রাজনৈতিক প্রচারণায় পুলিশ by শফিকুল ইসলাম
রাজনৈতিক প্রচারণায় মাঠে নামানো হয়েছে
পুলিশ বাহিনীর কিছু কর্মকর্তাকে। বিরোধী দলের আন্দোলনের মুখে সরকারি দলের
কর্মসূচি ও বক্তব্য তুলে ধরতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী
পুলিশকে।
এখন প্রতিদিনই পুলিশের চিহ্নিত কর্মকর্তারা
ইউনিফর্ম পরেই টিভি টকশোতে হাজির হচ্ছেন সরকারি দলের ভাষ্য তুলে ধরতে। এ
কাজে সাবেক ছাত্রলীগ ক্যাডার এবং নির্দিষ্ট এলাকার কিছু পুলিশকে দায়িত্ব
দেয়া হয়েছে। বিতর্কিত এসব কর্মকর্তারাই এখন পুলিশ বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ
করছেন। তাদের এসব রাজনৈতিক বক্তব্যে সাধারণ জনগণের মধ্যে ক্ষোভ দেখা
দিয়েছে।
গত কয়েক দিন ধরে টেলিভিশনের টকশোতে দেখা যাচ্ছে, বিরোধী দল দমনের ব্যাপারে পুলিশ কর্মকর্তারা রাজনৈতিকভাবে তাদের বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। পুলিশের মুখে রাজনৈতিক বক্তব্যে সুশীলসমাজ ও আইন বিশেষজ্ঞরা অসন্তুষ্ট। পুলিশের এমন মন্তব্যে বিস্মিত দেশের আইন বিশেষজ্ঞরাও। স্বাভাবিকভাবে বিরোধী দলের আন্দোলন কর্মসূচি রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরই মোকাবেলা করার কথা। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে কয়েকদিন ধরে মন্ত্রী-এমপিরা টিভির টকশোতে কম যাচ্ছেন। ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশ কর্মকর্তাদের টকশোতে পাঠানো হচ্ছে।
অথচ আচরণবিধি ১৯৭৯ তে বলা আছে, পুলিশ বা সরকারি কর্মকর্তারা সরকারের অনুমতি ছাড়া সংবাদমাধ্যমে কোনো মন্তব্য করতে পারেন না। যদি কেউ করেন তবে তা হবে আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। কোনো দফতরের বিষয়ে মন্তব্য করার প্রয়োজন থাকলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী বা সচিব করবেন।
গত ২৯ জানুয়ারি মঙ্গলবার রাত ১১টায় ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির ‘আজকের বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানে অংশ নেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার বেনজীর আহমদ। এতে আরো অংশ নেন সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান এবং সোহরাব হাসান। ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমদ ওই অনুষ্ঠানের আলোচনায় বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেফতারের বিষয়টি আইনসম্মত। তিনি বলেন, দেশের নাগরিকের জানমাল রক্ষায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরকে রুখে দেয়া হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এ ছাড়াও সেখানে নানা বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন ডিএমপি কমিশনার।
গত সোমবার সারা দেশে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার শিবির দেখা মাত্রই পায়ে গুলির নির্দেশ দেন। পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কোথাও শিবির দেখলেই পায়ে গুলি করবা।’
ঢাকা মহানগরীর এই পুলিশ কর্মকর্তার এহেন বক্তব্যে দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। মানুষের সেবায় নিয়োজিত পুলিশ বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তার মুখে এমন বক্তব্যে দেশের মানুষ রীতিমতো বিস্মিত। তারা বলছেন, পুলিশের শীর্ষ কর্তাব্যক্তি এ ধরনের বক্তব্য দেয়ার আইনগত কোনো বিধান নেই। তারা কেবল নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখাশোনা করবেন।
জানা গেছে, ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমদের বাড়ি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়। এ কারণে তিনি কাউকে তোয়াক্কাও করেন না এবং তাকে দিয়ে সরকারের পক্ষে রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়ানো হচ্ছে বলে অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
এর এক দিন পর গতকাল বুধবার সকালে ইন্ডিপেনডেন্ট টিভিতে রাজশাহীর পুলিশ কমিশনার মনিরুজ্জামান বলেন, রাজশাহীতে কোনো হরতাল পালন হচ্ছে না। জনগণকে সাথে নিয়ে পুলিশ হরতাল আহ্বানকারীদের প্রতিহত করছে।
