মূল রচনা: অসলো বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড-দায়িত্ববোধের স্বীকৃতি
নৈতিকতার সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনায় অসাধারণ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে যেকোনো ব্যবসায়ীর জন্য সর্বোচ্চ সম্মান ‘অসলো বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড’। অথচ এর মনোনয়নের ফরমটি তিনি পূরণই করতে চাননি। পুরস্কারটি তিন বছর ধরে দিয়ে আসছে নরওয়ের অসলোভিত্তিক বিজনেস ফর পিস ফাউন্ডেশন।
ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) এই ফাউন্ডেশনের অন্যতম সহযোগী অংশীদার। নির্ধারিত ফরমটি পূরণ করতে লতিফুর রহমানের কাছে পাঠিয়েছিলেন আইসিসির বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান। টেবিলের এক কোণে ফরমটি ফেলে রেখেছিলেন। তারপর একদিন ভুলেই গেলেন।
তাগাদা দিয়েছিলেন মাহবুবুর রহমান। তা-ও শেষ দিনে। তখনো ফরমটি পূরণ করেননি। পরে একরকম জোর করেই ফরমটি পূরণ করান মাহবুবুর রহমান। ফরমটি জমা দিয়ে আবার তিনি ভুলে গেলেন। তারপর একদিন ফোন করলেন মাহবুবুর রহমান। দিলেন সুসংবাদটি। পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়ে তবেই লতিফুর রহমান ওয়েবসাইটে গিয়ে জানলেন অসলো বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়াডের্র আদ্যোপান্ত।
এর আগে বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন ভারতের টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান রতন টাটা, মালয়েশিয়ার ওয়াইটিএল করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফ্রান্সিস ইয়োহ্, যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল ইলেকট্রিকের চেয়ারম্যান ও সিইও জেফরি আর ইমেল্ট, সুইডেনের আইকেইএর প্রধান নির্বাহী এন্ডার্স ডালভিগ, বিশ্বের সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনকৌশল তৈরির প্রতিষ্ঠান চীনের সানটেক পাওয়ারের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী জেনগ্রং শি। এবার বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ডের জন্য বিশ্বের ৬০টি দেশের ৯০ জন্য প্রার্থী ছিলেন, যাঁদের মধ্য থেকে লতিফুর রহমানসহ ছয়জনকে সম্মাননা দেওয়া হয়। এই পুরস্কারের জুরি বোর্ডে থাকেন অর্থনীতি ও শান্তিতে নোবেল বিজয়ীরা।
২০০৭ সালে নরওয়ের অসলোতে বিজনেস ফর পিস ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। এই প্রতিষ্ঠান বিশ্বাস করে, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও নৈতিকতার উদ্যোগ শুধু নিজের কাজ জাহির করার জন্য হতে পারে না, ব্যবসার ক্ষেত্রেও এটা থাকতে হবে, যা ক্রমাগতভাবে করপোরেশনের নৈতিক অভ্যাসের সংস্কৃতিতে পরিণত হবে এবং আধুনিক ব্যবসার একটা অপরিহার্য অংশ হিসেবে আইনে পরিণত হবে।
গত ৭ মে অসলোর সিটি হলে এক অনুষ্ঠানে লতিফুর রহমানসহ ছয় বিজয়ীর হাতে পুরস্কার তুলেদেন বিজনেস ফর পিস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান পার এল. সাকসেগার্ড। এই সিটি হলেই বসে নোবেল পুরস্কারের আসর।
