আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতিঃ ঢোলের বাদ্য নয়, পুলিশকে কাজে নামান
গত বৃহস্পতিবার একদিনেই রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম ও যশোরে চারজন খুন হয়েছেন। নরসিংদীর শিবপুরে একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের কর্মকর্তাদের গুলি করে ৬৯ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা। রাজবাড়ীতে ইউএনও’র অফিস থেকে টেন্ডারের বাক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছে যুবলীগের ক্যাডাররা।
আগের দিন ময়মনসিংহের গৌরীপুরের মধ্যবাজারে অর্ধশতাধিক দোকান ও মাছের আড়তে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযান চালিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা। তারও আগের দিন রাজধানীতে খুন হয়েছেন একজন ব্যবসায়ী। যশোরের কেশবপুরে বিএনপির একজন নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। একই এলাকায় একযোগে চারজন ইউপি চেয়ারম্যানকে হত্যার হুমকি দিয়েছে সন্ত্রাসীরা।
তথ্যগুলো প্রকাশিত খবর থেকে নেয়া হয়েছে। এসবের বাইরেও প্রতিদিন নানা ধরনের অসংখ্য অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, যেগুলো অপ্রকাশিত থেকে যায়। সব মিলিয়েই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম ভীতিকর পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। অপরাধের ধরনও লক্ষ্য করা দরকার। ছিনতাইয়ের জন্য খুন শুধু নয়, কথায় কথায় মানুষের জীবনও কেড়ে নিচ্ছে সন্ত্রাসী ঘাতকরা। নারীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। ধর্ষণের পর অনেককে মেরে ফেলা হচ্ছে। ওদিকে প্রকাশ্যে ছিনতাই হচ্ছে টেন্ডারের বাক্স। জমা দেয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না—প্রকৃত ব্যবসায়ীরা দরপত্রই সংগ্রহ করতে পারছেন না। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। না দিলে মেরে ফেলার হুমকি আসছে। কারো কারো বেলায় হুমকির বাস্তবায়নও করা হচ্ছে। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, দেশে ছিঁচকে চুরি বলেও যে একটি ব্যাপার রয়েছে সে কথাটাই মানুষ ভুলতে বসেছে।
এদিকে পুলিশ কিন্তু রয়েছে আগের মতোই। অপরাধ ঘটে যাওয়ার পর তাদের দৌড়ঝাঁপ থাকে চোখে পড়ার মতো— যেন মহা কোনো গড় উল্টে ফেলবে তারা! কিন্তু রাত না পেরুতেই লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছে পুলিশ। প্রায় ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে গোপন লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। হয় আগে থেকে পুলিশের যোগসাজশ থাকে নয়তো লেনদেন হয় ঘটনার পর। ফলে থানায় আগে জিডি করেও কোনো ফল পাওয়া যায় না— যেমনটি ঘটেছে ব্যবসায়ী প্রেমকৃষ্ণের বেলায়। অন্য একটি বিশেষ কারণেও অপরাধ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ষোলকলা পূর্ণ হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশকে ক্ষমতাসীনদের নির্দেশ মেনে চলতে হচ্ছে। কাকে ধরা যাবে না, কার দিকে চোখ তুলে তাকানো পর্যন্ত যাবে না এবং কাকে ধরে ফেললেও ছেড়ে দিতে হবে— এসব বিষয়ে পুলিশের কাছে নিয়মিত নির্দেশনা আসছে। শুধু রাজধানী বা বড় বড় শহর-নগরে নয়, গ্রাম এবং উপজেলা পর্যন্ত সারাদেশেই পুলিশকে সরকারের নির্দেশ মেনে চলতে হচ্ছে। ফলে পুলিশ জানলেও অনেক ক্ষেত্রেই কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির এই সীমা ছাড়ানো অবনতি মানুষ মাত্রকেই চরম উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। কেউ জানে না, বাইরে যাওয়ার পর সে আর বাড়িতে ফিরে আসতে পারবে কিনা। অথবা ফিরতে পারলেও তাকে টাকা-পয়সা খুইয়ে আসতে হবে কিনা। কাকে কখন কোথায় গুলি খেতে হবে কিংবা ছুরি-চাপাতির আঘাতে রক্তাক্ত হতে হবে সেকথাও কারো জানা নেই। এমন অবস্থায় প্রথমে আঙুল উঠেছে পুলিশের দিকে। কারণ কোন এলাকায় কারা কোন ধরনের অপরাধ করে বেড়ায়, কারা তাদের লালন-পালন করে—সবই রয়েছে পুলিশের নখদর্পণে। কিন্তু সব জানা সত্ত্বেও কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ার প্রথম কারণ, অপরাধীদের সঙ্গে একশ্রেণীর পুলিশের গোপন লেনদেনের সম্পর্ক রয়েছে। বলা হয়, পুলিশ নাকি ‘ভাগ’ পেয়ে থাকে! এর সঙ্গে ‘ঢোলের বাড়ি’ শোনাতে যুক্ত হয়েছেন ক্ষমতাসীনরা। মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছেন বলে ‘নাচুনে বুড়ি’ পুলিশকে তারা ‘ঢোলের বাড়ি’ না শুনিয়ে পারছেন না। সুতরাং এমন অভিযোগ করাই চলে যে, সরকারও অপরাধ বাড়ানোর ব্যাপারে সরাসরি ‘অবদান’ রেখে চলেছে। অথচ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানোর দায়িত্ব সরকারেরই। ক্ষমতাসীনরা যদি পুলিশকে দলীয় ক্যাডারের মতো ব্যবহার বন্ধ করেন এবং অপকর্মে নিয়োজিত আওয়ামী সন্ত্রাসীদের পাহারায় নিয়োজিত না রাখেন তাহলেই পুলিশ অপরাধীদের বিরুদ্ধে তত্পর হতে বাধ্য হবে। আর পুলিশ তত্পর থাকলেই অপরাধ কমে যাবে। এটাই সহজ হিসাব। সুতরাং সরকারের উচিত অপরাধ দমনে সততার সঙ্গে উদ্যোগ নেয়া। অনেক হয়েছে, পরিস্থিতি একেবারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আগে তত্পর না হলে ব্যাপারটা কিন্তু জনগণ ভুলবে না।
