আমাদের বই মেলা ॥ অমর একুশে গ্রন্থ মেলা ২০১০
ফেব্রুয়ারি ভাষার মাস, বাংলাভাষা যা প্রতিনিয়ত শাণিত করে বাঙালীর মেধা
মনন সৃষ্টিশীলতা আর প্রগতি। প্রতি বছরের মতো এ বছরও বাংলা একাডেমী চত্বরে
গত পহেলা ফেব্রম্নয়ারি শুরম্ন হয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা।
মেলার উদ্বোধন
করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একুশে বইমেলাকে কেন্দ্র করে লেখক
প্রকাশক আর পাঠকদের এক মেলবন্ধন তৈরি হয় বাংলা একাডেমী চত্বরে এসব নিয়ে
এবারের প্রচ্ছদ লিখেছেন _রাশেদ রাব্বি ও অনিরুদ্ধ করপাঠককে ছুটে যেতে হচ্ছে লেখকের কাছে, বইটি আনার জন্য। লেখক হয়তো খুব খেটেখুটে প্যাপিরাস কাগজে বইটি লিখেছেন আর তা সংগ্রহে রেখে দিয়েছেন নিজের কাছেই। পাঠক বইটি পড়ে ফেরত দিলে লেখককে, তখন আরেকজন পাঠক লেখকের কাছ থেকে বইটি পাবেন। এভাবেই জ্ঞান সীমাবদ্ধ ছিল ছাপাকল আবিষ্কারের আগ অব্দি। তার পর বেরম্নল ছাপাকল তাও আজকের মতো আধুনিক ছিল না, লেটার প্রেস। কাগজের সীমাবদ্ধতা। সব মিলিয়ে বই প্রকাশনা অনেক দুরূহ একটা ব্যাপার ছিল আধুনিক মুদ্রণযন্ত্রের আবিষ্কার অব্দি। আর এখনকার মুদ্রণযন্ত্র তো এক নিমিষেই বই ছাপিয়ে তা বাঁধাই করে তুলে দিচ্ছে প্রকাশকের হাতে। প্রকাশকের কাছ থেকে তা যাচ্ছে বই বিক্রেতা, বইয়ের বাজারে এবং শেষে আসছে পাঠকের হাতে। এভাবেই চলছিল, লেখক পাঠক প্রকাশকের সবার একটি মিলনমেলা তৈরির প্রচেষ্টা থেকে আসে বইমেলা কনসেপ্টটি।
আমাদের একুশে বইমেলার শুরম্ন প্রকাশক চিত্তরঞ্জন সাহার হাত ধরেই। স্বাধীনতা পরবতর্ী স্বাধীন দেশের মাটিতে একুশে ফেব্রম্নয়ারিতে তাঁর প্রকাশনা থেকে প্রকাশিত বই বাংলা একাডেমী চত্বরে মাটিতে ত্রিপল বিছিয়ে বিক্রি করতে শুরম্ন করেন। সদ্য স্বাধীন দেশ একুশে ফেব্রম্নয়ারিকে আর নিজের করে নেওয়ার নতুন এক উৎসব খুঁজে পেল। ধীরে ধীরে এগিয়ে আসতে থাকল অন্যান্য প্রকাশক, এগিয়ে এলো গ্রন্থকেন্দ্র, বাংলা একাডেমী। সময় অতিক্রম করে এখন বইমেলা আমাদের এক জাতীয় উৎসব, জাতীয় মিলনমেলা। দেশের আনাচেকানাচে সব যায়গা থেকে লেখক পাঠক আর প্রকাশকরা ফেব্রম্নয়ারিতে ছুটে আসেন বাংলা একাডেমী চত্বরে। কেউ আসেন তাঁর প্রকাশিত বইগুলো নিয়ে আর কেউ আসেন তাঁর পছন্দের বইগুলো খুঁজে নিতে। বইয়ের বাজারকে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে এসেছে বইমেলা, বাঙালী চেতনা, বাঙালী সংস্কৃতির ধারক বাহকদের প্রাণের উৎসব বইমেলা।
