কবি ও কবিতা- পোড়ামাটির ক্যানভাসে বিরামহীন বেদনা
আমি কোথায় যেন যেতে চাই,গভীর তন্দ্রাচ্ছন্ন থেকেও হাঁটি অবিরতÑ জাগরণে তো কথাই নেই। আমি হাঁটছি, হেঁটে যাচ্ছি।
গন্তব্যটা
আমার বেশ পরিচিত, কিন্তু পথ আমার সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছে ক্রমাগত, পথই
আমাকে দেখায় না পথ। আগে এক সময় সবুজ ঘাসের সাথে কথা বলতাম, তারপর ঘাসগুলো
যখন ধূসরতার দখলে চলে যায় তখন কথা বলি মাটির সাথে। চৈত্রের মধ্য কোনো
দুপুরে পূর্ণিমার চাঁদ আর হাসনাহেনার গন্ধ খুঁজে খুঁজে আমি কতবার যে
কান্ত হয়েছি! অস্থির পৃথিবীর গন্ধ আমার কাছে লেগেছে মাকাল ফলের মতো
বেরসিক। কী যেন হারিয়েছি, কী যেন পেয়েও পেলাম নাÑ এমন হাহাকারের মধ্যে
ডুবে থেকে চরম অস্থিরতা আমার নিত্যসঙ্গী হয়েছে। যখন পৃথিবীর রূপ রস গন্ধ
আর স্বাদ নেয়ার তৃষ্ণা মিটে যায় তখন সবুজে সবুজময় একটা পৃথিবীতে বেঁচে
থাকার স্বপ্ন দেখায় আমার এই কবিতা। কাব্যের পঙ্ক্তি সৃষ্টি করে আমি উপভোগ
করি অপার সুখ। দুঃখ আর বিরামহীন বেদনার তাড়নায় একদিন আমি কাব্যের এই
বিশাল ভুবনে হাঁটতে শুরু করি।
তারপর বেশ সময় চলে গেছে। থামিনি। পেছন থেকে কেউ কেউ আমাকে টেনে-হিঁচড়ে লাঞ্ছনার জালে বন্দী করতে বারংবার চেষ্টা করেছেন। লাভ করতে পারেননি। তাদের যন্ত্রণায় এক সময় আমি কবিতার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরাতে উদ্যত হয়েছি, বলেছি কসম খোদার! আর এক লাইন কবিতাও লিখবো না। কিন্তু কবিতাই আমার পেছন ছাড়ে না। কবিতা আমার সঙ্গী, বেঁচে থাকার অবলম্বন। যত দিন বাঁচি লিখে যাবো। ২০০৯ সালে আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘নষ্ট শরীর ভিজে না রৌদ্রজলে’ প্রকাশের মধ্য দিয়ে আমার সাহিত্য জগতে আগমন। বইটির জন্য ইমপ্রেস টেলিফিল্ম (চ্যানেল আই) এবং সিটি ব্যাংক প্রবর্তিত ‘সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার-০৯’ পেয়েছিলাম। এবারের মেলায় আমার তৃতীয় কাব্য গ্রন্থ ‘পোড়ামাটির ক্যানভাসে বিরামহীন বেদনা’ হয়েছে। দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘দেহারণ্যের ভাঁজে শূন্যতার বিলাপ’ বের হয় ২০১২ সালে। গ্রন্থটি পাঠ করে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদ বলেছিলেন ‘তুমি পদ্য বাদ দিয়ে গদ্য লিখো, অনেক ভালো করবে।’ মূলত বাংলা সাহিত্যের এই বরপুত্রের উৎসাহেই গল্প লিখতে শুরু করি। এবার বের হয়েছে আমার প্রথম গল্প গ্রন্থ ‘ছাতিম গাছের মৃত ছায়া’।
লছিলাম কাব্যগ্রন্থ পোড়ামাটির ক্যানভাস সম্পর্কে। বইটিতে স্থান পাওয়া ৬৭টি কবিতার প্রায় সবগুলোই প্রকাশিত হয়েছে দেশ-বিদেশের শীর্ষ পত্রিকাগুলোতে। রূপকের অন্তরালে চার পাশের দরিদ্র, রাজনীতি, শোষণ আর কুসংস্কারে বেড়ে ওঠার চিত্র, প্রেম বিরহ, দুঃখ- কষ্ট, হাহাকার আর দেশের প্রতি মমত্ববোধের ছবি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি কবিতাগুলোতে। আসলে আমার ইচ্ছার চিত্র কতটা ফুটিয়ে তুলতে পেরেছিÑ এটা বিচারের দায়িত্ব আমার পাঠকদের হাতেই ছেড়ে দিলাম। বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন রাজিব রায়। বেরিয়েছে বিভাস প্রকাশনী থেকে। মূল্য ১৫০ টাকা।
শাহজাদী জেবুন্নেছা
চট্টগ্রাম প্রিয়জনের উপন্যাস
