বিএসএফের সাহায্যে পাচার-অপ্রতিরোধ্য 'মানুষধরা' সাইদুল by রফিকুল ইসলাম
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চর আষাঢ়িয়াদহ এলাকায় মাদক ও মানবপাচারকারী হিসেবে সাইদুল ইসলাম একটি আলোচিত নাম। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সহযোগিতায় বাংলাদেশ থেকে মানবপাচারের হোতা হিসেবে তাকে চেনে সবাই।
দিনমজুরের সন্তান থেকে মানবপাচার ও মাদক ব্যবসার সুবাদে বিত্তশালী হয়ে ওঠা সাইদুলের নানা কর্মকাণ্ডে তটস্থ থাকে এলাকার সাধারণ মানুষ। বিএসএফের দালাল হিসেবে পরিচিত এই সাইদুলের রয়েছে নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী। বিএসএফ সদস্যদের সহযোগিতায় তার বাহিনী বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ সংগ্রহ করে বিশেষ ব্যবস্থায় ভারতে পাচার করে।
কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত কয়েক বছরে সাইদুল গোদাগাড়ী ও পবা সীমান্ত এলাকা দিয়ে কয়েক শ মানুষ ভারতে পাচার করেছে। এ ছাড়া সে ফেনসিডিল, হেরোইনসহ বিভিন্ন মাদক পাচার করে থাকে। তার এসব অপকর্মের সঙ্গে বিএসএফের সক্রিয় সহযোগিতার বিষয়টি সম্প্রতি ভারতের প্রচারমাধ্যমেও যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে। গত ২৬ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের আনন্দবাজার পত্রিকায় 'পাচারে মদদ বিএসএফেরই, রিপোর্ট ডিজির' শিরোনামে প্রকাশিত শীর্ষ সংবাদে রাজশাহীর সাইদুলের মানুষ ও মাদক পাচারের কাজে বিএসএফের সহযোগিতার বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়। ওই প্রতিবেদনে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিজির কাছে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীরের পাঠানো এক রিপোর্টের বরাত দিয়ে বলা হয়, 'সীমান্তে এখন বিএসএফের একাংশ মানুষ পাচারে সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে, যে জন্য বিএসএফের কেউ কেউ বাংলাদেশি দুষ্কৃতকারীদের সঙ্গে সংশ্রব রাখতেও কসুর করছে না। বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার সমাজবিরোধী সাইদুল ইসলামের সঙ্গে বিএসএফের কিছু অফিসারের যোগাযোগের প্রমাণ মিলেছে।'
এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, আনন্দবাজারের পর বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে তার অপকর্মের বিষয়টি উঠে এলেও সাইদুলের কর্মকাণ্ড থেমে নেই। সে এলাকাতেই দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। তবে আগের চেয়ে দিনের বেলায় তাকে একটু কম দেখা যায়। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে, সন্ধ্যা নামলেই সাইদুল তার দলবল নিয়ে এলাকায় হাজির হচ্ছে। তবে এই প্রতিবেদক একাধিক দিন ওই এলাকায় গিয়েও সাইদুলের দেখা পাননি। তাই তার কোনো ছবি তোলা সম্ভব হয়নি। এলাকার কারো কাছ থেকেও তা সংগ্রহ করা যায়নি।
সরেজমিনে ঘুরে ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজশাহীর একেবারে পশ্চিমে অবস্থিত গোদাগাড়ী উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত প্রত্যন্ত দুর্গম এলাকা চর আষাঢ়িয়াদহ ইউনিয়ন। মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে পদ্মা নদী। এই নদীর দক্ষিণ পারে ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা ইউনিয়ন হলো এই চর আষাঢ়িয়াদহ। এই ইউনিয়ন পরিষদটি চর আষাঢ়িয়াদহ কানাপাড়া গ্রামের মধ্যেই অবস্থিত। ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর থেকে প্রায় ৩০০ গজ পূর্ব-দক্ষিণ কোণে সাইদুল ইসলামের (৩৩) বাড়ি। তার বাড়ির প্রায় ২০০ গজের মধ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সাহেবনগর ক্যাম্প।
যেভাবে মানবপাচারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে সাইদুল
