হরতাল না দিতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মহলের দাবির মুখে দোটানায় পড়েছে দলটি-চাপে বিএনপি by মোশাররফ বাবলু
হরতাল না দেওয়ার জন্য প্রধান বিরোধী দল বিএনপির ওপর বিভিন্ন মহলের চাপ বাড়ছে। এর ওপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা চলাকালে হরতালের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে। রবিবার এ রিটের শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি আগামী ৫ মে ঢাকায় আসছেন। হিলারি ক্লিনটনের সফরকে সামনে রেখে গত বৃহস্পতিবার গুলশানের কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডাব্লিউ মজিনা হরতালের পরিবর্তে বিকল্প কোনো কর্মসূচি দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলে সূত্র জানায়। তা ছাড়া ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকেও হরতাল না দেওয়ার জন্য বিএনপির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
এ অবস্থায় হরতাল দেওয়া না-দেওয়া নিয়ে দোটানায় পড়েছে বিএনপি। তবে ১৮ দলীয় জোটের অন্য শরিক দলগুলো হরতালের পক্ষেই মতামত দিয়েছে। আজ শনিবারের মধ্যে নিখোঁজ দলীয় নেতা এম ইলিয়াস আলীকে উদ্ধার করার জন্য সরকারকে দেওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আলটিমেটামের সময়সীমা শেষ হচ্ছে। ইলিয়াসকে না পাওয়া গেলে আজ রাতে বৈঠক করে বিরোধী দলের আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা। কিন্তু বিএনপি শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এ প্রসঙ্গে বিএনপির একজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, আজ সারা দেশের থানা ও উপজেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হবে। পরে রাতে ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে বৈঠক করে নতুন কর্মসূচি দেওয়ার কথা। ওই নেতা নিজেই প্রশ্ন রেখে বলেন, 'আমিও জানি না কী হবে বা হচ্ছে। তাই কর্মসূচির বিষয়ে বলা কঠিন।' হাইকমান্ডের নির্দেশনা না থাকায় প্রস্তুতি নিতেও সমস্যা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক নেতা জানান, 'আজ পর্যন্ত আমাদের আলটিমেটাম দেওয়া আছে। এই সময়ের মধ্যে ইলিয়াসকে উদ্ধার করা না হলে পরদিন রবিবার থেকেই সরকারবিরোধী কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার কথা।' কিন্তু আজ বৈঠক করে কালই হরতাল কিংবা অবরোধের মতো কর্মসূচি দিলে কতটুকু বাস্তবায়ন হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কর্মসূচি সফল করার জন্য দলীয় নেতা-কর্মী ও জনগণকে কিছুটা হলেও সময় দিতে হয়। সে ক্ষেত্রে রবিবার কিংবা সোমবার কোনো কর্মসূচি দেওয়া হবে কি না তা তাঁর জানা নেই বলে মন্তব্য করেন এই নেতা।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুলশানের কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডাব্লিউ মজিনা। ৪৫ মিনিট বৈঠক করেন তাঁরা। এ সময় তাঁরা ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা, হিলারি ক্লিনটনের ঢাকা সফর ছাড়াও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ওই বৈঠক সম্পর্কে বলেছেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু হরতাল প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হয়নি বলে তিনি জানান। একটি সূত্র জানায়, জনদুর্ভোগ হয় এমন হরতালের বিকল্প কর্মসূচি দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রদূত বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী গত মঙ্গলবার হরতালের দিন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তাঁর স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকীসহ দলের প্রায় ২০ জন নেতা-কর্মীকে নিয়ে যান। কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে প্রায় আধা ঘণ্টা বৈঠক করেন। বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, হরতালের বিকল্প কর্মসূচির কথা ভাবতে হবে।
বিএনপির উদ্যোগে আজ শনিবার সাবেক সংসদ সদস্য, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি ইলিয়াস আলী নিখোঁজ ঘটনার প্রতিবাদে এবং তাঁকে উদ্ধারের দাবিতে সারা দেশে থানা ও উপজেলা সদরে বিক্ষোভ-সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে। বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের বিক্ষোভ মিছিল সফল করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে কেন্দ্র থেকে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, রবিবার থেকে সারা দেশে আগুন জ্বলবে, সেই আগুন থামানোর ক্ষমতা থাকবে না সরকারের। মির্জা ফখরুলের এসব বক্তব্যের পর সাধারণ মানুষ অস্থিরতায় ভুগছে, টানা হরতালের কর্মসূচি আবার এলে অবস্থা কী হবে ভেবে। তাই বিভিন্ন মহল থেকে হরতালের বিকল্প কর্মসূচি দেওয়ার ব্যাপারে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
