অপচয় by তাওহিদ মিলটন
‘এক গ্রামের এক কৃষক তিন মাস রোদ-বৃষ্টি
মাথায় নিয়ে কঠিন পরিশ্রম করে জমিতে ধান ফলাল। ভালো ধান হলো। সেই ধান চাল
হয়ে বাজার ঘুরে চলে গেল মানুষের ঘরে ঘরে।
‘আরেক চাষি আলু
ফলাত। আড়াই মাস কঠিন পরিশ্রম করে আলু ফলাল। ফলন ভালো হলো। সেই আলু জমি থেকে
তোলা হলো। এরপর বাজার ঘুরে চলে গেল মানুষের ঘরে ঘরে।
‘এক খামারির ছিল মোরগের খামার। এক মাস কঠিন পরিশ্রম করে ডিম ফোটানো বাচ্চাগুলোকে খাওয়ার উপযোগী করে তুলল। বিভিন্ন বাজার-দোকান ঘুরে সেই মোরগগুলো চলে গেল মানুষের ঘরে ঘরে।
‘ঘরে ঘরে রান্নাঘরে রান্না হলো। চাল ধুয়ে ভাত হলো। মাড় গেলে বাতাসে রেখে ঝরঝরা করা হলো সেই ভাত। আলুর খোসা ছাড়ানো হলে। সেই আলুগুলো টুকরো করে রাখা হলো মোরগের মাংসের সঙ্গে দেওয়ার জন্য। মোরগ জবাই হলো। চামড়া থেকে পালক বাছা হলো। ছোট ছোট টুকরা করা হলো। ধুয়ে মসলা মাখিয়ে আলুসহ স্বাদ করে রান্না করা হলো। দুই ঘণ্টা গরমে পরিশ্রম করে রাঁধুনি রান্না শেষে রান্নাঘরের আলো নিভিয়ে বের হলো।
এরপর খাওয়ার পালা। টেবিলে খাবার দেওয়া হলো। সবাই ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে খেতে বসল। মজা করে ঝরঝরা ভাত আর মোরগের মাংসের ঝোল, আলু আর মোরগের মাংস দিয়ে তৃপ্তি নিয়ে খেল। সব মিলিয়ে সময় লাগল ২৫ মিনিটের মতো।
‘এর পরের অংশটি আরও সংক্ষিপ্ত। এত দিনের পরিশ্রমের ফলাফলটা এত অল্পতেই যদি শেষ হয়ে যায়, তাহলে কী লাভ এত পরিশ্রম করে? কী মূল্য আছে তিন মাস ধরে ধান চাষ করে চাল উৎপাদনের, কী লাভ দুই-আড়াই মাস খেটে আলু ফলানোর, কী লাভ এত যত্ন করে মোরগের ছানাগুলোকে বড় করার, যদি স্থায়িত্ব এত অল্পই হবে!
‘যথাযোগ্য স্বীকৃতির অভাবে এভাবেই আমাদের কৃষকেরা আস্তে আস্তে উৎপাদনবিমুখ হয়ে পড়ছে! ফলে জিনিসের দাম বেড়েই চলেছে। কৃষকদের কাজের স্বীকৃতি দিতে হবে আমাদের। ওরাই দেশের জ্বালানি, ওদের ছাড়া দেশ অচল।’
নেতা তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যটা শেষ করলেন। আর এভাবেই রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে এলাকা ঘুরে ঘুরে তিন মাস এই সংক্ষিপ্ত কাজ করে আগামী পাঁচ বছরের ফলাফলটা নিশ্চিত করবেন তিনি।
‘এক খামারির ছিল মোরগের খামার। এক মাস কঠিন পরিশ্রম করে ডিম ফোটানো বাচ্চাগুলোকে খাওয়ার উপযোগী করে তুলল। বিভিন্ন বাজার-দোকান ঘুরে সেই মোরগগুলো চলে গেল মানুষের ঘরে ঘরে।
‘ঘরে ঘরে রান্নাঘরে রান্না হলো। চাল ধুয়ে ভাত হলো। মাড় গেলে বাতাসে রেখে ঝরঝরা করা হলো সেই ভাত। আলুর খোসা ছাড়ানো হলে। সেই আলুগুলো টুকরো করে রাখা হলো মোরগের মাংসের সঙ্গে দেওয়ার জন্য। মোরগ জবাই হলো। চামড়া থেকে পালক বাছা হলো। ছোট ছোট টুকরা করা হলো। ধুয়ে মসলা মাখিয়ে আলুসহ স্বাদ করে রান্না করা হলো। দুই ঘণ্টা গরমে পরিশ্রম করে রাঁধুনি রান্না শেষে রান্নাঘরের আলো নিভিয়ে বের হলো।
এরপর খাওয়ার পালা। টেবিলে খাবার দেওয়া হলো। সবাই ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে খেতে বসল। মজা করে ঝরঝরা ভাত আর মোরগের মাংসের ঝোল, আলু আর মোরগের মাংস দিয়ে তৃপ্তি নিয়ে খেল। সব মিলিয়ে সময় লাগল ২৫ মিনিটের মতো।
‘এর পরের অংশটি আরও সংক্ষিপ্ত। এত দিনের পরিশ্রমের ফলাফলটা এত অল্পতেই যদি শেষ হয়ে যায়, তাহলে কী লাভ এত পরিশ্রম করে? কী মূল্য আছে তিন মাস ধরে ধান চাষ করে চাল উৎপাদনের, কী লাভ দুই-আড়াই মাস খেটে আলু ফলানোর, কী লাভ এত যত্ন করে মোরগের ছানাগুলোকে বড় করার, যদি স্থায়িত্ব এত অল্পই হবে!
‘যথাযোগ্য স্বীকৃতির অভাবে এভাবেই আমাদের কৃষকেরা আস্তে আস্তে উৎপাদনবিমুখ হয়ে পড়ছে! ফলে জিনিসের দাম বেড়েই চলেছে। কৃষকদের কাজের স্বীকৃতি দিতে হবে আমাদের। ওরাই দেশের জ্বালানি, ওদের ছাড়া দেশ অচল।’
নেতা তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যটা শেষ করলেন। আর এভাবেই রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে এলাকা ঘুরে ঘুরে তিন মাস এই সংক্ষিপ্ত কাজ করে আগামী পাঁচ বছরের ফলাফলটা নিশ্চিত করবেন তিনি।
No comments