মোহাম্মদপুরে গার্মেন্টসে অগ্নিকা-ের নেপথ্যে ॥ জমি নিয়ে চক্রান্ত by গাফফার খান চৌধুরী
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে স্মার্ট এক্সপোর্ট গার্মেন্টস লিমিটেডে পরিকল্পিতভাবে জীবন্ত পুুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে ৭ নারী পোশাক শ্রমিককে। নিহতদের প্রতি পরিবারকে লাশ বহনের জন্য এ্যাম্বুলেন্স ছাড়াও প্রতিজনের জন্য স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দেন।
আধিপত্য বিস্তার, ক্ষমতার দাপট, জমি নিয়ে জমির মালিক ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব, অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখল আর বেদখল নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের বলি হলেন গ্রামের অসহায় সহজ সরল ৭ নারী এবং তাদের পরিবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে অবস্থানকালে স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের সব ধরনের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। হত্যাকা-ের শিকার রাজিয়ার পিতা বাদী হয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় এ ভবনে অবস্থিত ৫টি গার্মেন্টসের ৫ মালিককেই আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আসামিদের কেউ গ্রেফতার হয়নি। ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কমিটিকে দ্রুততার সঙ্গে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়েছে।শনিবার দুপুর পৌনে ৩টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন বেড়িবাঁধ এলাকার বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন ৭১৭ নম্বর দুইতলা হোসেন মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় স্মার্ট এক্সপোর্ট গার্মেন্টস লিমিটেডে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। আগুনে ৭ নারী শ্রমিকের মৃত্যু হয়। আহত হন অন্তত ২০ জন। নিহতরা হচ্ছেন, ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর থানাধীন কালুদাসকাঠি গ্রামের আলফাজ উদ্দিন শিকদারের মেয়ে রাজিয়া (১৫)। তিনি মোহাম্মদপুর থানাধীন বেড়িবাঁধের চাঁদমিয়া হাউজিং বস্তিতে থাকতেন। অপরজন নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানাধীন চরমান্দাইলের মাস্টার বাড়ির কাজল মিয়ার মেয়ে ফাতেমা (১৭)। ফাতেমা রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন রায়ের বাজারের ১০/ই নম্বর বাড়িতে থাকতেন। আপরজন রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন বছিলা এলাকার শামীম কোম্পানির বাড়ির জাভেদ হোসেনের মেয়ে কহিনুর (১৫)। ভোলা জেলার বোরহান উদ্দিন থানাধীন চরগাজীপুর গ্রামের আজিজুল হকের মেয়ে নাসিমা (৩০)। তার স্বামীর নাম সফু। তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধের ডাক্তার বাড়িতে বসবাস করতেন। আরেকজন ভোলা জেলার বোরহান উদ্দিন থানার দেউলা গ্রামের নয়া মিয়া শিকদারের মেয়ে নাসিমা আক্তার (১৭)। নাসিমা মোহাম্মদপুরের গিরিঙ্গী হাউজিংয়ের হানিফ কোম্পানির বাড়িতে থাকতেন। অপরজন ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন থানাধীন দোলনবাজার এলাকার শিউলী বাজার গ্রামের কায়সার আহমেদের মেয়ে জ্যোৎস্না (১৮)। অন্যদিকে প্রাণে বাঁচতে ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হওয়া রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন বেড়িবাঁধ এলাকার ডাক্তার বাড়িতে বসবাসকারী গার্মেন্টস কর্মী মোহাম্মদ আবুর মেয়ে লাইজু (১৬) শনিবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়।
