হস্তক্ষেপমুক্ত স্বাধীন নির্বাচনই কাম্য-প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা
যেকোনো দেশে নির্বাচন কমিশনের প্রধান দায়িত্ব অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা। আর সেই লক্ষ্যে এ প্রতিষ্ঠানটির স্বাধীন ও স্বতন্ত্র সত্তার প্রয়োজনীয়তাও অস্বীকার করা যায় না। বাংলাদেশের সংবিধানেও নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা ও কার্যাবলি নির্দিষ্ট করা আছে।
এতে বলা আছে, ‘নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবেন এবং কেবল এই সংবিধান ও আইনের অধীন থাকিবেন।’
যেই প্রতিষ্ঠান আইনের অধীনে থাকার কথা, সেই প্রতিষ্ঠানকে সরকার তথা ক্ষমতাসীনদের অধীনে নেওয়ার চেষ্টা করা উচিত নয়, যদিও নিকট অতীতে এর একাধিক নজির রয়েছে। যখন যে দল ক্ষমতায় ছিল, তখনই তারা নির্বাচন কমিশনসহ সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে করায়ত্ত করতে সচেষ্ট হয়েছে। যে কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা চালু করেও নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করা সম্ভব হয়নি। এ প্রেক্ষাপটে ‘বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ২০০৬-০৯: ব্যর্থতা থেকে সাফল্যে উত্তরণ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি সমস্যা সমাধানে কোনো পথ বাতলাতে পারবে কি না, তা এখনই বলা কঠিন। তবে গত সোমবারের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ টি এম শামসুল হুদা নির্বাচন কমিশন নিয়োগ সম্পর্কে যেসব কথা বলেছেন, তা আলোচনার দাবি রাখে। তিনি বলেছেন, ‘কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতার মানদণ্ড থাকা প্রয়োজন। অযোগ্য লোকদের নির্বাচন কমিশনার বানালে কমিশন স্বাধীন হলেও কোনো লাভ হবে না।’
এ সমস্যাটি যে শুধু নির্বাচন কমিশনে রয়েছে, তা নয়। আমাদের অধিকাংশ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান অযোগ্যতা ও দলীয়করণে ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হয়েছে। অবিলম্বে এর প্রতিবিধান করা না গেলে কোনো প্রতিষ্ঠানই সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। সিইসি কথায় কথায় নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবিরও বিরোধিতা করেছেন। যেকোনো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে আইনের পাশাপাশি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দল বা পক্ষগুলো বিপরীত অবস্থান নিলে তাঁদের পক্ষে কাজ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত ব্যক্তিদেরও সব রাগ-অনুরাগের ঊর্ধ্বে থাকতে হবে। তাঁরা এমন কোনো কাজ করবেন না যাতে নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হয়। আইন ও বিধিবিধান দ্বারা চালিত হতে না পারলে তাঁদের উচিত হবে, পদ থেকে সরে দাঁড়ানো। যদিও অন্যায় হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে সে ধরনের নজির খুব বেশি নেই।
নির্বাচনী ব্যবস্থাকে যথাসম্ভব ত্রুটিমুক্ত রাখতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যেসব সংস্কার আনা হয়েছিল তা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার ক্ষেত্রেও এসবের ভূমিকাও কম নয়। পরবর্তী সময়ে কিছু কিছু বিধান বাতিল করেও দেওয়া হয়েছে, যা কোনোভাবেই কাম্য ছিল না। সিইসি নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ-প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করা এবং যোগ্য ব্যক্তি নিয়োগের যে পরামর্শ দিয়েছেন, তার সঙ্গেও দ্বিমত করার কিছু নেই। কথা হলো, সেটি কীভাবে সম্ভব? সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি সিইসি ও অন্যান্য কমিশনারকে নিয়োগ দিয়ে থাকেন। কিন্তু সংসদীয় ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির কোনো ক্ষমতা নেই। প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও সম্পৃক্ত করা যায় কি না, নীতিনির্ধারকেরা তা ভেবে দেখতে পারেন। এমন একটি ব্যবস্থা করা প্রয়োজন, যাতে নির্বাচন কমিশনসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাধীন ও স্বতন্ত্র সত্তা বজায় রেখে কাজ করতে পারে। কারও দয়া বা খেয়াল-খুশির ওপর তাদের নির্ভর করতে না হয়।
