এমপিদের অভব্যতা নিয়ে স্পিকারের রুলিং - এ লজ্জা রাখব কোথায়
জাতীয় সংসদে অসংসদীয় ভাষা ব্যবহারের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়ে স্পিকার আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেট বৃহস্পতিবার যে রুলিং দিয়েছেন তার প্রশংসা করেছেন সরকার ও বিরোধীদলীয় সিনিয়র সংসদ সদস্যরা। তবে স্পিকারের রুলিংয়ের প্রশংসা করে বক্তব্য রাখার সময় কোনো সংসদ সদস্যের কথা ও ভঙ্গিতে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জার লক্ষণ দেখা যায়নি।
বুধবার জাতীয় সংসদের অধিবেশন চলাকালে কুিসত বাচনভঙ্গি ও পেশি আস্ফাালনের সমন্বয়ে সরকার ও বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা যে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিলেন তাতে বুর্জোয়া পার্লামেন্টকে বিশেষ একটি প্রাণীর খোঁয়াড়ের সঙ্গে তুলনা করে লেনিনের সেই বহুল আলোচিত উক্তিটি অনেকের মনে পড়ে যাওয়ার কথা। সেদিনের সেই লঙ্কাকাণ্ডের পর স্পিকারের কঠোর অবস্থান গ্রহণ অপরিহার্য হয়ে উঠেছিল। প্রদত্ত রুলিংয়ে তিনি বলেছেন, অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার করা মাত্র মাইক বন্ধ করে দেয়া হবে। শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্য থেকে বিরত থাকতে সরকার ও বিরোধীদলীয় সদস্যদের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেছেন, আল্লাহরওয়াস্তে এমন আচরণ করবেন যাতে সংসদ কার্যকর হয়, আমাদের মর্যাদা অক্ষুণ্ন থাকে। লাখ লাখ ভোটার আমাদের ভোট দিয়েছেন। তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা যাতে পূরণ হয় তেমন আচরণ আশা করি। সংসদের শৃঙ্খলা ও সৌন্দর্য রক্ষার জন্য যা যা করা দরকার তাই করা হবে উল্লেখ করে স্পিকার বলেছেন, ‘ফাইটিং ও রেসলিং করতে চাইলে পল্টন ময়দানে কিংবা সংসদের মাঠে যান। শরীরে তেল মেখে, আন্ডারওয়ার পরে সেখানে ফাইটিংয়ে নামতে পারেন।’ বুধবার সংসদে সৃষ্ট মারমুখী পরিস্থিতিকে জাতির জন্য দুঃখজনক ও লজ্জাজনক আখ্যা দিয়ে তিনি বলেছেন, সরকার ও বিরোধী দল পরস্পরের সমালোচনা করতেই পারে। সেটা হতে হবে শিষ্টাচার বজায় রেখে। তার মোক্ষম কথা ছিল, ‘ভাষা প্রয়োগেই প্রমাণিত হয় কে কোথা থেকে এসেছেন।’
স্পিকারের রুলিংয়ের পর সরকার ও বিরোধীদলীয় এমপিরা যেভাবে সংসদে বক্তব্য রাখলেন তাতে তাদের সবাইকে সভ্য-ভব্য মনে হয়েছে; কাউকে কুস্তিগীর মনে হয়নি। এতে আমরা ধরে নিতে পারি, ঠেকায় পড়লে আমাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাও ভদ্র সাজতে জানেন। কিন্তু উভয়পক্ষ এখন থেকে ভদ্রতা বজায় রেখে চলার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা কতদিন রক্ষা করা হবে অথবা আদৌ মানা হবে কিনা সে ব্যাপারে জনগণের মনে সংশয় জাগা স্বাভাবিক। স্পিকার আবদুল হামিদ সাহেব এর আগেও একবার সংসদ সদস্যদের যথাসময়ে অধিবেশনে না আসা এবং সে কারণে কোরাম সঙ্কট দেখা