পাকিস্তান-আমার বন্ধু সালমান তাসির by তারিক আলী
পাঞ্জাবের গভর্নর সালমান তাসিরকে গুলি করে হত্যা করে মুমতাজ হুসাইন কাদরি হাসিমুখে আত্মসমর্পণ করেন। মনে হচ্ছে বহু পাকিস্তানি এই হত্যাকাণ্ড সমর্থন করছে। আর অন্যরা বুঝে উঠতে পারছে না, কীভাবে কাদরি এলিট ফোর্সে ঢুকলেন। সযত্নে যাচাই-বাছাই করেই সরকারি দেহরক্ষী নিয়োগ হয়।
পাকিস্তানের জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল জিয়ো টিভি জানিয়েছে, ‘একবার কাদরিকে নিরাপত্তা-ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করে স্পেশাল ব্রাঞ্চ থেকে বের করে দেওয়া হয়।...কাদরি অনুরোধ করেছিলেন তিনি যদি তাসিরকে হত্যা করতে সক্ষম হন, তবে তাঁকে যেন গুলি না করে জীবিত বন্দী করা হয়।’ চ্যানেলটি আরও জানিয়েছে, তাসিরকে হত্যা করার তাঁর পরিকল্পনার ব্যাপারে এলিট ফোর্সের অনেকেই জানতেন।
কাদরি এখন পাকিস্তানের জাতীয় বীর হয়ে ওঠার পথে। প্রথমবার আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় ফুলবর্ষণ করে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান ইসলামাবাদের আইনজীবীরা। তাঁরা বিনা পারিশ্রমিকে তাঁর পক্ষে লড়তে রাজি। কারাগারে ফেরার পথে সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সুযোগ তাঁকে দেয় পুলিশ। টিভি ক্যামেরার সামনে হাত নাড়ার ব্যবস্থাও করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে তাঁর হাতে নিহত ব্যক্তির শেষকৃত্যে লোকের সমাগম ছিল নগণ্য, সব মিলিয়ে দুই হাজারের মতো। ভীতসন্ত্রস্ত প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি আর বহু রাজনীতিবিদ সেখানে যাননি। একদল মোল্লা ঘোষণা করেছিল, কেউ যদি তাসিরের শেষকৃত্যে অংশ নেয়, তাহলে সে ব্লাসফেমির অপরাধে অপরাধী হবে। জানাজা পড়ানোর জন্য কোনো মোল্লাকেই পাওয়া যাচ্ছিল না, এমনকি যারা সরকারি বেতনভুক, তাদেরও। জারদারির আজ্ঞাবহ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিক ঘোষণা করেছেন, কেউ ব্লাসফেমি আইন সংশোধন বা পরিবর্তন করতে চাইলে তাকে কঠোর হাতে মোকাবিলা করা হবে। নিউইয়র্ক টাইমসকে তিনি বলেছেন, কেউ ব্লাসফেমি করলে তাকে তিনি নিজ হাতে গুলি করবেন।
আসিয়া বিবির পক্ষে তাসির সাহসী অবস্থান নিয়েছিলেন। ৪৫ বছর বয়সী আসিয়া পাঞ্জাবি খ্রিষ্টান কৃষক। একটি পানির আধার থেকে পানি খেয়ে আসিয়া পানি দূষিত করেছেন—এই অভিযোগ তুলেছিলেন তাঁর দুই প্রতিবেশী নারী। ঝগড়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে তারা ব্লাসফেমির মিথ্যা অভিযোগ তোলেন। ধর্মীয় গোষ্ঠীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়। তাসিরের দলের অনেকে মনে করেন, আসিয়ার ঘটনা নিয়ে তাসির ভুল সময়ে প্রচারণায় নামেন। কিন্তু পাকিস্তানে এ কাজের জন্য কোনো সময়ই সঠিক সময় নয়। তত দিনে আসিয়া জেলখানায় কাটিয়ে ফেলেছেন ১৮ মাস। গণমাধ্যমে তাঁর দুরবস্থা উঠে আসে। নারীরা তাঁর পক্ষে রাজপথে নেমে আসে। আর ব্লাসফেমি আইন সংশোধনের দাবি তোলেন তাসির ও তাঁর দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা শেরি রেহমান।