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের দেওয়া তথ্য মতে, প্রায় ২০ বছর ধরে সাইদুল ও তার বড় ভাই শহিদ ভারত থেকে মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত। মাদক ব্যবসার মাধ্যমেই বিএসএফের অনেক বড় কর্মকর্তার সঙ্গে সাইদুলের সখ্য গড়ে ওঠে। এই সুযোগ নিয়ে প্রায় ১০ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে মানবপাচারের কাজে নামে সে। এ কাজে তার সহযোগী হিসেবে রয়েছে নবী, কালামসহ আরো কয়েকজন। তাদের সহযোগিতায় সাইদুল বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দরিদ্র নারী-পুরুষ সংগ্রহ করে চর আষাঢ়িয়াদহ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করে আসছে। এর মধ্যে ২০০৬, ২০০৮, ২০১০ ও ২০১২ সালে চর আষাঢ়িয়াদহ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের সময় দালালসহ অর্ধশতাধিক নারী ও শিশুকে আটক করে বিজিবি। সর্বশেষ কয়েক মাস আগে আটক করা হয় ১৩ জনকে।
সূত্র মতে, ভারতীয় মোবাইল সিম ব্যবহার করে নারী ও শিশু পাচারের দালাল ও বিএসএফের মধ্যে সমঝোতা করে দেয় সাইদুল। এ কাজের বিনিময়ে মাথাপিছু সাইদুলের আয় হয় ৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। আর এ কাজে সহায়তাকারী বিএসএফ সদস্যরা জনপ্রতি আদায় করে ৩০০ টাকা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা দালালরা দরিদ্র নারী-শিশুসহ নানা বয়সের মানুষ নিয়ে এসে সাইদুলের মাধ্যমে সীমান্ত পার করে ভারতে পাঠায়। পাচার হওয়া বেশির ভাগ নারীকে ভারতে দেহ ব্যবসায় নামানো হয়।
নিরাপদ রুট ৪৫ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভারতের হাড়ুডাঙ্গা বিএসএফ ক্যাম্প থেকে চর লবণগোলা ক্যাম্প পর্যন্ত সীমান্ত এলাকায় কোনো কাঁটাতারের বেড়া নেই। এই এলাকাটি পড়েছে রাজশাহীর পবা উপজেলার সীমান্ত এলাকার মধ্যে। মূলত এখান দিয়েই মাদক ও মানব পাচার হয়। এই পাচারকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বড় বড় সিন্ডিকেট। এদের সঙ্গে জড়িত হয়েছে পবার পশ্চিম বালিয়া এলাকার পিয়ারুল নামের এক ব্যক্তি। সীমান্ত এলাকায় যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে তারও।
সাইদুলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে, দাবি পুলিশের
বিজিবির রাজশাহী সেক্টর কমান্ডার মুহাম্মদ শামসুদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সাইদুল সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই। তবে বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখব। যেসব অভিযোগ শোনা যাচ্ছে, তা সঠিক হলে আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করার দরকার, তাই করা হবে।'
গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি অহিদুল ইসলাম বলেন, 'সাইদুলের বিরুদ্ধে গত ডিসেম্বরে মানব ও মাদক পাচারে বিএসএফকে সহযোগিতা করার অভিযোগ ওঠে। আমরা অভিযোগের তদন্ত করছি। তাকে গ্রেপ্তারেরও চেষ্টা চলছে।'
সাইদুল এলাকায় থাকা সত্ত্বেও কেন তাকে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না তা জানতে চাইলে ওসি সুনির্দিষ্ট কোনো জবাব না দিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি বলেন, 'আমাদের সীমান্ত এলাকা দিয়ে এখন আর কোনো কিছু পাচারের সুযোগ নেই। এখন যা হয়, তা পবা সীমান্ত এলাকা দিয়ে।'
সাইদুলের এখন অনেক সম্পদ
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাইদুলের বাবা গিয়াস উদ্দিন একজন দিনমজুর। কিন্তু তাঁর তিন ছেলের মধ্যে দুই ছেলে সাইদুল ও শহিদ এখন যথেষ্ট অর্থ ও সম্পদের মালিক। শহিদ কয়েক বছরের মধ্যে দুটি পাওয়ার টিলার, একটি দোকানঘর ছাড়াও বেশ কিছু জমি কিনেছে।
