কালক্ষেপণ না করে রিভিউ কমিশন গঠন করুন-বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরতে বিল
বাংলাদেশের সংসদীয় গণতন্ত্র কার্যকর ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে অর্থপূর্ণ করা, সর্বোপরি সুশাসনের স্বার্থে সংবিধানের ব্যাপকভিত্তিক সংশোধনী কাম্য। এ লক্ষ্য অর্জনে বাহাত্তরের সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদ অবিকল, আবার কতিপয় অনুচ্ছেদের অধিকতর সংশোধনী সাপেক্ষে পুনরুজ্জীবন অপরিহার্য হতে পারে।
যেমন, উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে মূল সংবিধানে যেভাবে শুধু প্রধান বিচারপতির পরামর্শের বিধান রয়েছে, তার হুবহু পুনরুজ্জীবন যথাযথ হবে না। এখানে সংশোধনী আনা উচিত ১০ বিচারকের মামলায় হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ ও আপিল বিভাগের রায়ের আলোকে। এ ছাড়া বাহাত্তরের সংবিধানে যেভাবে ব্যক্তির হাতে নিরঙ্কুশভাবে প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তা আমাদের নির্বাচিত সরকারের দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতায় ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংসদকে কার্যকর না হওয়ার পথে একটা বাধা বলে আজ স্বীকৃত। সুতরাং বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যাওয়া বা সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে সংবিধানের গণতন্ত্রায়ণের প্রশ্নটি বড় করে দেখতে হবে।
তবে বাস্তবতা হচ্ছে যে আক্ষরিক ও হুবহু অর্থে বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তার কোনো প্রয়োজনও নেই। এ নিয়ে বিতর্ক বা হুবহু ফিরে যাওয়ার প্রশ্ন বরং অহেতুক বিতর্কের সৃষ্টি করবে। এভাবে বললে বিএনপির যাঁরা বলেন যে আওয়ামী লীগ কখনোই বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যেতে পারবে না, তাঁদেরই একটা বৈধতা দেওয়া হয়। বাহাত্তরের সংবিধানে ফেরা না-ফেরা নিয়ে কূটতর্ক বন্ধ হলেই মঙ্গল। আমাদের সুপারিশ হচ্ছে, বাহাত্তরের সংবিধান ফিরিয়ে আনার কথাটি পরিহার করে বাহাত্তরের কোন অনুচ্ছেদ ফিরিয়ে আনা হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলা।
২৮ মে বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরতে বিল উত্থাপনের আভাস দিয়েছেন দুই মন্ত্রী। তাঁরা বলেছেন, পঞ্চম সংশোধনী-সংক্রান্ত মামলায় আপিল বিভাগের রায় হাতে পাওয়ার পরই সরকার সংবিধান সংশোধনে হাত দেবে। আমরা অবশ্যই মনে করি না যে সুশাসনের জন্য সংবিধানে যে ধরনের সংস্কার সাধন দরকার, তার পুরো নির্দেশনা আদালতের তরফে আসার সুযোগ রয়েছে। বাহাত্তরের সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদ ফিরিয়ে আনতে হাইকোর্টের রায়ে নির্দেশনা রয়েছে। তবে আমরা গোড়া থেকে বলে আসছি যে তা অসম্পূর্ণ। সর্বস্তরে জবাবদিহিমূলক শাসন প্রতিষ্ঠায় জাতির যে আকাঙ্ক্ষা, তা পূরণে আদালতের রায় অপর্যাপ্ত। উপরন্তু সংসদে নারী আসন এক-তৃতীয়াংশ বাড়াতে আওয়ামী লীগের সুস্পষ্ট অঙ্গীকার রয়েছে। সাড়ে ৪০০ আসনের সংসদ করা শুধু সংখ্যা বাড়ানোর বিষয় নয়। সার্বিক দিক বিবেচনায় তাই আমরা সরকারি দল আওয়ামী লীগকে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সরকার গঠনের পরপরই একটি প্রতিনিধিত্বমূলক সংবিধান রিভিউ কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছি। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে এ ধরনের কমিশন গঠনের বিষয়ে আভাসও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা হচ্ছে না। অথচ জরুরি এই কাজটির কোনো বিকল্প হতে পারে না।
সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে রাষ্ট্র গঠনের ত্রুটি দূর করার একটি ঐতিহাসিক সুযোগ এখন আমাদের সামনে রয়েছে। এটি কাজে লাগানোর দায়িত্ব এখন আওয়ামী লীগের কাঁধে। আমরা আশা করব, জনগণকে তারা এ ক্ষেত্রে হতাশ করবে না। রায়ের অনুলিপি হাতে নিয়ে খসড়া তৈরি করার যে কথা মন্ত্রীরা বলছেন, তা গ্রহণযোগ্য নয়। এর কোনো আইনগত দিকও নেই। তা ছাড়া পঞ্চম সংশোধনী-সংক্রান্ত কোনো বিলের খসড়া তৈরি ও সংবিধান রিভিউ কমিশন করা আলাদা বিষয়। আদালতের কাছ থেকে দ্রুত রায়ও মিলছে না। সুতরাং আদালতের কথা বলে কালক্ষেপণের সুযোগ নেওয়া হলে তা হবে বড় দুঃখের কথা।
তবে বাস্তবতা হচ্ছে যে আক্ষরিক ও হুবহু অর্থে বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তার কোনো প্রয়োজনও নেই। এ নিয়ে বিতর্ক বা হুবহু ফিরে যাওয়ার প্রশ্ন বরং অহেতুক বিতর্কের সৃষ্টি করবে। এভাবে বললে বিএনপির যাঁরা বলেন যে আওয়ামী লীগ কখনোই বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যেতে পারবে না, তাঁদেরই একটা বৈধতা দেওয়া হয়। বাহাত্তরের সংবিধানে ফেরা না-ফেরা নিয়ে কূটতর্ক বন্ধ হলেই মঙ্গল। আমাদের সুপারিশ হচ্ছে, বাহাত্তরের সংবিধান ফিরিয়ে আনার কথাটি পরিহার করে বাহাত্তরের কোন অনুচ্ছেদ ফিরিয়ে আনা হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলা।
২৮ মে বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরতে বিল উত্থাপনের আভাস দিয়েছেন দুই মন্ত্রী। তাঁরা বলেছেন, পঞ্চম সংশোধনী-সংক্রান্ত মামলায় আপিল বিভাগের রায় হাতে পাওয়ার পরই সরকার সংবিধান সংশোধনে হাত দেবে। আমরা অবশ্যই মনে করি না যে সুশাসনের জন্য সংবিধানে যে ধরনের সংস্কার সাধন দরকার, তার পুরো নির্দেশনা আদালতের তরফে আসার সুযোগ রয়েছে। বাহাত্তরের সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদ ফিরিয়ে আনতে হাইকোর্টের রায়ে নির্দেশনা রয়েছে। তবে আমরা গোড়া থেকে বলে আসছি যে তা অসম্পূর্ণ। সর্বস্তরে জবাবদিহিমূলক শাসন প্রতিষ্ঠায় জাতির যে আকাঙ্ক্ষা, তা পূরণে আদালতের রায় অপর্যাপ্ত। উপরন্তু সংসদে নারী আসন এক-তৃতীয়াংশ বাড়াতে আওয়ামী লীগের সুস্পষ্ট অঙ্গীকার রয়েছে। সাড়ে ৪০০ আসনের সংসদ করা শুধু সংখ্যা বাড়ানোর বিষয় নয়। সার্বিক দিক বিবেচনায় তাই আমরা সরকারি দল আওয়ামী লীগকে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সরকার গঠনের পরপরই একটি প্রতিনিধিত্বমূলক সংবিধান রিভিউ কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছি। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে এ ধরনের কমিশন গঠনের বিষয়ে আভাসও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা হচ্ছে না। অথচ জরুরি এই কাজটির কোনো বিকল্প হতে পারে না।
সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে রাষ্ট্র গঠনের ত্রুটি দূর করার একটি ঐতিহাসিক সুযোগ এখন আমাদের সামনে রয়েছে। এটি কাজে লাগানোর দায়িত্ব এখন আওয়ামী লীগের কাঁধে। আমরা আশা করব, জনগণকে তারা এ ক্ষেত্রে হতাশ করবে না। রায়ের অনুলিপি হাতে নিয়ে খসড়া তৈরি করার যে কথা মন্ত্রীরা বলছেন, তা গ্রহণযোগ্য নয়। এর কোনো আইনগত দিকও নেই। তা ছাড়া পঞ্চম সংশোধনী-সংক্রান্ত কোনো বিলের খসড়া তৈরি ও সংবিধান রিভিউ কমিশন করা আলাদা বিষয়। আদালতের কাছ থেকে দ্রুত রায়ও মিলছে না। সুতরাং আদালতের কথা বলে কালক্ষেপণের সুযোগ নেওয়া হলে তা হবে বড় দুঃখের কথা।
No comments