আহত ২০ জনের মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোজিনা (১৮), হাসিনা (২৫), রিয়া (১৭) ও ছবির (২০) অবস্থা গুরুতর। আহত অন্যরা আশঙ্কামুক্ত। হতাহতদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা দেখা গেছে, রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধের মাত্র ২০ হাত পশ্চিম দিকেই গার্মেন্টসটির অবস্থান। ভবনসহ জায়গাটির মালিক নাসিমা খানম (৩৮)। তিনি স্বামীসহ দুবাইপ্রবাসী। বাড়ি বাংলাদেশের মানিকগঞ্জ জেলার বাতুলা গ্রামে।
নাসিমা খানম জনকণ্ঠের কাছে বিস্তারিত ঘটনা খুলে বলেন। তিনি জানান, পুরো ভবনটি মোট ১০ কাঠা জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত। ভবনের ৪ তলা ফাউন্ডেশন দেয়া আছে। নিচতলায় সাদ অটোমোবাইল ওয়ার্কস, মায়ের দোয়া ভলকানাইজিং সেন্টার, হোসাইন এন্টারপ্রাইজ এবং নিউ ইস্কাটন সোপ নামে ইলেকট্রনিক্সসহ বেশ কয়েকটি দোকান আছে। এসব দোকান থেকে তিনি আলাদা ভাড়া পেয়ে থাকেন।
ভবনটির দ্বিতীয় তলায় গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি তৈরি করার উদ্দেশ্যেই গড়ে তোলা হয়। গার্মেন্টসটির প্যাকিং কর্মচারী রুবেল হাওলাদার জনকণ্ঠকে জানান, গার্মেন্টসটিতে জ্যাকেট, জিন্সের শার্ট, জিন্সের প্যান্ট, উলের তৈরি জামাকাপড় তৈরি হতো। গার্মেন্টসটিতে বেশ কয়েকটি গোডাউন ছিল।
ভবন মালিক সাংবাদিকদের জানান, ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে রাজউকের কোন নিয়মকানুন মানা হয়নি। আমি বার বার রাজউকের কাছে ধর্ণা দিয়েও তাদের পাত্তা পাইনি। শেষ পর্যন্ত রাজউকের পরামর্শেই ভবন নির্মিত হয়েছে রাজউকের নিয়মনীতি ব্যতিরেকেই। তবে ঢাকা সিটি করপোরেশনের সব নিয়মকানুন মানা হয়েছে। গার্মেন্টসের জন্য ভবন নির্মাণে তিনি পরিচিত গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি ৫ গার্মেন্টস ব্যবসায়ীকেও পেয়ে যান।
এরা হচ্ছেন, হুমায়ুন কবির, মনিনুল ইসলাম, মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন, মোহাম্মদ জাকারিয়া এবং জাকারিয়া হোসাইন। এই ৫ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তিনি ভাড়া ও অগ্রিম বাবদ একটি মোটা অঙ্কের টাকা নেন। সেই টাকা দিয়েই তিনি ভবন তৈরির কাজ শুরু করেন। ভবনটি তৈরি করতে তার ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ভবনের ফ্লোর ১ লাখ ১শ’ বর্গফুট আয়তনের। বর্তমানে তিনি ভবনটির দ্বিতীয় তলার গার্মেন্টসের ৫ মালিকের কাছ থেকে মাসিক ১ লাখ ১০ হাজার ভাড়া পান। প্রায় ১৬ বছর আগে ৫ গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর সঙ্গে তাঁর দালিলিক চুক্তি হয়। চুক্তির পর থেকে প্রায় ১৬ বছর ধরেই ভবনটির দ্বিতীয় তলায় গার্মেন্টস ব্যবসা করছেন ৫ ব্যবসায়ী।
ভবন মালিকের দাবি, ভবনটি ৫ ইঞ্চি দেয়ালে তৈরি। ভবন পরিকল্পিতভাবে তৈরি না হলেও ভবনের অন্যান্য বিষয় কিন্তু পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে। ভবন ঘুরে দেখা গেছে, ভবনের দক্ষিণ ও উত্তর পাশে ১৬টি করে ৪ ফুট চওড়া ও ৫ ফুট লম্বা জানালা আছে। পূর্বদিকেও সমমাপের জানালা আছে। কোনটিতেই ভারি কাঁচ লাগালো ছিল না। ভবনের পশ্চিম দিকে ১৬টি বাথরুম আছে। কোন বাথরুমেই ভেনটিলেটর আটকানো নয়।
