জামায়াতের হরতাল- চট্টগ্রাম জুড়ে চোরাগোপ্তা ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ
চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাংচুর,
অগ্নিসংযোগসহ বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে জামায়াত
ইসলামীর ডাকে হরতাল পালিত হয়েছে।
মানবতা বিরোধী অপাধের
বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনাল বাতিল এবং শীর্ষ নেতাদের মুক্তির দাবিতে জামায়াত
ইসলামী বৃহস্পতিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামে আধাবেলা এবং সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা এ
কর্মসূচীর ডাক দেয়। বিরোধী দল বিএনপি এ হরতালে সমর্থন দিয়েছে।
হরতাল
শুরুর পর চট্টগ্রাম নগরী এবং জেলায় বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা ছাড়া বড় কোন
অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। ভোর থেকে কোথাও পিকেটারদের প্রকাশ্য
উপস্থিতি চোখে পড়েনি। আকস্মিকভাবে অলি, গলি থেকে বের হয়ে যানবাহনে
চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে পিকেটাররা পালিয়ে যায়।
নগরীর লালদিঘীর পাড় এলাকায় সকাল ৮টার দিকে একটি যাত্রীবাহী টেম্পু ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে পিকেটাররা।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, `টেম্পুটি নিউমার্কেট থেকে আন্দরকিল্লার দিকে যাবার পথে কয়েকজন পিকেটাররা সেটিতে ঢিল ছুঁড়ে সামনের কাঁচ ভাংচুর করে। এসময় আতংকে যাত্রীরা নেমে যায়। পরে তারা ওই গাড়িতে আগুন দেয়ার চেষ্টা করে। আগুনে গাড়ির সিট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।`
সকাল ৯টার দিকে নগরীর মোমিন রোডে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে হরতাল সমর্থনকারীরা। একই সময়ে নগরীর চকবাজার তেলিপট্টির মোড়ে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখা কার্যালয়ের সামনের কাঁচ ঢিল ছুঁড়ে ভেঙ্গে দেয় পিকেটাররা। একই স্থানে একটি টেম্পুও ভাংচুর করে পিকেটাররা।
এছাড়া চন্দনপুরায় চট্টগ্রাম কলেজের সামনে পিকেটাররা রাস্তায় বাঁশ ফেলে তাতে আগুন দিয়ে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ গিয়ে তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়।
নগর পুলিশের পাঁচলাইশ জোনের সহকারী কমিশনার মনজুর মোর্শেদ বাংলানিউজকে জানান, সকাল ৮টার দিকে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা নগরীর চান্দগাঁও থানার স্বাধীনতা পার্কের সামনে এলোপাতাড়ি ইট ফেলে অবরোধের চেষ্টা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তারা পালিয়ে যায়। তবে এতে যানবাহন চলাচলে কোন ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়নি।
এর আগে নগরীর আতুরার ডিপো এলাকায় পিকেটররা যাত্রীবাহী একটি রাইডার হিউম্যান হলারে ঢিল ছুঁড়ে সামনের কাঁচ ভেঙ্গে দেয় বলে মনজুর মোর্শেদ জানান।
নগরীর পাঁচলাইশ থানার বিবিরহাট এলাকায় সকাল ১০টার দিকে হরতালের সমর্থনে ঝটিকা মিছিল বের করে পিকেটাররা একটি টেম্পু ও একটি সিএনজি অটোরিক্সা ভাংচুর করে। এসময় পটকা ফাটিয়েও তারা আতংক সৃষ্টি করে। তবে এসময় সেখানে কোন পুলিশ সদস্য দেখা যায়নি।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর চকবাজার এলাকায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সামনে একটি টেম্পুতে আগুন দেয়ার চেষ্টা করে পিকেটাররা।
নগর পুলিশের বন্দর জোনের উপ-কমিশনার সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, হরতাল শুরুর পর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বন্দরটিলা এলাকায় একটি যাত্রীবাহী রাইডার হিউম্যান হলার ভাংচুর করেছে পিকেটাররা। বন্দর থানার মাইলের মাথা এলাকায় একটি টেম্পুতে আগুন দেয়ার চেষ্টা করেছে পিকেটাররা।
