ইলিয়াসকে আমরাই গুম করেছি, আমাদেরকে শাস্তি দিন! by ফজলুল কাদের চৌধুরী
বাঘ বললো, এ্যাই বেটা ছাগল! তুই নদীর পানি ঘোলা করছিস কেন? তোর জন্য তো আমি পানি খেতে পারছি না।
ছাগল : আমি তো স্যার স্রোতের নীচে। পানি তো আপনাকে পার হয়ে আমার কাছে আসছে। আমি কিভাবে আপনার পানি ঘোলা করবো?
বাঘ : ব্যাটা বেয়াদব! মুখে মুখে কথা বলিস! তুই ঘোলা না করলেও তোর বাপ করছিলো। তোর আম্মাজান করছিলো।
এ বলে বাঘ মহোদয় ছাগলকে দিয়ে সকালের নাস্তা সারলেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব ইলিয়াস আলী গত ১৭ এপ্রিল রাতে তার গাড়ি থেকে ড্রাইভার সমেত গুম হয়েছেন। গাড়ি রাস্তায় বহাল তবিয়তে রয়েছে কিন্তু গাড়ির ভেতরের মানুষ দু’টি উধাও।
ইলিয়াস আলীর গুম হওয়ার ঘটনায় সারা দেশবাসী তো বটেই সারা দুনিয়ায় হৈচৈ পড়ে গেছে। আজ পর্যন্ত নয় দিন অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরও তার কোনও হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ জানে না ইলিয়াস আলী কোথায় আছেন।
কেউ না জানলেও মাত্র দু’জন এ খবরটা জানেন। বিষয়টা যে উনারা জানেন তারা তা গোপনও করেননি। রেড়িও, টেলিভিশনসহ গণমাধ্যমে তারা তা প্রকাশও করেছেন। এ দু’জন হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় খালেদা জিয়া। ইলিয়াস আলী গুম হওয়ার সাথে সাথে শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজনৈতিক ময়দানে ফায়দা লোটার উদ্দেশ্যে, সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্যে খালেদা জিয়া ইলিয়াস আলীকে গুম হয়ে থাকতে বলেছেন।
অপরদিকে, খালেদা জিয়াও সাংবাদিকদের বলেছেন, ``সরকারই ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে।``
শেখ হাসিনা যদি নিশ্চিত হন যে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য খালেদা জিয়ার ইঙ্গিতে ইলিয়াস গুম হয়ে রয়েছেন তা হলে তিনি সে ষড়যন্ত্রের জাল ছিঁড়ছেন না কেন? বাংলাদেশের প্রতি ইঞ্চি জমির ওপর তো প্রধানমন্ত্রীর নজরদারি রয়েছে। দেশের সব বাহিনীইতো তাঁরই হুকুমবরদাজ।
তাঁর সামান্য অঙ্গুলি হেলনে সারা বাংলাদেশ কেঁপে উঠবে। বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য খালেদা জিয়া যদি জাল ফেলেই থাকেন সেটা ছিন্নভিন্ন করছেন না কেন প্রধানমন্ত্রী? তা হলে কি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার হাতে উল্টো ছিন্নভিন্ন হতে চাচ্ছেন? না হলে খালেদা জিয়ার ইঙ্গিতে ইলিয়াস আলী গুম হয়ে রয়েছেন- এসব কথা কীভাবে বলেন!
অপরদিকে খালেদা জিয়া বলেছেন, সরকার ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে। তিনি নিশ্চিতভাবেই তা বলছেন। যদি তা হয়ে থাকে তাহলে তিনি প্রধানমন্ত্রীর অফিস, বাসভবন অনির্দিষ্টকালের জন্য ঘেরাও করে রাখছেন না কেন? তিনি সচিবালয় ঘেরাও করে রাখছেন না কেন? সেখানেই তো সর্বোচ্চ সরকার অবস্থান করে। তিনি ঘোষণা করছেন না কেন যে, যতক্ষণ ইলিয়াসকে ফেরৎ দেয়া না হবে ততদিন প্রধানমন্ত্রীর অফিস, বাসা ও মন্ত্রীদের অফিস-সচিবালয় ঘেরাও করে রাখা হবে?