তথ্যগুলো প্রকাশিত খবর থেকে নেয়া হয়েছে। এসবের বাইরেও প্রতিদিন নানা ধরনের অসংখ্য অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, যেগুলো অপ্রকাশিত থেকে যায়। সব মিলিয়েই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম ভীতিকর পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। অপরাধের ধরনও লক্ষ্য করা দরকার। ছিনতাইয়ের জন্য খুন শুধু নয়, কথায় কথায় মানুষের জীবনও কেড়ে নিচ্ছে সন্ত্রাসী ঘাতকরা। নারীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। ধর্ষণের পর অনেককে মেরে ফেলা হচ্ছে। ওদিকে প্রকাশ্যে ছিনতাই হচ্ছে টেন্ডারের বাক্স। জমা দেয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না—প্রকৃত ব্যবসায়ীরা দরপত্রই সংগ্রহ করতে পারছেন না। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। না দিলে মেরে ফেলার হুমকি আসছে। কারো কারো বেলায় হুমকির বাস্তবায়নও করা হচ্ছে। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, দেশে ছিঁচকে চুরি বলেও যে একটি ব্যাপার রয়েছে সে কথাটাই মানুষ ভুলতে বসেছে।
এদিকে পুলিশ কিন্তু রয়েছে আগের মতোই। অপরাধ ঘটে যাওয়ার পর তাদের দৌড়ঝাঁপ থাকে চোখে পড়ার মতো— যেন মহা কোনো গড় উল্টে ফেলবে তারা! কিন্তু রাত না পেরুতেই লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছে পুলিশ। প্রায় ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে গোপন লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। হয় আগে থেকে পুলিশের যোগসাজশ থাকে নয়তো লেনদেন হয় ঘটনার পর। ফলে থানায় আগে জিডি করেও কোনো ফল পাওয়া যায় না— যেমনটি ঘটেছে ব্যবসায়ী প্রেমকৃষ্ণের বেলায়। অন্য একটি বিশেষ কারণেও অপরাধ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ষোলকলা পূর্ণ হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশকে ক্ষমতাসীনদের নির্দেশ মেনে চলতে হচ্ছে। কাকে ধরা যাবে না, কার দিকে চোখ তুলে তাকানো পর্যন্ত যাবে না এবং কাকে ধরে ফেললেও ছেড়ে দিতে হবে— এসব বিষয়ে পুলিশের কাছে নিয়মিত নির্দেশনা আসছে। শুধু রাজধানী বা বড় বড় শহর-নগরে নয়, গ্রাম এবং উপজেলা পর্যন্ত সারাদেশেই পুলিশকে সরকারের নির্দেশ মেনে চলতে হচ্ছে। ফলে পুলিশ জানলেও অনেক ক্ষেত্রেই কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির এই সীমা ছাড়ানো অবনতি মানুষ মাত্রকেই চরম উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। কেউ জানে না, বাইরে যাওয়ার পর সে আর বাড়িতে ফিরে আসতে পারবে কিনা। অথবা ফিরতে পারলেও তাকে টাকা-পয়সা খুইয়ে আসতে হবে কিনা। কাকে কখন কোথায় গুলি খেতে হবে কিংবা ছুরি-চাপাতির আঘাতে রক্তাক্ত হতে হবে সেকথাও কারো জানা নেই। এমন অবস্থায় প্রথমে আঙুল উঠেছে পুলিশের দিকে। কারণ কোন এলাকায় কারা কোন ধরনের অপরাধ করে বেড়ায়, কারা তাদের লালন-পালন করে—সবই রয়েছে পুলিশের নখদর্পণে। কিন্তু সব জানা সত্ত্বেও কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ার প্রথম কারণ, অপরাধীদের সঙ্গে একশ্রেণীর পুলিশের গোপন লেনদেনের সম্পর্ক রয়েছে। বলা হয়, পুলিশ নাকি ‘ভাগ’ পেয়ে থাকে! এর সঙ্গে ‘ঢোলের বাড়ি’ শোনাতে যুক্ত হয়েছেন ক্ষমতাসীনরা। মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছেন বলে ‘নাচুনে বুড়ি’ পুলিশকে তারা ‘ঢোলের বাড়ি’ না শুনিয়ে পারছেন না। সুতরাং এমন অভিযোগ করাই চলে যে, সরকারও অপরাধ বাড়ানোর ব্যাপারে সরাসরি ‘অবদান’ রেখে চলেছে। অথচ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানোর দায়িত্ব সরকারেরই। ক্ষমতাসীনরা যদি পুলিশকে দলীয় ক্যাডারের মতো ব্যবহার বন্ধ করেন এবং অপকর্মে নিয়োজিত আওয়ামী সন্ত্রাসীদের পাহারায় নিয়োজিত না রাখেন তাহলেই পুলিশ অপরাধীদের বিরুদ্ধে তত্পর হতে বাধ্য হবে। আর পুলিশ তত্পর থাকলেই অপরাধ কমে যাবে। এটাই সহজ হিসাব। সুতরাং সরকারের উচিত অপরাধ দমনে সততার সঙ্গে উদ্যোগ নেয়া। অনেক হয়েছে, পরিস্থিতি একেবারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আগে তত্পর না হলে ব্যাপারটা কিন্তু জনগণ ভুলবে না।
No comments