বইমেলা শুধু বই কেনা বেচার যায়গা নয়। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্ত মনন আর মুক্ত প্রকাশের স্থান এই বইমেলা। ক্রমস প্রযুক্তি নির্ভরশীল হয়ে পড়া এ বিশ্বে অনেকেই ধারণা করে থাকেন বইয়ের জগৎ ছোট হয়ে যাবে। মানুষ বই পড়তে কম্পিউটার স্ক্রিনে, বা কোন শ্রবণ যন্ত্রের মাধ্যমে। কিন্তু বাসত্মব চিত্রে আমরা বরং এর উল্টোটাই দেখি। ক্রমশ বই পাঠকের কাছে মানুষের কাছে জনপ্রিয় থেকে জনপ্রিয়তর হয়ে উঠছে। এ বছর বইমেলা শুরম্ন হওয়ার পর থেকে গত দিনগুলোর মধ্যে প্রায় দুই হাজার বইয়ে প্রকাশনাই কি এর শক্তিশালী প্রমাণ নয়? একাডেমী চত্তর ছাপিয়ে রাস্তার পাশেল ফুটপাথেও বই মেলার জন্য স্টল করে দিতে হচ্ছে মেলা কর্তৃপকে। বইয়ের জনগৎটাকে কম্পিউটার বা ইন্টারনেট ছোট করতে পারেনি, বই হাতে নিয়ে বা শুয়ে পড়ার যে অনুভূতি তাতে ভাগ বসাতে পারবে না কোন প্রযুক্তি।
আমাদের লেখক প্রকাশক আর পাঠকের বছর জুড়ে অপো থাকে একুশের বইমেলার জন্য। মেলাতেই সম্ভবত সবচাইতে বড় আকার বই বিক্রি হয়, আমাদের প্রকাশনা শিল্প ও অনেক বিকাশ লাভ করছে দিন দিন, কিন্তু তারপরও আমাদের প্রকাশনা হয়ে উঠতে পারছে না বিশ্বমানের পা-ুলিপি নির্বাচন থেকে করে পাঠকের হাতে বই তুলে দেয়া_ এ পর্যায়গুলোতে রয়ে গেছে মান নিয়ন্ত্রণের অভাব। হাতে গোনা কয়েক জন জনপ্রিয় লেখক ছাড়া বাকি তরম্নণ ও প্রতিশ্রম্নতিশীল লেখকদের বই প্রকাশে প্রকাশকরা খুব একটি আগ্রহ দেখান না। সে সব েেত্র লেখকরা নিজেরাই প্রকাশনার খরচ দিয়ে কোন প্রকাশককে দিয়ে বই বের করান। কিন্তু এ প্রক্রিয়াটি খুব একটা জুতসই নয়। বই প্রকাশনার পেশাদারিত্বে অভাব রয়েছে আমাদের। পা-ুলিপি নির্বাচন, সংশোধন, পরিমার্জন-পরিবর্ধন, মুদ্রণ, বাঁধাই, প্রচ্ছদ সব পর্যায়ে এ পেশাদারিত্ব আমাদের প্রত্যাশা। জনপ্রিয় ও অধিকাংশ পাঠকের জন্য প্রয়োজনীয় বই একটি সুলভ সংস্করণ বের করাও আমাদের প্রয়োজন। অফসেট কাগজে, বোর্ড বাঁধাই ছাড়াও নিউজপ্রিন্ট, সাধারণ মলাটে সব পাঠক যেন কিনে পড়তে পারে সে দিকটা প্রতিফলিত হোক এ সুলভ সংস্করণে। এ প্রত্যাশাগুলোই থাকে আমাদের প্রকাশকদের কাছে।
চিত্তরঞ্জন সাহার হাত দিয়ে শুরম্ন করা এ বইমেলা এতটা সময় অতিক্রম করে এখন যে মহোৎসবে, যে মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে, তাতে শরিক বই-অনত্মপ্রাণ সবাই। লেখকরাও এসে হাজির হচ্ছেন মেলা প্রাঙ্গণে। পাঠকের সাথে তাঁরা কথা বলছেন, জেনে নিচ্ছেন পাঠকরা বইটিকে কিভাবে মূল্যায়ন করছে। প্রিয় লেখকরা অটোগ্রাফ দিচ্ছেন পাঠকের বইয়ে। লেখক-পাঠকের এ মিলনমেলার মূল অনুষঙ্গ হচ্ছে বই। বইমেলায় সব চাইতে বেশি বিক্রি হচ্ছে উপন্যাস তার পর রয়েছে গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ অনুবাদ, গবেষণামূলক, নারী বিষয়ক, শিশুতোষ বই। বিক্রির সংখ্যা দিয়ে বইমেলাকে খাটো করে দেখার কোন উপায় নেই। কিন্তু তারপরও মননশীল বইয়ের জায়গায় আমাদের আরও গুরম্নত্ব দেয়া উচিত। মননশীল বইয়ের প্রকাশনাকেও উদ্বুদ্ধ করা উচিত। গুরম্নত্ব থাকা অনুবাদ গ্রন্থ একজন পাঠক যেন বাংলা ভাষাতেই খুঁজে পায় প্রতিটি ভাষার, প্রতিটি জাতির সাহিত্য-সংস্কৃতি, জ্ঞান-বিজ্ঞানের অমূল্য বইগুলো। শিশুতোষ বই প্রকাশনার দিকেও জোর দেয়া উচিত। আমাদের ভবিষ্যত পাঠক আজকের শিশুরা তাদের হাতে ভাল মানের সুন্দর, সুদৃশ্য বই তুলে দেয়ার দায়িত্বটুকু প্রকাশকদেরই নিতে হবে।
