মাদককে ‘না’ পারিবারিক পরিবেশ ভালো থাকা জরুরি
প্রথম আলো ট্রাস্ট মাদকবিরোধী আন্দোলনের
উদ্যোগে ১৫ মে বিকেল সাড়ে চারটায় পরামর্শ সহায়তা-৩৮-এর আসরটি অনুষ্ঠিত
হয় ধানমন্ডির ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে। এ আয়োজনে মাদকাসক্ত ব্যক্তি ও তাঁদের
পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মনোরোগ চিকিৎসক ও
বিশেষজ্ঞরা তাঁদের মাদকাসক্তি নিরাময়ের জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দেন। পরামর্শ
সহায়তা অনুষ্ঠানের আলোচিত বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মোহিত কামাল সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আপনারা সবাই জেনে গেছেন, এটা আমাদের ৩৮তম আসর। অনেকে নিয়মিত আসেন, এটা আমাদের উৎসাহিত করে। অনেকে আবার নিরাশ হয়ে পড়েন। তাঁরা ভাবেন এত চিকিৎসা করাচ্ছি তবুও ভালো হয় না। আপনাদের মধ্যে হতাশা কাজ করে। কিন্তু এখানে আসলে বুঝতে পারবেন মাদকাসক্ত একটা রোগ। এটা বারবার হতে পারে। যেমন ডায়াবেটিস সারে না। নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। একটু সুগার বেড়ে গেলে সারা শরীরে সমস্যা দেখা দেয়। তেমনিভাবে মাদক চিকিৎসার পর ভালো হলেও নিয়মনীতি না মেনে চললে যে কেউ আবার মাদকাসক্ত হতে পারে। আমাদের চারপাশে মাদকের ফাঁদ আছে। এ থেকে বাঁচার কৌশল জানতে হবে। তাহলে আমাদের আপনজনদের রক্ষা করতে পারব। আমি দেখেছি, অনেকেই মাদকাসক্ত থেকে ভালো আছে। হঠাৎ করেই পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে মিশে আবার মাদক গ্রহণ শুরু করেছে। তখন আমরা হতাশ হয়ে পড়ি। আমি বলব যে হতাশ হলে চলবে না। মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। এটা কিছুটা দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা। তাদের পুরোনো বন্ধুবান্ধব ও খারাপ পরিবেশ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করতে হবে। সর্বোপরি ধৈর্য ধরে তাদের পাশে থাকতে হবে।
প্রশ্ন: আমি খুলনা থেকে এসেছি। আমার বয়স ৩৭ বছর। হেরোইনসহ সব ধরনের মাদক নিই। মাদক ছাড়তে গেলে বমি বমি আসে। মাথা ঘোরায়। হাত-পা জ্বালাপোড়া করে। এখন কী করতে পারি?
উত্তর: কেউ দীর্ঘদিন মাদক নিলে সে মাদকের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। নিজের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে। মস্তিষ্ক ও শারীরিক প্রক্রিয়াগুলো মাদক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এ জন্য কেউ হঠাৎ করে মাদক ছাড়তে চাইলে কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। আপনারও তেমন হচ্ছে। এতে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। আপনাকে কোনো চিকিৎসাকেন্দ্রে এসে ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্লাড, ইউরিনসহ কিছু পরীক্ষার হয়তো প্রয়োজন পড়বে। নিয়মিত কয়েক দিন ওষুধ খেলে এ সমস্যাগুলো কেটে যাবে। আপনি যেহেতু দীর্ঘদিন মাদকের ওপর নির্ভরশীল, তাই সম্পূর্ণ মাদকমুক্ত হতে চাইলে কিছুটা লম্বা সময় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হতে পারে। আপনি আমাদের এখানে এসেছেন। অর্থাৎ নিজ থেকেই ভালো হওয়ার তাগিদ অনুভব করছেন। আপনার পক্ষে দ্রুত সেরে ওঠা সহজ হবে। আর দেরি না করে ভালো একটি নিরাময়কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
প্রশ্ন: আমি চট্টগ্রাম থেকে এসেছি। ১৯৯৮ সালে মাদক গ্রহণ শুরু করি। ২০০৪ সালে চিকিৎসা করে ভালো হই। ২০০৫ সালে আবার মাদক নিই। এখনো মাদকাসক্ত। আমার মা সঙ্গে এসেছেন। মায়ের জন্য আমি ভালো থাকতে চাই। কী করে সেটা সম্ভব?
