পবিত্র কোরআনের আলো-আল্লাহর কুদরতের বহিঃপ্রকাশ
৭১. কা-লূ ওয়া আকবালূ 'আলাইহিম মা-যা
তাফকিদূনা। ৭২. কা-লূ নাফকিদু সুওয়া-'আল মালিকি ওয়ালিমান জা-আ বিহী হিমলু
বা'ঈরিওঁ ওয়া আনা বিহী যা'ঈমুন। ৭৩. কা-লূ তাল্লা-হি লাকাদ 'আলিমতুম মা-
জি'ইনা- লি নুফসিদা ফিল আরদি ওয়া মা কুন্না সা-রিকীনা।
৭৪. কা-লূ ফামা জাযা-উহূ- ইন কুনতুম কা-যিবীনা। ৭৫. কা-লূ জাযা-উহূ মাও
উজিদা ফী রাহলিহী ফাহুয়া জাযা-উহূ, কাযা-লিকা নাজযিয যা-লিমীন। সুরা ইউসুফ।
অনুবাদ : ৭১. তারা ওদের দিকে মুখ করে বলল, তোমাদের কী হারিয়েছে? ৭২. তারা বলল, আমরা বাদশাহর পানি পান করার পেয়ালা হারিয়ে ফেলেছি। যে কেউ এর সন্ধান দেবে, সে এক উটের বোঝা পরিমাণ মাল (পুরস্কার) পাবে। আমি এই (পুরস্কার প্রদানে) জামিনদার। ৭৩. তারা বলল, আল্লাহর কসম, তোমরা তো জানো, আমরা অনর্থ সৃষ্টি করতে এ দেশে আসিনি এবং আমরা কোনো চোরও নই।* ৭৪. তারা বলল, যদি তোমরা মিথ্যাবাদী হও, তবে যে চুরি করেছে, তার শাস্তি কী হবে? ৭৫. তারা বলল, তার শাস্তি হলো এই যে, যার মালপত্রের ভেতর থেকে তা পাওয়া যাবে, এই অপরাধের কারণে সে দাসত্ব করবে। আমরা জালিমদের এভাবেই শাস্তি দিই।*
তাফসির : *বিনয়ামিনের মালপত্রে পরিকল্পিতভাবে শাহি পেয়ালা গুঁজে রেখে দিয়ে পরে তাদের চুরির অভিযোগ তোলার বিষয়টি পবিত্র কোরআন শরিফের বিখ্যাত মুফাসসিরগণ বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এসব ব্যাখ্যার মধ্যে সবচেয়ে চমৎকার ও শুদ্ধতম ব্যাখ্যা হিসেবে গ্রহণ করা হয়, যা তাফসিরে কুরতুবি ও মাজহারিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা লিখেছেন, আলোচ্য ঘটনায় যা বলা হয়েছে বা করা হয়েছে, তা বিনয়ামিনের বাসনার ফলশ্রুতি ছিল না, ইউসুফ (আ.)-এরও প্রস্তাব বা কৌশলের বহিঃপ্রকাশ ছিল না; বরং এই ঘটনার খুঁটিনাটি সবই ছিল আল্লাহ তায়ালার কুদরতের অপার রহস্যের বহিঃপ্রকাশ। এর মাধ্যমে হজরত ইয়াকুব (আ.)-এর পরীক্ষার বিভিন্ন স্তর পূর্ণতা লাভ করছিল। তাঁদের প্রদত্ত এই ব্যাখ্যার ইঙ্গিত ও সমর্থন পাওয়া যায় ৭৬ নম্বর আয়াতে উলি্লখিত 'এমনিভাবে আমি ইউসুফকে কৌশল শিক্ষা দিয়েছিলাম' বক্তব্য থেকে। সেখানে স্পষ্টভাবে আল্লাহ তায়ালা এসব বিষয়কে নিজের কুদরতি কৌশল বলে আখ্যায়িত করেছেন। অতএব, এসব কাজ যেহেতু আল্লাহর নির্দেশে তাঁরই কৌশলের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে সংঘটিত হয়েছে, তাই এগুলোকে অবৈধ বলার কোনো সুযোগ নেই। এগুলো বাহ্যিকভাবে গোনাহের কাজ মনে হলেও প্রকৃত অর্থে তা গোনাহ নয়।
* কোনো কিছু চুরি করলে মিসরে তখন এই অপরাধের বিধান ছিল, চোরকে মারপিট করে চুরি করা মালের দ্বিগুণ মূল্য আদায় করে ছেড়ে দেওয়া হতো। ইউসুফ (আ.)-এর পক্ষে বিদ্যমান এই আইনের কারণে বিনয়ামিনকে চোর সাব্যস্ত করতে পারলেও নিজের কাছে রেখে দেওয়া সম্ভব ছিল না। তাই রাজকর্মচারীরা ইউসুফ (আ.)-এর ভাইদের কাছ থেকে হজরত ইয়াকুব (আ.)-এর শরিয়তের বিধান জেনে নিল। তাঁর শরিয়তের বিধান ছিল চোরকে দাসত্বের জীবন বরণ করতে হবে। এই বিধান জানার মাধ্যমে বিনয়ামিনকে আটকে রাখার বৈধতা অর্জন হলো। আল্লাহ এভাবেই ইউসুফ (আ.)-এর মনোবাঞ্ছা পূরণ করলেন।