চাই প্রশসত্ম পরিসর : বছর বছর বাড়ছে একুশে বইমেলার ব্যপ্তি ও পরিধি। বাড়ছে না মেলার আকার-আয়তন। অর্থাৎ প্রতিবছরই বাড়ছে নতুন লেখকের সংখ্যা। সেই সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে প্রকাশক ও পুসত্মক প্রকাশের সংখ্যা। সেই সঙ্গে ক্রমাগত বাড়ছে পাঠক সমাজ, বাড়ছে মেলানুরাগী। কিন্তু বাড়ছে না মেলার স্থান। অন্য বছরগুলোর চেয়ে এ বছর মেলার স্থান সংকুলান হয়েছে অনেকটা। নিজস্ব প্রয়োজনেই বাংলা একাডেমীকে করতে হয়েছে নতুন অবকাঠামো। যার ফলে পূর্বের তুলনায় মেলার জায়গা কমেছে বেশ কিছু। তার জন্য নেই অনুরূপ কোন ব্যবস্থা। প্রয়োজনে বাংলা একাডেমীকে পুনরায় ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ করতে হতে পারে। তখন পরিস্থিতি হবে আরও ভয়াবহ। তাই মেলার জন্য প্রয়োজন স্থায়ী নির্ধারিত স্থান। যেখানে থাকবে সুপরিসর জায়গা, প্রকাশকদের জন্য পর্যাপ্ত স্টলের বরাদ্দ। আগত ক্রেতা, পাঠক শুভানুধ্যায়ীদের ভিড় ঠেলে হতে হবে না হয়রান।
প্রয়োজন সৃজনশীল পুসত্মক : স্বাধীন স্বদেশে সৃজনশীল প্রকাশনার অভাব সব সময়ই সুধী সমাজ অনুভব করেছে। বিশেষ করে স্বাধীনতা পরবতর্ী পর্যায়ে দেশে যে পরিমাণ সৃজনশীল পুসত্মক প্রকাশের প্রয়োজন ছিল (জাতির মেধা মননের উৎকর্ষে)। বরাবরই আমরা সে অবস্থানে যেতে ব্যর্থ হয়েছি। যদি পেছনে ফিরে তাকানো যায় তবে দেখা যাবে ১৯৭২ থেকে ২০০৯ সাল পর্যনত্ম অর্থাৎ দীর্ঘ ৩৮ বছরে দেশে প্রকাশকের সংখ্যা, লেখকের সংখ্যা এবং পাঠকের সংখ্যা বেড়েছে। দেশে কথিত ও তথাকথিত পাঠকনন্দিত লেখকের সংখ্যাও বেড়েছে। এক শ্রেণীর প্রকাশক বাণিজ্যিকভাবে সফলতাও অর্জন করছে। সরকারও এ বিষয়ে বেশ মনোযোগী হয়েছে। কিন্তু সৃজনশীল প্রকাশনার সংখ্যা অন্যান্য প্রকাশনার সঙ্গে বাড়ছে তো না-ই বরং পূর্বাপো মন্থর রূপ ধারণ করছে। এেেত্র দু'টি বিষয় বিচার্য, সৃজনশীল লেখার যথেষ্ট বা সময়োপযোগী পাঠক তৈরি হয়নি এবং সৃজনশীল লেখকগণ তাদের পর্যাপ্ত রয়েলিটি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অন্যদিকে প্রকাশকরাও সৃজনশীল পুসত্মক প্রকাশ করে পর্যাপ্ত বা চাহিদামতো মুনাফা লাভে সম নয়। যথোপযুক্ত কারণে তাই তারাও এ বিষয়ে অনীহা প্রকাশ করে থাকে। এ কারণে দেশের সৃজনশীল লেখক এবং অনুসন্ধানী পাঠক উভয়েই ৰতিগ্রসত্ম হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে উন্নত জাতি হিসেবে আমাদের জয়যাত্রা।
