সরকার পাত্তা দিচ্ছে না বিরোধী দলের হুমকি by পাভেল হায়দার চৌধুরী
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে বিরোধী দলের দেওয়া আলটিমেটামকে পাত্তা দিচ্ছে না সরকার। বিরোধী দল বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করলে সরকারও তা মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে রাখবে। ক্ষমতাসীনরা মনে করছে,
রাজনৈতিক ইস্যুতে সরকারের কৌশলের কাছে ধরাশায়ী প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। এর সঙ্গে একমত পোষণ করেন বিশিষ্টজনদের কেউ কেউ। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি পুনর্বহালের দাবি মেনে নিতে সরকারকে ১০ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে বিরোধী দল।
আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, বিএনপির কর্মসূচিকে পাত্তা দিচ্ছে না সরকারি দল। সর্বশেষ গণ-অনশন কর্মসূচিও সফল হয়নি বলে দাবি করছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিএনপির গণ-অনশনে কী দাবি ছিল, তা স্পষ্ট করেনি দলটি। একসঙ্গে এত দাবি নিয়ে কোনো কর্মসূচিই হয় না। গণ-অনশনে ভোজের ছড়াছড়ি ছিল। এ নিয়ে জনগণ হাসাহাসি করেছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আওয়ামী লীগ চাপে থাকে সবসময়। আবার উতরেও যায়। সরকারের শুরু থেকেই ষড়যন্ত্রকারীরা চাপে ফেলতে চেষ্টা করেছে। আমরা তা ফেইস করেই এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা ধরে নিয়েছি এর ভেতর দিয়েই এগোতে হবে।' ১০ জুনের আল্টিমেটাম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সময়ই বলে দেবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং সামপ্রতিক সময়ে গুম, হত্যা ও অস্বাভাবিক মৃত্যুর দায় সরকারের হলেও বিরোধী দল এসব ইস্যুতে কোনোভাবেই ক্ষমতাসীনদের টলাতে পারেনি।
ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবিলায় আপাতত নিজেদের শতভাগ চাপহীন মনে করছে আওয়ামী লীগ। বিরোধী দলের নেতাদের নামে মামলা দিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে উল্টো বিএনপিকে চাপে রাখা হয়েছে। বিরোধী দলের দৈন্যদশায় উপায় খুঁজে ঠিকই উতরে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের ওই নেতারা জানান, বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দিতে সংলাপে বসার জন্য বিদেশিদের চাপ সরকার সামাল দিয়ে যাচ্ছে সুকৌশলে। কৌশলের অংশ হিসেবেই সংলাপে বসার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সংলাপ হতে হবে শর্তহীন। অন্যদিকে মামলা দিয়ে সরকার খুব কৌশলে প্রশাসনকে ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। আর আইনগত নিয়মের কথা বলে গায়ে কোনো কালিমাও লেপন হচ্ছে না ক্ষমতাসীনদের। অন্যদিকে বিএনপি জোটের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গাড়ি পোড়ানোর মামলায় কারাগারে পাঠানে হলেও একদিন হরতাল দিয়েই ক্ষান্ত তারা।
একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জনজীবনের বিভিন্ন সমস্যা চরম আকার ধারণ করলেও তা নিয়ে বিএনপি কোনো বড় আন্দোলন গড়ে তুলতে ব্যর্থ হওয়ায় উতরে যাচ্ছে সরকার। আইনশৃঙ্খলার অবনতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, পানি বিদ্যুৎ সংকটসহ নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত সাধারণ মানুষ। এসব কারণে সরকারের প্রতি তারা বিরূপ। কিন্তু সেদিকে নজর দিচ্ছে না বিরোধী দল। দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়াকে কেন্দ্র করে হরতালসহ কিছু কর্মসূচি দিলেও তাতে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে পারেনি বিএনপি।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, বিরোধী দল যখন আন্দোলন করে তখন স্বাভাবিকভাবেই চাপে থাকে সরকার। তবে এই চাপ থেকে উতরে যেতে সরকার যা যা করছে তা আইনগত নিয়ম মেনে করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সাময়িকভাবে চাপ উতরে গেলেও বিরোধী দল সরকারের উপর চাপ বাড়াতে চেষ্টা করছে। সরকারও একইভাবে মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে।