সাংবাদিকদের সামনে এসব বিষয়ের কারণ ব্যাখ্যা করেছেন ভবন মালিক। তিনি জানান, কারণ কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটলে শ্রমিকরা যাতে ভেন্টিলেটর দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারেন। এছাড়া ভবনের পশ্চিম দিকের কোনায় ২টি বিশাল বিশাল জানালা রাখা হয়েছে। তাতে হাল্কা কাঁচ দেয়া হয়েছে। কারণ স্টিলের ফ্রেম দিলে দুর্ঘটনার সময় শ্রমিকরা বেরুতে পারবেন না। আর কাঁচের জানালা থাকলে অনায়াসে ভেঙ্গে শ্রমিকরা বের হতে পারেন। এতে প্রাণহানির সংখ্যা কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। প্রতিটি ফ্লোরেই এমন চিন্তা করেই কাঠামো করা হয়েছে।
কারখানা চালু থাকার সময় কারাখানার গেটে কোন সময় তালা দেয়া হতো না। কারণ সাভারের নিশ্চিন্তপুরে তাজরিন ফ্যাশনে ভয়াবহ অগ্নিকা-ে প্রাণহানির ঘটনার পর গেটে তালা না দিতে গার্মেন্টস মালিকদের কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে গার্মেন্টসের ব্যবসা না করলেও মানুষের প্রাণের তো মূল্য আছে। সেই বিবেকবোধ থেকেই আমি গার্মেন্টস মালিকদের গেটে তালা না দিতে নির্দেশ দেই। আমার দায়িত্ব আমি পালন করেছি। তারপরও হয়ত আমার ভুল আছে। থাকতেই পারে। এমনকি ভবন নির্মাণে যেসব ত্রুটি আছে তা আমি অবলীলায় স্বীকার করে নিচ্ছি। আমি কোন কিছুই চাপা রাখতে চাই না। কর্মরত সময় কখনই গেটে তালা থাকত না। নিচতলায় আন্ডারগ্রাউন্ড।
ভবন মালিক দাবি করেন, তিনি প্রায়ই বাংলাদেশে আসেন। এলেই ভবনে যান। সেখানে প্রায় ৫শ’ শ্রমিক কাজ করেন। এর মধ্যে নারী শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩শ’।
ভবনের ৩৬টি বড় বড় জানালায় দেয়া গ্রিলগুলো ইচ্ছে করেই তেমন মজবুত করে দেয়া হয়নি। কারণ দুর্ঘটনার সময় শক্ত গ্রিল ভেঙ্গে শ্রমিকরা বের হতে পারবেন না। এতে অনেক সময়ই প্রাণহানির সংখ্যা আশঙ্কাজনকহারে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গ্রিলেও দেয়া হয়েছে পাতলা কাঁচ। যাতে দুর্ঘটনার সময় শ্রমিকরা কাঁচ ভেঙ্গে বেরুতে পারেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং গার্মেন্টসটির প্যাকেজিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বলছিলেন, ঘটনার সময় তিনি গামেন্টর্সের পশ্চিম দিকের গোডাউনে কাজ করছিলেন। ওই সময় দুপুরের খাবার খেয়ে প্রায় সবাই কাজ করছিল। গার্মেন্টসে ওই সময় প্রায় ৩শ’ শ্রমিক উপস্থিত ছিলেন। এরমধ্যে অন্তত আড়াই শ’ শ্রমিকই ছিল নারী।
তিনি বলেন, গার্মেন্টসে কাজ চলছে। আচমকা গার্মেন্টসের পশ্চিম দিকের একটি উলেন টাইপের কাপড়ের গোডাউন থেকে আগুন জ্বলতে শুরু করে। যেখান থেকে আগুনের ধোঁয়া বের হচ্ছিল সেখানে কোন বৈদ্যুতিক তারের সংযোগ বা বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম সংক্রান্ত কোন জিনিসপত্রই নেই। ফ্লোরের ওপর দিয়ে জ্যাকেটের জন্য উল, রেক্সিন, চামড়া, দাহ্যজাতীয় কাপড় ছিল। আর তাতেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তবে আগুন এত তাড়াতাড়ি এতবড় ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি তার মাথায় আসছে না বলে তিনি দাবি করেছেন।
ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে। তারা বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে পানির পাইপ দিয়ে দরজা জানালার কাঁচ ভেঙ্গে দিয়ে তা দিয়ে পানি ভেতরে প্রবেশ করিয়ে দেয়। আর তাতেই প্রাণে বেঁচে যান অন্তত কয়েক শ’ শ্রমিক। এ সময় শ্রমিকরা ভাঙ্গা দরজা জানালা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে যায়। আর অনেক শ্রমিক ভুল বুঝে বাথরুমে গেলে সেখানেই অক্সিজেনের অভাবে দমবন্ধ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে দমকল বাহিনী আহত অন্তত ২০ জনকে উদ্ধার করেন। এরমধ্যে ৭ জনের মৃত্যু হয়। দমকল বাহিনী এমন বুদ্ধিমত্তার পরিচয় না দিলে মৃতের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়ে যেতে পারত।