শহিদ বেশ কিছু দিন আগে মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সাইদুল এখনো মাদক ব্যবসা ও মানবপাচারের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তার অর্থ-সম্পদের পরিমাণও অনেক। গ্রামে সে 'বড়লোক' হিসেবে পরিচিতি। তার বাড়িতে প্রায়ই নতুন নতুন মানুষের আনাগোনা দেখা যায়।
আরো কিছু কাণ্ড
গত সোমবার দুপুরে ওই গ্রামে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাইদুলের নিজস্ব বাহিনীর অন্যতম দুই সদস্য হচ্ছে কালাম ও নবী। তিনজন প্রায় সারাক্ষণই একসঙ্গে থাকে। আড্ডা দেয় চর আষাঢ়িয়াদহ বাজারে।
এই বাজারের একজন মুদি ব্যবসায়ী বলেন, সাইদুল বাহিনীর ভয়ে কেউ কথা বলতে পারে না। তাদের সঙ্গে বিএসএফ আর পুলিশের খাতির। এখন টাকা-পয়সাও হয়েছে। কেউ কোনো কথা বললেই তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। গত কয়েক বছরে সাইদুল বাহিনী ও তার ভাইদের হাতে অন্তত ১৫ জন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সর্বশেষ ১৫ দিন আগে নির্যাতন করা হয়েছে পাশের গ্রামের আমিনের ছেলে দুলালকে।
চর আষাঢ়িয়াদহ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সারিকুল ইসলাম জানান, দুলালকে প্রকাশ্যে পেটানো হয়েছে। কিন্তু কেউ এগিয়ে যেতে সাহস পায়নি। এমনকি সাইদুলের ভয়ে দুলাল মামলাও করতে পারেননি। তবে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করায় বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার সালিস বৈঠকের কথা রয়েছে।
জানা গেছে, সাইদুল প্রায় ১০ বছর আগে এক ভারতীয় মেয়েকে বিয়ে করে। সম্প্রতি সে আরো একটি বিয়ে করে। নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে আগের স্ত্রী কয়েক দিন আগে পালিয়ে ভারতে চলে যান। এই পালানোর পেছনে দুলালের হাত রয়েছে- এ রকম সন্দেহে তাঁকে চর আষাঢ়িয়াদহ স্কুল মাঠে পেটানো হয়।
সাইদুল ও তার বাহিনীর ভয়ে এলাকার লোকজন সব সময় আতঙ্কে থাকে। গত প্রায় পাঁচ মাস আগে এলাকার আমিনুল নামের একটি ছেলেকে সাইদুল বাহিনী ধরে নিয়ে এসে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। এ নিয়ে মামলা করতে চাইলেও সাইদুল বাহিনীর ভয়ে মামলা করতে পারেনি সে। এ রকম অনেক অভিযোগ আছে সাইদুলের বিরুদ্ধে।
চর আষাঢ়িয়াদহ উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, প্রায় ছয় মাস আগে চরহনুমন্তনগর এলাকার সুরুজ নামের এক যুবককে ধরে নিয়ে এসে এই স্কুল মাঠেই পিটিয়েছিল সাইদুল ও তার বাহিনীর লোকজন। মানব ও মাদকপাচার-সংক্রান্ত জটিলতার জের ধরেই ওই যুবককে পেটানো হয় বলে জানা যায়।
৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নওশাদ আলী বলেন, এমন ঘটনা এর আগেও অনেক ঘটিয়েছে সাইদুল। কিন্তু কোনো বিচার পায়নি নির্যাতিতরা। সে এলাকায় প্রতাপশালী বলে নানা অপকর্ম করেও পার পেয়ে যায়।
সাইদুলের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে গোদাগাড়ী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে বিজিবি। মামলাটি বর্তমানে রাজশাহী জেলা দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। এই মামলায় সে জামিনে রয়েছে।
দুই মেয়েসহ আদিবাসী নারীকে পাচারের অভিযোগ
ভালো কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভনে দুই মেয়েসহ এক আদিবাসী নারীকে পাচার করে ভারতের চেন্নাইয়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলে সাইদুলের এক সহযোগী তৈয়ব আলীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। গোদাগাড়ী উপজেলার রানীনগর গড়বাড়ী গ্রামের চন্দনা রানী (৩৫), তাঁর মেয়ে সুমেত্রা রানী (৪) ও দেড় বছরের ছেলে রতনকে পাচার করা হয়েছে বলে গত রবিবার থানায় অভিযোগটি করেন চন্দনার স্বামী উমাচরণ। তিনি বলেন, ২০১২ সালের ১০ অক্টোবর তাঁর স্ত্রী