বয়স জালিয়াতি করে ফেঁসে যাচ্ছেন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ by নূর মোহাম্মদ
চাকরিতে
প্রবেশের বয়স জালিয়াতি করে ফেঁসে যাচ্ছেন বরিশালের সরকারি হাতেম আলী
কলেজের অধ্যক্ষ সচীন কুমার রায়। যশোর শিক্ষা বোর্ডের তদন্তে বয়স জালিয়াতি
প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। অধ্যক্ষের
বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ১৯৮৫ অনুযায়ী এ
ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এজন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কাছে
অধ্যক্ষের ব্যক্তিগত তথ্য পিডিএস জরুরি ভিত্তিতে মন্ত্রণালয়কে দেয়ার জন্য
নির্দেশ দিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জাকিয়া খানম স্বাক্ষরিত এক
চিঠিতে তার পিডিএস চাওয়া হয়।
জানতে চাইলে হাতেম আলী কলেজের অধ্যক্ষ সচীন কুমার রায় বলেন, এ ব্যাপারে আমি ফোনে কোনো কথা বলতে চাই না। আপনি আমার কলেজে আসেন; সব ধরনের ডকুমেন্ট আপনাকে দেখানো হবে। আমার কাছে এর পক্ষে ১৬ ধরনের কাগজপত্র আছে।
জানা গেছে, একটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে মাউশি ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর মোহাম্মদ ইউসুফ, মাউশির উপ-পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন সরকার ও এইআরএম ইউনিটের সহকারী পরিচালক আশেকুল হক এ তদন্ত করেন। তদন্তকালে কলেজের অধ্যক্ষের মৌখিক ও লিখিত বক্তব্য ছাড়াও যশোর শিক্ষাবোর্ডের পুরো ফাইল খুঁটিনাটি করে তদন্ত করেন। তদন্তে সূত্রে জানা গেছে, সচীন কুমার রায় সপ্তম বিসিএস দিয়ে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার সার্ভিসে যোগ দেন ১৯৮৭ সালে। চাকরিতে যোগদানের সময় সব কাগজপত্র অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৮। ২৭ বছর ধরে এভাবেই চলে আসছিল। ২০১৪ সালে সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদোন্নতি ও পদায়নের সময় তার জন্ম তারিখ বদল হয়ে ১৯৬০ দেখানো হয়। পদোন্নতির কাগজপত্রে তার জন্ম তারিখ দেখানো হয় ১লা ফেব্রুয়ারি ১৯৬০। তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়, তিনি দুর্নীতি করে তার বয়স ২ বছর কমিয়েছেন; যাতে সরকারের বিরাট আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। আর সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় যে বয়স উল্লেখ করেন তা কোনো অবস্থায় পরিবর্তন করা যায় না। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস রুল বিধি-৯ অনুযায়ী তিনি বয়স সংশোধন করতে পারেন না। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর শিক্ষা ক্যাডার, যশোর শিক্ষা বোর্ড- এমনকি ওই কলেজে চলছে তুমুল আলোচনা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সচীন কুমার রায় বলেন, এটি মীমাংসিত বিষয়। ২৯ বছর আগেই এটি শেষ হয়ে গেছে। আমি চাকরিতে যোগদানের আগে বয়স পরিবর্তন করার আবেদন করি। আমি ১৬ ধরনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বোর্ডে জমা দিই। সেই কাগজপত্রের ভিত্তিতে বোর্ড আমার বয়স কমিয়েছে। বোর্ডের কাগজপত্রের ভিত্তিতে মন্ত্রণালয় আমার বয়স কমিয়েছে। এটি নিয়ে নতুন বিতর্ক হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বয়স কমানোর যৌক্তিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন করার সময় অফিস সহকারী ভুলে আমার বয়স দুই বছর বেশি লেখে। পরে আমার বাবা সংশোধনের উদ্যোগ নেন।
