বিশ্বভারতীতে সম্মাননা-সন্জীদার হাতে দেশিকোত্তম by অমর সাহা
শুক্রবার সকাল সাতটা। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত শান্তিনিকেতনের ঐতিহাসিক আম্রকুঞ্জ। সেখানে তখন গুঞ্জিত হচ্ছিল রবীন্দ্রসংগীতের সুরের মূর্ছনা। এদিন ছিল কবিগুরুর গড়া বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উৎসব। প্রতিবছরের মতো এবারও এই উৎসবের আয়োজন করা হয় আম্রকুঞ্জে।
এখানে স্থাপিত একটি স্থায়ী বেদিতে সূচনা হয় এই উৎসবের। এই উৎসবেই এবার বিশ্বভারতীর সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘দেশিকোত্তম’ দেওয়া হয় পাঁচ বিশিষ্টজনকে (২০০৭ থেকে ২০১১ সালের প্রাপকদের)। এঁদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত বিশেষজ্ঞ সন্জীদা খাতুন।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সুশান্ত দত্তগুপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর (প্রধান) ও পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন, সমাবর্তন উৎসবের প্রধান অতিথি নাট্যব্যক্তিত্ব সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং দেশিকোত্তম সম্মাননা পাওয়া অতিথি বাংলাদেশের প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সন্জীদা খাতুন, ভারতের প্রখ্যাত কৃষিবিজ্ঞানী অধ্যাপক এম এস স্বামীনাথন ও প্রখ্যাত চিত্রকর গণেশ পাইনকে নিয়ে মঞ্চে আসেন। এর পরই বেদগান, সংকল্প বচন ও সংগীতের মধ্য দিয়ে সূচনা হয় সমাবর্তন উৎসবের।
এই উৎসবে এবার যে পাঁচজনকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সম্মান দেশিকোত্তম সম্মাননা দেওয়া হয়, তাঁরা হলেন: ভারতের কৃষিবিজ্ঞানী এম এস স্বামীনাথন (২০০৭), বাংলাদেশের রবীন্দ্রসংগীত বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সন্জীদা খাতুন (২০০৮), ভারতের চিত্রকর গণেশ পাইন (২০০৯), ভারতের শাস্ত্রীয় সংগীত বিশেষজ্ঞ পণ্ডিত যশরাজ (২০১০) ও ভারতের নাট্যব্যক্তিত্ব ইব্রাহিম আলকাজি (২০১১)।
সকাল সাড়ে আটটায় সমাবর্তন মঞ্চ থেকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সুশান্ত দত্তগুপ্ত ঘোষণা দেন, ‘এবার দেশিকোত্তম সম্মাননা তুলে দেওয়া হবে বাংলাদেশের রবীন্দ্রসংগীত বিশেষজ্ঞ, যিনি এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন। পিএইচডি করেছেন। বাংলাদেশে রবীন্দ্রসংগীতকে সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সংগ্রাম করেছেন, সেই রবীন্দ্রসংগীত বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সন্জীদা খাতুনকে।’ উপাচার্য সন্জীদা খাতুনের সংক্ষিপ্ত জীবনীও তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন, ‘সন্জীদা খাতুন এক কিংবদন্তি রবীন্দ্রসংগীতজ্ঞের নাম। রবীন্দ্রসংগীতের জন্য তিনি স্বাধীনতা-পূর্বকালীন বাংলাদেশে দীর্ঘদিন সংগ্রাম করেছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের ‘রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার’ পেয়েছেন। পেয়েছেন কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ‘রবীন্দ্র রত্নাচার্য’ উপাধি। পেয়েছেন বাংলাদেশে একুশে পদক। বাংলা একাডেমীর সাহিত্য পুরস্কার, বাংলা একাডেমীর রবীন্দ্র পুরস্কারসহ আরও অনেক পুরস্কার।
