জ্বালানিগ্যাস আমদানি, সমুদ্রের গ্যাস, নাকি কয়লা by এ কে এম জাকারিয়া

প্রতিবছর গ্যাসের চাহিদা বাড়ছে ১০ শতাংশ হারে। চাহিদা বাড়ার এই হারের সঙ্গে মিলিয়ে উৎপাদন বাড়েনি বলেই গ্যাস নিয়ে আজ অনেকটা হাহাকার অবস্থা চলছে। বাসাবাড়িতে দুপুরে গ্যাস না থাকা এখন স্বাভাবিক ঘটনা। সিএনজি স্টেশন প্রতিদিন বন্ধ রাখতে হচ্ছে চার ঘণ্টা। গ্যাসের নতুন সংযোগ দেওয়া পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।


বিদ্যুৎ উৎপাদনও কমেছে গ্যাসের অভাবে। আমাদের জ্বালানি খাত গ্যাসনির্ভর হওয়ার পরও নতুন গ্যাস খোঁজার কাজে প্রতিবেশী যেকোনো দেশের তুলনায় আমাদের চেষ্টা সবচেয়ে কম। তবে গত এক দশকে স্থলভাগে সবচেয়ে বেশি অনুসন্ধানমূলক সাইসমিক জরিপ হলেও খনন করার মতো ভূগঠন আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। সাধারণভাবে ধারণা করা হয় যে কূপ খনন করা হয়নি, মানে অনুসন্ধান করা হয়নি।
বাংলাদেশে বিদ্যুতের উৎপাদন গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। দেশের বিদ্যুতের ৭০ শতাংশ গ্যাস পুড়িয়ে উৎপাদন করা হয়। কারণ, দামের দিক দিয়ে এটাই সবচেয়ে সাশ্রয়ী। প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে ডিজেল ব্যবহার করলে যেখানে খরচ পড়ে ১২ থেকে ১৫ টাকা আর ফার্নেস অয়েল দিয়ে উৎপাদন করলে নয় টাকা, সেখানে গ্যাস দিয়ে উৎপাদন করলে খরচ পড়ে মাত্র এক টাকা। এ কারণে দেশের বিদ্যুতের উৎপাদন গ্যাসনির্ভর হয়ে পড়েছে। সার উৎপাদন, শিল্পকারখানা ও গৃহস্থালির ব্যবহারেও গ্যাসই ভরসা। অথচ স্থলভাগের বাইরে গ্যাস অনুসন্ধানের কাজটি উপেক্ষিতই থেকে গেল!
সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্রের ওপর ভিত্তি করে চট্টগ্রামে গড়ে ওঠা শিল্পকারখানাগুলো পড়েছে চরম গ্যাস-সংকটে। এ ক্ষেত্রে গ্যাসের মজুদের যে হিসাব দিয়েছিল কেয়ার্ন, তা এখন ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের অনেকে মনে করেন, বেশি মজুদ দেখানোর বিষয়টি ইচ্ছাকৃত। মজুদ বেশি দেখালে বেশি গ্যাস ওঠানো সম্ভব। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিবছর প্রমাণিত মজুদের ৭ শতাংশের বেশি গ্যাস ওঠানো যায় না। মজুদ বেশি দেখালে বেশি গ্যাস ওঠানো যায়। বেশি গ্যাস উঠিয়ে দ্রুত বিনিয়োগ তুলে নেওয়ার কৌশলই এ ক্ষেত্রে কাজ করেছে—এমনটি আমরা ধরে নিতে পারি। এ বছরের নভেম্বরের পর ক্ষেত্র হিসেবে সাঙ্গু আর কিছু দিতে পারবে না। সাঙ্গুর গ্যাসের ওপর নির্ভর করে গড়ে ওঠা শিল্পকারখানাগুলোর তখন কী হবে?
