শ্রমিকদের জন্য দেশে প্রথম বিশেষায়িত হাসপাতাল by দীন ইসলাম
সরকারি-বেসরকারি
অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে শ্রমিকদের জন্য দেশে প্রথম বিশেষায়িত
হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় অবস্থিত শ্রম অধিদপ্তরের শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের ১০১
শতাংশ জমিতে এই হাসপাতাল নির্মিত হবে। শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের
মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা দিতে হাসপাতালটি নির্মাণ করা হবে। সরকারি-বেসরকারি
অংশীদারিত্বের (পিপিপি) আওতায় ৩০০ শয্যার এই হাসপাতাল নির্মাণে ব্যয় হবে
প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে শ্রম অধিদপ্তর এবং
এএফসি হেলথ লিমিডেট ও ফর্টিস হেলথকেয়ার। শ্রম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে,
নারায়ণগঞ্জে নদীবন্দর, শিল্পাঞ্চল ও অন্যান্য উৎপাদনমুখী শিল্প-কারখানা
স্থাপনের ফলে সেখানকার শ্রমিকদের মধ্যে পেশাগত কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত
হওয়ার হার বেড়ে চলেছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় চিকিৎসাসেবা অপ্রতুল হওয়ায়
অনেককেই দূরবর্তী হাসপাতালের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে। এ অঞ্চলে বর্তমানে প্রতি
দুই হাজার রোগীর জন্য একটি শয্যা ও একজন ডাক্তার রয়েছেন। এসব রোগীর মধ্যে
উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পেশাগত কারণে রোগে আক্রান্ত। বিদ্যমান স্বাস্থ্যসেবা
চাহিদা পূরণ ও আরো উন্নত সেবা প্রদানের জন্য ৩০০ শয্যার হাসপাতাল প্রকল্পের
প্রস্তাবনা করা হয়েছে, যার মধ্যে আক্রান্ত শ্রমিকদের জন্য ১০০টি শয্যা
সংরক্ষিত থাকবে। প্রস্তাবনায় বলা হয়, বর্তমানে দেশে ছয় কোটি শ্রমিক রয়েছে।
এর মধ্যে অনেকে বিভিন্ন শিল্প যেমন- পোশাক, চামড়া, নির্মাণ, পরিবহন, পাট,
চা, তামাক, ওষুধ প্রভৃতিতে মজুর হিসেবে কাজ করছেন। বেশিরভাগ পেশাই কায়িক
শ্রমভিত্তিক। তাতে বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি জড়িত। পাশাপাশি তাদের পরিবারের
সদস্যরাও উপযুক্ত বা প্রত্যাশিত চিকিৎসাও পান না। তাই সুস্থ শ্রমিকের
অপ্রতুলতার কারণে শিল্প ও অন্যান্য উৎপাদনশীল খাতের উৎপাদনশীলতা কমে
যাচ্ছে। এজন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায়
বিভিন্ন কল্যাণকেন্দ্র পরিচালনা করে। এই কল্যাণ কেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে
দেশজুড়ে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকরা সেবা নিয়ে থাকেন। এসব
কল্যাণ কেন্দ্রের মধ্যে বেশ কয়েকটিকে স্বাস্থ্যসেবার ক্রমবর্ধমান চাহিদা
মেটাতে আরো উন্নত করারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
No comments