সমবায় সমিতির প্রতারণা- আমানত সুরক্ষার ব্যবস্থা করুন
চাঁদপুরে গ্রাহকদের সঞ্চয়কৃত অর্থ নিয়ে
নিবন্ধনকৃত বিভিন্ন সমবায় সমিতি উধাও হওয়ার বিবরণ নিয়ে রোববার সমকালে
'চাঁদপুরে উধাও হচ্ছে সমবায় সমিতি' শিরোনামের প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে।
এই জেলায় প্রতি বছর বেশকিছু সমবায় সমিতির নিবন্ধন বাতিল হওয়াও এখন নিয়মে
পরিণত হয়েছে। ধারণা করা যায়, নিবন্ধন শর্ত পূরণে ব্যর্থতা বা
নিয়মবহির্ভূতভাবে কর্মকাণ্ড পরিচালনার দায়ে অথবা প্রতারণার দায়ে এসব
সমবায়ের নিবন্ধন বাতিল করা হয়। এই ধারায় গত তিন বছরে একমাত্র চাঁদপুর জেলা
থেকেই দুই শতাধিক সমবায় সমিতির নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। এখানে সমবায়
সমিতির নামে কী ধরনের নিয়মবহির্ভূত কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় এবং সাধারণ মানুষ
কীভাবে সমবায় পরিচালকদের দ্বারা প্রতারিত হন, এতে তা বোঝা যায়। সমকালের
প্রতিবেদনে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার একজন স্বামীহারা বিধবার সমবায়ের
অর্থ গচ্ছিত রেখে পথে বসার মর্মন্তুদ কাহিনী বিবৃত হয়েছে। তার মতো আরও অনেক
সমবায়ী নিজের সামান্য সঞ্চয়ের বিনিময়ে নিয়মিত লাভ পাওয়ার আশায় নির্দিষ্ট
সমবায়ে অর্থ গচ্ছিত রাখতে উৎসাহী হয়েছিলেন; কিন্তু সমবায় পরিচালনায়
পরিচালকদের অদক্ষতা এবং অনেক ক্ষেত্রে প্রতারণা সমবায়ী খাতের সর্বনাশ করছে।
চাঁদপুরের এক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক সমবায়কে ঘিরে বিভিন্ন অনিয়ম,
প্রতারণা ও ব্যর্থতা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে সমবায় অধিদফতরের নিয়মিত
পর্যবেক্ষণ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তার পরামর্শকে খাটো করে দেখার
উপায় নেই। কিন্তু সমবায় সমিতি নিবন্ধনের সময়েই এর সঙ্গে জড়িতদের এ ব্যাপারে
অভিজ্ঞতা, পরিচালকদের বিরুদ্ধে কোনো আর্থিক অপরাধ সংঘটনের পূর্ব অভিযোগ
রয়েছে কিনা অথবা তাদের আসল মোটিভ কী, তা জানার চেষ্টা করা উচিত। এরপর
নিয়মিত সমবায়ের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হলে উধাও হওয়া সমবায়ের সংখ্যা এবং
সমবায়ীদের গচ্ছিত অর্থ খোয়া যাওয়া অনেক হ্রাস পাবে। যেসব সমবায় সাধারণ
মানুষের গচ্ছিত অর্থ নিয়ে উধাও হয়ে যাচ্ছে, তাদের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক
প্রভাব নির্বিশেষে আইনের আওতায় এনে সমবায়ীদের সঞ্চয়কৃত অর্থ উদ্ধারের
ব্যবস্থা করতে হবে। এতেও সমবায়ের মাধ্যমে প্রতারণার ফাঁদ পাতার প্রবণতা কমে
আসবে ও আমানত সুরক্ষা আয়াস সাধ্য হবে।
No comments