কিন্তু তিনি তা করছেন না। উল্টো তিনি দেশের জনগণকে ঘেরাও করে রাখছেন। যারা তাঁকে ভোট দিয়ে একাধিকবার ক্ষমতার তখত-এ-তাউসে বসিয়েছে, যারা তাঁকে এ গরিব দেশেও বিলাসবহুল জীবনযাত্রা উপহার দিয়েছে- তাদের তিনি বন্দী করেছেন হরতাল দিয়ে। তাঁর হরতালে বাসচালককে নির্মমভাবে পুড়িয়ে মারা হয়েছে, আরেক গাড়িচাককে ইট মেরে আহত করার পর তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আরও তিনজন সাধারণ মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর হরতালে রাষ্ট্রীয়সহ জনমানুষের সম্পদ ধ্বংস হয়েছে।
যে গাড়িটা ড্রাইভার সমেত জ্বালিয়ে দেয়া হলো সেটা তো একজন মালিকের। তার সর্বস্ব দিয়ে সেটা কেনা হয়েছে তাও তো হতে পারে। নিহত গরিব ড্রাইভারের সংসার কী দিয়ে চলবে? অন্য তিনজন যারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিজনের আহাজারি কে শুনবে? আমাদের সন্তানেরা যে যথাসময়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারলো না সে ক্ষতি কে পোষাবে? খালেদা জিয়া কি তাদেরকেও ‘অশিক্ষিত’ রাখতে চান?
দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পোৎপাদন যে লাটে উঠছে তার খেসারত কে দেবে? হরতালের জন্য সন্তানের মুখে দু’মুঠো অন্ন তুলে দিতে পারলো না বাবা। সন্তান প্রসবকালে স্ত্রীর কাছে পৌঁছতে পারলেন না তার স্বামী। মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতর মায়ের কাছে পৌঁছতে পারলো না সন্তান।
খালেদা জিয়া ইলিয়াস আলীর গুম হওয়ার জন্য সরকারকে দায়ী করেছেন। কই, সরকারপ্রধান বিদেশে থেকে দেশে ফিরে বিমানবন্দর থেকে গাড়ি হাঁকিয়ে অফিসে গেলেন। সেখান থেকে যেখানে ইচ্ছে সেখানে যাচ্ছেন। তাঁর গাড়ি তো জ্বালিয়ে দেয়া হলো না! রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে তাঁকে তো হরতাল মানতে বাধ্য করা হলো না। তাঁর কেশাগ্রও স্পর্শ করা হলো না। তাঁর মন্ত্রীদের আটকানো হলো না। শুধু অসহায় জনগণ যারা তাদের নেতা বানায়, নেত্রী বানায়, যাদের ঘাম আর রক্তের টাকা লুটপাট করে দুরাচারের স্বপ্নসৗধ তৈরি হয়, সে জনগণকেই তো দোষী সাব্যস্ত করা হলো!
কর্মসূচিটা এমন পর্যায়ে রূপ নিয়েছে যে- জনগণই যেন ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে। আসলে তারাই তো ড্রাইভারদের হত্যা করেছে! তাই সে জনগণ নামের পাঁঠাদেরকেই তো বলি দেয়া দরকার। খালেদা জিয়া আপনি ঠিক কাজটাই করছেন। জনগণকে আপনার অবহেলার পাদুকায় পিষে মারছেন। কেননা, আমরা জনাগণই তো ইলিয়াস আলীকে গুম করেছি! আমাদের রক্তে, আমাদের ঘামে, হরতালওয়ালাদের ফাটানো বোমার আঘাতে আমাদের ছিটকে যাওয়া মাংসপিণ্ডে তন্ন তন্ন করে খুঁজে দেখুন। ইলিয়াস আলীকে পেয়ে যাবেন!