উত্তর: আপনাকে আমাদের পক্ষ থেকে অভিনন্দন এত দূর থেকে এসেছেন। আরও অভিনন্দন মায়ের জন্য ভালো হতে চান। কেউ যদি নিজ থেকে ভালো হতে চায়, তাহলে সে শতকরা ৫০ ভাগ ভালো হয়ে যায়। মাদকাসক্ত রোগীরা ভালো হওয়ার পর আবারও মাদকাসক্ত হতে পারে। চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে কতগুলো নিয়মনীতি বলে দেওয়া হয়। বাড়িতে ফিরে এ নিয়মনীতিগুলো কঠোরভাবে মেনে চলতে হয়। হাসপাতালে ভালো থাকা মানে চিকিৎসা শেষ হয়ে যাওয়া নয়। হাসপাতালে মাদক দেওয়া হয় না। নিয়মনীতি মেনে চলতে হয়। সঙ্গে কিছু ওষুধ খেতে হয়। ফলে হাসপাতালে যে কেউ ভালো থাকে। হাসপাতাল একজন রোগীকে সারা জীবন ভালো থাকার জন্য প্রস্তুত করে। হাসপাতালে চিকিৎসা মানে জীবনভর মাদকমুক্ত থাকার নিশ্চয়তা না। মাদকমুক্ত থাকার আসল যুদ্ধটা শুরু হয় হাসপাতাল থেকে ঘরে ফিরে। মাদকের সঙ্গে জড়িত বন্ধুদের থেকে দূরে থাকতে হয়। মাদক গ্রহণ করার জায়গাগুলো থেকে দূরে থাকতে হয়। দুই-তিন বছর মোবাইল ব্যবহার বন্ধ রাখতে হয়। মাদকজাতীয় দ্রব্য দেখা থেকে দূরে থাকতে হয়। নিয়মিত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা ওষুধ খাওয়া। এ কাজগুলো ঠিকমতো করলেই সে ভালো থাকতে পারবে। তা না হলে যত চিকিৎসা করা হোক না কেন, যত দিন হাসপাতালে থাকুক না কেন, কোনো লাভ হবে না।
প্রশ্ন: আমার বোনের বাচ্চা একটা ছেলের কাছে পড়ে। ছেলেটি মাদকাসক্ত। এটা জানার পর আমার বোন তার কাছে পড়াতে চায় না। আমার বোনের বাচ্চা ও গৃহশিক্ষক দুজন দুজনকে পছন্দ করে। গৃহশিক্ষক কোনো রকম পড়ানো বাদ দিতে চায় না। এখন আমার বোন কী করতে পারে?
উত্তর: মাদকাসক্ত রোগীরা মাদক গ্রহণের টাকা না পেলে উত্তেজিত হয়। এমনিতে এরা খুব ভদ্র আচরণ করে। টিচারকে সরাসরি ‘না’ বলার দরকার নেই। বলতে পারেন আপনাদের টাকাপয়সার সমস্যা আর পড়াতে পারছেন না। অথবা একটা সময় তাকে দিতে পারেন। দুই মাস পর থেকে আর পড়াতে চান না। অথবা কয়েক মাসের জন্য কোথায় বেড়াতে যাবেন। অথবা বাসা ছেড়ে কিছু দূরে চলে যাবেন, যেখানে টিচারের পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়। ইত্যাদি কৌশলের মাধ্যমে টিচারকে বাদ দিতে হবে। মনে কষ্ট পায় এমন কোনো কথা বলে বাদ দেওয়াটা উচিত হবে না। যেহেতু শিক্ষার্থী তাকে পছন্দ করে। তার মনের অবস্থা সবকিছু বিবেচনা করে টিচারকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি ভাবতে হবে।
প্রশ্ন: আমার ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। ওর কিছু বন্ধু আছে, যারা মাদক নেয়। তাদের কাছ থেকে সে মাদক গ্রহণ করে। তাদের কাছ থেকে ছেলেকে কীভাবে দূরে রাখব? বাসা বদলাব?