এই ঘোষণার পরই লাল পাড়ের গরদের শাড়ি পরিহিত অধ্যাপিকা সন্জীদা খাতুন মঞ্চে উঠে দাঁড়ান। সমবেত সুধীজন আর হাজারো ছাত্রছাত্রী তাঁকে অভিনন্দন জানান। এ সময় উপাচার্য তাঁর কপালে পরিয়ে দেন চন্দনের একটি ফোঁটা। তারপর রাজ্যপাল সন্জীদা খাতুনের গলায় পরিয়ে দেন ফুলের মালা। এরপর উত্তরীয়। এর পরই রাজ্যপাল তাঁর হাতে একটি থালায় করে তুলে দেন দেশিকোত্তম সম্মাননা। এর সঙ্গে কবিগুরুর পছন্দের সেই ছাতিমগাছের পাতা। সন্জীদা খাতুন আবেগে আপ্লুত হয়ে যান। এই সম্মাননা গ্রহণের পর রাজ্যপাল ও সন্জীদা খাতুন পরস্পর শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তারপর সন্জীদা খাতুন বসেন তাঁর নির্দিষ্ট আসনে।
দেশিকোত্তম সম্মাননা পাওয়ায় আবেগাপ্লুত সন্জীদা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এর চেয়ে আমার আর বেশি পাওয়ার কী আছে? আমি দারুণ আনন্দিত, গর্বিত। কবিগুরুর স্মৃতিধন্য এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমি এমএ পাস করেছি। পিএইচডি করেছি। আমার এই অর্জন তো আমার জীবনভর সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা আন্দোলনেরই ফসল। এই ফসল তো আমার বাংলাদেশের। এই গর্ব তো আমার বাংলাদেশের। আজ আমি গর্বিত, রবীন্দ্রসংগীত আজ সমস্ত বাঁধন ছিন্ন করে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।’
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ চার বছর পর এবার অনুষ্ঠিত হয়েছে এই সমাবর্তন উৎসব। সর্বশেষ সমাবর্তন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর। সেবার উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। কিন্তু এবার ব্যস্ততার কারণে তিনি উপস্থিত হতে পারেননি।
তবে এবার এই দেশিকোত্তম সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি পণ্ডিত যশরাজ ও নাট্য পরিচালক ইব্রাহিম আলকাজি। শারীরিক অসুস্থ্যতার কারণে আসতে পারেননি পণ্ডিত যশরাজ। তাঁর হয়ে দেশিকোত্তম গ্রহণ করেছেন তাঁর মেয়ে দুর্গা যশরাজ। আর ইব্রাহিম আলকাজি আসতে পারেননি জরুরি কাজে আটকে পড়ার কারণে।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সুশান্ত দত্তগুপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর (প্রধান) ও পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন, সমাবর্তন উৎসবের প্রধান অতিথি নাট্যব্যক্তিত্ব সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং দেশিকোত্তম সম্মাননা পাওয়া অতিথি বাংলাদেশের প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সন্জীদা খাতুন, ভারতের প্রখ্যাত কৃষিবিজ্ঞানী অধ্যাপক এম এস স্বামীনাথন ও প্রখ্যাত চিত্রকর গণেশ পাইনকে নিয়ে মঞ্চে আসেন। এর পরই বেদগান, সংকল্প বচন ও সংগীতের মধ্য দিয়ে সূচনা হয় সমাবর্তন উৎসবের।
এই উৎসবে এবার যে পাঁচজনকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সম্মান দেশিকোত্তম সম্মাননা দেওয়া হয়, তাঁরা হলেন: ভারতের কৃষিবিজ্ঞানী এম এস স্বামীনাথন (২০০৭), বাংলাদেশের রবীন্দ্রসংগীত বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সন্জীদা খাতুন (২০০৮), ভারতের চিত্রকর গণেশ পাইন (২০০৯), ভারতের শাস্ত্রীয় সংগীত বিশেষজ্ঞ পণ্ডিত যশরাজ (২০১০) ও ভারতের নাট্যব্যক্তিত্ব ইব্রাহিম আলকাজি (২০১১)।