বিরক্ত হচ্ছেন? কিন্তু আপনি আসলে তাই ই তো করছেন। বাঘ-ছাগলের গল্পের মতোই আপনি আপনার ক্ষমতার খড়্গ জনগণের গর্দানের ওপর চালাবেন! অবশ্যই চালিয়ে যান, নো প্রবলেম।
আমরা তো আপনাদের নাস্তা হতে সদা নিয়োজিত!
এ বলে বাঘ মহোদয় ছাগলকে দিয়ে সকালের নাস্তা সারলেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব ইলিয়াস আলী গত ১৭ এপ্রিল রাতে তার গাড়ি থেকে ড্রাইভার সমেত গুম হয়েছেন। গাড়ি রাস্তায় বহাল তবিয়তে রয়েছে কিন্তু গাড়ির ভেতরের মানুষ দু’টি উধাও।
ইলিয়াস আলীর গুম হওয়ার ঘটনায় সারা দেশবাসী তো বটেই সারা দুনিয়ায় হৈচৈ পড়ে গেছে। আজ পর্যন্ত নয় দিন অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরও তার কোনও হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ জানে না ইলিয়াস আলী কোথায় আছেন।
কেউ না জানলেও মাত্র দু’জন এ খবরটা জানেন। বিষয়টা যে উনারা জানেন তারা তা গোপনও করেননি। রেড়িও, টেলিভিশনসহ গণমাধ্যমে তারা তা প্রকাশও করেছেন। এ দু’জন হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় খালেদা জিয়া। ইলিয়াস আলী গুম হওয়ার সাথে সাথে শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজনৈতিক ময়দানে ফায়দা লোটার উদ্দেশ্যে, সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্যে খালেদা জিয়া ইলিয়াস আলীকে গুম হয়ে থাকতে বলেছেন।
অপরদিকে, খালেদা জিয়াও সাংবাদিকদের বলেছেন, ``সরকারই ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে।``
শেখ হাসিনা যদি নিশ্চিত হন যে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য খালেদা জিয়ার ইঙ্গিতে ইলিয়াস গুম হয়ে রয়েছেন তা হলে তিনি সে ষড়যন্ত্রের জাল ছিঁড়ছেন না কেন? বাংলাদেশের প্রতি ইঞ্চি জমির ওপর তো প্রধানমন্ত্রীর নজরদারি রয়েছে। দেশের সব বাহিনীইতো তাঁরই হুকুমবরদাজ।
তাঁর সামান্য অঙ্গুলি হেলনে সারা বাংলাদেশ কেঁপে উঠবে। বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য খালেদা জিয়া যদি জাল ফেলেই থাকেন সেটা ছিন্নভিন্ন করছেন না কেন প্রধানমন্ত্রী? তা হলে কি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার হাতে উল্টো ছিন্নভিন্ন হতে চাচ্ছেন? না হলে খালেদা জিয়ার ইঙ্গিতে ইলিয়াস আলী গুম হয়ে রয়েছেন- এসব কথা কীভাবে বলেন!
অপরদিকে খালেদা জিয়া বলেছেন, সরকার ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে। তিনি নিশ্চিতভাবেই তা বলছেন। যদি তা হয়ে থাকে তাহলে তিনি প্রধানমন্ত্রীর অফিস, বাসভবন অনির্দিষ্টকালের জন্য ঘেরাও করে রাখছেন না কেন? তিনি সচিবালয় ঘেরাও করে রাখছেন না কেন? সেখানেই তো সর্বোচ্চ সরকার অবস্থান করে। তিনি ঘোষণা করছেন না কেন যে, যতক্ষণ ইলিয়াসকে ফেরৎ দেয়া না হবে ততদিন প্রধানমন্ত্রীর অফিস, বাসা ও মন্ত্রীদের অফিস-সচিবালয় ঘেরাও করে রাখা হবে?