পরামর্শ: আমাদের সন্তানেরা একটি অস্থির ও অসুস্থ পরিবেশে বেড়ে উঠছে। সন্তানেরা ভালো থাক, অনেকখানি নির্ভর করে তার পারিবারিক ঐতিহ্যের ওপর। অবশ্য কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম হতে পারে। মাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আলোচনা হয়। কর্মশালা হয়। শোভাযাত্রা হয়। কিন্তু সবকিছুর ওপর পারিবারিক ভূমিকার কোনো বিকল্প নেই। পরিবার থেকেই সন্তানেরা ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন হয়, আত্মবিশ্বাসী হয়। আত্মমর্যাদাশীল হয়। তারা বন্ধুদের মাদক গ্রহণসহ অন্যান্য খারাপ কাজের প্রস্তাব সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করতে পারে। ‘না’ বলতে পারে। না বলতে না শিখলে সে কখনো নিজেকে রক্ষা করতে পারবে না। না বলার শক্তি অর্জন করতে হবে। যারা মাদকে জড়িয়ে পড়ে, তারা বন্ধুদের না বলতে পারে না। অনেক মনে করে, না বললে বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যাবে। যে বন্ধু মাদক গ্রহণের প্রস্তাব দেয় সে ধ্বংসের দিকে ডাকছে। মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাই এরা কোনো বন্ধুর পর্যায়ে পড়ে না। এরা শত্রু। এদের সব সময় এড়িয়ে চলতে হবে।
প্রশ্ন: আমি কুমিল্লা থেকে এসেছি। ২০১০ সাল থেকে ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ সব মাদক গ্রহণ করি। বাড়ির কেউ জানত না। ছয় মাস হলো পরিবারের সবাই জেনে গেছে। মাদক গ্রহণ করি এ জন্য বাবা অনেক কষ্ট নিয়ে মারা গেছেন। বাবার জন্য খুব খারাপ লাগে। মায়ের কাছে শপথ করেছি আর কোনো দিন মাদক নেব না। এখন আমি কিছু মনে রাখতে পারি না এবং অন্যান্য সমস্যা হচ্ছে। কী করতে পারি?
উত্তর: আপনাকে আমাদের সবার পক্ষ থেকে অভিনন্দন। আপনি মাদক গ্রহণের জন্য অনুতপ্ত এবং মায়ের কাছে শপথ করেছেন আর কখনো মাদক না নেওয়ার জন্য। মাদকাসক্ত রোগীদের এই ইচ্ছাশক্তিকে আমরা খুব মূল্য দিই। কেউ যদি নিজ থেকে মাদকমুক্ত থাকতে চান, তাহলে তিনি দ্রুত মাদক থেকে ফিরে আসতে পারেন। আপনি পুরোনো বন্ধু, মাদক গ্রহণের জায়গা, মোবাইল, সবকিছু থেকে দূরে থাকুন। সৃজনশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। ভাবুন, আপনার মধ্যে অনেক সম্ভাবনা আছে। আপনার পরিবারের জন্য আপনার জন্য অনেক কিছু করতে হবে। এই গ্রহের আপনি শ্রেষ্ঠ প্রাণী। মাদকের মতো তুচ্ছ বস্তু গ্রহণ করে শেষ হয়ে যাওয়ার জন্য আপনার জন্ম হয়নি। আপনি দ্রুত কোনো চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও আসতে পারেন। মাত্র ১০ টাকায় টিকিট করে নিজেকে পরীক্ষা করতে পারবেন। আপনি বলেছেন, দ্রুত ভুলে যান। মাদক গ্রহণের সঙ্গে ভুলে যাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। বিষণ্নতাসহ অন্য কোনো করণে ভুলে যেতে পারেন। আপনি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসুন। কিছু ওষুধে সম্ভবত ভালো হয়ে যাবে।
প্রশ্ন: আমি নরসিংদী থাকি। দীর্ঘদিন ধরে মাদক নিই। প্রথম আলোর মাদকবিরোধী লেখা পড়ে ছাড়ার প্রতিজ্ঞা করি। যেদিন সম্পূর্ণ মাদক ছাড়তে পারব, সেদিনই আপনাদের অনুষ্ঠানে আসব বলে ঠিক করি। এখন আমি সম্পূর্ণ মাদকমুক্ত। আপনাদের অনুষ্ঠানে এসেছি। আমি কি মাদকমুক্ত থাকতে পারব?
