প্রিয়জন কবিতাবলী
এইচ এম সিরাজ
কালের বুকে কালির বাঁধন
চোখে ঘুম নেই। বিনিদ্র রজনী। আকাশ ভরা তারা।
কালের বুকে কালির বাঁধন
চোখে ঘুম নেই। বিনিদ্র রজনী। আকাশ ভরা তারা।
ঝিঁঝিঁ পোকার কাতর কণ্ঠের জ্বালাময়ী গান
দূর ঝাউবনে জোনাকি পোকার থেমে থেমে জ্বলা
তবুও কবিতার বর্ণমালা খসে পড়ে আন্তঃক্ষোভে,
যন্ত্রণা আর নিদ্রার জ্বালায় হৃদয় ভাঙা ব্যথারাই রবে
পাণ্ডুলিপির পরে।
থেমে যায় একদিন হাতের দুর্বার কলম
সাহসী বর্ণনার শেষে যমের চিরন্তন আগমনে।
ইটের দেয়াল খসে পড়ে একদিন কালের আবর্তে
সবুজ প্রান্তর হারায় কাছে ডাকা মোহনীয় রূপ-বৈচিত্র্য
তবু, তবুও সব কিছুকে উপেক্ষা করে
কলমের কালি মহাকালকে বেঁধে রাখে
যুগে যুগে সৃষ্টি হয়ে চলে কালের বুকে কালির বাঁধন।
----------------------------
দূর ঝাউবনে জোনাকি পোকার থেমে থেমে জ্বলা
তবুও কবিতার বর্ণমালা খসে পড়ে আন্তঃক্ষোভে,
যন্ত্রণা আর নিদ্রার জ্বালায় হৃদয় ভাঙা ব্যথারাই রবে
পাণ্ডুলিপির পরে।
থেমে যায় একদিন হাতের দুর্বার কলম
সাহসী বর্ণনার শেষে যমের চিরন্তন আগমনে।
ইটের দেয়াল খসে পড়ে একদিন কালের আবর্তে
সবুজ প্রান্তর হারায় কাছে ডাকা মোহনীয় রূপ-বৈচিত্র্য
তবু, তবুও সব কিছুকে উপেক্ষা করে
কলমের কালি মহাকালকে বেঁধে রাখে
যুগে যুগে সৃষ্টি হয়ে চলে কালের বুকে কালির বাঁধন।
----------------------------
রেহানা রিমি
খুঁজে ফিরবো
খুঁজে ফিরবো শুধু তোমাকেই
সত্যের শত বাঁধনে যে বাঁধা
বছরের কাটানো অনেকগুলো দিন
কেটে গেলেও মিথ্যের ভাবনায়
নিছক হতে পারে না কখনো।
ফিরে যেতে চাইলেও হবে না কারোরই ফেরা
অভিমান করলেও সেটা নিছকতা
আমরা ব্যর্থ হবো দু’জনার মাঝেই।
খুঁজে ফিরবো শুধুই তোমাকে
সত্যের বসতি যে এখানে।
পূর্ব গোয়ালপাড়া, ঠাকুরগাঁও
মুহাম্মদ মিজানুর রহমান
অচেনা পথে
কিছু ভাবনা আমায় এলোমেলো করে দেয়,
হারিয়ে যাই সুদূর অজানা কোনো প্রান্তরে।
প্রতিটি নিঃশ্বাস আমায় বারবার সতর্ক করে,
আমি হারিয়ে যাচ্ছি মিছে মরীচিকায় সত্যকে ভুলি।
আমার অন্তরে এক অদৃশ্য কম্পন বিরাজ করছে,
আমি সর্বদা ভীত অচেনা সে গন্তব্যের তরে।
রওশন মতিন
এ শহরে একা একা
কাল রাতে এ শহর ঘুমিয়েছিল মৃত
পৌরাণিক ফসিল যেন সবাই,
এ শহরে একা একা আমি হেঁটেছি অনেক অনেক পথ।
চাঁদ আর কৃত্রিম আলো নিয়নের প্রভার মাখামাখি
মনে হলো ইট, কাঠ, দালানকোঠাÑ