« পূর্ববর্তী সংবাদ
পরবর্তী সংবাদ »
এই প্রতিবেদন সম্পর্কে আপনার মতামত দিতে এখা
আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, বিএনপির কর্মসূচিকে পাত্তা দিচ্ছে না সরকারি দল। সর্বশেষ গণ-অনশন কর্মসূচিও সফল হয়নি বলে দাবি করছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিএনপির গণ-অনশনে কী দাবি ছিল, তা স্পষ্ট করেনি দলটি। একসঙ্গে এত দাবি নিয়ে কোনো কর্মসূচিই হয় না। গণ-অনশনে ভোজের ছড়াছড়ি ছিল। এ নিয়ে জনগণ হাসাহাসি করেছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আওয়ামী লীগ চাপে থাকে সবসময়। আবার উতরেও যায়। সরকারের শুরু থেকেই ষড়যন্ত্রকারীরা চাপে ফেলতে চেষ্টা করেছে। আমরা তা ফেইস করেই এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা ধরে নিয়েছি এর ভেতর দিয়েই এগোতে হবে।' ১০ জুনের আল্টিমেটাম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সময়ই বলে দেবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং সামপ্রতিক সময়ে গুম, হত্যা ও অস্বাভাবিক মৃত্যুর দায় সরকারের হলেও বিরোধী দল এসব ইস্যুতে কোনোভাবেই ক্ষমতাসীনদের টলাতে পারেনি।
ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবিলায় আপাতত নিজেদের শতভাগ চাপহীন মনে করছে আওয়ামী লীগ। বিরোধী দলের নেতাদের নামে মামলা দিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে উল্টো বিএনপিকে চাপে রাখা হয়েছে। বিরোধী দলের দৈন্যদশায় উপায় খুঁজে ঠিকই উতরে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের ওই নেতারা জানান, বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দিতে সংলাপে বসার জন্য বিদেশিদের চাপ সরকার সামাল দিয়ে যাচ্ছে সুকৌশলে। কৌশলের অংশ হিসেবেই সংলাপে বসার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সংলাপ হতে হবে শর্তহীন। অন্যদিকে মামলা দিয়ে সরকার খুব কৌশলে প্রশাসনকে ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। আর আইনগত নিয়মের কথা বলে গায়ে কোনো কালিমাও লেপন হচ্ছে না ক্ষমতাসীনদের। অন্যদিকে বিএনপি জোটের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গাড়ি পোড়ানোর মামলায় কারাগারে পাঠানে হলেও একদিন হরতাল দিয়েই ক্ষান্ত তারা।
একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জনজীবনের বিভিন্ন সমস্যা চরম আকার ধারণ করলেও তা নিয়ে বিএনপি কোনো বড় আন্দোলন গড়ে তুলতে ব্যর্থ হওয়ায় উতরে যাচ্ছে সরকার। আইনশৃঙ্খলার অবনতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, পানি বিদ্যুৎ সংকটসহ নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত সাধারণ মানুষ। এসব কারণে সরকারের প্রতি তারা বিরূপ। কিন্তু সেদিকে নজর দিচ্ছে না বিরোধী দল। দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়াকে কেন্দ্র করে হরতালসহ কিছু কর্মসূচি দিলেও তাতে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে পারেনি বিএনপি।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, বিরোধী দল যখন আন্দোলন করে তখন স্বাভাবিকভাবেই চাপে থাকে সরকার। তবে এই চাপ থেকে উতরে যেতে সরকার যা যা করছে তা আইনগত নিয়ম মেনে করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সাময়িকভাবে চাপ উতরে গেলেও বিরোধী দল সরকারের উপর চাপ বাড়াতে চেষ্টা করছে। সরকারও একইভাবে মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে।
« পূর্ববর্তী সংবাদ
পরবর্তী সংবাদ »
এই প্রতিবেদন সম্পর্কে আপনার মতামত দিতে এখা
No comments