উত্তর: আপনাকে অভিনন্দন জানাই। আপনি বিজয়ী হয়েছেন। বিজয়ীরা কখনো হারে না। আপনি একটা খুবই কঠিন কাজে জয়ী হয়েছেন। মাদক ছাড়ার জন্য আপনাকে সংগ্রাম করতে হয়েছে, সেখানে আপনি জয়ী হয়েছেন। বাকি জীবনেও জয়ী হবেন। আপনার মতো তরুণই চাই, যাঁরা ইচ্ছাশক্তি দিয়ে সব করতে পারেন। আমাদের আরও কয়েকটি অনুষ্ঠানে নিয়মিত আসতে থাকেন। আমরা ধরে নিচ্ছি আপনি আর কোনো দিন মাদক নেবেন না। কিন্তু কখনো যদি নিতে ইচ্ছে করে আপনি ব্যায়াম করবেন, গোসল করবেন, গান শুনবেন। কারও সঙ্গে গল্প করবেন। খেলাধুলা করবেন। এ কাজগুলোর মাধ্যমে নিজেকে ব্যস্ত রাখবেন। দেখবেন মাদকের নেশা আর থাকবে না।
প্রশ্ন: মাদক নিরাময়ের ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরশীল (সেলফ হেল্প) পদ্ধতি বিশ্বে খুব ভালো করেছে। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই সেলফ হেল্প গ্রুপ আছে। এ ব্যাপারে আপনাদের পরামর্শ কী?
উত্তর: পুনর্বাসনের পর সেলফ হেল্প পদ্ধতি একটা ভালো পদ্ধতি। নিজেরা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে দীর্ঘমেয়াদি ভালো থাকতে পারে। বিদেশে ৭০ থেকে ৮০ বছর আগে এই পদ্ধতি শুরু হয়েছে। এর ১২টি ধাপ আছে। এর সব ধাপ যে সব দেশের জন্য প্রযোজ্য, তা না। তবে পুনর্বাসনের পর ভালো থাকার এটা একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পদ্ধতি। এটাও চিকিৎসার অংশ। হাসপাতাল থেকে ছাড়ার পর চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়। সেলফ হেল্প পদ্ধতিতে একে অপরের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে অনেক কিছু জেনে নিতে পারে। তবে একটা বিষয় সতর্ক থাকতে হয়। তা হলো গ্রুপে যদি একজন মাদকাসক্ত রোগী ঢুকে যায়, তাহলে সবারই সর্বনাশ হয়ে যাবে।
প্রশ্ন: অনেকে কেবল সেলফ হেল্প করে ভালো আছে। আপনারা কি মনে করেন এটা সম্ভব?
উত্তর: কেউ যদি মাদক গ্রহণের একেবারে প্রাথমিক অবস্থায় সেলফ হেল্প করে, তাহলে ভালো থাকলেও থাকতে পারে। কিন্তু পুনর্বাসনের পরই সেলফ হেল্প করা উচিত। তার আগে নয়। কেউ যদি এমনিতেই কোনো ভালো বিষয় নিয়ে গল্প করতে থাকে, সময় কাটায় তাহলে মাদকের চিন্তা থেকে সে দূরে থাকে। এটা ভালো থাকার একটা পদ্ধতি। এখানে কে কীভাবে রিহ্যাব করেছে, কার কী সমস্যা হতে পারে, সে ক্ষেত্রে সে কী করবে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কথা হয়। ফলে তাদের উপকারই হওয়ার কথা। তাই পুনর্বাসনের পর সেলফ হেল্প মাদকাসক্ত রোগীদের ভালো থাকার সহযোগিতাই করবে।
কয়েকজন মাদকমুক্ত তরুণের কথা: সন্তানদের সময় দিতে হবে। তাদের বোঝার চেষ্টা করতে হবে। অভিভাবকেরা কেবল নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। অনেক বাবা-মা সন্তানদের সময় দেন না। কিন্তু সন্তানদের সময় দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। আমাদের সঙ্গে সবকিছু আলোচনা করতে হবে। নিজেদের ইচ্ছাকে জোর করে সন্তানদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। ভালো কাজ করলে তার জন্য প্রশংসা করতে হবে। তাহলে আমরা ভালো কাজ করতে আরও উৎসাহী হব। বাড়ির পরিবেশ ও বাবা-মায়ের মধ্যে ভালো সম্পর্ক থাকতে হবে।