ঘটনা শুনেই চট্টগ্রাম থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হতাহতদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানককে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন।
আহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। অগ্নিকা-ের কারণ সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিসের প্রাথমিক ধারণা, বিড়ি সিগারেটের আগুন থেকে ঘটনাটি ঘটতে পারে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভবন মালিক প্রবাসী হওয়ায় জমি ও ভবনটির ওপর নজর পড়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের। এসব প্রভাবশালীর সঙ্গে ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করা ৫ গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর যোগসাজশ রয়েছে। মূলত জমিটি গ্রাস করতেই নানা উছিলায় গার্মেন্টসটিতে আগুন লাগিয়ে দেয়া হতে পারে।
তবে ভবন মালিক জনকণ্ঠের কাছে সরাসরি অভিযোগ করেছেন, গার্মেন্টসটিতে পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। এর পেছনে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল যারা হাউজিং ব্যবসা বা ডেভেলপারের সঙ্গে জড়িত তাদের হাত থাকাও বিচিত্র নয়। তিনি সময় হলে সব খুলে বলবেন বলেও সাংবাদিকদের জানান।
এদিকে অগ্নিকা-ের ঘটনায় নিহত রাজিয়ার পিতা আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিজুল হক জনকণ্ঠকে জানান, মামলায় গার্মেন্টসের ৫ মালিকসহ অজ্ঞাত ১০/১২ গার্মেন্টস কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। তবে রাত ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন আসামি বা ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।
ডিএমপির মোহাম্মদপুর বিভাগের সহকারী কমিশনার রাসেল আক্তার জনকণ্ঠকে জানান, আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ঘটনাটি নিছক দুর্ঘটনা বা পরিকল্পিত হত্যাকা- সে বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে।
এদিকে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে ৭ শ্রমিকের মধ্যে ৩ জনের লাশ ভোলায় তাদের গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। এরা হচ্ছেন, বোরহানউদ্দিনের সাচড়া ইউনিয়নের চরগাজীপুর গ্রামের শফিকের স্ত্রী নাছিমা, দেউলা ইউনিয়নের নয়া মিয়ার মেয়ে নাছিমা আক্তার ও চরফ্যাশন উপজেলার উত্তর কলমী গ্রামের লাইজু আক্তার। রবিবার দুপুরে লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছলে গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। লাইজুর স্বামী মাইক্রোবাসচালক। ২টি ছোট সন্তান আছে।
ভয়াবহ অগ্নিকা-ের কারণ অনুসন্ধান করতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক ভরত চন্দ্র বিশ্বাসকে প্রধান করে ৪ সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুততার সঙ্গে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হচ্ছেন, সহকারী পরিচালক (ঢাকা) মনির হোসেন, অতিরিক্ত সহকারী পরিচালক মামুন মাহমুদ। আর কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশনের জ্যেষ্ঠ পরিচালক আব্দুল আলিমকে।
No comments