সকাল সাড়ে আটটায় সমাবর্তন মঞ্চ থেকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সুশান্ত দত্তগুপ্ত ঘোষণা দেন, ‘এবার দেশিকোত্তম সম্মাননা তুলে দেওয়া হবে বাংলাদেশের রবীন্দ্রসংগীত বিশেষজ্ঞ, যিনি এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন। পিএইচডি করেছেন। বাংলাদেশে রবীন্দ্রসংগীতকে সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সংগ্রাম করেছেন, সেই রবীন্দ্রসংগীত বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সন্জীদা খাতুনকে।’ উপাচার্য সন্জীদা খাতুনের সংক্ষিপ্ত জীবনীও তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন, ‘সন্জীদা খাতুন এক কিংবদন্তি রবীন্দ্রসংগীতজ্ঞের নাম। রবীন্দ্রসংগীতের জন্য তিনি স্বাধীনতা-পূর্বকালীন বাংলাদেশে দীর্ঘদিন সংগ্রাম করেছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের ‘রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার’ পেয়েছেন। পেয়েছেন কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ‘রবীন্দ্র রত্নাচার্য’ উপাধি। পেয়েছেন বাংলাদেশে একুশে পদক। বাংলা একাডেমীর সাহিত্য পুরস্কার, বাংলা একাডেমীর রবীন্দ্র পুরস্কারসহ আরও অনেক পুরস্কার।
এই ঘোষণার পরই লাল পাড়ের গরদের শাড়ি পরিহিত অধ্যাপিকা সন্জীদা খাতুন মঞ্চে উঠে দাঁড়ান। সমবেত সুধীজন আর হাজারো ছাত্রছাত্রী তাঁকে অভিনন্দন জানান। এ সময় উপাচার্য তাঁর কপালে পরিয়ে দেন চন্দনের একটি ফোঁটা। তারপর রাজ্যপাল সন্জীদা খাতুনের গলায় পরিয়ে দেন ফুলের মালা। এরপর উত্তরীয়। এর পরই রাজ্যপাল তাঁর হাতে একটি থালায় করে তুলে দেন দেশিকোত্তম সম্মাননা। এর সঙ্গে কবিগুরুর পছন্দের সেই ছাতিমগাছের পাতা। সন্জীদা খাতুন আবেগে আপ্লুত হয়ে যান। এই সম্মাননা গ্রহণের পর রাজ্যপাল ও সন্জীদা খাতুন পরস্পর শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তারপর সন্জীদা খাতুন বসেন তাঁর নির্দিষ্ট আসনে।
দেশিকোত্তম সম্মাননা পাওয়ায় আবেগাপ্লুত সন্জীদা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এর চেয়ে আমার আর বেশি পাওয়ার কী আছে? আমি দারুণ আনন্দিত, গর্বিত। কবিগুরুর স্মৃতিধন্য এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমি এমএ পাস করেছি। পিএইচডি করেছি। আমার এই অর্জন তো আমার জীবনভর সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা আন্দোলনেরই ফসল। এই ফসল তো আমার বাংলাদেশের। এই গর্ব তো আমার বাংলাদেশের। আজ আমি গর্বিত, রবীন্দ্রসংগীত আজ সমস্ত বাঁধন ছিন্ন করে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।’
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ চার বছর পর এবার অনুষ্ঠিত হয়েছে এই সমাবর্তন উৎসব। সর্বশেষ সমাবর্তন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর। সেবার উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। কিন্তু এবার ব্যস্ততার কারণে তিনি উপস্থিত হতে পারেননি।
তবে এবার এই দেশিকোত্তম সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি পণ্ডিত যশরাজ ও নাট্য পরিচালক ইব্রাহিম আলকাজি। শারীরিক অসুস্থ্যতার কারণে আসতে পারেননি পণ্ডিত যশরাজ। তাঁর হয়ে দেশিকোত্তম গ্রহণ করেছেন তাঁর মেয়ে দুর্গা যশরাজ। আর ইব্রাহিম আলকাজি আসতে পারেননি জরুরি কাজে আটকে পড়ার কারণে।
No comments