দেশে ফেরা সব নারী শ্রমিকের নির্যাতনের অভিযোগ সত্য নয়! by উদিসা ইসলাম
মানবন্দরে শুক্রবার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন সৌদি আরব ফেরত এক নারী |
শারীরিক
ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে কেবল সৌদি আরব থেকেই গত ৩ বছরে ফিরেছেন চার
হাজারের বেশি নারী শ্রমিক। তারা বলছেন, সম্মানজনক কাজ দেওয়ার কথা বলে
দেশটিতে নিয়ে গেলেও যাওয়ার পর থেকে তাদের আটকে রেখে মারধর ও যৌন নির্যাতন
করা হয়। অকথ্য নির্যাতনে অনেকের হাত-পা ভেঙে গেছে।
অথচ বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব বলছেন, যারা ফিরছে তাদের পক্ষ থেকে করা শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ সবক্ষেত্রে সত্য নয়।
মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশি নারী শ্রমিকরা নিরাপদ নন–এমনটি সবক্ষেত্রে সঠিক নয় উল্লেখ করে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নমিতা হালদার বলেন, ‘আমরা যে নির্যাতনের অভিযোগগুলো পাই, সেগুলোর ভিত্তিতে সৌদি সরকারকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রশ্ন করায় তারা আমাদের জানিয়েছে, ৪৫ শতাংশ নারী চুক্তি ভেঙে দেশে ফেরে এবং সেটা ঘটে তিন মাসের ভেতরে। যারা ফিরছে তাদের পক্ষ থেকে করা শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ সবসময় সত্য নয়; আমি নিজে সেটি জানি।’ অনেক সময় নারীরা বিদেশে যাওয়ার তিন মাস না পেরোতেই ফিরে আসার জন্যও এমন অভিযোগ করে থাকেন বলে জেরায় বেরিয়ে এসেছে বলে জানান তিনি।
সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, তারা সরকারি-বেসরকারিভাবে যাওয়া শ্রমিকদের দায় নেবেন কিন্তু যে বিশালসংখ্যক নারী অবৈধভাবে যান, তাদের নিয়ে কর্তৃপক্ষ বেকায়দায় পড়ে যায়।
প্রবাসী শ্রমিক ও নারী অধিকার নিয়ে যারা কাজ করেন তারা বলছেন, ২০১৫ সালে শ্রমিক পাঠানোর জন্য যে চুক্তি হয়েছিল, তা বাস্তবায়ন সম্ভব না হওয়া এবং সরকারের দিক থেকে সতর্কতা অবলম্বন না করায় বিপুলসংখ্যক নারী ভাগ্য ফেরাতে মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে শূন্যহাতে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। আর দেশে ফেরা নারীরা বলছেন, এখনও শত শত নারী দেশে ফেরার পথ খুঁজছেন।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) দেওয়া তথ্যমতে, ২০১৭ সালে অভিবাসী নারীর সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ১৯ হাজার ৯২৫ জন; যা মোট অভিবাসনের ১৩ শতাংশ। ১৯৯১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত একা অভিবাসন প্রত্যাশী নারী শ্রমিকদের অভিবাসনে বাধা দেওয়া হলেও পরে ২০০৩ এবং ২০০৬ সালে তা কিছুটা শিথিল করা হয়। ২০০৪ সালের পর থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত নারী শ্রমিকের অভিবাসন হার ক্রমাগত বাড়তে থাকে। ২০১৫ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় মোট অভিবাসনের ১৯ শতাংশে। কিন্তু ২০১৬ সালে অভিবাসী নারী শ্রমিকের সংখ্যা নেমে আসে ১৬ শতাংশে এবং ২০১৭ সালে ১৩ শতাংশে।
এর বাইরে কত নারী কী উপায়ে বিদেশ গেছেন সে পরিসংখ্যান নেই। প্রবাসী নারী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, যথাযথ প্রশিক্ষণ না থাকা এবং এজেন্টদের ওপর মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকার কারণে বিদেশে ঘটছে দুর্ঘটনা, মেয়েদের জীবন পড়ছে শঙ্কায়।
