আবেদনপত্রে ব্যবহৃত সনাতন কিছু শব্দের ব্যবচ্ছেদ

সেই বহু বছর আগে থেকে আবেদনপত্রে মুখস্থ কিছু শব্দ ব্যবহূত হয়ে আসছে। তবে এই শব্দগুলো কতটা পারফেক্ট, আদৌ শব্দগুলোর সঠিক প্রয়োগ হচ্ছে কি না—এসব নিয়ে কিন্তু আমরা মোটেই চিন্তাভাবনা করি না।
তাই সবার চিন্তাভাবনা করার সুবিধার্থে শব্দগুলোর ব্যবচ্ছেদ করেছেন ইকবাল খন্দকার

বরাবর
আবেদনপত্রের শুরুতেই ‘বরাবর’ শব্দটা ব্যবহূত হয়ে থাকে। বরাবর মানে হচ্ছে সোজা। এই জন্যই আমরা অন্যকে বলে থাকি—একদম নাক বরাবর যাইবেন। আবেদনপত্রে ‘বরাবর’ শব্দটা ব্যবহার করা যায়, যদি বসের সঙ্গে দহরম-মহরম সম্পর্ক থাকে। মানে আপনি যদি দরখাস্তটা নিয়ে সোজা বসের রুমে চলে যাওয়ার ক্ষমতা রাখেন। যদি বসের চামচার মাধ্যমে দরখাস্ত পাঠাতে হয়, তাহলে আপনার শুধু ‘বরাবর’ শব্দটা ব্যবহার না করে ‘বরাবর’-এর পাশে ব্র্যাকেট দিয়ে ‘ভায়া চামচা’ শব্দ দুটো ব্যবহার করা উচিত বলে আমরা মনে করি।

অধীনের বিনীত নিবেদন এই যে...
যে অফিসের বসের কাছে দরখাস্তটা দিচ্ছেন, সেই অফিসে যদি আপনি অলরেডি চাকরি নিয়ে থাকেন, তাহলে ‘অধীনের বিনীত নিবেদন’ কথাগুলো ঠিক আছে। এখনো চাকরিই নেননি, বরং চাকরির জন্য সবে আবেদন করেছেন, সেই আবেদনপত্রে যদি ‘অধীনের বিনীত নিবেদন’ লেখেন, তাহলে আমরা সেটাকে তেলবাজি হিসেবেই জ্ঞান করব। কেন করব না, তা-ই বলুন। অধীন মানে কী? অধীন মানে হচ্ছে কারও আন্ডারে কাজ করা। আপনি কাজ পাওয়ার আগেই ‘অধীন’ হয়ে যাবেন, দেশটা কি মগের মুলুকে পড়েছে?

আপনার একান্ত অনুগত
বস অলটাইম নানা ক্যাটাগরির উপদেশ দিয়ে থাকেন। বিশেষ করে কাজে ফাঁকি না দেওয়ার উপদেশ। সেই উপদেশগুলো অক্ষরে অক্ষরে পালন করাটাই হচ্ছে আনুগত্য। এবার আসি আপনার কথায়। আপনি কি কাজ রেখে এক দিনও টেবিলে মাথা রেখে ঘুমাননি? সকালে ঘুম থেকে উঠতে না পারার কারণে অফিসে দেরি করে পৌঁছে কি জ্যামের অজুহাত দেননি? আপনি কি মাথাব্যথার ভান করে মাসে দু-একবার আগে আগে অফিস থেকে বের হয়ে যাননি? তাহলে আপনি নিজেকে ‘একান্ত অনুগত’ দাবি করেন কী করে! আপনি সর্বোচ্চ লিখতে পারেন—
মোটামুটি অনুগত।

No comments

Powered by Blogger.