সঞ্চালনা: ফেরদৌস ফয়সাল, গ্রন্থণা: আশফাকুজ্জামান
অনুষ্ঠানের শুরুতে মোহিত কামাল সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আপনারা সবাই জেনে গেছেন, এটা আমাদের ৩৮তম আসর। অনেকে নিয়মিত আসেন, এটা আমাদের উৎসাহিত করে। অনেকে আবার নিরাশ হয়ে পড়েন। তাঁরা ভাবেন এত চিকিৎসা করাচ্ছি তবুও ভালো হয় না। আপনাদের মধ্যে হতাশা কাজ করে। কিন্তু এখানে আসলে বুঝতে পারবেন মাদকাসক্ত একটা রোগ। এটা বারবার হতে পারে। যেমন ডায়াবেটিস সারে না। নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। একটু সুগার বেড়ে গেলে সারা শরীরে সমস্যা দেখা দেয়। তেমনিভাবে মাদক চিকিৎসার পর ভালো হলেও নিয়মনীতি না মেনে চললে যে কেউ আবার মাদকাসক্ত হতে পারে। আমাদের চারপাশে মাদকের ফাঁদ আছে। এ থেকে বাঁচার কৌশল জানতে হবে। তাহলে আমাদের আপনজনদের রক্ষা করতে পারব। আমি দেখেছি, অনেকেই মাদকাসক্ত থেকে ভালো আছে। হঠাৎ করেই পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে মিশে আবার মাদক গ্রহণ শুরু করেছে। তখন আমরা হতাশ হয়ে পড়ি। আমি বলব যে হতাশ হলে চলবে না। মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। এটা কিছুটা দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা। তাদের পুরোনো বন্ধুবান্ধব ও খারাপ পরিবেশ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করতে হবে। সর্বোপরি ধৈর্য ধরে তাদের পাশে থাকতে হবে।
প্রশ্ন: আমি খুলনা থেকে এসেছি। আমার বয়স ৩৭ বছর। হেরোইনসহ সব ধরনের মাদক নিই। মাদক ছাড়তে গেলে বমি বমি আসে। মাথা ঘোরায়। হাত-পা জ্বালাপোড়া করে। এখন কী করতে পারি?
উত্তর: কেউ দীর্ঘদিন মাদক নিলে সে মাদকের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। নিজের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে। মস্তিষ্ক ও শারীরিক প্রক্রিয়াগুলো মাদক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এ জন্য কেউ হঠাৎ করে মাদক ছাড়তে চাইলে কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। আপনারও তেমন হচ্ছে। এতে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। আপনাকে কোনো চিকিৎসাকেন্দ্রে এসে ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্লাড, ইউরিনসহ কিছু পরীক্ষার হয়তো প্রয়োজন পড়বে। নিয়মিত কয়েক দিন ওষুধ খেলে এ সমস্যাগুলো কেটে যাবে। আপনি যেহেতু দীর্ঘদিন মাদকের ওপর নির্ভরশীল, তাই সম্পূর্ণ মাদকমুক্ত হতে চাইলে কিছুটা লম্বা সময় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হতে পারে। আপনি আমাদের এখানে এসেছেন। অর্থাৎ নিজ থেকেই ভালো হওয়ার তাগিদ অনুভব করছেন। আপনার পক্ষে দ্রুত সেরে ওঠা সহজ হবে। আর দেরি না করে ভালো একটি নিরাময়কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
প্রশ্ন: আমি চট্টগ্রাম থেকে এসেছি। ১৯৯৮ সালে মাদক গ্রহণ শুরু করি। ২০০৪ সালে চিকিৎসা করে ভালো হই। ২০০৫ সালে আবার মাদক নিই। এখনো মাদকাসক্ত। আমার মা সঙ্গে এসেছেন। মায়ের জন্য আমি ভালো থাকতে চাই। কী করে সেটা সম্ভব?