এ মাসে দেশে ফিরেছেন নির্যাতনের শিকার রুবিনা (ছদ্মনাম)। রিক্রুটিং এজেন্সি স্টামফোর্ড (আর.এল-১৩৫২) এর মাধ্যমে গত ২০ এপ্রিল সৌদি গিয়ে ২০ দিন গৃহকর্তার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন রুবিনা। তার অভিযোগ, মোটা টাকার বিনিময়ে সৌদিতে তাকে বিক্রি করে দিয়েছিল ওই এজেন্সি।
এর আগে এ মাসের শুরুতে ব্র্যাক মাইগ্রেশন তথ্যকেন্দ্রে গিয়ে অভিযোগ জানান রুবিনার দুই মেয়ে। তারা বলেন, রিক্রুটিং এজেন্সি স্টামফোর্ডের মাধ্যমে গত ২০ এপ্রিল সৌদি আরব যান তাদের মা; এরপর থেকে কোনও যোগাযোগ নেই।
এরপর গত ১ মে ইন্টারনেট নম্বর থেকে এক বাংলাদেশি ফোন করে জানান, রুবিনা মারা গেছেন। একথা শোনার পরে রুবিনার দুই মেয়ে ওই এজেন্সির অফিসে যোগাযোগ করলে উল্টো তাদের হুমকি দেওয়া হয় এবং মায়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সারাদিন অফিসে বসিয়ে রাখা হয়।
জানা যায়, রুবিনার পাসপোর্ট তৈরি করেছিল ওই এজেন্সি। জাতীয় পরিচয়পত্রে তার জন্মসাল ১৯৭৫ হলেও পাসপোর্টে লেখা হয় ১৯৮২। কেবল রুবিনা নয়, গৃহকর্মী হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় পাঠানো নারী শ্রমিকদের প্রায় সবারই বয়স কমিয়ে দেখানো হয়।
নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফেরা নারীদের অভিযোগ–বিদেশে নিয়ে গিয়ে ‘বিক্রি’ করে দেওয়া, যে বাড়িতে কাজ দেওয়া হয় সেখানে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে যাওয়া, পুলিশের হাতে ধরা পড়ে সেই বাড়িতেই আবার ফেরার মতো ঘটনার শিকার হচ্ছেন শত শত নারী। প্রায় প্রতিদিনই নানা ক্ষত নিয়ে ফিরে আসছেন দেশে।
অভিবাসী মহিলা শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশনের (বোমসা) পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম বলেন, ‘গতকালই (শুক্রবার) হুট করে পাঁচজন ফিরেছেন, বিষয়টি এমন নয়। প্রতিদিনই অনেকে বাধ্য হচ্ছেন সর্বস্ব খুইয়ে দেশে ফিরতে। আজও আমাকে কল করে নূরজাহান নামের একজন জানালো, সে পালিয়ে রাস্তায় নেমেছে কিন্তু দূতাবাসটাও চেনে না, ওই দেশের ভাষাও ঠিকমতো জানে না। ফলে দূতাবাস তাকে কে চিনিয়ে দেবে, তাও জানে না। এভাবে বেশিক্ষণ থাকলে স্থানীয় পুলিশ তাকে আটক করে আবারও ওই নির্যাতনকারীদের হাতেই দিয়ে আসবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারকে অবশ্যই বাংলাদেশি নারী শ্রমিকদের ওপর নির্যাতনের বিষয়টি জিরো টলারেন্স হিসেবে বিবেচনায় নিতে হবে। যদি সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে না পারে তাহলে শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করে দেওয়া উচিত। সৌদি মালিকরা যদি নিরাপত্তা, সুরক্ষা, মর্যাদা ও অধিকার–এ চারটি জিনিস না দিতে পারে তাহলে আমাদের মেয়েদের ওখানে পাঠানোর কোনও প্রয়োজন নেই।’
বাংলাদেশ সরকার ২০১৫ সালে যে চুক্তি করেছিল, সেটির ভিত্তিতে গতমাসে আবারও সমঝোতা প্রস্তুত করেছে উল্লেখ করে সুমাইয়া ইসলাম বলেন, ‘ওই ভায়োলেশনগুলো যেন না ঘটে সেটি বলা হয়েছে সেখানে। ২০১৫ সালের চুক্তি অনুযায়ী, পর্যালোচনা করে একটি সমঝোতা হয়েছে কিন্তু এটি বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা সেই মনিটরিং ব্যবস্থার জন্য কি কেউ আছে?’
ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রতিদিনই মেয়েরা ফিরে আসছে। একটু ভালো ভবিষ্যতের জন্য যারা নিজেদের শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে বিদেশ যায়, তারা এমনিতেই ফিরে আসবে–এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। ফেরার কারণ হিসেবে তারা যেমনটা বলছেন, তাদের শরীরে তেমনই ক্ষত আমরা দেখতে পাই। আমরা যেখানে আমাদের নিজেদের মেয়ে পাঠাব না, সেখানে আমরা কেন দেশের মেয়েদের পাঠানোর সাহস করি। বছরের পর বছর এই জিনিস চলে আসছে। এর শেষ হওয়া দরকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বিষয়টি আমাদের সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া উচিত।’
অথচ বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব বলছেন, যারা ফিরছে তাদের পক্ষ থেকে করা শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ সবক্ষেত্রে সত্য নয়।
মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশি নারী শ্রমিকরা নিরাপদ নন–এমনটি সবক্ষেত্রে সঠিক নয় উল্লেখ করে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নমিতা হালদার বলেন, ‘আমরা যে নির্যাতনের অভিযোগগুলো পাই, সেগুলোর ভিত্তিতে সৌদি সরকারকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রশ্ন করায় তারা আমাদের জানিয়েছে, ৪৫ শতাংশ নারী চুক্তি ভেঙে দেশে ফেরে এবং সেটা ঘটে তিন মাসের ভেতরে। যারা ফিরছে তাদের পক্ষ থেকে করা শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ সবসময় সত্য নয়; আমি নিজে সেটি জানি।’ অনেক সময় নারীরা বিদেশে যাওয়ার তিন মাস না পেরোতেই ফিরে আসার জন্যও এমন অভিযোগ করে থাকেন বলে জেরায় বেরিয়ে এসেছে বলে জানান তিনি।
সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, তারা সরকারি-বেসরকারিভাবে যাওয়া শ্রমিকদের দায় নেবেন কিন্তু যে বিশালসংখ্যক নারী অবৈধভাবে যান, তাদের নিয়ে কর্তৃপক্ষ বেকায়দায় পড়ে যায়।
প্রবাসী শ্রমিক ও নারী অধিকার নিয়ে যারা কাজ করেন তারা বলছেন, ২০১৫ সালে শ্রমিক পাঠানোর জন্য যে চুক্তি হয়েছিল, তা বাস্তবায়ন সম্ভব না হওয়া এবং সরকারের দিক থেকে সতর্কতা অবলম্বন না করায় বিপুলসংখ্যক নারী ভাগ্য ফেরাতে মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে শূন্যহাতে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। আর দেশে ফেরা নারীরা বলছেন, এখনও শত শত নারী দেশে ফেরার পথ খুঁজছেন।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) দেওয়া তথ্যমতে, ২০১৭ সালে অভিবাসী নারীর সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ১৯ হাজার ৯২৫ জন; যা মোট অভিবাসনের ১৩ শতাংশ। ১৯৯১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত একা অভিবাসন প্রত্যাশী নারী শ্রমিকদের অভিবাসনে বাধা দেওয়া হলেও পরে ২০০৩ এবং ২০০৬ সালে তা কিছুটা শিথিল করা হয়। ২০০৪ সালের পর থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত নারী শ্রমিকের অভিবাসন হার ক্রমাগত বাড়তে থাকে। ২০১৫ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় মোট অভিবাসনের ১৯ শতাংশে। কিন্তু ২০১৬ সালে অভিবাসী নারী শ্রমিকের সংখ্যা নেমে আসে ১৬ শতাংশে এবং ২০১৭ সালে ১৩ শতাংশে।
এর বাইরে কত নারী কী উপায়ে বিদেশ গেছেন সে পরিসংখ্যান নেই। প্রবাসী নারী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, যথাযথ প্রশিক্ষণ না থাকা এবং এজেন্টদের ওপর মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকার কারণে বিদেশে ঘটছে দুর্ঘটনা, মেয়েদের জীবন পড়ছে শঙ্কায়।
এ মাসে দেশে ফিরেছেন নির্যাতনের শিকার রুবিনা (ছদ্মনাম)। রিক্রুটিং এজেন্সি স্টামফোর্ড (আর.এল-১৩৫২) এর মাধ্যমে গত ২০ এপ্রিল সৌদি গিয়ে ২০ দিন গৃহকর্তার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন রুবিনা। তার অভিযোগ, মোটা টাকার বিনিময়ে সৌদিতে তাকে বিক্রি করে দিয়েছিল ওই এজেন্সি।