চন্দনা, মেয়ে সুমেত্রা ও ছেলে রতন, প্রতিবেশী রামজীবনের মেয়ে অনিতা (২৫), আবু তালেবের মেয়ে শাহীনুর (২২), সাদির ছেলে আরশাদ আলী (৪৫) ও নাতি বাবুকে (২০) ভালো কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে চর আষাঢ়িয়াদহ সীমান্ত দিয়ে চেন্নাইয়ে পাচার করা হয়। কাজটি করে চর আষাঢ়িয়াদহ গ্রামের জসিমুদ্দিনের ছেলে তৈয়ব আলী (৫০)। গত ২০ ডিসেম্বর পাচার হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে চারজন দেশে ফিরে এলেও চন্দনা ও তাঁর দুই সন্তান এখনো ফিরে আসেনি। তবে ফিরে আসা ব্যক্তিরা উমাচরণকে জানায়, চন্দনা রানী ও তাঁর দুই সন্তানকে চেন্নাইয়ের এক লোকের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে দালাল তৈয়ব আলী।
অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি অহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এর সত্যতা পাওয়া গেলে তৈয়ব আলীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, সাইদুলই এই সাতজনকে পাচারের মূল হোতা।
পাচার হওয়া আরশাদ আলী বলেন, 'পাচারের আগে প্রথমে আমাদের সাইদুলের কাছেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সাইদুল বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমাদের সীমান্ত পার করার ব্যবস্থা করে দেয়। এরপর আমাদের ট্রেনে করে মুর্শিদাবাদ জেলার ভগবানগোলা থেকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে আবার ট্রেনে করে চেন্নাই পৌঁছে দেওয়া হয়। চেন্নাইয়ে যাওয়ার পর চন্দনা রানী ও তাঁর দুই সন্তানকে অন্য এক লোকের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। শাহিনুর ও অনিতা রানী বুঝতে পারেন তাঁদেরও এক পর্যায়ে বিক্রি করে দেওয়া হবে। তখন তাঁরা চেন্নাইয়ের এক ঠিকাদারের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে ট্রেনযোগে কলকাতা ও লালগোলায় আসার পর খরচাকা সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাড়িতে পালিয়ে আসেন।'
জাতীয় আদিবাসী পরিষদের রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি বিমল চন্দ্র রাজোয়ার পাচারের শিকার চন্দনা রানী ও তাঁর দুই সন্তানকে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং তৈয়ব আলীকে গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত কয়েক বছরে সাইদুল গোদাগাড়ী ও পবা সীমান্ত এলাকা দিয়ে কয়েক শ মানুষ ভারতে পাচার করেছে। এ ছাড়া সে ফেনসিডিল, হেরোইনসহ বিভিন্ন মাদক পাচার করে থাকে। তার এসব অপকর্মের সঙ্গে বিএসএফের সক্রিয় সহযোগিতার বিষয়টি সম্প্রতি ভারতের প্রচারমাধ্যমেও যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে। গত ২৬ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের আনন্দবাজার পত্রিকায় 'পাচারে মদদ বিএসএফেরই, রিপোর্ট ডিজির' শিরোনামে প্রকাশিত শীর্ষ সংবাদে রাজশাহীর সাইদুলের মানুষ ও মাদক পাচারের কাজে বিএসএফের সহযোগিতার বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়। ওই প্রতিবেদনে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিজির কাছে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীরের পাঠানো এক রিপোর্টের বরাত দিয়ে বলা হয়, 'সীমান্তে এখন বিএসএফের একাংশ মানুষ পাচারে সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে, যে জন্য বিএসএফের কেউ কেউ বাংলাদেশি দুষ্কৃতকারীদের সঙ্গে সংশ্রব রাখতেও কসুর করছে না। বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার সমাজবিরোধী সাইদুল ইসলামের সঙ্গে বিএসএফের কিছু অফিসারের যোগাযোগের প্রমাণ মিলেছে।'
এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, আনন্দবাজারের পর বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে তার অপকর্মের বিষয়টি উঠে এলেও সাইদুলের কর্মকাণ্ড থেমে নেই। সে এলাকাতেই দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। তবে আগের চেয়ে দিনের বেলায় তাকে একটু কম দেখা যায়। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে, সন্ধ্যা নামলেই সাইদুল তার দলবল নিয়ে এলাকায় হাজির হচ্ছে। তবে এই প্রতিবেদক একাধিক দিন ওই এলাকায় গিয়েও সাইদুলের দেখা পাননি। তাই তার কোনো ছবি তোলা সম্ভব হয়নি। এলাকার কারো কাছ থেকেও তা সংগ্রহ করা যায়নি।
সরেজমিনে ঘুরে ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজশাহীর একেবারে পশ্চিমে অবস্থিত গোদাগাড়ী উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত প্রত্যন্ত দুর্গম এলাকা চর আষাঢ়িয়াদহ ইউনিয়ন। মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে পদ্মা নদী। এই নদীর দক্ষিণ পারে ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা ইউনিয়ন হলো এই চর আষাঢ়িয়াদহ। এই ইউনিয়ন পরিষদটি চর আষাঢ়িয়াদহ কানাপাড়া গ্রামের মধ্যেই অবস্থিত। ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর থেকে প্রায় ৩০০ গজ পূর্ব-দক্ষিণ কোণে সাইদুল ইসলামের (৩৩) বাড়ি। তার বাড়ির প্রায় ২০০ গজের মধ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সাহেবনগর ক্যাম্প।
যেভাবে মানবপাচারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে সাইদুল
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের দেওয়া তথ্য মতে, প্রায় ২০ বছর ধরে সাইদুল ও তার বড় ভাই শহিদ ভারত থেকে মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত। মাদক ব্যবসার মাধ্যমেই বিএসএফের অনেক বড় কর্মকর্তার সঙ্গে সাইদুলের সখ্য গড়ে ওঠে। এই সুযোগ নিয়ে প্রায় ১০ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে মানবপাচারের কাজে নামে সে। এ কাজে তার সহযোগী হিসেবে রয়েছে নবী, কালামসহ আরো কয়েকজন। তাদের সহযোগিতায় সাইদুল বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দরিদ্র নারী-পুরুষ সংগ্রহ করে চর আষাঢ়িয়াদহ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করে আসছে। এর মধ্যে ২০০৬, ২০০৮, ২০১০ ও ২০১২ সালে চর আষাঢ়িয়াদহ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের সময় দালালসহ অর্ধশতাধিক নারী ও শিশুকে আটক করে বিজিবি। সর্বশেষ কয়েক মাস আগে আটক করা হয় ১৩ জনকে।
সূত্র মতে, ভারতীয় মোবাইল সিম ব্যবহার করে নারী ও শিশু পাচারের দালাল ও বিএসএফের মধ্যে সমঝোতা করে দেয় সাইদুল। এ কাজের বিনিময়ে মাথাপিছু সাইদুলের আয় হয় ৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। আর এ কাজে সহায়তাকারী বিএসএফ সদস্যরা জনপ্রতি আদায় করে ৩০০ টাকা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা দালালরা দরিদ্র নারী-শিশুসহ নানা বয়সের মানুষ নিয়ে এসে সাইদুলের মাধ্যমে সীমান্ত পার করে ভারতে পাঠায়। পাচার হওয়া বেশির ভাগ নারীকে ভারতে দেহ ব্যবসায় নামানো হয়।
নিরাপদ রুট ৪৫ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভারতের হাড়ুডাঙ্গা বিএসএফ ক্যাম্প থেকে চর লবণগোলা ক্যাম্প পর্যন্ত সীমান্ত এলাকায় কোনো কাঁটাতারের বেড়া নেই। এই এলাকাটি পড়েছে রাজশাহীর পবা উপজেলার সীমান্ত এলাকার মধ্যে। মূলত এখান দিয়েই মাদক ও মানব পাচার হয়। এই পাচারকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বড় বড় সিন্ডিকেট। এদের সঙ্গে জড়িত হয়েছে পবার পশ্চিম বালিয়া এলাকার পিয়ারুল নামের এক ব্যক্তি। সীমান্ত এলাকায় যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে তারও।
সাইদুলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে, দাবি পুলিশের