সবই ভগ্নস্তূপ,প্রাণহীন দোসর আমার,
কোথাও কি উঁকিঝুঁকি মারে জীবন্ত চুম্বন
ফুসফুসের ক্যান্সার নিয়ে হাঁটি একা একা
ইটের খোয়া ভাঙার মতো হাতুড়ি ঠুকে ঠক্ ঠক্
আজ মগজ ধোলাইয়ের খেলায় মেতেছি শেষতক।
সারি সারি বাড়িঘর, রাতের সাজানো মঞ্চনাটক
ব্যঙ্গচিত্র,ভাঁড়ামির নকল কসরৎÑ দেখতে পাই সব সমস্তই,
নর্দমার স্রোত ডিঙিয়ে গলিঘিঞ্জির পাকে পাকে
দেখেছি কেদাক্ত শবগন্ধ আর ভুতুড়ে নরক।
মার্কামারা সাইনবোর্ড সর্বস্ব পোশাকি মেজাজের অন্তরালে
তাল মেলানো ছন্দের অন্তঃসারশূন্যতার গহ্বরে
আমি একাই বাজিয়েছিলাম দুরন্ত জীবনের অর্কেস্ট্রায়
যৌবনের মাদকতা ব্যঞ্জনাময় সিম্ফনি অনেক ।
অবশ্য কয়েকটি তরল মুদ্রা পকেটে সওয়ার ছিল
জ্বলন্ত সিগারেট দু’ঠোঁঠে ঝুলছিল
হ্যাঁ, কালরাতে সবাই যখন ঘুমিয়েছিল
মৃত পৌরাণিক ফসিলের মতো
এ শহরে আমি একা একা হেঁটেছি অনেক অনেক পথ,
অপারেশন থিয়েটারের নিপুণ যন্ত্র হাতে
এ শহর আমি তন্ন তন্ন খুঁড়েছি অনেক ।
টাটকপুর, বিরামপুর, দিনাজপুর
ডি এম আবু বকর
কেঁদে ভাসাই মানচিত্র
স্বপ্নের কাছাকাছি অগ্রসর মাত্রই ঘুম জেগে ওঠে।
একদিন নয় রোজকার ব্যাপার স্যাপার এরকমই।
বারবার ভাবি আজ খোয়াব দর্শন হবে।
তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাওয়া ভালো। ঘুমিয়েও যাই।
কিন্তু স্বপ্নতো দর্শন দেয় না।
তারপর ভাবি জেগে জেগেই স্বপ্ন দেখা হউক
এখন জেগে জেগে স্বপ্ন দেখি। স্বপ্ন নয় দুঃস্বপ্ন।
খোয়াব দেখে আঁতকে উঠি। যমুনার নিচে লাশের
স্রোত। মেঘনার নিচে বয়ে যায় মানচিত্র।
উজানের বিপরীতে তার গতি, ভাটার দিকে বহমান।
রাতদুপুরে কিছু শব্দ কানে আসে।
মনে হয় ব্রিজের রেলিং ধরে ছুলে আছে কেউ।
ীণ ভয়ার্ত চিৎকার আস্তে আস্তে মিলিয়ে যায়।
নিচে চেয়ে দেখি নদী জুড়ে ছড়িয়ে থাকা মানচিত্রটা
ধীরে ধীরে তলিয়ে যাচ্ছে।
কোটি কোটি মানুষ ভয়াল আতঙ্কে অস্থির
চেয়ে আছে কোঠর থেকে বেড়িয়ে আসা
বড় বড় চোখ নিয়ে। সবার একটাই প্রশ্ন একটাই
জিজ্ঞাসা, এসব হচ্ছেটা কী?
গৌরীপুর, দাউদকান্দি, কুমিল্লা
সনেট দেব
আমি ও তুমি
আজ কেন তবে, মরিয়া হয়ে উঠে মন
তোমায় দেখিতে কাঁদে সারাক্ষণ
অন্তহীন পথে চলেছি আমি একা
সব অজানার ভিড়ে একা বসে থাকা
নির্ঘুম রাত কাটে, নেই তুমি পাশে
আমার যন্ত্রণায় হায়
তোমার কী যায়-আসে…
চট্টগ্রাম কলেজ, চট্টগ্রাম
No comments