উত্তর: আপনাকে আমাদের পক্ষ থেকে অভিনন্দন এত দূর থেকে এসেছেন। আরও অভিনন্দন মায়ের জন্য ভালো হতে চান। কেউ যদি নিজ থেকে ভালো হতে চায়, তাহলে সে শতকরা ৫০ ভাগ ভালো হয়ে যায়। মাদকাসক্ত রোগীরা ভালো হওয়ার পর আবারও মাদকাসক্ত হতে পারে। চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে কতগুলো নিয়মনীতি বলে দেওয়া হয়। বাড়িতে ফিরে এ নিয়মনীতিগুলো কঠোরভাবে মেনে চলতে হয়। হাসপাতালে ভালো থাকা মানে চিকিৎসা শেষ হয়ে যাওয়া নয়। হাসপাতালে মাদক দেওয়া হয় না। নিয়মনীতি মেনে চলতে হয়। সঙ্গে কিছু ওষুধ খেতে হয়। ফলে হাসপাতালে যে কেউ ভালো থাকে। হাসপাতাল একজন রোগীকে সারা জীবন ভালো থাকার জন্য প্রস্তুত করে। হাসপাতালে চিকিৎসা মানে জীবনভর মাদকমুক্ত থাকার নিশ্চয়তা না। মাদকমুক্ত থাকার আসল যুদ্ধটা শুরু হয় হাসপাতাল থেকে ঘরে ফিরে। মাদকের সঙ্গে জড়িত বন্ধুদের থেকে দূরে থাকতে হয়। মাদক গ্রহণ করার জায়গাগুলো থেকে দূরে থাকতে হয়। দুই-তিন বছর মোবাইল ব্যবহার বন্ধ রাখতে হয়। মাদকজাতীয় দ্রব্য দেখা থেকে দূরে থাকতে হয়। নিয়মিত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা ওষুধ খাওয়া। এ কাজগুলো ঠিকমতো করলেই সে ভালো থাকতে পারবে। তা না হলে যত চিকিৎসা করা হোক না কেন, যত দিন হাসপাতালে থাকুক না কেন, কোনো লাভ হবে না।
প্রশ্ন: আমার বোনের বাচ্চা একটা ছেলের কাছে পড়ে। ছেলেটি মাদকাসক্ত। এটা জানার পর আমার বোন তার কাছে পড়াতে চায় না। আমার বোনের বাচ্চা ও গৃহশিক্ষক দুজন দুজনকে পছন্দ করে। গৃহশিক্ষক কোনো রকম পড়ানো বাদ দিতে চায় না। এখন আমার বোন কী করতে পারে?
উত্তর: মাদকাসক্ত রোগীরা মাদক গ্রহণের টাকা না পেলে উত্তেজিত হয়। এমনিতে এরা খুব ভদ্র আচরণ করে। টিচারকে সরাসরি ‘না’ বলার দরকার নেই। বলতে পারেন আপনাদের টাকাপয়সার সমস্যা আর পড়াতে পারছেন না। অথবা একটা সময় তাকে দিতে পারেন। দুই মাস পর থেকে আর পড়াতে চান না। অথবা কয়েক মাসের জন্য কোথায় বেড়াতে যাবেন। অথবা বাসা ছেড়ে কিছু দূরে চলে যাবেন, যেখানে টিচারের পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়। ইত্যাদি কৌশলের মাধ্যমে টিচারকে বাদ দিতে হবে। মনে কষ্ট পায় এমন কোনো কথা বলে বাদ দেওয়াটা উচিত হবে না। যেহেতু শিক্ষার্থী তাকে পছন্দ করে। তার মনের অবস্থা সবকিছু বিবেচনা করে টিচারকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি ভাবতে হবে।
প্রশ্ন: আমার ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। ওর কিছু বন্ধু আছে, যারা মাদক নেয়। তাদের কাছ থেকে সে মাদক গ্রহণ করে। তাদের কাছ থেকে ছেলেকে কীভাবে দূরে রাখব? বাসা বদলাব?