এসব বিষয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. পিয়াস করিম বলেন, ‘সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ বাহিনীরি শীর্ষ কর্মকর্তাদের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে তারা আওয়ামী লীগের নেতা। ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমদের বক্তব্যে মনে হয় তিনি পুলিশের কমিশনার নন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পেশাদারিত্ব ও রাজনীতির মধ্যে যে সীমারেখা তা বারবার অতিক্রম করা হচ্ছে। পুলিশের কর্মকাণ্ড দেখে মনে হচ্ছে তারা আওয়ামী লীগের লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত হয়েছেন। তিনি বলেন, পুলিশের প্রকাশ্যে রাজনৈতিক বক্তব্য সাধারণ মানুষকে ুব্ধ করে তুলবে। আমার জানা মতে কোনো গণতান্ত্রিক দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তাব্যক্তিরা রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে পারেন না। অতএব একটি দলনিরপেক্ষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের জন্য দরকার।
সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার ইকতেদার আহমদ নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘আচরণবিধি ১৯৭৯ তে বলা আছে, পুলিশ বা সরকারি কর্মকর্তারা সরকারের অনুমতি ছাড়া সংবাদমাধ্যমে কোনো মন্তব্য করতে পারেন না। যদি কেউ করেন তবে তা হবে আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। তিনি বলেন, সাহিত্যধর্মী লেখা ছাপানো বা সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে চাইলে সরকারের অনুমতি লাগবে না। বিরোধী দলকে দমনের ব্যাপারে মন্তব্য করার আইনগত কোনো ভিত্তি পুলিশ কর্মকর্তার নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘রাজনৈতিক বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের এ ধরনের বক্তব্য না দেয়াটা সমীচীন। ভুলে গেলে চলবে না যে, পুলিশ আইনশৃঙ্খলা বিধানের কাজে নিয়োজিত এবং সেই কাজটিই করবেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক বিষয়ে বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকাটা দায়িত্বশীলতার লক্ষণ। পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে এমন কোনো বক্তব্য অনাকাক্সিত যা জনগণকে উসকানি দেবে।
গত কয়েক দিন ধরে টেলিভিশনের টকশোতে দেখা যাচ্ছে, বিরোধী দল দমনের ব্যাপারে পুলিশ কর্মকর্তারা রাজনৈতিকভাবে তাদের বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। পুলিশের মুখে রাজনৈতিক বক্তব্যে সুশীলসমাজ ও আইন বিশেষজ্ঞরা অসন্তুষ্ট। পুলিশের এমন মন্তব্যে বিস্মিত দেশের আইন বিশেষজ্ঞরাও। স্বাভাবিকভাবে বিরোধী দলের আন্দোলন কর্মসূচি রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরই মোকাবেলা করার কথা। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে কয়েকদিন ধরে মন্ত্রী-এমপিরা টিভির টকশোতে কম যাচ্ছেন। ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশ কর্মকর্তাদের টকশোতে পাঠানো হচ্ছে।
অথচ আচরণবিধি ১৯৭৯ তে বলা আছে, পুলিশ বা সরকারি কর্মকর্তারা সরকারের অনুমতি ছাড়া সংবাদমাধ্যমে কোনো মন্তব্য করতে পারেন না। যদি কেউ করেন তবে তা হবে আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। কোনো দফতরের বিষয়ে মন্তব্য করার প্রয়োজন থাকলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী বা সচিব করবেন।
গত ২৯ জানুয়ারি মঙ্গলবার রাত ১১টায় ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির ‘আজকের বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানে অংশ নেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার বেনজীর আহমদ। এতে আরো অংশ নেন সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান এবং সোহরাব হাসান। ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমদ ওই অনুষ্ঠানের আলোচনায় বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেফতারের বিষয়টি আইনসম্মত। তিনি বলেন, দেশের নাগরিকের জানমাল রক্ষায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরকে রুখে দেয়া হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এ ছাড়াও সেখানে নানা বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন ডিএমপি কমিশনার।