বিপণন ব্যবস্থা অনগ্রসর : লেখক পাঠকদের এক বছরের আশা আকাঙ্ার প্রতিফলন ঘটে একুশে বই মেলায়। মেলার প্রতিটি দিনই প্রায় শতকের কাছাকাছি নতুন বই আত্মপ্রকাশ করে থাকে। মেলায় আগত আগ্রহী পাঠকগণ এর রস আস্বাদনে যথেষ্ট সমর্থ। কিন্তু দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর অবস্থান রাজধানী ঢাকার বাইরে। দেশের প্রত্যনত্ম অঞ্চল দূরের কথা, মফস্বল এমনকি বড় শহরগুলোতেও নিত্যনতুন প্রকাশিত বইগুলো পেঁৗছানোর ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। অনেক েেত্রই দেখা যায় এ বছরে প্রকাশিত বই মফস্বলে যেতে যেতে পরবতর্ী বছর চলে আসে। যার ফলে রাজধানীর বাইরের পাঠককুলের জ্ঞানান্বেষণের তৃষ্ণা প্রচ-তায় রূপ নেয়। বিপণন ব্যবস্থার এই মন্থরতা বা সেকেলে বিপণন ব্যবস্থার কারণে সারাদেশের অগণিত পাঠক সমাজকে জ্ঞানার্জনের সুবিধা থেকে সবসময় রাখছে পশ্চাৎপদ। কিন্তু লেখক ও পাঠকের উৎকর্ষে মুদ্রণ ও প্রকাশনার মতো বিপণন ব্যবস্থাকেও করতে হবে উন্নততর। অন্যথায় বইমেলার ব্যাপ্তি রাজধানী ঢাকার পাঠককুল অতিক্রম করে দেশব্যাপী বিসত্মৃত হতে পারবে কিনা সন্দেহ থেকে যায়।
জ্ঞান চোর : মাঝে মাঝে পত্রিকার পাতায় দেখা যায় বইচোর শব্দটি। চুরির সঙ্গে অর্থনৈতিক বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকায় সেটাকে জ্ঞান চুরি বললে অতু্যক্তি হবে না নিশ্চয়ই। সাভাবিকভাবে চিনত্মা রকলে দেখা যায় অন্ন, বস্ত্রও বা ধনসম্পদের অভাব মানুষকে চুরি করতে শেখায় বা ত্রেবিশেষ বাধ্য করে। কিন্তু বই চুরি করে কেউ বৈষয়িক কোন অভাব পূরণ করতে পারবে না। সেেেত্র বলা যায়, জ্ঞানের অন্বেষণেই সে চুরি করে। এখানে একটি বিষয় বিচার্য। এক ধরনের অভাববোধ থেকেই যে কোন ব্যক্তি বই চুরি করে। এখানে শুধু জ্ঞানই নয় সেই সঙ্গে আর্থিক দ্বীনতাও অনেকাংশে দায়ী। মূল্যস্ফিতি, অর্থনৈতিক মন্দা, দ্রব্যমূল্যের উর্ধমুখিতা, পুসত্মক প্রকাশনার অনুষঙ্গে মূল্য বৃদ্ধিজনিত কারণে দিন দিন বাড়ছে বইয়ের দাম। সেই সঙ্গে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে না আগ্রহী পাঠকের আর্থিক সঙ্গতি। যার ফলে কোন অধিক গুরম্নত্বসম্পন্ন বইয়ের প্রতি প্রচ- আকর্ষণের ফলে একজন সৃজনশীল পাঠক নিজের অজানত্মেই, হয়তো অবচেতন মনে কাঙ্তি বইটি চুরি করতে বাধ্য হয়। যদিও আপাতদৃষ্টিতে এটি অপরাধ। কিন্তু সীমাবদ্ধ সাধ্যের ভেতরে জ্ঞানপিপাসু পাঠকের হাতে বই তুলে দিতে পারলে হয়তো এ ধরনের বিড়ম্বনায় কাউকে পড়তে হতো না।