সরকার এ ক্ষেত্রে যে পরিকল্পনা বেছে নিয়েছে, তা হচ্ছে তরল করা গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করে গ্যাসের সরবরাহ। কক্সবাজারের মহেশখালীতে এ জন্য টার্মিনাল তৈরি হবে। যে পরিমাণ তরল গ্যাস আমদানি করা হবে, তাতে এই টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের সরবরাহ করা যাবে। এখন পর্যন্ত সরকারের যে পরিকল্পনা, তাতে ২০১২ সালের মধ্যে এলএনজি আমদানি শুরু করার কথা। মহেশখালী থেকে এই গ্যাস পাইপলাইনে করে চট্টগ্রামে আনতে হবে। প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে এ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত প্রকাশিত হয়েছে। তাঁরা এই সময়ের মধ্যে পাইপলাইন বসানো সম্ভব কি না, সে ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। এলএনজি আমদানি ও তা বিতরণের যে সময়সীমা সরকার নির্ধারণ করেছে, তা আরও পিছিয়ে যাবে বলেই মনে হচ্ছে। এ বছর নভেম্বরের পর চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহে সংকটের যে নতুন মাত্রার সূচনা হবে, তা দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। একসময় এ দেশের গ্যাস রপ্তানি নিয়ে অনেক কথা হয়েছে, এখন দেশটিকে গ্যাস আমদানি করতে হচ্ছে!
জ্বালানির জন্য আমাদের গ্যাস লাগবে এবং আমাদের বর্তমান মজুদ যেহেতু তা পূরণ করতে পারছে না, আমদানি না করে আর উপায় কী? জাপানের নিজস্ব গ্যাস নেই। দেশটি পুরোপুরি আমদানি করা তরল গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। বর্তমান সরকার সাঙ্গুর গ্যাস পুরোপুরি শেষ হয়ে যাওয়ার আগে পরিস্থিতি সামাল দিতে গ্যাস আমদানির উদ্যোগ নিয়ে ভালো কাজ করছে। আরও আগে এই উদ্যোগ নেওয়া গেলে চট্টগ্রাম অঞ্চলের গ্যাসের অভাবের অনিশ্চয়তা এত দিনে অনেকটা কাটত। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী যাতে নির্ধারিত সময়ে বা এর যত কাছাকাছি সময়ে এলএনজি আমদানি ও সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়, সে ব্যাপারে বাড়তি উদ্যোগ নেওয়া এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।
গত ১০ বছরে যে হারে গ্যাসের অনুসন্ধান হওয়া উচিত ছিল, তা হয়নি সত্য। কিন্তু অনুসন্ধান হলেই গ্যাস মিলবে, এমন আশা কতটুকু? বাংলাদেশ গ্যাসের ওপর ভাসছে—এ ধরনের আওয়াজ বাতাসে মিলিয়ে গেছে। ২০০৮ সালের মার্চে তৈরি করা সার্ক আঞ্চলিক জ্বালানি বাণিজ্যসংক্রান্ত (কান্ট্রি রিপোর্ট বাংলাদেশ) সমীক্ষায় তুলে ধরা তথ্য-উপাত্তে খুব আশার কথা পাওয়া যায়নি। রিপোর্টে বাংলাদেশে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনার কথা বলা হলেও বড় আকারের গ্যাসক্ষেত্র পাওয়ার সম্ভাবনা কম বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বাপেক্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক জামালউদ্দীন এই কান্ট্রি রিপোর্ট তৈরির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি তাঁর সঙ্গে কথা বলেছি। বাংলাদেশে বড় গ্যাসের মজুদের সম্ভাবনার ব্যাপারে তাঁর নিজের মত এখনো একই। তিনি জানালেন, খুব বড় গ্যাসক্ষেত্র পাওয়ার সম্ভাবনা কম। নেত্রকোনা বা আশপাশের এলাকায় মাঝারি আকারের দু-একটি ক্ষেত্র পাওয়া যেতে পারে। অন্যান্য অঞ্চলে ছোট ছোট ক্ষেত্র পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সাঙ্গুর অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিলে অগভীর সমুদ্রেও বৃহদাকার