তাসির খেয়ালের বশে আসিয়ার বিষয়ে প্রচারণায় নামেননি। তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক এজেন্ডা ‘ধর্মান্ধ মোল্লাদের’ দ্বারা ছিনতাই হয়ে যাক, তা তিনি চান না। তাঁর নিজের জীবনের হুমকিকে পাশে ঠেলে তিনি এগিয়ে যান। আসিয়া যে কারাগারে বন্দী, সেটি তিনি পরিদর্শন করেন। পাঞ্জাবের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো গভর্নর জেলা কারাগারের ভেতরে গেলেন। পরে এক সংবাদ সম্মেলন ডেকে তিনি আসিয়ার প্রতি সংহতি জানান।
তাসিরের ব্যবসায়ীজীবন ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে আমি কখনো বিশেষ মাথা ঘামাইনি। গত ২০ বছর তাঁর সঙ্গে আমার কথাও হয়নি। তবে স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে তাসির ছিলেন আমার এক ঘনিষ্ঠতম বন্ধু। আমরা দুজন আর শাহিদ রেহমান এই তিনজনের সম্পর্ক ছিল অবিচ্ছেদ্য। শাহিদ অত্যন্ত মেধাবী আর বুদ্ধিদীপ্ত আইনজীবী ছিলেন; মদ খেয়ে খেয়ে মরে গেলেন বহু বছর আগে। তাসিরের ছবি যখন টিভি পর্দায় ভেসে ওঠে, তখন আমার সামনে সেই আনন্দমুখর দিনগুলোর স্মৃতি ভেসে ওঠে।
১৯৬০ সাল। দেশ তখন মার্কিনপন্থী সামরিক স্বৈরশাসনের অধীন। সব ধরনের বিরোধিতা নিষিদ্ধ। আমার মা-বাবা বহু দূরে। আমরা তিনজন ১৭ বছর বয়সী তরুণ আমার বাসায়। ঠিক করলাম, কিছু একটা করতে হবে আমাদের। লাল রং কিনলাম। রাত দুইটার দিকে গাড়ি নিয়ে গেলাম ক্যান্টনমেন্ট সেতুর ওপর। সাবধানতার সঙ্গে লিখলাম—‘ইয়াংকি গো হোম’। সুন্দর হোয়াইটওয়াশ করা দেয়ালের গায়ে। সকালবেলা ঘষেমেজে গাড়ি থেকে মুছে ফেললাম রঙের সব চিহ্ন। এ ঘটনার পর কয়েক দিন নগরজুড়ে উত্তেজনা। কোনো খবরের কাগজে আসেনি, কিন্তু সবার মুখে মুখে চাউর হয়ে গেল। কলেজে আমাদের সহপাঠীদের মুখে মুখে এ ঘটনা। পুলিশ ব্যস্ত দোষীদের খুঁজে বের করার কাজে। অবশেষে ধরা পড়ে গেলাম। শাহিদের বাবা তখন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আর আমার খালার বিয়ে হয়েছিল এক জেনারেলের সঙ্গে, যিনি আবার তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও। তাই স্বাভাবিকভাবেই আমরা ছাড়া পেয়ে গেলাম। শুধু সতর্ক করে দেওয়া হলো।
এ ঘটনার দুই বছর আগে (তখনো সামরিক স্বৈরতন্ত্র কায়েম হয়নি) আমরা জানতে পারি, জিমি উইলসন নামের এক আফ্রিকান-আমেরিকানকে এক ডলার চুরির অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে আমরা তিনজনে মিলে মার্কিন কনসুলেটের সামনে বিক্ষোভের আয়োজন করি। বহু বছর পর লন্ডন থেকে লাহোর বিমানযাত্রায় দৈবক্রমে তাসিরের সঙ্গে আমার দেখা হয়। অতীতের নানা বিষয় নিয়ে কথা হয়। সেদিন আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তিনি কেন রাজনীতিতে গেলেন। ব্যবসায়ী হওয়াই কি যথেষ্ট খারাপ কাজ নয়? তিনি বললেন, ‘তুমি কোনো দিন বুঝবে না। ব্যবসায়ীর পাশাপাশি যদি আমি রাজনীতিকও হই, তাহলে তো অনেক অর্থ বাঁচাতে পারব। ঘুষের খরচটা বেঁচে যাবে।’ তাসির চরম নৈরাশ্যবাদী হয়ে পড়েছিলেন। তবে নিজেকেও বিদ্রূপ করার ক্ষমতা তাঁর ছিল। তাঁর মৃত্যু মর্মান্তিক, কিন্তু মহৎ উদ্দেশ্যে। তাঁর দল ও সহকর্মীরা লোক দেখানো শোক করার বদলে তাঁর মৃত্যুতে মানুষের ক্রোধ থাকতে থাকতেই যদি ব্লাসফেমি আইন সংশোধনের সুযোগ কাজে লাগায়, সেটাই সবচেয়ে ভালো হবে। কিন্তু তারা তো পুরো উল্টো পথে চলেছে।
তাসিরকে হত্যার আগেই পাকিস্তান দাঁড়িয়ে ছিল আরেকটি সামরিক ক্ষমতা দখলের দ্বারপ্রান্তে। এই ক্ষমতা দখলের নামটা যদি শুধু তারা পাল্টে ‘সামরিক গণতন্ত্র’-এর মতো কোনো নাম দিতে পারত, তাহলেই হয়তো তাদের জন্য সবকিছু অনেক সহজ হয়ে যেত। গত বছর জেনারেল কায়ানির দায়িত্বের মেয়াদ বাড়ানো হলো। এতে পেন্টাগনের জোরালো সমর্থন ছিল। বলা হচ্ছে, কায়ানির কাছে হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ‘দেশ রক্ষার’ দরখাস্ত যাচ্ছে প্রতিদিন। যাঁরা কায়ানির কাছে আবেদন জানাচ্ছেন, তাঁরা খুব ভালোমতোই জানেন, জারদারিকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় মুসলিম লিগের মনোনীত কাউকে বসালে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটার সম্ভাবনা তেমন নেই। আবেদন-নিবেদনের পাশাপাশি এক বা একাধিক স্তরে আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙে পড়ার (পেশোয়ারে আত্মঘাতী হামলা, করাচিতে সহিংস জাতিগত হত্যাকাণ্ড) সংবাদের পরপর সাধারণত সংবাদ আসে যে অনিচ্ছুক জেনারেল জনতার চাপ অগ্রাহ্য করে বসে থাকতে আর পারেন না এবং নিরুপায় মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে উর্দি পরা এক প্রেসিডেন্ট ক্ষমতাসীন হন। আমরা চারবার এ অবস্থা দেখেছি। দেশকে এগিয়ে নিতে সামরিক বাহিনী একবারও সফল হয়নি। সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করলে শুধু একটাই বদল ঘটে, রাজনীতিকদের জায়গায় সামরিক কর্মকর্তাদের ঘরে যায় ভাগের ফসল। সামরিক হস্তক্ষেপের হুমকিকে সরকার স্পষ্টতই গুরুতর মনে করে। জারদারির একান্ত সহচরদের কেউ কেউ এখন ডিনার পার্টিতে খোলাখুলিভাবে বলছেন, বেনজিরের হত্যাকাণ্ডে সামরিক বাহিনীর সম্পৃক্ত থাকার সাক্ষ্যপ্রমাণ আছে। আসলেই যদি প্রমাণ থাকে, তাহলে তা দেখানো হোক। আগামী দিনে কী ঘটতে যাচ্ছে, তার আরও এক ইঙ্গিত পাওয়া গেল আইএসআই-ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক দলগুলো সম্প্রতি হঠাৎ করে কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘটনায়। সমর্থন ফিরিয়ে নেওয়ার সময় শাসক দলের ঔদাসীন্য ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়। অভিযোগ সত্য, তবে একেবারে নতুন কোনো ব্যাপার তো নয়।