গত সোমবার সারা দেশে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার শিবির দেখা মাত্রই পায়ে গুলির নির্দেশ দেন। পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কোথাও শিবির দেখলেই পায়ে গুলি করবা।’
ঢাকা মহানগরীর এই পুলিশ কর্মকর্তার এহেন বক্তব্যে দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। মানুষের সেবায় নিয়োজিত পুলিশ বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তার মুখে এমন বক্তব্যে দেশের মানুষ রীতিমতো বিস্মিত। তারা বলছেন, পুলিশের শীর্ষ কর্তাব্যক্তি এ ধরনের বক্তব্য দেয়ার আইনগত কোনো বিধান নেই। তারা কেবল নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখাশোনা করবেন।
জানা গেছে, ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমদের বাড়ি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়। এ কারণে তিনি কাউকে তোয়াক্কাও করেন না এবং তাকে দিয়ে সরকারের পক্ষে রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়ানো হচ্ছে বলে অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
এর এক দিন পর গতকাল বুধবার সকালে ইন্ডিপেনডেন্ট টিভিতে রাজশাহীর পুলিশ কমিশনার মনিরুজ্জামান বলেন, রাজশাহীতে কোনো হরতাল পালন হচ্ছে না। জনগণকে সাথে নিয়ে পুলিশ হরতাল আহ্বানকারীদের প্রতিহত করছে।
এসব বিষয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. পিয়াস করিম বলেন, ‘সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ বাহিনীরি শীর্ষ কর্মকর্তাদের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে তারা আওয়ামী লীগের নেতা। ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমদের বক্তব্যে মনে হয় তিনি পুলিশের কমিশনার নন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পেশাদারিত্ব ও রাজনীতির মধ্যে যে সীমারেখা তা বারবার অতিক্রম করা হচ্ছে। পুলিশের কর্মকাণ্ড দেখে মনে হচ্ছে তারা আওয়ামী লীগের লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত হয়েছেন। তিনি বলেন, পুলিশের প্রকাশ্যে রাজনৈতিক বক্তব্য সাধারণ মানুষকে ুব্ধ করে তুলবে। আমার জানা মতে কোনো গণতান্ত্রিক দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তাব্যক্তিরা রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে পারেন না। অতএব একটি দলনিরপেক্ষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের জন্য দরকার।
সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার ইকতেদার আহমদ নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘আচরণবিধি ১৯৭৯ তে বলা আছে, পুলিশ বা সরকারি কর্মকর্তারা সরকারের অনুমতি ছাড়া সংবাদমাধ্যমে কোনো মন্তব্য করতে পারেন না। যদি কেউ করেন তবে তা হবে আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। তিনি বলেন, সাহিত্যধর্মী লেখা ছাপানো বা সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে চাইলে সরকারের অনুমতি লাগবে না। বিরোধী দলকে দমনের ব্যাপারে মন্তব্য করার আইনগত কোনো ভিত্তি পুলিশ কর্মকর্তার নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘রাজনৈতিক বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের এ ধরনের বক্তব্য না দেয়াটা সমীচীন। ভুলে গেলে চলবে না যে, পুলিশ আইনশৃঙ্খলা বিধানের কাজে নিয়োজিত এবং সেই কাজটিই করবেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক বিষয়ে বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকাটা দায়িত্বশীলতার লক্ষণ। পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে এমন কোনো বক্তব্য অনাকাক্সিত যা জনগণকে উসকানি দেবে।
No comments