গাজীপুর সিটি নির্বাচন-কাঁদতে কাঁদতে আজমতকে সমর্থন জাহাঙ্গীরের-রাস্তায় শুয়ে সমর্থকদের প্রতিবাদ
সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ১৪ দল সমর্থিত প্রার্থী
অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করলেন সম্মিলিত নাগরিক
কমিটির প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম।
গতকাল রবিবার বিকেলে
জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থকের উপস্থিতিতে এক সংবাদ
সম্মেলনে চোখের পানি মুছতে মুছতে তিনি সমর্থন জানান আজমত উল্লার প্রতি।
সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'আমার দল আওয়ামী লীগ আমার প্রাণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার অভিভাবক। নেত্রীর নির্দেশে আমি নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে মহাজোট প্রার্থী আমার শ্রদ্ধেয় বড় ভাই আজমত উল্লাকে সমর্থন জানাচ্ছি। আমার সঙ্গে যাঁরা দীর্ঘদিন সুখে-দুঃখে ছিলেন, তাঁদের সবাইকে আগামী ৬ জুলাই আজমত ভাইকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে হবে।' কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, 'নেত্রী আমার মায়ের মতো। নেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে হলে, মহাজোট প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করতেই হবে। আমরা সবাই আগামী ৬ জুলাইয়ের নির্বাচনে একসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করব।'
এর আগে বিকেল ৩টায় সংবাদ সম্মেলনে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হন জাহাঙ্গীর আলম। কিন্তু রাস্তায় কয়েক দফা আনারস নিয়ে মিছিল করে সমর্থকরা জাহাঙ্গীরের পথ আটকায়। একপর্যায়ে শহরের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক রাস্তায় শুয়ে জাহাঙ্গীরের পথ আটকে দেয়। তারা 'আনারস' 'আনারস' বলে স্লোগান দিতে থাকে। 'আনারস' হলো জাহাঙ্গীরের নির্বাচনী প্রতীক। ঘণ্টাখানেক রাস্তা অবরোধ করে রেখে কর্মী-সমর্থকরা জাহাঙ্গীরকে সংবাদ সম্মেলনে যেতে নিষেধ করে।
টঙ্গীর এরশাদনগর থেকে এসেছেন ফাতেমা বেগম, নূরজাহান মনি, পেয়ারা বেগম ও আলেয়া বেগম। চার নারী কর্মীসহ ২০ থেকে ২৫ জন জাহাঙ্গীরের গাড়িবহরের সামনে শুয়ে পড়েন। তাদের দাবি, কোনোভাবেই সংবাদ সম্মেলনে গিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিতে দেবেন না তারা জাহাঙ্গীরকে। নুরজাহান ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, 'আমাদের নেতাকে আজমত উল্লার লোকজন জোরপূর্বক বসিয়ে দেওয়ার জন্য সংবাদ সম্মেলনে নিয়ে যাচ্ছেন।' পেয়ারা বেগম বলেন, 'আমার নেতা জাহাঙ্গীরকে নিয়ে জোরপূর্বক সমর্থন দিলেও আমরা অন্য কাউকে ভোট দিব না, আমরা আনারস মার্কায় ভোট দিবো।' কোনাবাড়ী এলাকার ভোটার আরিফুল ইসলাম বলেন, 'যাকে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি তাকেই ভোট দিব, নেতা সরে গেলেও তাকেই ভোট দিব।'
একপর্যায়ে মহাজোট সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক সংসদ সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল হক, সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেলসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা গিয়ে জাহাঙ্গীরের কর্মী-সমর্থকদের বুঝিয়ে কিছুটা শান্ত করেন। বিকেল ৫টায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পৌঁছান জাহাঙ্গীর আলম।
সংবাদ সম্মেলনে ভোটারদের উদ্দেশে জাহাঙ্গীর বলেন, 'আপনারা আমার প্রতীকে (আনারস) ভোট না দিয়ে আজমত উল্লার দোয়াত-কলমে ভোট দিন। প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে এর বিকল্প নেই।' কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, 'কয়েক দিন অসুস্থ হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। আমার মা-ও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আছেন। আমার মায়ের মতো নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনামতোই গাজীপুরে এসেছি।'