নগরীর বন্দর থানার ওসি জাহেদুল আলম বাংলানিউজকে জানান, হরতাল শুরুর পর বিভিন্ন এলাকায় জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা জড়ো হয়ে ঝটিকা মিছিলের চেষ্টা করে। তবে খবর পেয়ে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এদিকে নগরীর নাসিরাবাদে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে থেকে বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে খুলশী থানা পুলিশ পরিত্যক্ত অবস্থায় ১০টি ককটেল উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাক আহমেদ।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) ফরিদ উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সীতাকুন্ডের পন্থিছিলা এলাকায় ভোর পৌনে ৬টায় একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় পিকেটাররা। এর আগে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সীতাকুন্ডের মিনাছড়া এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যানে আগুন দেয়ার চেষ্টা করে পিকেটাররা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়।
এছাড়া পটিয়ার নয়াহাট এলাকায় বৃহস্পতিবার ভোরে বেশ কয়েকটি শাহ আমানত সিএনজি স্টেশনের সামনে দু`টি ট্রাকে হামলা চালিয়ে এর সামনের কাঁচ ভাংচুর করে বলে জানিয়েছেন পটিয়া থানার ওসি আমিনুর রশিদ।
হরতাল চলাকালে নগরীতে যানবাহন চলাচল কম ছিল। রিক্সা চলাচল স্বাভাবিক ছিল। নগরীর নিউমার্কেট, টাইগার পাস, জিইসি মোড়েসহ বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে কিছু গণপরিবহন চলাচল করেছে।
এছাড়া নগরীতে প্রায় সব দূরপাল্লার পরিবহন কাউন্টারই বন্ধ ছিল। দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল।
হরতাল শুরুর পর সকালে ট্রেনে আসা লোকজন গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য যানবাহন না পেয়ে ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েন। নগরীর স্টেশন রোডে রেলস্টেশনের সামনে শত শত নারী, পুরুষকে যানবাহনের অপেক্ষায় ছুটোছুটি করতে দেখা গেছে।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা নগরীর বিভিন্ন স্থানে টায়ারে ও যানবাহনে আগুন দিয়ে আতংক সৃষ্টি করে। সেজন্য ভোর থেকে যানবাহন চলাচল কিছুটা কম ছিল। তবে নগরীতে হরতাল চলাকালে বড় কোন সংঘর্ষ কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।`
এদিকে হরতাল উপলক্ষে নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ। নগর পুলিশের বিশেষ শাখার সূত্রে জানা গেছে, নগরীতে প্রায় দেড় হাজার অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (ট্রাফিক-বন্দর) এস এম তানভির আরাফাত বাংলানিউজকে বলেন, ‘হরতালে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে আমাদের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল। কেউ অপ্রীতিকর কিছু ঘটাতে চাইলে কঠোরভাবে দমন করার প্রস্তুতি আমাদের ছিল।`
এদিকে হরতাল হলেও অধিকাংশ পোশাক কারখানায় সকাল থেকে কাজ শুরু হয়। ভোর থেকে গার্মেণ্টস সহ বিভিন্ন কারখানার শ্রমজীবী মানুষ কর্মস্থলে যেতে রাস্তায় নেমে দুর্ভোগে পড়েন।
সকালে নগরীর টাইগার পাস এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন কলকারখানার শত শত শ্রমিক গাড়ির অপেক্ষায় টাইগার পাস মোড়ে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে। মাঝে মাঝে টেম্পুসহ দু`একটি গণপরিবহনের দেখা মিললেও সেগুলোতে ছিড় প্রচন্ড ভিড়।
আগ্রাবাদ এলাকার এমব্রয়ডারি গার্ডেন গার্মেণ্টসের শ্রমিক জান্নাত আরা বাংলানিউজকে বলেন, `ভিড়ের জন্য গাড়িতে উঠতে পারছিনা। রিক্সায়ও যেতে পারছিনা। ২০ টাকার রিক্সা ভাড়া বলতেছে ৫০ টাকা।`
