সিরীয় বিদ্রোহীদের সহায়তা দিতে ‘গোপন’ পরিকল্পনা

সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সহায়তা দিতে একটি ‘গোপন’ পরিকল্পনায় সম্মত হয়েছে ‘ফ্রেন্ডস অব সিরিয়া’। গত শনিবার কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে ফ্রেন্ডস অব সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এ ব্যাপারে সম্মত হন।
দোহার বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ ছাড়াও ফ্রান্স, জার্মানি, সৌদি আরব, তুরস্ক, মিসর ও জর্ডানসহ ১১টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
জাতিসংঘে চীন ও রাশিয়ার ভেটোর কারণে অচলাবস্থা সৃষ্টি হলে সিরীয় সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক এ জোটটি গঠিত হয়।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হামাদ বিন জসিম আল-থানি জানান, বৈঠকে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে দুটি দেশ ছাড়া অন্যরা সবাই সিরিয়ার বিদ্রোহীদের অস্ত্র সরবরাহের ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। কাতার শুধু বিদ্রোহীদের মূলধারা ফ্রি সিরিয়ান আর্মির কাছে অস্ত্র সরবরাহের পক্ষে মত দিয়েছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিরিয়ায় ‘শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিদ্রোহীদের অস্ত্র সরবরাহ করাই সম্ভবত একমাত্র উপায়।’
ফ্রেন্ডস অব সিরিয়ার বৈঠক শেষে দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সব দেশ যার যার অবস্থান থেকে বিদ্রোহীদের জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সবকিছু সরবরাহ করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। সিরিয়ার সরকার ও তার মিত্রদের নৃশংস হামলা থেকে আত্মরক্ষার সামর্থ্য অর্জন করতেই বিদ্রোহীদের এই সহায়তা দেওয়া হবে। পশ্চিমা সমর্থিত সামরিক কমান্ডের মাধ্যমেই সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।’ বিবৃতিতে সিরিয়া থেকে লেবাননের কট্টরপন্থী গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইরানের যোদ্ধাদের শিগগিরই সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
সিরিয়ার বিদ্রোহীদের ‘সরাসরি সামরিক সহায়তা’ দেওয়ার মার্কিন ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যেই ফ্রেন্ডস অব সিরিয়ার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বৈঠকে বলেন, বিদ্রোহীদের সামরিক সহায়তা দেওয়ার মানে এই নয় যে ‘সামরিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমেই সমস্যা সমাধানের পথ খোঁজা’ হচ্ছে। ফ্রেন্ডস অব সিরিয়াও আসন্ন আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনের পক্ষে রয়েছে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ বলেন, ‘আমরা কীভাবে বিদ্রোহীদের সহায়তা দিতে পারি, কীভাবে মানুষের জীবন বাঁচাতে পারি তা নিয়ে আলোচনা করেছি। বিভিন্ন দেশ বিভিন্নভাবে এ ব্যাপারে ভূমিকা পালন করবে।’
ইরানের নিন্দা: দোহা বৈঠক বিদ্রোহীদের সহায়তার ব্যাপারে সম্মত হওয়ায় ফ্রেন্ডস অব সিরিয়ার নিন্দা জানিয়েছে বাশার আল-আসাদের মিত্র ইরান। ইরানের বার্তা সংস্থা আইআরএনএকে দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান বলেন, ‘যারা বিদ্রোহীদের অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করছে, তারাই সিরিয়ায় রক্তপাত এবং ওই অঞ্চলের অস্থিতিশীলতার জন্য দায়ী।’
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশারের পদত্যাগের দাবিতে ২০১১ সালের মার্চে বিক্ষোভ শুরু হয়। এক পর্যায়ে তা সহিংসতায় রূপ নেয়। জাতিসংঘের তথ্যমতে, দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই সহিংসতায় এ পর্যন্ত ৯০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। বাড়িঘর ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে লাখ লাখ মানুষ। এএফপি, বিবিসি, রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.