উন্নয়নশীল দেশের কাতারে টেকসই উত্তরণে যত চ্যালেঞ্জ by মিজানুর রহমান
স্বল্পোন্নত
দেশের সারি থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে বাংলাদেশের উত্তরণে ব্যাপক
সম্ভাবনার হাতছানির পাশাপাশি রয়েছে একগাদা চ্যালেঞ্জ। এমনটাই বলছেন পেশাদার
কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ও খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদরা।
সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরাও তা মানছেন। তাদের মতে, ২০২৭ সাল পর্যন্ত
বাংলাদেশ দুনিয়ার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে এলডিসি বা স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে
চলমান সুবিধাগুলো পাবে। কিন্তু তাতে কী- এখনই বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ
হিসেবে গড়ে ওঠার প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। তা না হলে ২০২৭ সালের পর
বাংলাদেশকে এর জন্য চড়া মূল্য দিতে হবে। এ নিয়ে সম্প্রতি এক আলোচনায় কোনো
রকম রাখঢাকা না করেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন,
অর্থনৈতিতভাবে এখনও আমরা অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছি। আমাদের চ্যালেঞ্জ
বহুমুখী। ১০ লাখ রোহিঙ্গার বোঝা আমাদের ঘাড়ে। আন্তর্জাতিক বন্ধু, উন্নয়ন
সহযোগীদের নিয়ে আমরা সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চলেছি। এ চ্যালেঞ্জের মধ্যে
উন্নয়নশীল দেশের কাতারে আমাদের উত্তরণ। এটি একদিকে যেমন সুসংবাদ তেমনি
চ্যালেঞ্জও নিয়ে এসেছে। ওই ধাপে উত্তরণের তিনটি সূচকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে
রয়েছে। মাথাপিছু আয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১২৩০ ডলার, কিন্তু আমাদের রয়েছে
১২৭২ ডলার এবং পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি অনুযায়ী ১৬০০ ডলারের ওপরে।
মানবসম্পদ সূচকে প্রয়োজন ছিল ৬৬ বা অধিক পয়েন্ট এবং আমাদের রয়েছে ৭২ দশমিক ৮
পয়েন্ট। এ ক্ষেত্রে পুষ্টি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও মাধ্যমিক পর্যায়ে
এনরোলমেন্ট বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয়েছে। অর্থনৈতিক ভঙ্গুর সক্ষমতা বিষয়ে ৩২
বা তার নিচে পয়েন্টের বিপরীতে বাংলাদেশের অবস্থান হচ্ছে ২৪ দশমিক ৮
পয়েন্ট। এসব সম্ভাবনা। কিন্তু বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ২০২৭ সালের পর ইউরোপে
বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাবে না। এ বিকল্প নিয়ে এখনই
আমাদের ভাবতে হবে। মন্ত্রী বলেন, টেকসই অগ্রগতির জন্য সরকারের তরফে
সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে। তার মতে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের
তালিকা থেকে বেরিয়ে যাবে তার পরও তিন বছর গ্রেস পিরিয়ড পাবে। ইইউ জোটে
বাংলাদেশ এখন যে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পায়, তা থাকবে না। সেই সঙ্গে
প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং বৃত্তি ও প্রশিক্ষণের মতো অন্যান্য সহযোগিতা পাওয়া
যাবে না। মোটা দাগে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পর বাংলাদেশ প্রতি বছর রপ্তানি
খাতে প্রায় ২৭০ কোটি মার্কিন ডলার হারাবে বলেও জানান মন্ত্রী মাহমুদ আলী।
তবে তিনি বলেন, এতে হাতাশ হওয়ার কিছু নেই। দেশের আরো অগ্রগতির জন্য সরকার
নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। সেই সঙ্গে বেসরকারি খাত রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনতেও
কাজ করে যাচ্ছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর গবেষণা মতে, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হওয়ার পর্যায়েই একটি দেশকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। এটি সামলে নেয়ার কৌশল প্রণয়নের ওপর উন্নয়নশীল দেশের কাতারে একটি দেশের স্থায়িত্ব নির্ভর করে। বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার চ্যালেঞ্জ বিষয়ে সিপিডির ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের ভাষ্য হচ্ছে- এলডিসি থেকে বের হলে উচ্চসুদে ঋণ নিতে হবে। আবার বাণিজ্যসুবিধা কমে গেলে তা পুষিয়ে নিতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নিতে হবে। তাঁর মতে, বাংলাদেশ যখন এলডিসি থেকে বের হচ্ছে, তখন বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক পরিবেশ অনুকূলে নয়। তাই এখনই একটি উত্তরণকালীন কৌশল ঠিক করা উচিত। খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ ও সিপিডির বর্তমান চেয়ারম্যান রেহমান সোবহানের মতে, এ পর্যন্ত যতগুলো দেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ ঘটিয়েছে তার মধ্যে ছোট দ্বীপদেশগুলো শুধু সংখ্যার অর্জন দিয়ে উত্তরণ হয়েছে। কিন্তু উত্তরণ কতটা টেকসই হলো, সেটাই মূল বিষয়। অনেক দেশ এলডিসি থেকে বের হয়ে সমস্যায় পড়েছে এমন নজিরও রয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, যেসব দেশ এলডিসি থেকে বের হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে একটি দেশও পাওয়া যাবে না, যাদের উদ্যোক্তা শ্রেণি আছে এবং একটি সক্রিয় শ্রমশক্তি আছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী মূল্যায়ন হচ্ছে- প্রাথমিক বিবেচনায় বাংলাদেশ অনেক ভালো করেছে। কিন্তু তার পরও এখানে বৈষম্য বাড়ছে। দারিদ্র্য বিমোচনে অনবরত চেষ্টা হচ্ছে- কিন্তু পুরোপুরি এটি বিমোচন হচ্ছে না। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বিভিন্ন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা এমন একসময়ে এলডিসি থেকে উত্তরণ হতে যাচ্ছি, যখন অনিশ্চয়তা আছে। কিন্তু তাই বলে আমাদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেনের মতে, এলডিসি থেকে বের হয়ে গেলে রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি ডলারের আঘাত পড়বে। সিপিডির মোস্তাফিজুর রহমান মনে করেন এলডিসি থেকে বের হয়ে গেলে বৈশ্বিক ব্যবস্থাপনায় বাজারসুবিধা হারাবে বাংলাদেশ। তবে তাদের সবার প্রায় অভিন্ন বক্তব্য হচ্ছে- উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের টেকসই উত্তরণের জন্য অতি-দারিদ্র্য, বৈষম্য ও দুর্বল আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে কার্যকরভাবে মোকাবিলায় সমন্বিত কৌশল নিয়ে এখনই কাজ শুরু করতে হবে। সে কাজের মধ্যে বাংলাদেশকে যে বিষয়গুলোর ওপর জোর দিতে হবে তা হলো- রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনা, নতুন বাজার সন্ধান, প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি, মানবসম্পদের উন্নয়ন, সম্পদের সঠিক ব্যবহার অর্জন, উৎপাদনশীলতায় উন্নতি এবং উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে বৈদেশিক সহায়তা নিশ্চিত করা।
জুনের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন চায় ইইউ: এদিকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করলেও আগামী জুনের মধ্যে শ্রম আইন ও রফতানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল আইন সংশোধন চেয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। তা না- হলে ইউরোপের দেশগুলোয় স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যে সুবিধা পায় তা-ও হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করে ২৮ রাষ্ট্রের এ জোট। ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ’ শীর্ষক এক সেমিনারে ইইউ রাষ্ট্রদূত রেনসিয়া তিরিঙ্ক বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে ‘বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০১৫’ এবং খসড়া ‘রফতানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল আইন’ আন্তর্জাতিক কনভেনশনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বাংলাদেশ সংগঠন করার অধিকার এবং দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য আলোচনা করার অধিকার সংক্রান্ত দুটি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার কনভেনশন অনুমোদন করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের আইন তাদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায়, এর প্রভাব ইউরোপের বাজারে পড়তে পারে। তিনি বলেন, ‘আগামী জুন মাসে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে ওই আইন দুটি সংশোধন করতে হবে।’ অন্যথায় ইউরোপের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারে এর প্রভাব পড়বে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। এরপর শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতে হলে বাংলাদেশকে মানবাধিকার, শ্রম অধিকার, পরিবেশ এবং সুশাসন বিষয়ে ২৭টি কনভেনশন বাস্তবায়ন করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকের মাধ্যমে সেটি পরীক্ষিত হতে হবে।’ তাহলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে শুল্কমুক্ত বাজার পাবে বাংলাদেশ।