এদিকে হরতালের মধ্যেও সিইপিজেডের প্রায় কারখানাও যথানিয়মে খুলে দেয়া হয়। সিইপিজেড এলাকার আশপাশে বসবাসরত অধিকাংশ শ্রমিকই সকাল থেকে এসব কারখানায় কাজে যোগ দেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, হরতাল শুরুর পর সকাল ৮টা থেকে বিভিন্ন জেটিতে কাজে যোগ দেন শ্রমিকরা। এর ফলে জেটিতে পণ্য উঠানামায় কোন সমস্যা হয়নি। বহির্নোঙ্গরেও পণ্য খালাস স্বাভাবিক ছিল। তবে পণ্য পরিবহনকারী কোন ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান বন্দর ছেড়ে যায়নি।
এদিকে নগরীর বাইরে জেলার বিভিন্ন উপজেলায়ও হরতালকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
নগরীর লালদিঘীর পাড় এলাকায় সকাল ৮টার দিকে একটি যাত্রীবাহী টেম্পু ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে পিকেটাররা।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, `টেম্পুটি নিউমার্কেট থেকে আন্দরকিল্লার দিকে যাবার পথে কয়েকজন পিকেটাররা সেটিতে ঢিল ছুঁড়ে সামনের কাঁচ ভাংচুর করে। এসময় আতংকে যাত্রীরা নেমে যায়। পরে তারা ওই গাড়িতে আগুন দেয়ার চেষ্টা করে। আগুনে গাড়ির সিট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।`
সকাল ৯টার দিকে নগরীর মোমিন রোডে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে হরতাল সমর্থনকারীরা। একই সময়ে নগরীর চকবাজার তেলিপট্টির মোড়ে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখা কার্যালয়ের সামনের কাঁচ ঢিল ছুঁড়ে ভেঙ্গে দেয় পিকেটাররা। একই স্থানে একটি টেম্পুও ভাংচুর করে পিকেটাররা।
এছাড়া চন্দনপুরায় চট্টগ্রাম কলেজের সামনে পিকেটাররা রাস্তায় বাঁশ ফেলে তাতে আগুন দিয়ে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ গিয়ে তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়।
নগর পুলিশের পাঁচলাইশ জোনের সহকারী কমিশনার মনজুর মোর্শেদ বাংলানিউজকে জানান, সকাল ৮টার দিকে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা নগরীর চান্দগাঁও থানার স্বাধীনতা পার্কের সামনে এলোপাতাড়ি ইট ফেলে অবরোধের চেষ্টা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তারা পালিয়ে যায়। তবে এতে যানবাহন চলাচলে কোন ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়নি।
এর আগে নগরীর আতুরার ডিপো এলাকায় পিকেটররা যাত্রীবাহী একটি রাইডার হিউম্যান হলারে ঢিল ছুঁড়ে সামনের কাঁচ ভেঙ্গে দেয় বলে মনজুর মোর্শেদ জানান।
নগরীর পাঁচলাইশ থানার বিবিরহাট এলাকায় সকাল ১০টার দিকে হরতালের সমর্থনে ঝটিকা মিছিল বের করে পিকেটাররা একটি টেম্পু ও একটি সিএনজি অটোরিক্সা ভাংচুর করে। এসময় পটকা ফাটিয়েও তারা আতংক সৃষ্টি করে। তবে এসময় সেখানে কোন পুলিশ সদস্য দেখা যায়নি।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর চকবাজার এলাকায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সামনে একটি টেম্পুতে আগুন দেয়ার চেষ্টা করে পিকেটাররা।
নগর পুলিশের বন্দর জোনের উপ-কমিশনার সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, হরতাল শুরুর পর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বন্দরটিলা এলাকায় একটি যাত্রীবাহী রাইডার হিউম্যান হলার ভাংচুর করেছে পিকেটাররা। বন্দর থানার মাইলের মাথা এলাকায় একটি টেম্পুতে আগুন দেয়ার চেষ্টা করেছে পিকেটাররা।
নগরীর বন্দর থানার ওসি জাহেদুল আলম বাংলানিউজকে জানান, হরতাল শুরুর পর বিভিন্ন এলাকায় জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা জড়ো হয়ে ঝটিকা মিছিলের চেষ্টা করে। তবে খবর পেয়ে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এদিকে নগরীর নাসিরাবাদে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে থেকে বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে খুলশী থানা পুলিশ পরিত্যক্ত অবস্থায় ১০টি ককটেল উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাক আহমেদ।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) ফরিদ উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সীতাকুন্ডের পন্থিছিলা এলাকায় ভোর পৌনে ৬টায় একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় পিকেটাররা। এর আগে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সীতাকুন্ডের মিনাছড়া এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যানে আগুন দেয়ার চেষ্টা করে পিকেটাররা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়।