পরামর্শ: আমাদের সন্তানেরা একটি অস্থির ও অসুস্থ পরিবেশে বেড়ে উঠছে। সন্তানেরা ভালো থাক, অনেকখানি নির্ভর করে তার পারিবারিক ঐতিহ্যের ওপর। অবশ্য কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম হতে পারে। মাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আলোচনা হয়। কর্মশালা হয়। শোভাযাত্রা হয়। কিন্তু সবকিছুর ওপর পারিবারিক ভূমিকার কোনো বিকল্প নেই। পরিবার থেকেই সন্তানেরা ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন হয়, আত্মবিশ্বাসী হয়। আত্মমর্যাদাশীল হয়। তারা বন্ধুদের মাদক গ্রহণসহ অন্যান্য খারাপ কাজের প্রস্তাব সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করতে পারে। ‘না’ বলতে পারে। না বলতে না শিখলে সে কখনো নিজেকে রক্ষা করতে পারবে না। না বলার শক্তি অর্জন করতে হবে। যারা মাদকে জড়িয়ে পড়ে, তারা বন্ধুদের না বলতে পারে না। অনেক মনে করে, না বললে বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যাবে। যে বন্ধু মাদক গ্রহণের প্রস্তাব দেয় সে ধ্বংসের দিকে ডাকছে। মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাই এরা কোনো বন্ধুর পর্যায়ে পড়ে না। এরা শত্রু। এদের সব সময় এড়িয়ে চলতে হবে।
প্রশ্ন: আমি কুমিল্লা থেকে এসেছি। ২০১০ সাল থেকে ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ সব মাদক গ্রহণ করি। বাড়ির কেউ জানত না। ছয় মাস হলো পরিবারের সবাই জেনে গেছে। মাদক গ্রহণ করি এ জন্য বাবা অনেক কষ্ট নিয়ে মারা গেছেন। বাবার জন্য খুব খারাপ লাগে। মায়ের কাছে শপথ করেছি আর কোনো দিন মাদক নেব না। এখন আমি কিছু মনে রাখতে পারি না এবং অন্যান্য সমস্যা হচ্ছে। কী করতে পারি?
উত্তর: আপনাকে আমাদের সবার পক্ষ থেকে অভিনন্দন। আপনি মাদক গ্রহণের জন্য অনুতপ্ত এবং মায়ের কাছে শপথ করেছেন আর কখনো মাদক না নেওয়ার জন্য। মাদকাসক্ত রোগীদের এই ইচ্ছাশক্তিকে আমরা খুব মূল্য দিই। কেউ যদি নিজ থেকে মাদকমুক্ত থাকতে চান, তাহলে তিনি দ্রুত মাদক থেকে ফিরে আসতে পারেন। আপনি পুরোনো বন্ধু, মাদক গ্রহণের জায়গা, মোবাইল, সবকিছু থেকে দূরে থাকুন। সৃজনশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। ভাবুন, আপনার মধ্যে অনেক সম্ভাবনা আছে। আপনার পরিবারের জন্য আপনার জন্য অনেক কিছু করতে হবে। এই গ্রহের আপনি শ্রেষ্ঠ প্রাণী। মাদকের মতো তুচ্ছ বস্তু গ্রহণ করে শেষ হয়ে যাওয়ার জন্য আপনার জন্ম হয়নি। আপনি দ্রুত কোনো চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও আসতে পারেন। মাত্র ১০ টাকায় টিকিট করে নিজেকে পরীক্ষা করতে পারবেন। আপনি বলেছেন, দ্রুত ভুলে যান। মাদক গ্রহণের সঙ্গে ভুলে যাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। বিষণ্নতাসহ অন্য কোনো করণে ভুলে যেতে পারেন। আপনি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসুন। কিছু ওষুধে সম্ভবত ভালো হয়ে যাবে।
প্রশ্ন: আমি নরসিংদী থাকি। দীর্ঘদিন ধরে মাদক নিই। প্রথম আলোর মাদকবিরোধী লেখা পড়ে ছাড়ার প্রতিজ্ঞা করি। যেদিন সম্পূর্ণ মাদক ছাড়তে পারব, সেদিনই আপনাদের অনুষ্ঠানে আসব বলে ঠিক করি। এখন আমি সম্পূর্ণ মাদকমুক্ত। আপনাদের অনুষ্ঠানে এসেছি। আমি কি মাদকমুক্ত থাকতে পারব?