পাবলিক পরীক্ষা চলাকালে হরতাল ডাকা কেন আইনবহির্ভূত হবে না, তা জানতে চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে। আগামী রবিবার এ রিটের ওপর শুনানি শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিট আবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইউনুস আলী আকন্দ এ রিট আবেদনটি করেন। এই রিটে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারি ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সেক্রেটারি জেনারেল, শিক্ষাসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতাকে বিবাদী করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
গত সোমবার এক অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সভাপতি এ কে আজাদ বলেছেন, বিরোধী দল টানা হরতাল পালন করছে। এতে শুধু দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না, আপামর জনসাধারণকে ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। হরতাল সব সময় ব্যবসা ও অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তিনি বলেন, 'হরতাল অর্থনীতির ক্ষতি করে ও বেকারত্ব বাড়ায়। এটি ষাটের দশকের কর্মসূচি। বিশ্ব বর্তমানে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আর আমরা এ ধরনের কর্মসূচি দিয়ে নিজেদের পিছিয়ে রাখছি। দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ হরতালের বিপক্ষে- এ রকম তথ্য আমাদের কাছে আছে।' বিরোধী দলের নেত্রীর লংমার্চ, অনশন, ঘেরাওয়ের মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে মানুষের সমর্থন রয়েছে বলে তিনি জানান।
হরতাল না দেওয়ার জন্য হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হরতালের পরিবর্তে বিকল্প কর্মসূচি ভাবতে বলেছেন- এমন প্রসঙ্গ তুললে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কালের কণ্ঠকে বলেন, 'হাইকোর্ট থেকে আমাদের কিছু বলা হয়নি, তবে রিট হয়েছে- বিষয়টি জানা আছে।' তিনি বলেন, শনিবার না গেলে কিছু বলা যাবে না। শনিবার রাতে আলোচনার পরই সব কিছু জানতে পারবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
১৮ দলীয় জোটের এক শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, হরতাল না ডাকার ব্যাপারে বিভিন্ন মহল থেকে চাপ আছে, এটা ঠিক। কিন্তু হরতাল ছাড়া বিকল্প পথ নেই। এ জন্যই তিন দিনের হরতাল দেওয়া হয়েছিল। রবিবার ও সোমবার হরতাল থাকবে কি না- প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি ৫ মে ঢাকায় আসছেন। হিলারি ক্লিনটনের সফরের আগে হরতাল না ডাকার ব্যাপারে অনুরোধ আছে। এমনকি ব্যবসায়ী মহল থেকেও চাপ আছে। এ ছাড়া পরীক্ষা চলাকালে হরতাল না ডাকার ব্যাপারে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। এসব বিষয় চিন্তাভাবনা করে সম্ভবত হরতাল না ডেকে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা হতে পারে বলে তিনি জানান।
এ অবস্থায় হরতাল দেওয়া না-দেওয়া নিয়ে দোটানায় পড়েছে বিএনপি। তবে ১৮ দলীয় জোটের অন্য শরিক দলগুলো হরতালের পক্ষেই মতামত দিয়েছে। আজ শনিবারের মধ্যে নিখোঁজ দলীয় নেতা এম ইলিয়াস আলীকে উদ্ধার করার জন্য সরকারকে দেওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আলটিমেটামের সময়সীমা শেষ হচ্ছে। ইলিয়াসকে না পাওয়া গেলে আজ রাতে বৈঠক করে বিরোধী দলের আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা। কিন্তু বিএনপি শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এ প্রসঙ্গে বিএনপির একজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, আজ সারা দেশের থানা ও উপজেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হবে। পরে রাতে ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে বৈঠক করে নতুন কর্মসূচি দেওয়ার কথা। ওই নেতা নিজেই প্রশ্ন রেখে বলেন, 'আমিও জানি না কী হবে বা হচ্ছে। তাই কর্মসূচির বিষয়ে বলা কঠিন।' হাইকমান্ডের নির্দেশনা না থাকায় প্রস্তুতি নিতেও সমস্যা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক নেতা জানান, 'আজ পর্যন্ত আমাদের আলটিমেটাম দেওয়া আছে। এই সময়ের মধ্যে ইলিয়াসকে উদ্ধার করা না হলে পরদিন রবিবার থেকেই সরকারবিরোধী কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার কথা।' কিন্তু আজ বৈঠক করে কালই হরতাল কিংবা অবরোধের মতো কর্মসূচি দিলে কতটুকু বাস্তবায়ন হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কর্মসূচি সফল করার জন্য দলীয় নেতা-কর্মী ও জনগণকে কিছুটা হলেও সময় দিতে হয়। সে ক্ষেত্রে রবিবার কিংবা সোমবার কোনো কর্মসূচি দেওয়া হবে কি না তা তাঁর জানা নেই বলে মন্তব্য করেন এই নেতা।