কেন লতিফুর রহমানকে এই পুরস্কার? মূল্যায়নে পুরস্কার কমিটি বলেছে, ‘দেশের শীর্ষস্থানীয় করপোরেট প্রতিষ্ঠান ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) লতিফুর রহমান। ব্যবসায় দায়িত্বশীলতা ও নৈতিকতার জন্য ট্রান্সকম গ্রুপ এই অঞ্চলে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে অনুসরণীয় করপোরেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে অবস্থান করে নিয়েছে। যেসব করপোরেট প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সরকারকে সর্বোচ্চ পরিমাণে কর, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও আমদানি শুল্ক দিচ্ছে, তাদের মধ্যে ট্রান্সকম গ্রুপ অন্যতম। পাশাপাশি এই গ্রুপের রয়েছে পরিচ্ছন্ন ব্যাংকিং লেনদেনের দৃষ্টান্ত। শ্রম মানদণ্ড ও শিল্প আইন মেনে চলার ক্ষেত্রেও ট্রান্সকম গ্রুপের দারুণ সুনাম।
‘এই অঞ্চলে ব্যবসার ক্ষেত্রে লতিফুর রহমানের নেতৃত্ব এবং তাঁর সততা, নৈতিক দৃঢ়তা ও বিচক্ষণতা অনুসরণযোগ্য। তিনি মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। সব মিলিয়ে সাতবার এই পদে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।’
পুরস্কার নিয়ে লতিফুর রহমান বলেছিলেন, ‘নরওয়েসহ অনেক উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য কল্যাণমূলক সুযোগ-সুবিধা নেই। সে জন্য আমি বিশ্বাস করি, কল্যাণের বিষয়টি মনে রেখেই নিয়োগকর্তা বা মালিকদের শিল্প ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ও বিকশিত করা উচিত। লতিফুর রহমান আরও বলেছিলেন, ‘প্রত্যেক মা-বাবাই তাঁদের সন্তানদের সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধ মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সে জন্য আমি বিশ্বাস করি, যতক্ষণ কেউ মূল্যবোধ পালনের বিষয়ে সতর্ক থাকেন ও তা চর্চা করে চলেন, ততক্ষণ পর্যন্ত সামাজিক দায়িত্বশীলতা ও নৈতিকতার সঙ্গে ব্যবসা করে যাওয়াটা তাঁর দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অংশ হয়ে থাকবে।’
তাঁর কাছে সর্বশেষ প্রশ্নটি ছিল, পুরস্কার পাওয়ার পর দেশের মানুষের প্রতি তাঁর পরামর্শ কী। প্রশ্নটির উত্তর সরাসরি তিনি দিতে চাইলেন না। বললেন, ‘অনেক ভারী ভারী কথায় আমার বিশ্বাস নেই। আমি মহান কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে ব্যবসা করছি এটা আমি বলব না। বরং বলি যে, আমি ব্যবসা করছি আমার নিজের জন্য। কিন্তু সেটি করছি নীতি ও নৈতিকতা মেনে। আর এর মাধ্যমে সমাজ বা দেশের যদি কোনো উপকার হয় তাহলে সেটিই বড় অর্জন। ’
তাগাদা দিয়েছিলেন মাহবুবুর রহমান। তা-ও শেষ দিনে। তখনো ফরমটি পূরণ করেননি। পরে একরকম জোর করেই ফরমটি পূরণ করান মাহবুবুর রহমান। ফরমটি জমা দিয়ে আবার তিনি ভুলে গেলেন। তারপর একদিন ফোন করলেন মাহবুবুর রহমান। দিলেন সুসংবাদটি। পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়ে তবেই লতিফুর রহমান ওয়েবসাইটে গিয়ে জানলেন অসলো বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়াডের্র আদ্যোপান্ত।
এর আগে বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন ভারতের টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান রতন টাটা, মালয়েশিয়ার ওয়াইটিএল করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফ্রান্সিস ইয়োহ্, যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল ইলেকট্রিকের চেয়ারম্যান ও সিইও জেফরি আর ইমেল্ট, সুইডেনের আইকেইএর প্রধান নির্বাহী এন্ডার্স ডালভিগ, বিশ্বের সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনকৌশল তৈরির প্রতিষ্ঠান চীনের সানটেক পাওয়ারের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী জেনগ্রং শি। এবার বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ডের জন্য বিশ্বের ৬০টি দেশের ৯০ জন্য প্রার্থী ছিলেন, যাঁদের মধ্য থেকে লতিফুর রহমানসহ ছয়জনকে সম্মাননা দেওয়া হয়। এই পুরস্কারের জুরি বোর্ডে থাকেন অর্থনীতি ও শান্তিতে নোবেল বিজয়ীরা।