বিজিবির রাজশাহী সেক্টর কমান্ডার মুহাম্মদ শামসুদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সাইদুল সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই। তবে বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখব। যেসব অভিযোগ শোনা যাচ্ছে, তা সঠিক হলে আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করার দরকার, তাই করা হবে।'
গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি অহিদুল ইসলাম বলেন, 'সাইদুলের বিরুদ্ধে গত ডিসেম্বরে মানব ও মাদক পাচারে বিএসএফকে সহযোগিতা করার অভিযোগ ওঠে। আমরা অভিযোগের তদন্ত করছি। তাকে গ্রেপ্তারেরও চেষ্টা চলছে।'
সাইদুল এলাকায় থাকা সত্ত্বেও কেন তাকে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না তা জানতে চাইলে ওসি সুনির্দিষ্ট কোনো জবাব না দিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি বলেন, 'আমাদের সীমান্ত এলাকা দিয়ে এখন আর কোনো কিছু পাচারের সুযোগ নেই। এখন যা হয়, তা পবা সীমান্ত এলাকা দিয়ে।'
সাইদুলের এখন অনেক সম্পদ
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাইদুলের বাবা গিয়াস উদ্দিন একজন দিনমজুর। কিন্তু তাঁর তিন ছেলের মধ্যে দুই ছেলে সাইদুল ও শহিদ এখন যথেষ্ট অর্থ ও সম্পদের মালিক। শহিদ কয়েক বছরের মধ্যে দুটি পাওয়ার টিলার, একটি দোকানঘর ছাড়াও বেশ কিছু জমি কিনেছে।
শহিদ বেশ কিছু দিন আগে মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সাইদুল এখনো মাদক ব্যবসা ও মানবপাচারের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তার অর্থ-সম্পদের পরিমাণও অনেক। গ্রামে সে 'বড়লোক' হিসেবে পরিচিতি। তার বাড়িতে প্রায়ই নতুন নতুন মানুষের আনাগোনা দেখা যায়।
আরো কিছু কাণ্ড
গত সোমবার দুপুরে ওই গ্রামে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাইদুলের নিজস্ব বাহিনীর অন্যতম দুই সদস্য হচ্ছে কালাম ও নবী। তিনজন প্রায় সারাক্ষণই একসঙ্গে থাকে। আড্ডা দেয় চর আষাঢ়িয়াদহ বাজারে।
এই বাজারের একজন মুদি ব্যবসায়ী বলেন, সাইদুল বাহিনীর ভয়ে কেউ কথা বলতে পারে না। তাদের সঙ্গে বিএসএফ আর পুলিশের খাতির। এখন টাকা-পয়সাও হয়েছে। কেউ কোনো কথা বললেই তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। গত কয়েক বছরে সাইদুল বাহিনী ও তার ভাইদের হাতে অন্তত ১৫ জন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সর্বশেষ ১৫ দিন আগে নির্যাতন করা হয়েছে পাশের গ্রামের আমিনের ছেলে দুলালকে।
চর আষাঢ়িয়াদহ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সারিকুল ইসলাম জানান, দুলালকে প্রকাশ্যে পেটানো হয়েছে। কিন্তু কেউ এগিয়ে যেতে সাহস পায়নি। এমনকি সাইদুলের ভয়ে দুলাল মামলাও করতে পারেননি। তবে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করায় বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার সালিস বৈঠকের কথা রয়েছে।
জানা গেছে, সাইদুল প্রায় ১০ বছর আগে এক ভারতীয় মেয়েকে বিয়ে করে। সম্প্রতি সে আরো একটি বিয়ে করে। নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে আগের স্ত্রী কয়েক দিন আগে পালিয়ে ভারতে চলে যান। এই পালানোর পেছনে দুলালের হাত রয়েছে- এ রকম সন্দেহে তাঁকে চর আষাঢ়িয়াদহ স্কুল মাঠে পেটানো হয়।
সাইদুল ও তার বাহিনীর ভয়ে এলাকার লোকজন সব সময় আতঙ্কে থাকে। গত প্রায় পাঁচ মাস আগে এলাকার আমিনুল নামের একটি ছেলেকে সাইদুল বাহিনী ধরে নিয়ে এসে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। এ নিয়ে মামলা করতে চাইলেও সাইদুল বাহিনীর ভয়ে মামলা করতে পারেনি সে। এ রকম অনেক অভিযোগ আছে সাইদুলের বিরুদ্ধে।