এর আগে এ মাসের শুরুতে ব্র্যাক মাইগ্রেশন তথ্যকেন্দ্রে গিয়ে অভিযোগ জানান রুবিনার দুই মেয়ে। তারা বলেন, রিক্রুটিং এজেন্সি স্টামফোর্ডের মাধ্যমে গত ২০ এপ্রিল সৌদি আরব যান তাদের মা; এরপর থেকে কোনও যোগাযোগ নেই।
এরপর গত ১ মে ইন্টারনেট নম্বর থেকে এক বাংলাদেশি ফোন করে জানান, রুবিনা মারা গেছেন। একথা শোনার পরে রুবিনার দুই মেয়ে ওই এজেন্সির অফিসে যোগাযোগ করলে উল্টো তাদের হুমকি দেওয়া হয় এবং মায়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সারাদিন অফিসে বসিয়ে রাখা হয়।
জানা যায়, রুবিনার পাসপোর্ট তৈরি করেছিল ওই এজেন্সি। জাতীয় পরিচয়পত্রে তার জন্মসাল ১৯৭৫ হলেও পাসপোর্টে লেখা হয় ১৯৮২। কেবল রুবিনা নয়, গৃহকর্মী হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় পাঠানো নারী শ্রমিকদের প্রায় সবারই বয়স কমিয়ে দেখানো হয়।
নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফেরা নারীদের অভিযোগ–বিদেশে নিয়ে গিয়ে ‘বিক্রি’ করে দেওয়া, যে বাড়িতে কাজ দেওয়া হয় সেখানে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে যাওয়া, পুলিশের হাতে ধরা পড়ে সেই বাড়িতেই আবার ফেরার মতো ঘটনার শিকার হচ্ছেন শত শত নারী। প্রায় প্রতিদিনই নানা ক্ষত নিয়ে ফিরে আসছেন দেশে।
অভিবাসী মহিলা শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশনের (বোমসা) পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম বলেন, ‘গতকালই (শুক্রবার) হুট করে পাঁচজন ফিরেছেন, বিষয়টি এমন নয়। প্রতিদিনই অনেকে বাধ্য হচ্ছেন সর্বস্ব খুইয়ে দেশে ফিরতে। আজও আমাকে কল করে নূরজাহান নামের একজন জানালো, সে পালিয়ে রাস্তায় নেমেছে কিন্তু দূতাবাসটাও চেনে না, ওই দেশের ভাষাও ঠিকমতো জানে না। ফলে দূতাবাস তাকে কে চিনিয়ে দেবে, তাও জানে না। এভাবে বেশিক্ষণ থাকলে স্থানীয় পুলিশ তাকে আটক করে আবারও ওই নির্যাতনকারীদের হাতেই দিয়ে আসবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারকে অবশ্যই বাংলাদেশি নারী শ্রমিকদের ওপর নির্যাতনের বিষয়টি জিরো টলারেন্স হিসেবে বিবেচনায় নিতে হবে। যদি সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে না পারে তাহলে শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করে দেওয়া উচিত। সৌদি মালিকরা যদি নিরাপত্তা, সুরক্ষা, মর্যাদা ও অধিকার–এ চারটি জিনিস না দিতে পারে তাহলে আমাদের মেয়েদের ওখানে পাঠানোর কোনও প্রয়োজন নেই।’
বাংলাদেশ সরকার ২০১৫ সালে যে চুক্তি করেছিল, সেটির ভিত্তিতে গতমাসে আবারও সমঝোতা প্রস্তুত করেছে উল্লেখ করে সুমাইয়া ইসলাম বলেন, ‘ওই ভায়োলেশনগুলো যেন না ঘটে সেটি বলা হয়েছে সেখানে। ২০১৫ সালের চুক্তি অনুযায়ী, পর্যালোচনা করে একটি সমঝোতা হয়েছে কিন্তু এটি বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা সেই মনিটরিং ব্যবস্থার জন্য কি কেউ আছে?’
ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রতিদিনই মেয়েরা ফিরে আসছে। একটু ভালো ভবিষ্যতের জন্য যারা নিজেদের শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে বিদেশ যায়, তারা এমনিতেই ফিরে আসবে–এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। ফেরার কারণ হিসেবে তারা যেমনটা বলছেন, তাদের শরীরে তেমনই ক্ষত আমরা দেখতে পাই। আমরা যেখানে আমাদের নিজেদের মেয়ে পাঠাব না, সেখানে আমরা কেন দেশের মেয়েদের পাঠানোর সাহস করি। বছরের পর বছর এই জিনিস চলে আসছে। এর শেষ হওয়া দরকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বিষয়টি আমাদের সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া উচিত।’
No comments