দুর্নীতিপরায়ণ, অযোগ্য ও অক্ষম বেসামরিক সরকারের প্রতি জনঅসন্তোষ সামরিক অভ্যুত্থানের আরেকটি আবশ্যিক শর্ত। অসন্তোষ এখন চরমে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশ বিপর্যস্ত হওয়ার পাশাপাশি আছে আঞ্চলিক লড়াই, নির্যাতন, অপরাধ, নিত্যপণ্যের বিরাট মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, মৌলিক সেবা খাতগুলো ভেঙে পড়া—প্রধান প্রধান নগরে একটানা কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। ছোট শহরে তেলের বাতির চাহিদা বাড়ছে—অনেক সময় গ্যাস ও বিদ্যুৎ থাকে না ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত। ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’-এর গতি পরিবর্তনের অংশ হিসেবে সম্প্রতি আইএমএফ আরোপিত ঋণের শর্তাবলির ফলস্বরূপ কয়েকটি নগরে জ্বালানির মূল্য বেড়ে যাওয়ায় দাঙ্গা লেগে গেছে। এর সঙ্গে যোগ করুন জারদারির অনিয়ন্ত্রিত লোভ-লালসা আর তাঁর দাসানুদাসদের প্রভুকে অনুকরণ করার দুর্দমনীয় বাসনা। পাকিস্তানে আজ দুর্বৃত্ততন্ত্র কায়েম হয়েছে।
এর চেয়ে খারাপ কিছু ঘটা কি সম্ভব? হ্যাঁ, সব ক্ষেত্রেই সম্ভব। আফ-পাক যুদ্ধের কথাই ধরুন। যুদ্ধের তীব্রতা বৃদ্ধি পাকিস্তানকে আরও অস্থিতিশীল করেছে, এ ব্যাপারে দ্বিমত করার লোক এখন বিশেষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। যুদ্ধের ফলে আত্মঘাতী বোমারু বাড়ছে। পাকিস্তানের প্রতি সিআইএর নতুন বছরের বার্তা হয়ে এল উত্তর ওয়াজিরিস্তানে তিনটি ড্রোন (মানবহীন বিমান দিয়ে পরিচালিত) হামলা। মারা পড়ল ১৯ জন। ২০১০ সালে ড্রোন হামলা ঘটেছে ১১৬টি, প্রেসিডেন্ট ওবামার প্রথম বছরের দ্বিগুণ। পাকিস্তানের পত্রিকা ডন ও নিউজ দাবি করেছে, গত পাঁচ বছরে এসব হামলায় যত মানুষ মারা গেছে, তাদের ৯৮ শতাংশই বেসামরিক ব্যক্তি। আর মোট মৃতের সংখ্যা দুই-তিন হাজারের মধ্যে। এত অধিক হারে বেসামরিক মানুষ মারা যাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন জেনারেল পেট্রোউসের সাবেক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ডেভিড কিলকালেনও।
এখনই ক্ষমতা দখল করা থেকে সামরিক বাহিনী নিবৃত্ত থাকার কারণ, তারা ক্ষমতায় বসলে ড্রোন হামলা বন্ধ করা আর বিদ্রোহ দমনের দায় তাদের ওপরই এসে পড়বে। সামরিক বাহিনীর পক্ষে তা করা সম্ভব নয়। এ কারণে জেনারেলরা হয়তো সবকিছুর দায় বেসামরিক সরকারের ওপর চাপিয়ে যেতে থাকবেন। কিন্তু পরিস্থিতি যদি খারাপের দিকে যায়; জন-অসন্তোষ ও অর্থনৈতিক মরিয়াপনার ক্রমবৃদ্ধির ফলে আরও বড় মাপের বিক্ষোভ তৈরি হয় আর শহরে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে, তখন সামরিক বাহিনী বাধ্য হয়েই হস্তক্ষেপ করবে। তা ছাড়া ওবামা প্রশাসনের হুমকিমতো পাকিস্তান সীমান্ত বরাবর যুক্তরাষ্ট্র যদি প্রটেক্ট-অ্যান্ড-ডেসট্রয় মিশনে সেনা পাঠায়, তখনো পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ক্রিয়া করতে বাধ্য হবে। তা যদি ঘটে, তাহলে সেনাবাহিনীর ভেতরকার ভিন্নমত মোকাবিলায় সেনাবাহিনীর সামনে হয়তো একমাত্র পথ খোলা থাকবে ক্ষমতা দখল করে সেনাসদস্যদের দিকে কালো টাকা ও ঘুষ প্রবাহিত করা (বর্তমানে এ ক্ষেত্রে রাজনীতিবিদদের একচেটিয়া কায়েম আছে)।