জানা গেছে, সচীন কুমারের বয়স আগেই কমানো হলেও মন্ত্রণালয় তা সংশোধন করেছে গত বছর। ওই বছর অবসরে যাওয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের স্ত্রী সচীন কুমারের চাকরির ব্যাচমেট। সেই সূত্র ধরে তিনি যখন ভারপ্রাপ্ত সচিবের দায়িত্ব পান, তখন তার ফাইলটি অনুমোদন করিয়ে দেন। এরপর থেকে এটি নিয়ে মন্ত্রণালয়, মাউশি- এমনকি বরিশালের সৈয়দ হাতেম আলী কলেজে তোলপাড় চলছে।
এ ব্যাপারে যশোর শিক্ষা বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এটি তো অনেক আগের ঘটনা। ওই সময় যারা তার বয়স সংশোধন করেছিলেন, তারাই এর প্রকৃত ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। তবে বয়স কমানোর ব্যাপারে বোর্ড সবসময় সর্বোচ্চ সতর্ক থাকে। হাজারো আবেদন থেকে যথেষ্ট প্রমাণ থাকার পরও দু-একটি আবেদনের বয়স হয়তো কমে। সেটিও করা হয় বয়স যদি ১ থেকে ১১ মাস কমানোর আবেদন করা হয়। আর চাকরিতে যোগদান করার পর কারো বয়স কমানোর ইতিহাস আমার জানা নেই। আর যশোর বোর্ডের সচিব ড. মোল্লা আমির হোসেন বলেন, এটি নিয়ে বরিশালে অনেক কিছু হচ্ছে বলে আমরা শুনেছি। বোর্ডের এ মুহূর্তে কিছুই করার নেই। তবে মন্ত্রণালয় বা আদালত যদি তদন্ত করতে বলে আমরা সেই মোতাবেক তদন্ত করতে প্রস্তুত।
তদন্তে সূত্রে জানা গেছে, সরকারি চাকরিতে এপিট-ওপিট (বয়স কমানোর দালিলিক প্রমাণ) গ্রহণযোগ্য নয়। এটি জেনেও তিনি চাকরিতে যোগদানের পর বয়স কমিয়েছেন। অর্থাৎ তিনি অতিরিক্ত আরও দুই বছর চাকরি করতে চান। এ ছাড়া তিনি যে প্রক্রিয়ায় বয়স কমিয়েছেন, পুরোটাই সন্দেহজনক। প্রথমত এসএসসি থেকে এইচএসসি পর্যন্ত বোর্ড একজন শিক্ষার্থীর বয়স নির্ধারণ করে ১৪ থেকে ২০ বছর। এর মধ্যে কেউ যদি বয়স কমানোর আবেদন করে, সেখানে সর্বোচ্চ ১ থেকে ১১ মাস পর্যন্ত কমানো হয়। এর বেশি হলে সব কাগজপত্র থাকার পরও বাতিল বলে ধরে নেয়া হয়। দ্বিতীয়ত ওই কর্মকর্তা এসএসসি, এইচএসসি ও স্নাতক পাস করার পর বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এবং চাকরিতে যোগদান করেন। বয়স কমাতে এই দীর্ঘসময় লাগার কথা নয়। তা ছাড়া চাকরিতে এপিট-ওপিট শর্তজুড়ে দেয়া ছিল। তৃতীয়ত বয়স কমার পর তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়, হিসাবরক্ষক (এজি) অফিসকে তা গ্রহণ করতে হবে। সাধারণত এ ধরনের ঘটনা বা বয়স কমানো কখনো এজি অফিস গ্রহণ করে না। সমস্যা শুধু এখানেই নয়, তিনি যখন অবসরে যাবেন, তখন তার জন্ম সাল কোনটা ধরবে ১৯৫৮ নাকি ১৯৬০।
জানতে চাইলে হাতেম আলী কলেজের অধ্যক্ষ সচীন কুমার রায় বলেন, এ ব্যাপারে আমি ফোনে কোনো কথা বলতে চাই না। আপনি আমার কলেজে আসেন; সব ধরনের ডকুমেন্ট আপনাকে দেখানো হবে। আমার কাছে এর পক্ষে ১৬ ধরনের কাগজপত্র আছে।
জানা গেছে, একটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে মাউশি ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর মোহাম্মদ ইউসুফ, মাউশির উপ-পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন সরকার ও এইআরএম ইউনিটের সহকারী পরিচালক আশেকুল হক এ তদন্ত করেন। তদন্তকালে কলেজের অধ্যক্ষের মৌখিক ও লিখিত বক্তব্য ছাড়াও যশোর শিক্ষাবোর্ডের পুরো ফাইল খুঁটিনাটি করে তদন্ত করেন। তদন্তে সূত্রে জানা গেছে, সচীন কুমার রায় সপ্তম বিসিএস দিয়ে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার সার্ভিসে যোগ দেন ১৯৮৭ সালে। চাকরিতে যোগদানের সময় সব কাগজপত্র অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৮। ২৭ বছর ধরে এভাবেই চলে আসছিল। ২০১৪ সালে সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদোন্নতি ও পদায়নের সময় তার জন্ম তারিখ বদল হয়ে ১৯৬০ দেখানো হয়। পদোন্নতির কাগজপত্রে তার জন্ম তারিখ দেখানো হয় ১লা ফেব্রুয়ারি ১৯৬০। তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়, তিনি দুর্নীতি করে তার বয়স ২ বছর কমিয়েছেন; যাতে সরকারের বিরাট আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। আর সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় যে বয়স উল্লেখ করেন তা কোনো অবস্থায় পরিবর্তন করা যায় না। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস রুল বিধি-৯ অনুযায়ী তিনি বয়স সংশোধন করতে পারেন না। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর শিক্ষা ক্যাডার, যশোর শিক্ষা বোর্ড- এমনকি ওই কলেজে চলছে তুমুল আলোচনা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সচীন কুমার রায় বলেন, এটি মীমাংসিত বিষয়। ২৯ বছর আগেই এটি শেষ হয়ে গেছে। আমি চাকরিতে যোগদানের আগে বয়স পরিবর্তন করার আবেদন করি। আমি ১৬ ধরনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বোর্ডে জমা দিই। সেই কাগজপত্রের ভিত্তিতে বোর্ড আমার বয়স কমিয়েছে। বোর্ডের কাগজপত্রের ভিত্তিতে মন্ত্রণালয় আমার বয়স কমিয়েছে। এটি নিয়ে নতুন বিতর্ক হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বয়স কমানোর যৌক্তিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন করার সময় অফিস সহকারী ভুলে আমার বয়স দুই বছর বেশি লেখে। পরে আমার বাবা সংশোধনের উদ্যোগ নেন।
জানা গেছে, সচীন কুমারের বয়স আগেই কমানো হলেও মন্ত্রণালয় তা সংশোধন করেছে গত বছর। ওই বছর অবসরে যাওয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের স্ত্রী সচীন কুমারের চাকরির ব্যাচমেট। সেই সূত্র ধরে তিনি যখন ভারপ্রাপ্ত সচিবের দায়িত্ব পান, তখন তার ফাইলটি অনুমোদন করিয়ে দেন। এরপর থেকে এটি নিয়ে মন্ত্রণালয়, মাউশি- এমনকি বরিশালের সৈয়দ হাতেম আলী কলেজে তোলপাড় চলছে।
এ ব্যাপারে যশোর শিক্ষা বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এটি তো অনেক আগের ঘটনা। ওই সময় যারা তার বয়স সংশোধন করেছিলেন, তারাই এর প্রকৃত ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। তবে বয়স কমানোর ব্যাপারে বোর্ড সবসময় সর্বোচ্চ সতর্ক থাকে। হাজারো আবেদন থেকে যথেষ্ট প্রমাণ থাকার পরও দু-একটি আবেদনের বয়স হয়তো কমে। সেটিও করা হয় বয়স যদি ১ থেকে ১১ মাস কমানোর আবেদন করা হয়। আর চাকরিতে যোগদান করার পর কারো বয়স কমানোর ইতিহাস আমার জানা নেই। আর যশোর বোর্ডের সচিব ড. মোল্লা আমির হোসেন বলেন, এটি নিয়ে বরিশালে অনেক কিছু হচ্ছে বলে আমরা শুনেছি। বোর্ডের এ মুহূর্তে কিছুই করার নেই। তবে মন্ত্রণালয় বা আদালত যদি তদন্ত করতে বলে আমরা সেই মোতাবেক তদন্ত করতে প্রস্তুত।
তদন্তে সূত্রে জানা গেছে, সরকারি চাকরিতে এপিট-ওপিট (বয়স কমানোর দালিলিক প্রমাণ) গ্রহণযোগ্য নয়। এটি জেনেও তিনি চাকরিতে যোগদানের পর বয়স কমিয়েছেন। অর্থাৎ তিনি অতিরিক্ত আরও দুই বছর চাকরি করতে চান। এ ছাড়া তিনি যে প্রক্রিয়ায় বয়স কমিয়েছেন, পুরোটাই সন্দেহজনক। প্রথমত এসএসসি থেকে এইচএসসি পর্যন্ত বোর্ড একজন শিক্ষার্থীর বয়স নির্ধারণ করে ১৪ থেকে ২০ বছর। এর মধ্যে কেউ যদি বয়স কমানোর আবেদন করে, সেখানে সর্বোচ্চ ১ থেকে ১১ মাস পর্যন্ত কমানো হয়। এর বেশি হলে সব কাগজপত্র থাকার পরও বাতিল বলে ধরে নেয়া হয়। দ্বিতীয়ত ওই কর্মকর্তা এসএসসি, এইচএসসি ও স্নাতক পাস করার পর বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এবং চাকরিতে যোগদান করেন। বয়স কমাতে এই দীর্ঘসময় লাগার কথা নয়। তা ছাড়া চাকরিতে এপিট-ওপিট শর্তজুড়ে দেয়া ছিল। তৃতীয়ত বয়স কমার পর তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়, হিসাবরক্ষক (এজি) অফিসকে তা গ্রহণ করতে হবে। সাধারণত এ ধরনের ঘটনা বা বয়স কমানো কখনো এজি অফিস গ্রহণ করে না। সমস্যা শুধু এখানেই নয়, তিনি যখন অবসরে যাবেন, তখন তার জন্ম সাল কোনটা ধরবে ১৯৫৮ নাকি ১৯৬০।
No comments