উত্তর: আপনাকে অভিনন্দন জানাই। আপনি বিজয়ী হয়েছেন। বিজয়ীরা কখনো হারে না। আপনি একটা খুবই কঠিন কাজে জয়ী হয়েছেন। মাদক ছাড়ার জন্য আপনাকে সংগ্রাম করতে হয়েছে, সেখানে আপনি জয়ী হয়েছেন। বাকি জীবনেও জয়ী হবেন। আপনার মতো তরুণই চাই, যাঁরা ইচ্ছাশক্তি দিয়ে সব করতে পারেন। আমাদের আরও কয়েকটি অনুষ্ঠানে নিয়মিত আসতে থাকেন। আমরা ধরে নিচ্ছি আপনি আর কোনো দিন মাদক নেবেন না। কিন্তু কখনো যদি নিতে ইচ্ছে করে আপনি ব্যায়াম করবেন, গোসল করবেন, গান শুনবেন। কারও সঙ্গে গল্প করবেন। খেলাধুলা করবেন। এ কাজগুলোর মাধ্যমে নিজেকে ব্যস্ত রাখবেন। দেখবেন মাদকের নেশা আর থাকবে না।
প্রশ্ন: মাদক নিরাময়ের ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরশীল (সেলফ হেল্প) পদ্ধতি বিশ্বে খুব ভালো করেছে। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই সেলফ হেল্প গ্রুপ আছে। এ ব্যাপারে আপনাদের পরামর্শ কী?
উত্তর: পুনর্বাসনের পর সেলফ হেল্প পদ্ধতি একটা ভালো পদ্ধতি। নিজেরা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে দীর্ঘমেয়াদি ভালো থাকতে পারে। বিদেশে ৭০ থেকে ৮০ বছর আগে এই পদ্ধতি শুরু হয়েছে। এর ১২টি ধাপ আছে। এর সব ধাপ যে সব দেশের জন্য প্রযোজ্য, তা না। তবে পুনর্বাসনের পর ভালো থাকার এটা একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পদ্ধতি। এটাও চিকিৎসার অংশ। হাসপাতাল থেকে ছাড়ার পর চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়। সেলফ হেল্প পদ্ধতিতে একে অপরের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে অনেক কিছু জেনে নিতে পারে। তবে একটা বিষয় সতর্ক থাকতে হয়। তা হলো গ্রুপে যদি একজন মাদকাসক্ত রোগী ঢুকে যায়, তাহলে সবারই সর্বনাশ হয়ে যাবে।
প্রশ্ন: অনেকে কেবল সেলফ হেল্প করে ভালো আছে। আপনারা কি মনে করেন এটা সম্ভব?
উত্তর: কেউ যদি মাদক গ্রহণের একেবারে প্রাথমিক অবস্থায় সেলফ হেল্প করে, তাহলে ভালো থাকলেও থাকতে পারে। কিন্তু পুনর্বাসনের পরই সেলফ হেল্প করা উচিত। তার আগে নয়। কেউ যদি এমনিতেই কোনো ভালো বিষয় নিয়ে গল্প করতে থাকে, সময় কাটায় তাহলে মাদকের চিন্তা থেকে সে দূরে থাকে। এটা ভালো থাকার একটা পদ্ধতি। এখানে কে কীভাবে রিহ্যাব করেছে, কার কী সমস্যা হতে পারে, সে ক্ষেত্রে সে কী করবে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কথা হয়। ফলে তাদের উপকারই হওয়ার কথা। তাই পুনর্বাসনের পর সেলফ হেল্প মাদকাসক্ত রোগীদের ভালো থাকার সহযোগিতাই করবে।
কয়েকজন মাদকমুক্ত তরুণের কথা: সন্তানদের সময় দিতে হবে। তাদের বোঝার চেষ্টা করতে হবে। অভিভাবকেরা কেবল নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। অনেক বাবা-মা সন্তানদের সময় দেন না। কিন্তু সন্তানদের সময় দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। আমাদের সঙ্গে সবকিছু আলোচনা করতে হবে। নিজেদের ইচ্ছাকে জোর করে সন্তানদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। ভালো কাজ করলে তার জন্য প্রশংসা করতে হবে। তাহলে আমরা ভালো কাজ করতে আরও উৎসাহী হব। বাড়ির পরিবেশ ও বাবা-মায়ের মধ্যে ভালো সম্পর্ক থাকতে হবে।
সঞ্চালনা: ফেরদৌস ফয়সাল, গ্রন্থণা: আশফাকুজ্জামান
No comments