ক্ষেত্র আবিষ্কারের তেমন আশা নেই বলে তিনি মনে করেন। বর্তমান গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে ত্রিমাত্রিক সাইসমিক জরিপের মাধ্যমে গ্যাসক্ষেত্র ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের মাধ্যমে মজুদ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়ানো সম্ভব বলে তিনি মনে করেন। তবে তিনি মনে করেন, ভবিষ্যতে যেসব গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হবে, সেগুলো সাময়িক চাহিদা দূর করবে মাত্র, জাতীয় অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি ভূমিকা রাখতে পারবে না। তাঁর বক্তব্য মেনে নিলে জ্বালানির ব্যাপারে আর নিজেদের গ্যাসের ওপর নির্ভর করার সুযোগ নেই।
গ্যাস আমদানি, বিশেষ করে, বর্তমান বাস্তবতায় তরল গ্যাস আমদানি একটি বিকল্প। চট্টগ্রাম অঞ্চলের জন্য যে তরল গ্যাস আমদানি হতে যাচ্ছে, তার আওতা হয়তো সামনের দিনগুলোতে বাড়াতে হবে। আরও বড় এবং আরও নতুন এলএনজি প্ল্যান্ট বানাতে হবে, আমদানি বাড়াতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে যেহেতু গ্যাস কিনতে হবে, ফলে গ্যাসের দামও নিজেদের গ্যাসের মতো হবে না। জাপানের মতো ধনী দেশের পক্ষে হয়তো আমদানি করা এলএনজির ওপর পুরোপুরি নির্ভর করা সম্ভব, কিন্তু বাংলাদেশের পক্ষে এই নির্ভরশীলতা কতটুকু বাড়ানো সম্ভব, সে অর্থনৈতিক হিসাব-নিকাশ করা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। নিজেদের গ্যাসের কথা ভাবলে এখন একমাত্র বিকল্প হচ্ছে গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান। গভীর সমুদ্রে গ্যাসের সম্ভাবনার ব্যাপারে আমরা ভারত ও মিয়ানমারের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিতে পারি। ভারত তার নিজস্ব সমুদ্র এলাকায় ১০০ টিসিএফ গ্যাস পাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে মিয়ানমার সাত টিসিএফ গ্যাস পেয়েছে বলে আমরা জেনেছি। সে বিবেচনায় আমাদের গভীর সমুদ্রেও গ্যাস পাওয়ার আশা করতে পারি। বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার আয়তন মূল ভূখণ্ডের প্রায় তিনগুণ। অনুসন্ধানের জন্য বাংলাদেশ গভীর সমুদ্রে ২০টি ও অগভীর সমুদ্রে আটটি ব্লক চিহ্নিত করেছে। চিহ্নিত এই ব্লকগুলোর কিছু নিজেদের এলাকায় পড়ে বলে ভারত ও মিয়ানমার দাবি করেছে। সমুদ্রসীমা নিয়ে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের বিরোধ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এই বিরোধের মীমাংসা এক দীর্ঘ প্রক্রিয়া। শেষ খবর হচ্ছে, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতিসংঘের মহীসোপান সীমানা নির্ধারক কমিশনে (সিএলসিএস) বাংলাদেশ তাদের দাবি জমা দেবে। বাংলাদেশের এই দাবি নিয়ে আলোচনা ও নিষ্পত্তির জন্য কয়েক বছর সময় লাগবে।
গভীর সমুদ্রের যে ব্লকগুলোর ব্যাপারে ভারত ও মিয়ানমারের আপত্তি নেই, সেগুলোতে গ্যাস খোঁজার উদ্যোগে কোনো বাধা নেই। কিন্তু আমাদের অভিজ্ঞতা কী বলছে? গভীর সমুদ্রে ১০ ও ১১ নম্বর ব্লকে অনুসন্ধান শুরু করার উদ্যোগ শুরু হয়েছে সেই ২০০৭ সাল থেকে। এ দুটি ব্লকে গ্যাস খোঁজার কাজ শুরু করার ব্যাপারে কার্যত কোনো অগ্রগতিই হয়নি। গভীর সমুদ্রে গ্যাসের অনুসন্ধান কবে শুরু হবে, আর কবে সে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে, এমন কোনো সম্ভাব্য সন বলার ঝুঁকি কেউ নেবেন বলে মনে হয় না।