মহাজোট সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লার দৃষ্টি আকর্ষণ করে জাহাঙ্গীর বলেন, 'দীর্ঘদিন আমার সঙ্গে যেসব কর্মী-সমর্থক আছেন, তাঁদের সঙ্গে যেন কোনো দুর্ব্যবহার করা না হয়। কাউকে ছোট করে যেন কথা না বলা হয়। আমি নির্বাচনী প্রচার চলাকালীন সাধারণ ভোটারদের অনেক পরিকল্পনার কথা বলেছিলাম। আপনার কাছে প্রত্যাশা করি, আপনি মেয়র নির্বাচিত হলে গাজীপুরে আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবেন, যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে।' স্বাস্থ্যসেবা, শ্রমিকদের সেবার মান বৃদ্ধি প্রকল্প, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ, খেলার মাঠ, কবরস্থান, ঈদগাসহ একাধিক ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি, জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদার প্রমুখ।
এর আগে দুপুরে ভোগড়ায় নিজ বাসভবনে কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে জাহাঙ্গীর বলেন, 'কেউ মন খারাপ করবেন না, আমি নির্বাচন থেকে সরে গেলেও আপনাদের কাছ থেকে সরে যাইনি। আমার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আপনাদের সঙ্গে থাকব। আপনাদের জন্য আমার বাড়ির দরজা সব সময় খোলা থাকবে। আপনারাই আমার মূল শক্তি, আপনারাই আমার মাথার ওপর ছায়া।'
জাহাঙ্গীর আলম শহরের রাজবাড়ী সড়কসংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ে পৌঁছার আগেই শত শত নেতা-কর্মী সেখানে ভিড় জমায়। একপর্যায়ে দলীয় কার্যালয় লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। জাহাঙ্গীর আলমকে দেখতে পেয়ে কর্মী-সমর্থকরা 'আমাদের নেতা জাহাঙ্গীর ভাই, মেয়র পদে তাঁকে চাই', 'জাহাঙ্গীর ভাইকে ছাড়া কাউকে মানব না, মানব না' ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে।
যেভাবে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে : গতকাল দুপুরে ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতাল থেকে সরাসরি জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে যাওয়ার কথা ছিল জাহাঙ্গীর আলমের। সেখানে অপেক্ষমাণ আওয়ামী লীগসমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী আজমত উল্লা খানের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে আজমতকেই সমর্থন জানানোর কথা ছিল তাঁর। কিন্তু দুপুর ২টার দিকের গাজীপুরে ফিরলেও সরাসরি দলীয় কার্যালয়ে যেতে পারেননি জাহাঙ্গীর। গাজীপুর উপজেলার সাবেক এই ভাইস চেয়ারম্যানের সমর্থনে বিভিন্ন স্থানে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুই পাশে হাজার হাজার মানুষ আনারস হাতে দাঁড়িয়ে থাকেন। তারা জাহাঙ্গীরের সমর্থনে স্লোগানও দিতে থাকেন। সমর্থকদের চাপেই জাহাঙ্গীর জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে না গিয়ে সোজা ভোগড়ায় নিজ বাড়িতে চলে যান।
বাসভবনে হাজারো মানুষের ভিড় : গাজীপুরের বাসন সড়কে জাহাঙ্গীরের বাসভবন। ভবনটির আশপাশে তিলধারণের ঠাঁই ছিল না গতকাল। হাজারো কর্মী-সমর্থক ভিড় করেন জাহাঙ্গীরের বাড়ির সামনে। দুপুরে প্রচণ্ড রোদের মধ্যে আনারস হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের দত্তপাড়ার ভোটার ষাটোর্ধ্ব নাসিরউদ্দিন মিয়া। তিনি বলেন, 'নেতার জন্য রোদ আর বৃষ্টি কী! কোনো কিছু সমস্যা না। নেতার মুখখানি অনেক দিন ধরে দেখি না। উনাকে এক নজর দেখার জন্যই আসছি।'
জাহাঙ্গীর তো আজমত উল্লাকে সমর্থন দিতে আসছেন, এটা কিভাবে নিচ্ছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কোনাবাড়ী এলাকার আনোয়ার হোসেন বলেন, 'নেতা সমর্থন দিলেও ভোট অন্য কাউকে দিব না। আর নেতার সমর্থন কিভাবে নেওয়া হচ্ছে সেটাও আমরা ভালো করে জানি।' শহরের লক্ষ্মীপুরা এলাকায় গলায় তাজা আনারস জুলিয়ে রিকশা চালাচ্ছিলেন মো. মজনু মিয়া। তিনি বলেন, 'নেতার কথা না কইয়া কোনো উপায় নাই। যার কারণে আজ আমি পরিবার নিয়া তিন বেলা খাইতে পারতাছি, ৩০ হাজার টাকায় এই রিকশাটি তিনি কিনে দিয়েছেন। আমার মতো অনেকেই পরিবার নিয়ে সুখে আছি।'
সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'আমার দল আওয়ামী লীগ আমার প্রাণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার অভিভাবক। নেত্রীর নির্দেশে আমি নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে মহাজোট প্রার্থী আমার শ্রদ্ধেয় বড় ভাই আজমত উল্লাকে সমর্থন জানাচ্ছি। আমার সঙ্গে যাঁরা দীর্ঘদিন সুখে-দুঃখে ছিলেন, তাঁদের সবাইকে আগামী ৬ জুলাই আজমত ভাইকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে হবে।' কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, 'নেত্রী আমার মায়ের মতো। নেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে হলে, মহাজোট প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করতেই হবে। আমরা সবাই আগামী ৬ জুলাইয়ের নির্বাচনে একসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করব।'
এর আগে বিকেল ৩টায় সংবাদ সম্মেলনে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হন জাহাঙ্গীর আলম। কিন্তু রাস্তায় কয়েক দফা আনারস নিয়ে মিছিল করে সমর্থকরা জাহাঙ্গীরের পথ আটকায়। একপর্যায়ে শহরের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক রাস্তায় শুয়ে জাহাঙ্গীরের পথ আটকে দেয়। তারা 'আনারস' 'আনারস' বলে স্লোগান দিতে থাকে। 'আনারস' হলো জাহাঙ্গীরের নির্বাচনী প্রতীক। ঘণ্টাখানেক রাস্তা অবরোধ করে রেখে কর্মী-সমর্থকরা জাহাঙ্গীরকে সংবাদ সম্মেলনে যেতে নিষেধ করে।
টঙ্গীর এরশাদনগর থেকে এসেছেন ফাতেমা বেগম, নূরজাহান মনি, পেয়ারা বেগম ও আলেয়া বেগম। চার নারী কর্মীসহ ২০ থেকে ২৫ জন জাহাঙ্গীরের গাড়িবহরের সামনে শুয়ে পড়েন। তাদের দাবি, কোনোভাবেই সংবাদ সম্মেলনে গিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিতে দেবেন না তারা জাহাঙ্গীরকে। নুরজাহান ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, 'আমাদের নেতাকে আজমত উল্লার লোকজন জোরপূর্বক বসিয়ে দেওয়ার জন্য সংবাদ সম্মেলনে নিয়ে যাচ্ছেন।' পেয়ারা বেগম বলেন, 'আমার নেতা জাহাঙ্গীরকে নিয়ে জোরপূর্বক সমর্থন দিলেও আমরা অন্য কাউকে ভোট দিব না, আমরা আনারস মার্কায় ভোট দিবো।' কোনাবাড়ী এলাকার ভোটার আরিফুল ইসলাম বলেন, 'যাকে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি তাকেই ভোট দিব, নেতা সরে গেলেও তাকেই ভোট দিব।'
একপর্যায়ে মহাজোট সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক সংসদ সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল হক, সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেলসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা গিয়ে জাহাঙ্গীরের কর্মী-সমর্থকদের বুঝিয়ে কিছুটা শান্ত করেন। বিকেল ৫টায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পৌঁছান জাহাঙ্গীর আলম।
সংবাদ সম্মেলনে ভোটারদের উদ্দেশে জাহাঙ্গীর বলেন, 'আপনারা আমার প্রতীকে (আনারস) ভোট না দিয়ে আজমত উল্লার দোয়াত-কলমে ভোট দিন। প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে এর বিকল্প নেই।' কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, 'কয়েক দিন অসুস্থ হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। আমার মা-ও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আছেন। আমার মায়ের মতো নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনামতোই গাজীপুরে এসেছি।'
