মন খুলে বলছি- পরামর্শ দিচ্ছেন মোঃ জহির উদ্দিন, চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী সহকারী অধ্যাপক সাইকোথেরাপি বিভাগ জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
আমার মাথায় সব সময় দুশ্চিনত্মা ঘুরপাক খায় এ থেকে কিভাবে বের হবো? -শফিক, নোয়াখালী। জীবনটাকে সহজভাবে নিলে, ব্যসত্ম থাকলে, মনে আনন্দ হয় এমন সব কাজকর্মে ব্যসত্ম থাকলে এবং ইতিবাচক চিনত্মা করলে উৎকন্ঠা চলে যায়।
যারা দুশ্চিনত্মা করে তাদের বৈশিষ্ট্য হলো অগ্রিম নেতিবাচক চিনত্মা করা। খারাপ কিছু ঘটার আগেই টেনশন না করে আগে ঘটে কিনা তাই দেখা দরকার। বেশীর ভাগ েেত্রই খারাপ আসলে ঘটবে না। অনেক েেত্র ধৈর্য্য রাখলে সময়ের সাথে সাথে এমনিতেও উৎকণ্ঠা চলে যায়। এর পরও যদি টেনশন না কমে তবে প্রয়োজনে মানসিক চিকিৎসা নিতে পারেন।আমার বয়স ৩৮। প্রায়ই াত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলি। আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর কি কোনো উপায় আছে?
-শরিফ, উত্তরা, ঢাকা।
কেন আত্মবিশ্বাস কম তা তলিয়ে দেখতে হবে। যদি এমন হয় যে, আমার দতা কম বলে ভাল কোন সফলতা অর্জন করতে পারছিনা তবে দতা প্রশিণ নিতে হবে। প্রয়োজনে বিভিন্ন ধরণের কোর্স করা যেতে পারে। একাডেমিক ডিগ্রী অর্জন করতে হতে পারে, আবার সামাজিক দতা, কমিউনিকেশন দতা ইত্যাদি প্রশিণও নেয়া যায়। অনেকে দেখা যায় মনের মধ্যে নেতিবাচক চিনত্মাধারা পোষণ করেন। ফলে নিজের সফলতাগুলো তারা দেখতে পাননা। এজন্যই নিজের উপর আস্থা নেই। এেেত্র ভারসাম্যপূর্ণ চিনত্মা অর্জন করতে শিখতে হবে। কোন কিছুর ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক দুটোই বিবেচেনা করে আমরা যখন ভাবি তখন তাকে ভারসাম্যপূর্ণ চিনত্মা বলে। ভারসাম্যপূর্ণ চিনত্মা করলে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। যদি নিজে নিজে এধরণের চিনত্মার অভ্যাস গড়ত না পারেন তবে 'কগনেটিভ বিহেভিয়র থেরাপি' নামের এক ধরণের সাইকোথেরাপি নিতে পারেন। এধরণের চিকিৎসায় যুক্তি দিয়ে মনের নেতিবাচক চিনত্মাগুলোকে পরিবর্তণ করে ভারসাম্যপূর্ণ চিনত্মা অর্জন করতে শিখানো হয়। কোন কোন েেত্র আমাদের জীবনের অবস্থা এমন থাকে যে, আমরা বাসত্মব কারণেই তেমন ভাল ধরণের সফলতা অর্জন করতে পারবোনা। তখনও আত্মবিশ্বাসের অভাব তৈরী হতে পারে। এমনটা হয়ে থাকলে পরিস্থিতিটা মেনে নিতে চেষ্টা করতে পারেন। তাতে মনে সন্তুষ্টি আসবে। টেনশন ও কষ্ট কমে যাবে। কঠিন বাসত্মবতার জন্য নিজেকে দায়ী না করে মেনে নিন। নিজের জীবনে যতটুকু সফলতা আছে তাকে গুরম্নত্ব দিন। আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে। জীবনের প্রতিদিন সফলতা আসেনা। ধৈর্য্য ধরম্নন। যথেষ্ঠ পরিমাণে চেষ্টা করম্নন। সময় যাক। একদিন সফলতা আসবে। যেমন, একজন ছাত্র হয়তো আত্মবিশ্বাসহীনতায় ভুগছেন। তার বয়স হয়তো অল্প। তার উচিত যত্ন করে লেখাপড়া করা। সময় গেলে সে বেশ কিছু ডিগ্রী অর্জন করবে। হয়তো পরীায়ও ভাল করবে। তখন আত্মবিশ্বাস বাড়বে। যে পেশাগত জীবনে নতুন ঢুকেছে তারও ধৈর্য্য ধরে চেষ্টা করা উচিত। যখন সফলতা আসবে তখন আত্মবিশ্বাসও বেড়ে যাবে।
ওষুধ খেয়ে কি মানসিক রোগ পুরোপুরি সারানো সম্ভব?
-শারমিন, নরসিংদী।
ওষুধ খেলে অনেক সময়ই মানসিক রোগ সেড়ে যায়। কোন কোন মানসিক রোগ অবশ্য এমন ধরণের হয় যে দীর্ঘদিন ধরে ওষুধ চালিয়ে যেতে হয়। অনেক ধরণের মানসিক রোগ আছে যেখানে ওষুধের পাশাপাশি সাইকোথেরাপি নিলে ওষুধ ছেড়ে দিতে সুবিধা হয়। কেননা তখন রোগ তুলনামূলক ভাবে দ্রম্নত সারে। এছাড়া একবার সারলে আবার হবার সম্ভাবনা কম থাকে। যেমন, গবেষণায় দেখা গেছে যে হতাশা রোগের েেত্র ওষুধের পাশাপাশি সাইকোথেরাপি নিলে সবচেয়ে ভাল ফল পাওয়া গেছে। কারো যদি পারিবারিক ও সামাজিক সমর্থন ভাল থাকে তবে তার ভাল হয়ে উঠার সম্ভাবনাও বেশী থাকে।
No comments