দেয়া নিয়ে কঠোর কিন্তু যুক্তিসঙ্গত মন্তব্য করেছিলেন। তার জন্য তাকে সংসদের ফ্লোরে দাঁড়িয়ে যেভাবে গালমন্দ করা হয়েছে সেটা অবিশ্বাস্য বললেও কম বলা হয়। তার কোনো বিহিত আজ পর্যন্ত হয়নি। স্পিকারকে কিল খেয়ে কিল হজম করতে হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শহীদ জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাজনীতির দুই প্রধান ধারার প্রাণপুরুষ। তাদের যে কোনো একজনকে অথবা উভয়কে অসম্মান করা হলে এদেশের কয়েক কোটি মানুষ আহত বোধ করেন। এই সহজ কথাটা ভুলে গিয়ে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা যখন আমাদের দুই প্রধান নেতাকে নিয়ে (যাদের দু’জনই প্রয়াত) খোঁচাখুঁচি করেন, তখন তারা শুধু নিজেদের পায়েই কুড়াল মারেন না, সে কুড়ালের আঘাত লাগে গণতন্ত্রের শরীরেও। দেশ আজ বহুমুখী সমস্যায় জর্জরিত। সেসব সমস্যা নিয়ে বিশ্লেষণমূলক বিতর্কের মধ্য দিয়ে সমাধানের পথ খোঁজার পরিবর্তে স্পিকারকে সংসদ সদস্যদের কঠোর ভাষায় ভদ্রতা শেখাতে হচ্ছে। পদত্যাগের হুমকি দিতে হচ্ছে। এ লজ্জা আমরা রাখব কোথায়!
স্পিকারের রুলিংয়ের পর সরকার ও বিরোধীদলীয় এমপিরা যেভাবে সংসদে বক্তব্য রাখলেন তাতে তাদের সবাইকে সভ্য-ভব্য মনে হয়েছে; কাউকে কুস্তিগীর মনে হয়নি। এতে আমরা ধরে নিতে পারি, ঠেকায় পড়লে আমাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাও ভদ্র সাজতে জানেন। কিন্তু উভয়পক্ষ এখন থেকে ভদ্রতা বজায় রেখে চলার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা কতদিন রক্ষা করা হবে অথবা আদৌ মানা হবে কিনা সে ব্যাপারে জনগণের মনে সংশয় জাগা স্বাভাবিক। স্পিকার আবদুল হামিদ সাহেব এর আগেও একবার সংসদ সদস্যদের যথাসময়ে অধিবেশনে না আসা এবং সে কারণে কোরাম সঙ্কট দেখা দেয়া নিয়ে কঠোর কিন্তু যুক্তিসঙ্গত মন্তব্য করেছিলেন। তার জন্য তাকে সংসদের ফ্লোরে দাঁড়িয়ে যেভাবে গালমন্দ করা হয়েছে সেটা অবিশ্বাস্য বললেও কম বলা হয়। তার কোনো বিহিত আজ পর্যন্ত হয়নি। স্পিকারকে কিল খেয়ে কিল হজম করতে হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শহীদ জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাজনীতির দুই প্রধান ধারার প্রাণপুরুষ। তাদের যে কোনো একজনকে অথবা উভয়কে অসম্মান করা হলে এদেশের কয়েক কোটি মানুষ আহত বোধ করেন। এই সহজ কথাটা ভুলে গিয়ে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা যখন আমাদের দুই প্রধান নেতাকে নিয়ে (যাদের দু’জনই প্রয়াত) খোঁচাখুঁচি করেন, তখন তারা শুধু নিজেদের পায়েই কুড়াল মারেন না, সে কুড়ালের আঘাত লাগে গণতন্ত্রের শরীরেও। দেশ আজ বহুমুখী সমস্যায় জর্জরিত। সেসব সমস্যা নিয়ে বিশ্লেষণমূলক বিতর্কের মধ্য দিয়ে সমাধানের পথ খোঁজার পরিবর্তে স্পিকারকে সংসদ সদস্যদের কঠোর ভাষায় ভদ্রতা শেখাতে হচ্ছে। পদত্যাগের হুমকি দিতে হচ্ছে। এ লজ্জা আমরা রাখব কোথায়!
No comments