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুলশানের কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডাব্লিউ মজিনা। ৪৫ মিনিট বৈঠক করেন তাঁরা। এ সময় তাঁরা ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা, হিলারি ক্লিনটনের ঢাকা সফর ছাড়াও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ওই বৈঠক সম্পর্কে বলেছেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু হরতাল প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হয়নি বলে তিনি জানান। একটি সূত্র জানায়, জনদুর্ভোগ হয় এমন হরতালের বিকল্প কর্মসূচি দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রদূত বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী গত মঙ্গলবার হরতালের দিন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তাঁর স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকীসহ দলের প্রায় ২০ জন নেতা-কর্মীকে নিয়ে যান। কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে প্রায় আধা ঘণ্টা বৈঠক করেন। বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, হরতালের বিকল্প কর্মসূচির কথা ভাবতে হবে।
বিএনপির উদ্যোগে আজ শনিবার সাবেক সংসদ সদস্য, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি ইলিয়াস আলী নিখোঁজ ঘটনার প্রতিবাদে এবং তাঁকে উদ্ধারের দাবিতে সারা দেশে থানা ও উপজেলা সদরে বিক্ষোভ-সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে। বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের বিক্ষোভ মিছিল সফল করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে কেন্দ্র থেকে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, রবিবার থেকে সারা দেশে আগুন জ্বলবে, সেই আগুন থামানোর ক্ষমতা থাকবে না সরকারের। মির্জা ফখরুলের এসব বক্তব্যের পর সাধারণ মানুষ অস্থিরতায় ভুগছে, টানা হরতালের কর্মসূচি আবার এলে অবস্থা কী হবে ভেবে। তাই বিভিন্ন মহল থেকে হরতালের বিকল্প কর্মসূচি দেওয়ার ব্যাপারে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
পাবলিক পরীক্ষা চলাকালে হরতাল ডাকা কেন আইনবহির্ভূত হবে না, তা জানতে চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে। আগামী রবিবার এ রিটের ওপর শুনানি শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিট আবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইউনুস আলী আকন্দ এ রিট আবেদনটি করেন। এই রিটে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারি ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সেক্রেটারি জেনারেল, শিক্ষাসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতাকে বিবাদী করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
গত সোমবার এক অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সভাপতি এ কে আজাদ বলেছেন, বিরোধী দল টানা হরতাল পালন করছে। এতে শুধু দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না, আপামর জনসাধারণকে ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। হরতাল সব সময় ব্যবসা ও অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তিনি বলেন, 'হরতাল অর্থনীতির ক্ষতি করে ও বেকারত্ব বাড়ায়। এটি ষাটের দশকের কর্মসূচি। বিশ্ব বর্তমানে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আর আমরা এ ধরনের কর্মসূচি দিয়ে নিজেদের পিছিয়ে রাখছি। দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ হরতালের বিপক্ষে- এ রকম তথ্য আমাদের কাছে আছে।' বিরোধী দলের নেত্রীর লংমার্চ, অনশন, ঘেরাওয়ের মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে মানুষের সমর্থন রয়েছে বলে তিনি জানান।
হরতাল না দেওয়ার জন্য হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হরতালের পরিবর্তে বিকল্প কর্মসূচি ভাবতে বলেছেন- এমন প্রসঙ্গ তুললে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কালের কণ্ঠকে বলেন, 'হাইকোর্ট থেকে আমাদের কিছু বলা হয়নি, তবে রিট হয়েছে- বিষয়টি জানা আছে।' তিনি বলেন, শনিবার না গেলে কিছু বলা যাবে না। শনিবার রাতে আলোচনার পরই সব কিছু জানতে পারবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
১৮ দলীয় জোটের এক শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, হরতাল না ডাকার ব্যাপারে বিভিন্ন মহল থেকে চাপ আছে, এটা ঠিক। কিন্তু হরতাল ছাড়া বিকল্প পথ নেই। এ জন্যই তিন দিনের হরতাল দেওয়া হয়েছিল। রবিবার ও সোমবার হরতাল থাকবে কি না- প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি ৫ মে ঢাকায় আসছেন। হিলারি ক্লিনটনের সফরের আগে হরতাল না ডাকার ব্যাপারে অনুরোধ আছে। এমনকি ব্যবসায়ী মহল থেকেও চাপ আছে। এ ছাড়া পরীক্ষা চলাকালে হরতাল না ডাকার ব্যাপারে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। এসব বিষয় চিন্তাভাবনা করে সম্ভবত হরতাল না ডেকে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা হতে পারে বলে তিনি জানান।
No comments