লবিস্ট নিয়োগের পরামর্শ মার্কিন কংগ্রেস প্রতিনিধি দলের- গার্মেন্টসে জিএসপি সুবিধা
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশী তৈরি পোশাকের জিএসপি সুবিধা পেতে লবিস্ট নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন সফররত মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল। রবিবার দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে সাক্ষাতে তাঁরা এ পরামর্শ দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের কোটা ও শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রত্যাহার বা বহাল রাখার বিষয়ে সরেজমিনে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল শনিবার ঢাকায় আসে। তবে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থার (ইউএসএআইডি) বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবামূলক কর্মসূচী পরিদর্শনে তাঁরা এসেছেন। মার্কিন কংগ্রেসের ওয়েজ এ্যান্ড মিন্স কমিটির চেয়ারম্যান ও রিপাবলিকান পার্টির সদস্য জ্যাক কিংসটন এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। প্রতিনিধি দলটি রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করে। এ ছাড়া কয়েকটি পোশাক শিল্প কারখানা পরিদর্শন করে। রবিবার সন্ধ্যায় তারা দিল্লীর উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ে। এর আগে প্রতিনিধি দলের সম্মানে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি।প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর দীপু মনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাঁর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, মার্কিন বাজারে বাংলাদেশী তৈরি পোশাকের শুল্ক ও কোটামুক্ত-সুবিধা, এ দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের পরিস্থিতি, আর্থসামাজিক অগ্রগতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, কংগ্রেসের সদস্যরা তাঁকে বলেছেন, এবারের সফরে এসে বাংলাদেশ সম্পর্কে তাদের মনে ইতিবাচক ধারণা জন্মেছে। বাংলাদেশের ইতিবাচক দিকগুলো ওয়াশিংটনে তুলে ধরবেন তাঁরা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, তাঁরাও চান, বাংলাদেশ যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়, সেটি অব্যাহত থাকুক। কিন্তু এর জন্য আরও কংগ্রেস সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন। এ জন্যই লবিস্ট নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
দীপু মনি বলেন, পোশাক শিল্প কারখানার নিরাপত্তা ও শ্রমিক অধিকার নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের পোশাক শিল্প কারখানায় আগুন, শ্রমিক নিরাপত্তা না থাকা, শ্রমিকদের ইউনিয়ন করার অধিকার না থাকা ও এক শ্রমিক নেতা হত্যাকা-সহ বিভিন্ন অভিযোগের খবর কয়েকটি আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন এবং বাংলাদেশের একটি শ্রমিক সংগঠনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহারের বিষয়টি আলোচনায় আসে। মার্কিন কংগ্রেসের ১২ জন সদস্য জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহারের পক্ষে মত দেন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ বিপজ্জনক উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি রন কার্ক বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী জি এম কাদেরকে চিঠি লিখেছেন। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বাংলাদেশের জিএসপি-সুবিধা বাতিলের কথাও মার্কিন ওই কর্মকর্তা উল্লেখ করেন। বিষয়টি নিয়ে মার্চের শেষ সপ্তাহে কংগ্রেসে শুনানি হবে। তবে শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা বহাল রাখার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরছে। ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কয়েকজন কংগ্রেস সদস্যের সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশ সফরেরও আমন্ত্রণ জানান।
No comments