তাফসিরে ইবনে কাছির ও মাআরেফুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
অনুবাদ : ৭১. তারা ওদের দিকে মুখ করে বলল, তোমাদের কী হারিয়েছে? ৭২. তারা বলল, আমরা বাদশাহর পানি পান করার পেয়ালা হারিয়ে ফেলেছি। যে কেউ এর সন্ধান দেবে, সে এক উটের বোঝা পরিমাণ মাল (পুরস্কার) পাবে। আমি এই (পুরস্কার প্রদানে) জামিনদার। ৭৩. তারা বলল, আল্লাহর কসম, তোমরা তো জানো, আমরা অনর্থ সৃষ্টি করতে এ দেশে আসিনি এবং আমরা কোনো চোরও নই।* ৭৪. তারা বলল, যদি তোমরা মিথ্যাবাদী হও, তবে যে চুরি করেছে, তার শাস্তি কী হবে? ৭৫. তারা বলল, তার শাস্তি হলো এই যে, যার মালপত্রের ভেতর থেকে তা পাওয়া যাবে, এই অপরাধের কারণে সে দাসত্ব করবে। আমরা জালিমদের এভাবেই শাস্তি দিই।*
তাফসির : *বিনয়ামিনের মালপত্রে পরিকল্পিতভাবে শাহি পেয়ালা গুঁজে রেখে দিয়ে পরে তাদের চুরির অভিযোগ তোলার বিষয়টি পবিত্র কোরআন শরিফের বিখ্যাত মুফাসসিরগণ বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এসব ব্যাখ্যার মধ্যে সবচেয়ে চমৎকার ও শুদ্ধতম ব্যাখ্যা হিসেবে গ্রহণ করা হয়, যা তাফসিরে কুরতুবি ও মাজহারিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা লিখেছেন, আলোচ্য ঘটনায় যা বলা হয়েছে বা করা হয়েছে, তা বিনয়ামিনের বাসনার ফলশ্রুতি ছিল না, ইউসুফ (আ.)-এরও প্রস্তাব বা কৌশলের বহিঃপ্রকাশ ছিল না; বরং এই ঘটনার খুঁটিনাটি সবই ছিল আল্লাহ তায়ালার কুদরতের অপার রহস্যের বহিঃপ্রকাশ। এর মাধ্যমে হজরত ইয়াকুব (আ.)-এর পরীক্ষার বিভিন্ন স্তর পূর্ণতা লাভ করছিল। তাঁদের প্রদত্ত এই ব্যাখ্যার ইঙ্গিত ও সমর্থন পাওয়া যায় ৭৬ নম্বর আয়াতে উলি্লখিত 'এমনিভাবে আমি ইউসুফকে কৌশল শিক্ষা দিয়েছিলাম' বক্তব্য থেকে। সেখানে স্পষ্টভাবে আল্লাহ তায়ালা এসব বিষয়কে নিজের কুদরতি কৌশল বলে আখ্যায়িত করেছেন। অতএব, এসব কাজ যেহেতু আল্লাহর নির্দেশে তাঁরই কৌশলের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে সংঘটিত হয়েছে, তাই এগুলোকে অবৈধ বলার কোনো সুযোগ নেই। এগুলো বাহ্যিকভাবে গোনাহের কাজ মনে হলেও প্রকৃত অর্থে তা গোনাহ নয়।
* কোনো কিছু চুরি করলে মিসরে তখন এই অপরাধের বিধান ছিল, চোরকে মারপিট করে চুরি করা মালের দ্বিগুণ মূল্য আদায় করে ছেড়ে দেওয়া হতো। ইউসুফ (আ.)-এর পক্ষে বিদ্যমান এই আইনের কারণে বিনয়ামিনকে চোর সাব্যস্ত করতে পারলেও নিজের কাছে রেখে দেওয়া সম্ভব ছিল না। তাই রাজকর্মচারীরা ইউসুফ (আ.)-এর ভাইদের কাছ থেকে হজরত ইয়াকুব (আ.)-এর শরিয়তের বিধান জেনে নিল। তাঁর শরিয়তের বিধান ছিল চোরকে দাসত্বের জীবন বরণ করতে হবে। এই বিধান জানার মাধ্যমে বিনয়ামিনকে আটকে রাখার বৈধতা অর্জন হলো। আল্লাহ এভাবেই ইউসুফ (আ.)-এর মনোবাঞ্ছা পূরণ করলেন।
তাফসিরে ইবনে কাছির ও মাআরেফুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
No comments