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর গবেষণা মতে, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হওয়ার পর্যায়েই একটি দেশকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। এটি সামলে নেয়ার কৌশল প্রণয়নের ওপর উন্নয়নশীল দেশের কাতারে একটি দেশের স্থায়িত্ব নির্ভর করে। বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার চ্যালেঞ্জ বিষয়ে সিপিডির ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের ভাষ্য হচ্ছে- এলডিসি থেকে বের হলে উচ্চসুদে ঋণ নিতে হবে। আবার বাণিজ্যসুবিধা কমে গেলে তা পুষিয়ে নিতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নিতে হবে। তাঁর মতে, বাংলাদেশ যখন এলডিসি থেকে বের হচ্ছে, তখন বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক পরিবেশ অনুকূলে নয়। তাই এখনই একটি উত্তরণকালীন কৌশল ঠিক করা উচিত। খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ ও সিপিডির বর্তমান চেয়ারম্যান রেহমান সোবহানের মতে, এ পর্যন্ত যতগুলো দেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ ঘটিয়েছে তার মধ্যে ছোট দ্বীপদেশগুলো শুধু সংখ্যার অর্জন দিয়ে উত্তরণ হয়েছে। কিন্তু উত্তরণ কতটা টেকসই হলো, সেটাই মূল বিষয়। অনেক দেশ এলডিসি থেকে বের হয়ে সমস্যায় পড়েছে এমন নজিরও রয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, যেসব দেশ এলডিসি থেকে বের হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে একটি দেশও পাওয়া যাবে না, যাদের উদ্যোক্তা শ্রেণি আছে এবং একটি সক্রিয় শ্রমশক্তি আছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী মূল্যায়ন হচ্ছে- প্রাথমিক বিবেচনায় বাংলাদেশ অনেক ভালো করেছে। কিন্তু তার পরও এখানে বৈষম্য বাড়ছে। দারিদ্র্য বিমোচনে অনবরত চেষ্টা হচ্ছে- কিন্তু পুরোপুরি এটি বিমোচন হচ্ছে না। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বিভিন্ন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা এমন একসময়ে এলডিসি থেকে উত্তরণ হতে যাচ্ছি, যখন অনিশ্চয়তা আছে। কিন্তু তাই বলে আমাদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেনের মতে, এলডিসি থেকে বের হয়ে গেলে রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি ডলারের আঘাত পড়বে। সিপিডির মোস্তাফিজুর রহমান মনে করেন এলডিসি থেকে বের হয়ে গেলে বৈশ্বিক ব্যবস্থাপনায় বাজারসুবিধা হারাবে বাংলাদেশ। তবে তাদের সবার প্রায় অভিন্ন বক্তব্য হচ্ছে- উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের টেকসই উত্তরণের জন্য অতি-দারিদ্র্য, বৈষম্য ও দুর্বল আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে কার্যকরভাবে মোকাবিলায় সমন্বিত কৌশল নিয়ে এখনই কাজ শুরু করতে হবে। সে কাজের মধ্যে বাংলাদেশকে যে বিষয়গুলোর ওপর জোর দিতে হবে তা হলো- রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনা, নতুন বাজার সন্ধান, প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি, মানবসম্পদের উন্নয়ন, সম্পদের সঠিক ব্যবহার অর্জন, উৎপাদনশীলতায় উন্নতি এবং উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে বৈদেশিক সহায়তা নিশ্চিত করা।
জুনের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন চায় ইইউ: এদিকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করলেও আগামী জুনের মধ্যে শ্রম আইন ও রফতানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল আইন সংশোধন চেয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। তা না- হলে ইউরোপের দেশগুলোয় স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যে সুবিধা পায় তা-ও হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করে ২৮ রাষ্ট্রের এ জোট। ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ’ শীর্ষক এক সেমিনারে ইইউ রাষ্ট্রদূত রেনসিয়া তিরিঙ্ক বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে ‘বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০১৫’ এবং খসড়া ‘রফতানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল আইন’ আন্তর্জাতিক কনভেনশনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বাংলাদেশ সংগঠন করার অধিকার এবং দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য আলোচনা করার অধিকার সংক্রান্ত দুটি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার কনভেনশন অনুমোদন করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের আইন তাদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায়, এর প্রভাব ইউরোপের বাজারে পড়তে পারে। তিনি বলেন, ‘আগামী জুন মাসে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে ওই আইন দুটি সংশোধন করতে হবে।’ অন্যথায় ইউরোপের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারে এর প্রভাব পড়বে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। এরপর শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতে হলে বাংলাদেশকে মানবাধিকার, শ্রম অধিকার, পরিবেশ এবং সুশাসন বিষয়ে ২৭টি কনভেনশন বাস্তবায়ন করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকের মাধ্যমে সেটি পরীক্ষিত হতে হবে।’ তাহলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে শুল্কমুক্ত বাজার পাবে বাংলাদেশ।
No comments