অন্ধকারের চন্দ্র
‘বকুল এবার একটু অবহেলার হাসি দিয়ে বলল, আরে মিস্টার, ভুল কি নগদে ধরা পড়ে? ভুল যদি না-ই হবে তবে শত শত ছেলেমেয়ের জীবন কেন নষ্ট হবে? সময় অনেক আছে, ভেবে নিন। আপনার মাঝে আর আমার মাঝে…’
গ্রামের এক চালাক-চতুর অথচ সরল মনের এবং বাকপটু, সুশ্রী ও সুকণ্ঠের অধিকারিণী মেয়ে বকুল। সত্যি সে এক সময় গ্রামে বকুল ফুলের মতোই সুবাসিত হয়ে ওঠে। তার রূপ-গুণ, ব্যবহার এসবের কোনো তুলনাই হয় না। কথার ভাঁজে ভাঁজে তার মিষ্টি মধুর ও বিমুগ্ধ যুক্তির ফাঁদে মানুষ সত্যিই মনের অজান্তে বন্দী হয়ে পড়ে। বন্দী হয়ে পড়ে শহরের এক ধনাঢ্য পরিবারের রাজকুমার। তার চোখ, তার মন সব কিছুই বকুলের পিছু ধাওয়া করে চলে। বকুল পরিণত হয় সোনার হরিণে। সময়ের পরিক্রমায় টিনেজার হৃদয়ের পটভূমিতে তাদের ভুবনে সৃষ্টি হয় নিটোল প্রেমের রঙিন তাজমহল। হঠাৎ বকুলের জীবনে কালবৈশাখী ঝড় এসে তাকে নানা রকম যুদ্ধের সম্মুখীন করে তোলে।
সমাজের চোখে সে একজন কলঙ্কিনী রূপে সবার কাছে বিবেচিত হয়। কোনো অপবাদ, কোনো অবহেলা তাকে দমাতে পারে না। লাঞ্ছনা আর শত অপবাদ সহ্য করে সে ধীরে ধীরে এগিয়ে যায় তার জীবনের অটুট লক্ষ্যে। চাচাতো ভাই; জীবনের একমাত্র বিশ্বাসী বন্ধু প্রদীপের তেলের মতোই তার ভেতরে শক্তির সঞ্চার করে যায়। জীবনের ক্ষণে ক্ষণে চোখের জলে, অনাকাক্সিক্ষত বেদনার জলে ভেসে যায় বুক। তবুও সে ভেসে যায় না ব্যর্থতার বানে। সে দমে যায়নি। কারণ, সে বীরাঙ্গনা হয়েই যেন জন্ম নিয়েছে, বারাঙ্গনা। তার চোখে জ্বলে ওঠে জীবন জয়ের এক অদম্য নেশার প্রদীপ। শিক্ষাজীবন পার করে চাকরি পেয়ে জীবনের হাল খুঁজে পায়। আর এখানেই এসে বাংলা উপন্যাস, নাটক ও চলচ্চিত্রের ধারাবাহিকতা ভেঙে যায় তার জীবনের শেষ মুহূর্তে। হঠাৎ করেই পাঠকের মনের হিসাবটা পাল্টে যায়। সমস্ত নারী জাতির জন্য সে হয়ে ওঠে আদর্শ প্রতীক।
অন্ধকারের চন্দ্র বইটি পড়–ন, নিজেকে জানুন এবং জীবনে কঠোর প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হোন।
লেখক : এইচ এম সিরাজ
প্রচ্ছদ আহমেদ ফারুক
প্রিয়মুখ প্রকাশনী (স্টল-১১৬)
মূল্য ১৩৫ টাকা
তাহমিনা তানি
কেন্দ্রীয় প্রিয়জন
তারপর বেশ সময় চলে গেছে। থামিনি। পেছন থেকে কেউ কেউ আমাকে টেনে-হিঁচড়ে লাঞ্ছনার জালে বন্দী করতে বারংবার চেষ্টা করেছেন। লাভ করতে পারেননি। তাদের যন্ত্রণায় এক সময় আমি কবিতার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরাতে উদ্যত হয়েছি, বলেছি কসম খোদার! আর এক লাইন কবিতাও লিখবো না। কিন্তু কবিতাই আমার পেছন ছাড়ে না। কবিতা আমার সঙ্গী, বেঁচে থাকার অবলম্বন। যত দিন বাঁচি লিখে যাবো। ২০০৯ সালে আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘নষ্ট শরীর ভিজে না রৌদ্রজলে’ প্রকাশের মধ্য দিয়ে আমার সাহিত্য জগতে আগমন। বইটির জন্য ইমপ্রেস টেলিফিল্ম (চ্যানেল আই) এবং সিটি ব্যাংক প্রবর্তিত ‘সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার-০৯’ পেয়েছিলাম। এবারের মেলায় আমার তৃতীয় কাব্য গ্রন্থ ‘পোড়ামাটির ক্যানভাসে বিরামহীন বেদনা’ হয়েছে। দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘দেহারণ্যের ভাঁজে শূন্যতার বিলাপ’ বের হয় ২০১২ সালে। গ্রন্থটি পাঠ করে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদ বলেছিলেন ‘তুমি পদ্য বাদ দিয়ে গদ্য লিখো, অনেক ভালো করবে।’ মূলত বাংলা সাহিত্যের এই বরপুত্রের উৎসাহেই গল্প লিখতে শুরু করি। এবার বের হয়েছে আমার প্রথম গল্প গ্রন্থ ‘ছাতিম গাছের মৃত ছায়া’।
