভেম্বর মন্ত্রণালয়ে একটি বর্ধিতসভা হয়। সভায় শিক্ষাক্রম পর্যালোচনা সাবকমিটি অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় চারু ও কারুকলা, ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, কৃষি, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, শরীরচর্চা ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়গুলো পর্যায়ক্রমে বিদ্যালয়ভিত্তিক মূল্যায়নসহ বেশকিছু সুপারিশ করেন। মূলত শিক্ষাবিদদের সুপারিশের আলোকেই বোর্ডগুলো এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিষয়টি স্বীকার করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য (কারিকুলাম) প্রফেসর ড. মসিউজ্জামান মানবজমিনকে বলেন, এমসিকিউ যেভাবে আছে সেভাবেই থাকবে। এ বছরের পরীক্ষায় এমসিকিউতে কোনো পরিবর্তন আসছে না। তিনি আরো বলেন, আমি শুনেছি আন্তঃবোর্ডের সমন্বয় সভায় বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে ৫০ নম্বর কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আন্তঃবোর্ড আসলে আমাদের বলবে না। তারা মন্ত্রণালয়কে বলবে। মন্ত্রণালয় আমাদের নির্দেশ দিলে তখন আমরা নম্বর বণ্টনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবো। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১৫০ নম্বরের পরীক্ষা ১০০ নম্বরের হলে ৩০ নম্বর এমসিকিউ প্রশ্ন থাকবে। তবে আগের ১৫০ নম্বরের পরীক্ষার কোনো অংশ থেকে কত এমসিকিউ থাকবে তা নির্ধারণ করতেই হয়তো মন্ত্রণালয় সভা ডেকেছে। আর আন্তঃবোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মু. জিয়াউক হক মানবজমিনকে বলেন, আমাদের মতামত শিগগিরই মন্ত্রণালয়কে পাঠাবো। তবে চলতি বছর এমসিকিউ রেখেই আমরা প্রস্তাব পাঠাবো। বোর্ড কর্মকর্তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর পরীক্ষার চাপ কমাতে বাংলা ও ইরেজি বিষয়ে ৫০ নম্বর করে কমাতে এবং চতুর্থ বিষয়ের পরীক্ষা তুলে দিতে সবাই একমত হয়েছেন। মন্ত্রণালয় আমাদের প্রস্তাব অনুমোদন দিলে চলতি বছরের জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা থেকে তা কার্যকর হবে। উপকমিটির সভায় সাতটি বিষয়ের পরীক্ষা নেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকরা। আর বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ের দুই পত্রের ১৫০ নম্বরের পরিবর্তে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। গার্হস্থ্য অর্থনীতি বা কৃষি দুটি বিষয়ের একটি শিক্ষার্থী নিজেদের পছন্দমতো নিতে পারতেন। এবার থেকে এ বিষয়ের পরীক্ষা না নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অর্থাৎ ২০০ নম্বরের পরীক্ষা তুলে দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তুলে দেয়া ২০০ নম্বর শ্রেণিকক্ষে ধারাবাহিক মূল্যায়ন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের জিপিএ নির্ধারণের ক্ষেত্রে এর কোনো প্রভাব থাকবে না। এর আগে গত বছর জেএসসি ও জেডিসিতে ১৩টি বিষয়ের মধ্যে তিনটি বিষয়ের ওপর পরীক্ষা তুলে দেয়া হয়। বিষয়গুলো হচ্ছে- চারু ও কারুকলা, শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য এবং কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা। এই তিনটি বিষয়ে ৫০ নম্বর গত বছর থেকে শ্রেণিকক্ষে ধারাবাহিক মূল্যায়ন হচ্ছে। বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত বছর জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় ১০টি বিষয়ে মোট ৮৫০ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়েছে। এর মধ্যে বাংলা প্রথমপত্র ১০০; দ্বিতীয়পত্র ৫০; ইংরেজি প্রথমপত্র ১০০; দ্বিতীয়পত্র ৫০; গণিত এবং বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং ধর্ম, গার্হস্থ অর্থনীতি/কৃষি বিষয়ে ১০০ করে ৮০০ নম্বর এবং তথ্যপ্রযুক্তিতে ৫০ নম্বরসহ মোট ৮৫০ নম্বরের পরীক্ষা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দিতে ২০১৬ সালে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যদের নিয়ে ওই বছরের ২৫ ও ২৬শে নভেম্বর কক্সবাজারে দুই দিনের আবাসিক কর্মশালার আয়োজন করে মন্ত্রণালয়। এতে শিক্ষাবিদরা বেশকিছু সুপারিশ করেন। সুপারিশ বাস্তবায়নে কয়েকটি সাব কমিটিও গঠন করা হয়। সুপারিশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে গত ৩০শে নভেম্বর মন্ত্রণালয়ে একটি বর্ধিতসভা হয়। সভায় শিক্ষাক্রম পর্যালোচনা সাবকমিটি অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় চারু ও কারুকলা, ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, কৃষি, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, শরীরচর্চা ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়গুলো পর্যায়ক্রমে বিদ্যালয়ভিত্তিক মূল্যায়নসহ বেশকিছু সুপারিশ করেন। মূলত শিক্ষাবিদদের সুপারিশের আলোকেই বোর্ডগুলো এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
No comments