জ্বালানির ক্ষেত্রে এখন বাকি থাকল কয়লা। বিশ্বে বিদ্যুৎ উৎপাদনে এই জ্বালানিই ব্যবহূত হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। আমাদের দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের বাইরে অন্যান্য বিকল্প জ্বালানির বিষয় বিবেচনা করা উচিত ছিল বহু আগে। শিল্প বা সার কারখানায় গ্যাস দিতে না পারলে শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদন করে দেশের অর্থনীতির গতি ঊর্ধ্বমুখী রাখা যাবে না। বাংলাদেশে কয়লার মজুদ আছে প্রায় ৩০০ কোটি টন, কোন পদ্ধতিতে উত্তোলন করা হবে তার ওপর নির্ভর করছে উত্তোলনযোগ্য কয়লার পরিমাণ। আগামী দিনে বিদ্যুতের চাহিদা ও উৎপাদনের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার জন্য তাই দেশজ কয়লার পাশাপাশি কয়লার নিয়মিত সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমদানির বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে। সব বিবেচনায় কয়লাই হতে পারে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সবচেয়ে সহজ ও সুলভ জ্বালানি। কিন্তু দেশজ কয়লা উৎপাদনের পরিস্থিতি কী, তা কারও অজানা নয়। জাতীয় কয়লানীতির এ পর্যন্ত ১০টি সংস্করণ হয়েছে। দশম সংস্করণটি এখন সরকারের অনুমোদনের জন্য বিবেচনায় রয়েছে। কয়লানীতি অনুমোদন, কয়লা উত্তোলন ও তা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনেরও কোনো সম্ভাব্য সময় ঠিক করার সাহস কেউ দেখাবেন বলে মনে হয় না। বিষয়টি সরকারেরও মাথায় আছে। বেসরকারি খাতে আমদানি করা কয়লাভিত্তিক মোট দুই হাজার ৫৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য পিডিবি গত ২৬ নভেম্বর দরপত্র আহ্বান করেছে।
গভীর সমুদ্রের গ্যাস বা কয়লা উৎপাদন—দুটিই এখনো আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। এই বাস্তবতায় বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় তরল গ্যাস আমদানির কোনো বিকল্প দেখা যাচ্ছে না। শুধু মহেশখালীতে এলএনজি প্ল্যান্ট নির্মাণ ও চট্টগ্রামের জন্য প্রতিদিন ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহই নয়, এর আওতা আরও বাড়ানোর চিন্তা করতে হবে এখনই। আর আমদানি করা কয়লা দিয়েই শুরু করতে হবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ। বিদেশি মুদ্রায় গ্যাস আমদানির ধাক্কা যদি নিজেদের গ্যাস খোঁজার তাগিদ বাড়ায়, গ্যাস উন্নয়নে তহবিলের টাকা অলস পড়ে না থেকে যদি বাপেক্সের তহবিলে যায়, অনুসন্ধান জোরদার হয়—সেটাই হবে বড় পাওনা। কয়লার ক্ষেত্রেও একই কথা বলতে হয়। নিজেদের কয়লা থাকতেও বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আপাতত আমদানির বিকল্প নেই। কয়লা উত্তোলনের বাধা সরকার কবে দূর করতে পারবে, কে জানে! তবে কয়লা অনুসন্ধান, উত্তোলন ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণের প্রক্রিয়াগুলো অত্যন্ত দীর্ঘ। অর্থনৈতিক অগ্রগতির বর্তমান ধারা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে প্রায় নিশ্চিত করে বলা যায়, দেশের কয়লা দিয়ে যে সময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা হবে, তখন ওই সময়ের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে এই কয়লা যথেষ্ট হবে না। তখন বরং আরও বেশি কয়লা ও এলএনজি আমদানির জন্য নতুন উৎসের অনুসন্ধান করতে হবে।
এ কে এম জাকারিয়া: সাংবাদিক।
akmzakaria@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.