পাইরেসি: সম্প্রতি বই প্রকাশের ৰেত্রে পাইরেসি শব্দটি বেশ আলোচিত। বাংলা মেধাস্বত্ব শব্দটির পরিবর্তে ইংরেজী পাইরেসি শব্দটির জনপ্রিয়তা বা ব্যবহারই বেশি লৰ্য করা যায়। মূলত মেধাস্বত্ব আইন মেনে লেখা হয় না যে বই সেটিই মেধাস্বত্ব আইনের অনত্মর্ভুক্ত বা পাইরেটেড বই। আবার প্রকাশনার ৰেত্রেও অনুরূপ। অর্থাৎ মেধাস্বত্ব না মেনে প্রকাশিত বইটিও পাইরেসির দায়ে অভিযুক্ত। সমসাময়িক সময়ে অনেক লেখক ও প্রকাশক মেধাস্বত্ব আইন না মেনেই অর্থাৎ অনুমতি ব্যাতিরেকে অন্য কারও লেখার আংশিক বা গুরম্নত্বপূর্ণ অংশ যদি স্বীয় লেখায় অনত্মর্ভুক্ত করে এবং কোন প্রকাশক যদি সেই লেখা প্রকাশ করে তবে উভয়েই পাইরেসির দায়ে অভিযুক্ত।সমসাময়িক সময়ে অনেক লেখক ও প্রকাশক মেধাস্বত্ব আইন না মেনেই অর্থাৎ অনুমতি ব্যতিরেকে অন্যকারো লেখার আংশিক বা গুরম্নত্বপূণ অংশ যদি স্বীয় লেখায় অনত্মভর্ুক্ত করে এবং কোন প্রকাশক যদি সেই লেখা প্রকাশ করে তবে উভয়েই পাইরেসির দায়ে অভিযুক্ত। আমাদের প্রাণের মেলা একুশে গ্রন্থ মেলায় এ ধরনের কিছু বই প্রকাশনা করে বিক্রির জন্য উপস্থাপন করা হয়। যা কোনভাবেই কাম্য নয়। এতে করে শুধু লেখক-প্রকাশকই ৰতির সম্মুখীন হয় না, ৰতিগ্রসত্ম হয় আমাদের পাঠক সমাজও। তাই এ বিষয়ে আমাদের অর্থাৎ সংশিস্নষ্ট সকলেরই সচেতনতা অত্যনত্ম গুরম্নত্বপূর্ণ।
ছড়িয়ে পড়ুক সারাদেশে : দেশের সকল স্থানের সকল পাঠকের জ্ঞান পিপাসা নিবৃত্ত করার লৰ্যে এই ভাষার মাস ফেব্রম্নয়ারিতে সকল জেলা শহরে বইমেলার উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে। বাংলা একাডেমীর উদ্যোগে স্থানীয় জেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় হতে পারে এ মেলার আয়োজন। এখানে বাণিজ্যিক বিষয়টি বিবেচনায় না এনে বইকে সকলের হাতে পেঁৗছানোর বিষয়টিকে অধিকতর গুরম্নত্ব দিতে হবে। তাহলে সারাদেশের পাঠককুল উপকৃত হবে। জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে পড়বে সারাদেশে একসঙ্গে।
অনেক আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের প্রাণের ভাষা মাতৃভাষা বাংলা ভাষা। বাংলাকে সঠিকভাবে রৰণাবেৰণের বিষয় অত্যনত্ম গুরম্নত্বপূর্ণ। এই ভাষার বিশুদ্ধতা রৰায় আমাদের যথেষ্ট সচেষ্ট হতে হবে। লৰ্য রাখতে হবে কোনভাবেই যেন আমাদের প্রাণের ভাষা কোন দোষে দুষ্ট না হয়ে যায়।
প্রতি বছরের মতো এবারও এসেছে বইমেলা। নতুন পুরনো লেখকদের লেখা বইয়ে সমৃদ্ধ হয়ে সেজেছে এবারের মেলা। প্রকাশনার দিক থেকে এবারের মেলার অবস্থান আগের তুলনায় উন্নত। মেলায় প্রতিদিনই আত্মপ্রকাশ করছে অসংখ্য নতুন বই। লেখক হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে অনেক নতুন মুখ। এ মেলা শুধু বই বিকিকিনির নয়, আবেগ অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ ঘটে এখানে। এখানেই আমরা খুঁজে ফিরি আমাদের শেকড়ের সন্ধান।
No comments