চৌদ্দগ্রামের ওসিকে তলব ॥ ঝিনাইদহে প্রবাসীর শিশুকন্যা ধর্ষিত, ঘটনা প্রকাশ না করতে চাপ
ঝিনাইদহে ওমান প্রবাসীর সাড়ে তিন বছর বয়সী শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করেছে কাশেম আলী নামে এক লম্পট। সোমবার রাতে ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও প্রভাবশালীদের চাপে ঘটনা প্রকাশ করতে সাহস পায়নি ভিকটিমের পরিবার।
পরে বুধবার শিশুটির মা বাদী হয়ে মামলা করেন। এদিকে কুমিল্লায় বিয়ের প্রলোভনে দুই বোনকে গণধর্ষণের ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানার ওসিকে হাইকোর্টে তলব করা হয়েছে। অন্যদিকে আটক পাঁচ আসামিকে ২ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। খবর নিজস্ব সংবাদদাতাদের।ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পার্বতীপুর গ্রামের ওমান প্রবাসীর সাড়ে তিন বছরের শিশুকন্যা গত সোমবার রাতে ধর্ষিত হয়। কিন্তু প্রভাবশালীদের চাপে ভিকটিমের পরিবার ঘটনাটি প্রকাশ করতে সাহস পায়নি। অবশেষে বুধবার বিকালে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় শিশুটির মা শিল্পী খাতুন বাদী হয়ে ঝিনাইদহ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলার বিবরণী হতে জানা যায়, শিশুটির মা শিল্পী খাতুন সোমবার বাড়িতে ছিলেন না। তিনি অসুস্থ মাকে দেখতে যান। এই সুযোগে প্রতিবেশী আরব আলীর লম্পট ছেলে কাশেম আলী (৪৫) বাড়িতে একা পেয়ে তার শিশুকন্যাকে তার ঘরের ভেতর ধর্ষণ করে। শিশুর চিৎকারে আশপাশের মহিলারা ছুটে এলে ধর্ষক কাশেম আলী পালিয়ে যায়। ধর্ষক প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা করতে দেরি হয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে পড়লে গ্রামের প্রভাবশালী একটি মহল ধর্ষকের পক্ষ নিয়ে ভিকটিমের পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশ পার্বতীপুর গ্রামের বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে থানায় নিয়ে যায়। পরে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সদর হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়।
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, শিশু ধর্ষণের বিষয়টি জানার পর তিনি ঘটনাস্থলে তদন্তের জন্য পুলিশ পাঠিয়ে মেয়ে এবং মেয়ের মাকে থানায় নিয়ে আসেন। ঘটনার পর থেকে ধর্ষক পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
মানবাধিকারের ডার্কস্টার ইউনিট ধর্ষিত শিশুটির চিকিৎসা, ডাক্তারি পরীক্ষা ও আইনগত সহায়তার পাশাপাশি তার স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে জানা গেছে।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিয়ের প্রলোভনে দুই বোনকে গণধর্ষণের ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানার ওসিকে তলব করেছে হাইকোর্ট। আগামী ২৮ জানুয়ারি আদালতে হাজির হয়ে ওসি মোজাম্মেল হোসেনকে এ ঘটনায় তার ভূমিকার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। বুধবার এ ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণে করা একটি আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি মাহমুদুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। ফৌজাদারী কার্যবিধি অনুসারে ওই অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।
পুলিশের মহাপরিদর্শক, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক, পুলিশের চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-মহাপরিদর্শক, কুমিল্লার এসপি এবং চৌদ্দগ্রাম থানার ওসিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত পাঁচ ধর্ষণকারীকে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে বুধবার আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। পরে দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। আসামিরা এখন থানায় রয়েছে। এছাড়া ধর্ষিত দু’বোনের ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে তাদের পরিবারের জিম্মায় দেয়া হয়।
জানা গেছে, গত সোমবার বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের জের ধরে হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে বুধবার আবেদনটি করা হয়।
No comments