কিন্তু তিনি তা করছেন না। উল্টো তিনি দেশের জনগণকে ঘেরাও করে রাখছেন। যারা তাঁকে ভোট দিয়ে একাধিকবার ক্ষমতার তখত-এ-তাউসে বসিয়েছে, যারা তাঁকে এ গরিব দেশেও বিলাসবহুল জীবনযাত্রা উপহার দিয়েছে- তাদের তিনি বন্দী করেছেন হরতাল দিয়ে। তাঁর হরতালে বাসচালককে নির্মমভাবে পুড়িয়ে মারা হয়েছে, আরেক গাড়িচাককে ইট মেরে আহত করার পর তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আরও তিনজন সাধারণ মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর হরতালে রাষ্ট্রীয়সহ জনমানুষের সম্পদ ধ্বংস হয়েছে।
যে গাড়িটা ড্রাইভার সমেত জ্বালিয়ে দেয়া হলো সেটা তো একজন মালিকের। তার সর্বস্ব দিয়ে সেটা কেনা হয়েছে তাও তো হতে পারে। নিহত গরিব ড্রাইভারের সংসার কী দিয়ে চলবে? অন্য তিনজন যারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিজনের আহাজারি কে শুনবে? আমাদের সন্তানেরা যে যথাসময়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারলো না সে ক্ষতি কে পোষাবে? খালেদা জিয়া কি তাদেরকেও ‘অশিক্ষিত’ রাখতে চান?
দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পোৎপাদন যে লাটে উঠছে তার খেসারত কে দেবে? হরতালের জন্য সন্তানের মুখে দু’মুঠো অন্ন তুলে দিতে পারলো না বাবা। সন্তান প্রসবকালে স্ত্রীর কাছে পৌঁছতে পারলেন না তার স্বামী। মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতর মায়ের কাছে পৌঁছতে পারলো না সন্তান।
খালেদা জিয়া ইলিয়াস আলীর গুম হওয়ার জন্য সরকারকে দায়ী করেছেন। কই, সরকারপ্রধান বিদেশে থেকে দেশে ফিরে বিমানবন্দর থেকে গাড়ি হাঁকিয়ে অফিসে গেলেন। সেখান থেকে যেখানে ইচ্ছে সেখানে যাচ্ছেন। তাঁর গাড়ি তো জ্বালিয়ে দেয়া হলো না! রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে তাঁকে তো হরতাল মানতে বাধ্য করা হলো না। তাঁর কেশাগ্রও স্পর্শ করা হলো না। তাঁর মন্ত্রীদের আটকানো হলো না। শুধু অসহায় জনগণ যারা তাদের নেতা বানায়, নেত্রী বানায়, যাদের ঘাম আর রক্তের টাকা লুটপাট করে দুরাচারের স্বপ্নসৗধ তৈরি হয়, সে জনগণকেই তো দোষী সাব্যস্ত করা হলো!
কর্মসূচিটা এমন পর্যায়ে রূপ নিয়েছে যে- জনগণই যেন ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে। আসলে তারাই তো ড্রাইভারদের হত্যা করেছে! তাই সে জনগণ নামের পাঁঠাদেরকেই তো বলি দেয়া দরকার। খালেদা জিয়া আপনি ঠিক কাজটাই করছেন। জনগণকে আপনার অবহেলার পাদুকায় পিষে মারছেন। কেননা, আমরা জনাগণই তো ইলিয়াস আলীকে গুম করেছি! আমাদের রক্তে, আমাদের ঘামে, হরতালওয়ালাদের ফাটানো বোমার আঘাতে আমাদের ছিটকে যাওয়া মাংসপিণ্ডে তন্ন তন্ন করে খুঁজে দেখুন। ইলিয়াস আলীকে পেয়ে যাবেন!
বিরক্ত হচ্ছেন? কিন্তু আপনি আসলে তাই ই তো করছেন। বাঘ-ছাগলের গল্পের মতোই আপনি আপনার ক্ষমতার খড়্গ জনগণের গর্দানের ওপর চালাবেন! অবশ্যই চালিয়ে যান, নো প্রবলেম।
আমরা তো আপনাদের নাস্তা হতে সদা নিয়োজিত!
No comments