যেই প্রতিষ্ঠান আইনের অধীনে থাকার কথা, সেই প্রতিষ্ঠানকে সরকার তথা ক্ষমতাসীনদের অধীনে নেওয়ার চেষ্টা করা উচিত নয়, যদিও নিকট অতীতে এর একাধিক নজির রয়েছে। যখন যে দল ক্ষমতায় ছিল, তখনই তারা নির্বাচন কমিশনসহ সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে করায়ত্ত করতে সচেষ্ট হয়েছে। যে কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা চালু করেও নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করা সম্ভব হয়নি। এ প্রেক্ষাপটে ‘বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ২০০৬-০৯: ব্যর্থতা থেকে সাফল্যে উত্তরণ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি সমস্যা সমাধানে কোনো পথ বাতলাতে পারবে কি না, তা এখনই বলা কঠিন। তবে গত সোমবারের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ টি এম শামসুল হুদা নির্বাচন কমিশন নিয়োগ সম্পর্কে যেসব কথা বলেছেন, তা আলোচনার দাবি রাখে। তিনি বলেছেন, ‘কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতার মানদণ্ড থাকা প্রয়োজন। অযোগ্য লোকদের নির্বাচন কমিশনার বানালে কমিশন স্বাধীন হলেও কোনো লাভ হবে না।’
এ সমস্যাটি যে শুধু নির্বাচন কমিশনে রয়েছে, তা নয়। আমাদের অধিকাংশ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান অযোগ্যতা ও দলীয়করণে ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হয়েছে। অবিলম্বে এর প্রতিবিধান করা না গেলে কোনো প্রতিষ্ঠানই সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। সিইসি কথায় কথায় নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবিরও বিরোধিতা করেছেন। যেকোনো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে আইনের পাশাপাশি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দল বা পক্ষগুলো বিপরীত অবস্থান নিলে তাঁদের পক্ষে কাজ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত ব্যক্তিদেরও সব রাগ-অনুরাগের ঊর্ধ্বে থাকতে হবে। তাঁরা এমন কোনো কাজ করবেন না যাতে নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হয়। আইন ও বিধিবিধান দ্বারা চালিত হতে না পারলে তাঁদের উচিত হবে, পদ থেকে সরে দাঁড়ানো। যদিও অন্যায় হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে সে ধরনের নজির খুব বেশি নেই।
নির্বাচনী ব্যবস্থাকে যথাসম্ভব ত্রুটিমুক্ত রাখতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যেসব সংস্কার আনা হয়েছিল তা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার ক্ষেত্রেও এসবের ভূমিকাও কম নয়। পরবর্তী সময়ে কিছু কিছু বিধান বাতিল করেও দেওয়া হয়েছে, যা কোনোভাবেই কাম্য ছিল না। সিইসি নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ-প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করা এবং যোগ্য ব্যক্তি নিয়োগের যে পরামর্শ দিয়েছেন, তার সঙ্গেও দ্বিমত করার কিছু নেই। কথা হলো, সেটি কীভাবে সম্ভব? সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি সিইসি ও অন্যান্য কমিশনারকে নিয়োগ দিয়ে থাকেন। কিন্তু সংসদীয় ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির কোনো ক্ষমতা নেই। প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও সম্পৃক্ত করা যায় কি না, নীতিনির্ধারকেরা তা ভেবে দেখতে পারেন। এমন একটি ব্যবস্থা করা প্রয়োজন, যাতে নির্বাচন কমিশনসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাধীন ও স্বতন্ত্র সত্তা বজায় রেখে কাজ করতে পারে। কারও দয়া বা খেয়াল-খুশির ওপর তাদের নির্ভর করতে না হয়।
No comments