এছাড়া পটিয়ার নয়াহাট এলাকায় বৃহস্পতিবার ভোরে বেশ কয়েকটি শাহ আমানত সিএনজি স্টেশনের সামনে দু`টি ট্রাকে হামলা চালিয়ে এর সামনের কাঁচ ভাংচুর করে বলে জানিয়েছেন পটিয়া থানার ওসি আমিনুর রশিদ।
হরতাল চলাকালে নগরীতে যানবাহন চলাচল কম ছিল। রিক্সা চলাচল স্বাভাবিক ছিল। নগরীর নিউমার্কেট, টাইগার পাস, জিইসি মোড়েসহ বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে কিছু গণপরিবহন চলাচল করেছে।
এছাড়া নগরীতে প্রায় সব দূরপাল্লার পরিবহন কাউন্টারই বন্ধ ছিল। দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল।
হরতাল শুরুর পর সকালে ট্রেনে আসা লোকজন গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য যানবাহন না পেয়ে ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েন। নগরীর স্টেশন রোডে রেলস্টেশনের সামনে শত শত নারী, পুরুষকে যানবাহনের অপেক্ষায় ছুটোছুটি করতে দেখা গেছে।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা নগরীর বিভিন্ন স্থানে টায়ারে ও যানবাহনে আগুন দিয়ে আতংক সৃষ্টি করে। সেজন্য ভোর থেকে যানবাহন চলাচল কিছুটা কম ছিল। তবে নগরীতে হরতাল চলাকালে বড় কোন সংঘর্ষ কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।`
এদিকে হরতাল উপলক্ষে নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ। নগর পুলিশের বিশেষ শাখার সূত্রে জানা গেছে, নগরীতে প্রায় দেড় হাজার অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (ট্রাফিক-বন্দর) এস এম তানভির আরাফাত বাংলানিউজকে বলেন, ‘হরতালে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে আমাদের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল। কেউ অপ্রীতিকর কিছু ঘটাতে চাইলে কঠোরভাবে দমন করার প্রস্তুতি আমাদের ছিল।`
এদিকে হরতাল হলেও অধিকাংশ পোশাক কারখানায় সকাল থেকে কাজ শুরু হয়। ভোর থেকে গার্মেণ্টস সহ বিভিন্ন কারখানার শ্রমজীবী মানুষ কর্মস্থলে যেতে রাস্তায় নেমে দুর্ভোগে পড়েন।
সকালে নগরীর টাইগার পাস এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন কলকারখানার শত শত শ্রমিক গাড়ির অপেক্ষায় টাইগার পাস মোড়ে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে। মাঝে মাঝে টেম্পুসহ দু`একটি গণপরিবহনের দেখা মিললেও সেগুলোতে ছিড় প্রচন্ড ভিড়।
আগ্রাবাদ এলাকার এমব্রয়ডারি গার্ডেন গার্মেণ্টসের শ্রমিক জান্নাত আরা বাংলানিউজকে বলেন, `ভিড়ের জন্য গাড়িতে উঠতে পারছিনা। রিক্সায়ও যেতে পারছিনা। ২০ টাকার রিক্সা ভাড়া বলতেছে ৫০ টাকা।`
এদিকে হরতালের মধ্যেও সিইপিজেডের প্রায় কারখানাও যথানিয়মে খুলে দেয়া হয়। সিইপিজেড এলাকার আশপাশে বসবাসরত অধিকাংশ শ্রমিকই সকাল থেকে এসব কারখানায় কাজে যোগ দেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, হরতাল শুরুর পর সকাল ৮টা থেকে বিভিন্ন জেটিতে কাজে যোগ দেন শ্রমিকরা। এর ফলে জেটিতে পণ্য উঠানামায় কোন সমস্যা হয়নি। বহির্নোঙ্গরেও পণ্য খালাস স্বাভাবিক ছিল। তবে পণ্য পরিবহনকারী কোন ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান বন্দর ছেড়ে যায়নি।
এদিকে নগরীর বাইরে জেলার বিভিন্ন উপজেলায়ও হরতালকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
No comments