চর আষাঢ়িয়াদহ উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, প্রায় ছয় মাস আগে চরহনুমন্তনগর এলাকার সুরুজ নামের এক যুবককে ধরে নিয়ে এসে এই স্কুল মাঠেই পিটিয়েছিল সাইদুল ও তার বাহিনীর লোকজন। মানব ও মাদকপাচার-সংক্রান্ত জটিলতার জের ধরেই ওই যুবককে পেটানো হয় বলে জানা যায়।
৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নওশাদ আলী বলেন, এমন ঘটনা এর আগেও অনেক ঘটিয়েছে সাইদুল। কিন্তু কোনো বিচার পায়নি নির্যাতিতরা। সে এলাকায় প্রতাপশালী বলে নানা অপকর্ম করেও পার পেয়ে যায়।
সাইদুলের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে গোদাগাড়ী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে বিজিবি। মামলাটি বর্তমানে রাজশাহী জেলা দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। এই মামলায় সে জামিনে রয়েছে।
দুই মেয়েসহ আদিবাসী নারীকে পাচারের অভিযোগ
ভালো কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভনে দুই মেয়েসহ এক আদিবাসী নারীকে পাচার করে ভারতের চেন্নাইয়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলে সাইদুলের এক সহযোগী তৈয়ব আলীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। গোদাগাড়ী উপজেলার রানীনগর গড়বাড়ী গ্রামের চন্দনা রানী (৩৫), তাঁর মেয়ে সুমেত্রা রানী (৪) ও দেড় বছরের ছেলে রতনকে পাচার করা হয়েছে বলে গত রবিবার থানায় অভিযোগটি করেন চন্দনার স্বামী উমাচরণ। তিনি বলেন, ২০১২ সালের ১০ অক্টোবর তাঁর স্ত্রী চন্দনা, মেয়ে সুমেত্রা ও ছেলে রতন, প্রতিবেশী রামজীবনের মেয়ে অনিতা (২৫), আবু তালেবের মেয়ে শাহীনুর (২২), সাদির ছেলে আরশাদ আলী (৪৫) ও নাতি বাবুকে (২০) ভালো কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে চর আষাঢ়িয়াদহ সীমান্ত দিয়ে চেন্নাইয়ে পাচার করা হয়। কাজটি করে চর আষাঢ়িয়াদহ গ্রামের জসিমুদ্দিনের ছেলে তৈয়ব আলী (৫০)। গত ২০ ডিসেম্বর পাচার হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে চারজন দেশে ফিরে এলেও চন্দনা ও তাঁর দুই সন্তান এখনো ফিরে আসেনি। তবে ফিরে আসা ব্যক্তিরা উমাচরণকে জানায়, চন্দনা রানী ও তাঁর দুই সন্তানকে চেন্নাইয়ের এক লোকের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে দালাল তৈয়ব আলী।
অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি অহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এর সত্যতা পাওয়া গেলে তৈয়ব আলীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, সাইদুলই এই সাতজনকে পাচারের মূল হোতা।
পাচার হওয়া আরশাদ আলী বলেন, 'পাচারের আগে প্রথমে আমাদের সাইদুলের কাছেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সাইদুল বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমাদের সীমান্ত পার করার ব্যবস্থা করে দেয়। এরপর আমাদের ট্রেনে করে মুর্শিদাবাদ জেলার ভগবানগোলা থেকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে আবার ট্রেনে করে চেন্নাই পৌঁছে দেওয়া হয়। চেন্নাইয়ে যাওয়ার পর চন্দনা রানী ও তাঁর দুই সন্তানকে অন্য এক লোকের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। শাহিনুর ও অনিতা রানী বুঝতে পারেন তাঁদেরও এক পর্যায়ে বিক্রি করে দেওয়া হবে। তখন তাঁরা চেন্নাইয়ের এক ঠিকাদারের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে ট্রেনযোগে কলকাতা ও লালগোলায় আসার পর খরচাকা সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাড়িতে পালিয়ে আসেন।'
জাতীয় আদিবাসী পরিষদের রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি বিমল চন্দ্র রাজোয়ার পাচারের শিকার চন্দনা রানী ও তাঁর দুই সন্তানকে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং তৈয়ব আলীকে গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
No comments