২০০৭ সালে নরওয়ের অসলোতে বিজনেস ফর পিস ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। এই প্রতিষ্ঠান বিশ্বাস করে, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও নৈতিকতার উদ্যোগ শুধু নিজের কাজ জাহির করার জন্য হতে পারে না, ব্যবসার ক্ষেত্রেও এটা থাকতে হবে, যা ক্রমাগতভাবে করপোরেশনের নৈতিক অভ্যাসের সংস্কৃতিতে পরিণত হবে এবং আধুনিক ব্যবসার একটা অপরিহার্য অংশ হিসেবে আইনে পরিণত হবে।
গত ৭ মে অসলোর সিটি হলে এক অনুষ্ঠানে লতিফুর রহমানসহ ছয় বিজয়ীর হাতে পুরস্কার তুলেদেন বিজনেস ফর পিস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান পার এল. সাকসেগার্ড। এই সিটি হলেই বসে নোবেল পুরস্কারের আসর।
কেন লতিফুর রহমানকে এই পুরস্কার? মূল্যায়নে পুরস্কার কমিটি বলেছে, ‘দেশের শীর্ষস্থানীয় করপোরেট প্রতিষ্ঠান ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) লতিফুর রহমান। ব্যবসায় দায়িত্বশীলতা ও নৈতিকতার জন্য ট্রান্সকম গ্রুপ এই অঞ্চলে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে অনুসরণীয় করপোরেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে অবস্থান করে নিয়েছে। যেসব করপোরেট প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সরকারকে সর্বোচ্চ পরিমাণে কর, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও আমদানি শুল্ক দিচ্ছে, তাদের মধ্যে ট্রান্সকম গ্রুপ অন্যতম। পাশাপাশি এই গ্রুপের রয়েছে পরিচ্ছন্ন ব্যাংকিং লেনদেনের দৃষ্টান্ত। শ্রম মানদণ্ড ও শিল্প আইন মেনে চলার ক্ষেত্রেও ট্রান্সকম গ্রুপের দারুণ সুনাম।
‘এই অঞ্চলে ব্যবসার ক্ষেত্রে লতিফুর রহমানের নেতৃত্ব এবং তাঁর সততা, নৈতিক দৃঢ়তা ও বিচক্ষণতা অনুসরণযোগ্য। তিনি মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। সব মিলিয়ে সাতবার এই পদে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।’
পুরস্কার নিয়ে লতিফুর রহমান বলেছিলেন, ‘নরওয়েসহ অনেক উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য কল্যাণমূলক সুযোগ-সুবিধা নেই। সে জন্য আমি বিশ্বাস করি, কল্যাণের বিষয়টি মনে রেখেই নিয়োগকর্তা বা মালিকদের শিল্প ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ও বিকশিত করা উচিত। লতিফুর রহমান আরও বলেছিলেন, ‘প্রত্যেক মা-বাবাই তাঁদের সন্তানদের সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধ মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সে জন্য আমি বিশ্বাস করি, যতক্ষণ কেউ মূল্যবোধ পালনের বিষয়ে সতর্ক থাকেন ও তা চর্চা করে চলেন, ততক্ষণ পর্যন্ত সামাজিক দায়িত্বশীলতা ও নৈতিকতার সঙ্গে ব্যবসা করে যাওয়াটা তাঁর দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অংশ হয়ে থাকবে।’
তাঁর কাছে সর্বশেষ প্রশ্নটি ছিল, পুরস্কার পাওয়ার পর দেশের মানুষের প্রতি তাঁর পরামর্শ কী। প্রশ্নটির উত্তর সরাসরি তিনি দিতে চাইলেন না। বললেন, ‘অনেক ভারী ভারী কথায় আমার বিশ্বাস নেই। আমি মহান কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে ব্যবসা করছি এটা আমি বলব না। বরং বলি যে, আমি ব্যবসা করছি আমার নিজের জন্য। কিন্তু সেটি করছি নীতি ও নৈতিকতা মেনে। আর এর মাধ্যমে সমাজ বা দেশের যদি কোনো উপকার হয় তাহলে সেটিই বড় অর্জন। ’
No comments