লছিলাম কাব্যগ্রন্থ পোড়ামাটির ক্যানভাস সম্পর্কে। বইটিতে স্থান পাওয়া ৬৭টি কবিতার প্রায় সবগুলোই প্রকাশিত হয়েছে দেশ-বিদেশের শীর্ষ পত্রিকাগুলোতে। রূপকের অন্তরালে চার পাশের দরিদ্র, রাজনীতি, শোষণ আর কুসংস্কারে বেড়ে ওঠার চিত্র, প্রেম বিরহ, দুঃখ- কষ্ট, হাহাকার আর দেশের প্রতি মমত্ববোধের ছবি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি কবিতাগুলোতে। আসলে আমার ইচ্ছার চিত্র কতটা ফুটিয়ে তুলতে পেরেছিÑ এটা বিচারের দায়িত্ব আমার পাঠকদের হাতেই ছেড়ে দিলাম। বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন রাজিব রায়। বেরিয়েছে বিভাস প্রকাশনী থেকে। মূল্য ১৫০ টাকা।
শাহজাদী জেবুন্নেছা
চট্টগ্রাম প্রিয়জনের উপন্যাস
অন্ধকারের চন্দ্র
‘বকুল এবার একটু অবহেলার হাসি দিয়ে বলল, আরে মিস্টার, ভুল কি নগদে ধরা পড়ে? ভুল যদি না-ই হবে তবে শত শত ছেলেমেয়ের জীবন কেন নষ্ট হবে? সময় অনেক আছে, ভেবে নিন। আপনার মাঝে আর আমার মাঝে…’
গ্রামের এক চালাক-চতুর অথচ সরল মনের এবং বাকপটু, সুশ্রী ও সুকণ্ঠের অধিকারিণী মেয়ে বকুল। সত্যি সে এক সময় গ্রামে বকুল ফুলের মতোই সুবাসিত হয়ে ওঠে। তার রূপ-গুণ, ব্যবহার এসবের কোনো তুলনাই হয় না। কথার ভাঁজে ভাঁজে তার মিষ্টি মধুর ও বিমুগ্ধ যুক্তির ফাঁদে মানুষ সত্যিই মনের অজান্তে বন্দী হয়ে পড়ে। বন্দী হয়ে পড়ে শহরের এক ধনাঢ্য পরিবারের রাজকুমার। তার চোখ, তার মন সব কিছুই বকুলের পিছু ধাওয়া করে চলে। বকুল পরিণত হয় সোনার হরিণে। সময়ের পরিক্রমায় টিনেজার হৃদয়ের পটভূমিতে তাদের ভুবনে সৃষ্টি হয় নিটোল প্রেমের রঙিন তাজমহল। হঠাৎ বকুলের জীবনে কালবৈশাখী ঝড় এসে তাকে নানা রকম যুদ্ধের সম্মুখীন করে তোলে।
সমাজের চোখে সে একজন কলঙ্কিনী রূপে সবার কাছে বিবেচিত হয়। কোনো অপবাদ, কোনো অবহেলা তাকে দমাতে পারে না। লাঞ্ছনা আর শত অপবাদ সহ্য করে সে ধীরে ধীরে এগিয়ে যায় তার জীবনের অটুট লক্ষ্যে। চাচাতো ভাই; জীবনের একমাত্র বিশ্বাসী বন্ধু প্রদীপের তেলের মতোই তার ভেতরে শক্তির সঞ্চার করে যায়। জীবনের ক্ষণে ক্ষণে চোখের জলে, অনাকাক্সিক্ষত বেদনার জলে ভেসে যায় বুক। তবুও সে ভেসে যায় না ব্যর্থতার বানে। সে দমে যায়নি। কারণ, সে বীরাঙ্গনা হয়েই যেন জন্ম নিয়েছে, বারাঙ্গনা। তার চোখে জ্বলে ওঠে জীবন জয়ের এক অদম্য নেশার প্রদীপ। শিক্ষাজীবন পার করে চাকরি পেয়ে জীবনের হাল খুঁজে পায়। আর এখানেই এসে বাংলা উপন্যাস, নাটক ও চলচ্চিত্রের ধারাবাহিকতা ভেঙে যায় তার জীবনের শেষ মুহূর্তে। হঠাৎ করেই পাঠকের মনের হিসাবটা পাল্টে যায়। সমস্ত নারী জাতির জন্য সে হয়ে ওঠে আদর্শ প্রতীক।
অন্ধকারের চন্দ্র বইটি পড়–ন, নিজেকে জানুন এবং জীবনে কঠোর প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হোন।
লেখক : এইচ এম সিরাজ
প্রচ্ছদ আহমেদ ফারুক
প্রিয়মুখ প্রকাশনী (স্টল-১১৬)
মূল্য ১৩৫ টাকা
তাহমিনা তানি
কেন্দ্রীয় প্রিয়জন
No comments