মহাজোট সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লার দৃষ্টি আকর্ষণ করে জাহাঙ্গীর বলেন, 'দীর্ঘদিন আমার সঙ্গে যেসব কর্মী-সমর্থক আছেন, তাঁদের সঙ্গে যেন কোনো দুর্ব্যবহার করা না হয়। কাউকে ছোট করে যেন কথা না বলা হয়। আমি নির্বাচনী প্রচার চলাকালীন সাধারণ ভোটারদের অনেক পরিকল্পনার কথা বলেছিলাম। আপনার কাছে প্রত্যাশা করি, আপনি মেয়র নির্বাচিত হলে গাজীপুরে আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবেন, যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে।' স্বাস্থ্যসেবা, শ্রমিকদের সেবার মান বৃদ্ধি প্রকল্প, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ, খেলার মাঠ, কবরস্থান, ঈদগাসহ একাধিক ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি, জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদার প্রমুখ।
এর আগে দুপুরে ভোগড়ায় নিজ বাসভবনে কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে জাহাঙ্গীর বলেন, 'কেউ মন খারাপ করবেন না, আমি নির্বাচন থেকে সরে গেলেও আপনাদের কাছ থেকে সরে যাইনি। আমার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আপনাদের সঙ্গে থাকব। আপনাদের জন্য আমার বাড়ির দরজা সব সময় খোলা থাকবে। আপনারাই আমার মূল শক্তি, আপনারাই আমার মাথার ওপর ছায়া।'
জাহাঙ্গীর আলম শহরের রাজবাড়ী সড়কসংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ে পৌঁছার আগেই শত শত নেতা-কর্মী সেখানে ভিড় জমায়। একপর্যায়ে দলীয় কার্যালয় লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। জাহাঙ্গীর আলমকে দেখতে পেয়ে কর্মী-সমর্থকরা 'আমাদের নেতা জাহাঙ্গীর ভাই, মেয়র পদে তাঁকে চাই', 'জাহাঙ্গীর ভাইকে ছাড়া কাউকে মানব না, মানব না' ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে।
যেভাবে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে : গতকাল দুপুরে ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতাল থেকে সরাসরি জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে যাওয়ার কথা ছিল জাহাঙ্গীর আলমের। সেখানে অপেক্ষমাণ আওয়ামী লীগসমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী আজমত উল্লা খানের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে আজমতকেই সমর্থন জানানোর কথা ছিল তাঁর। কিন্তু দুপুর ২টার দিকের গাজীপুরে ফিরলেও সরাসরি দলীয় কার্যালয়ে যেতে পারেননি জাহাঙ্গীর। গাজীপুর উপজেলার সাবেক এই ভাইস চেয়ারম্যানের সমর্থনে বিভিন্ন স্থানে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুই পাশে হাজার হাজার মানুষ আনারস হাতে দাঁড়িয়ে থাকেন। তারা জাহাঙ্গীরের সমর্থনে স্লোগানও দিতে থাকেন। সমর্থকদের চাপেই জাহাঙ্গীর জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে না গিয়ে সোজা ভোগড়ায় নিজ বাড়িতে চলে যান।
বাসভবনে হাজারো মানুষের ভিড় : গাজীপুরের বাসন সড়কে জাহাঙ্গীরের বাসভবন। ভবনটির আশপাশে তিলধারণের ঠাঁই ছিল না গতকাল। হাজারো কর্মী-সমর্থক ভিড় করেন জাহাঙ্গীরের বাড়ির সামনে। দুপুরে প্রচণ্ড রোদের মধ্যে আনারস হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের দত্তপাড়ার ভোটার ষাটোর্ধ্ব নাসিরউদ্দিন মিয়া। তিনি বলেন, 'নেতার জন্য রোদ আর বৃষ্টি কী! কোনো কিছু সমস্যা না। নেতার মুখখানি অনেক দিন ধরে দেখি না। উনাকে এক নজর দেখার জন্যই আসছি।'
জাহাঙ্গীর তো আজমত উল্লাকে সমর্থন দিতে আসছেন, এটা কিভাবে নিচ্ছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কোনাবাড়ী এলাকার আনোয়ার হোসেন বলেন, 'নেতা সমর্থন দিলেও ভোট অন্য কাউকে দিব না। আর নেতার সমর্থন কিভাবে নেওয়া হচ্ছে সেটাও আমরা ভালো করে জানি।' শহরের লক্ষ্মীপুরা এলাকায় গলায় তাজা আনারস জুলিয়ে রিকশা চালাচ্ছিলেন মো. মজনু মিয়া। তিনি বলেন, 'নেতার কথা না কইয়া কোনো উপায় নাই। যার কারণে আজ আমি পরিবার নিয়া তিন বেলা খাইতে পারতাছি, ৩০ হাজার টাকায় এই রিকশাটি তিনি কিনে দিয়েছেন। আমার মতো অনেকেই পরিবার নিয়ে সুখে আছি।'
No comments