এ মাসের শুরুর দিকে কাবুল সফরে গিয়ে মার্কিন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তামন্ত্রী জ্যানেট ন্যাপোলিটানো ঘোষণা দিয়েছেন, ৫২ জন নিরাপত্তা ঘটককে আফ-পাক সীমান্তে পাঠানো হয়েছে, যাদের কাজ হলো মাঠপর্যায়ে আফগান পুলিশ ও নিরাপত্তা ইউনিটগুলোকে প্রশিক্ষণ প্রদান। বিদ্রোহীরা তাতে খুশিই হবে। বিশেষত যেহেতু বিদ্রোহীদের একাংশ এসব ইউনিটের ভেতরে ঢুকে গেছে। ঠিক যেমনটি ঘটেছে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে।
লন্ডন রিভিউ অব বুকস থেকে নেওয়া। ইংরেজি থেকে অনুবাদ: আহসান হাবীব
তারিক আলী: পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ সাংবাদিক।
কাদরি এখন পাকিস্তানের জাতীয় বীর হয়ে ওঠার পথে। প্রথমবার আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় ফুলবর্ষণ করে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান ইসলামাবাদের আইনজীবীরা। তাঁরা বিনা পারিশ্রমিকে তাঁর পক্ষে লড়তে রাজি। কারাগারে ফেরার পথে সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সুযোগ তাঁকে দেয় পুলিশ। টিভি ক্যামেরার সামনে হাত নাড়ার ব্যবস্থাও করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে তাঁর হাতে নিহত ব্যক্তির শেষকৃত্যে লোকের সমাগম ছিল নগণ্য, সব মিলিয়ে দুই হাজারের মতো। ভীতসন্ত্রস্ত প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি আর বহু রাজনীতিবিদ সেখানে যাননি। একদল মোল্লা ঘোষণা করেছিল, কেউ যদি তাসিরের শেষকৃত্যে অংশ নেয়, তাহলে সে ব্লাসফেমির অপরাধে অপরাধী হবে। জানাজা পড়ানোর জন্য কোনো মোল্লাকেই পাওয়া যাচ্ছিল না, এমনকি যারা সরকারি বেতনভুক, তাদেরও। জারদারির আজ্ঞাবহ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিক ঘোষণা করেছেন, কেউ ব্লাসফেমি আইন সংশোধন বা পরিবর্তন করতে চাইলে তাকে কঠোর হাতে মোকাবিলা করা হবে। নিউইয়র্ক টাইমসকে তিনি বলেছেন, কেউ ব্লাসফেমি করলে তাকে তিনি নিজ হাতে গুলি করবেন।
আসিয়া বিবির পক্ষে তাসির সাহসী অবস্থান নিয়েছিলেন। ৪৫ বছর বয়সী আসিয়া পাঞ্জাবি খ্রিষ্টান কৃষক। একটি পানির আধার থেকে পানি খেয়ে আসিয়া পানি দূষিত করেছেন—এই অভিযোগ তুলেছিলেন তাঁর দুই প্রতিবেশী নারী। ঝগড়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে তারা ব্লাসফেমির মিথ্যা অভিযোগ তোলেন। ধর্মীয় গোষ্ঠীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়। তাসিরের দলের অনেকে মনে করেন, আসিয়ার ঘটনা নিয়ে তাসির ভুল সময়ে প্রচারণায় নামেন। কিন্তু পাকিস্তানে এ কাজের জন্য কোনো সময়ই সঠিক সময় নয়। তত দিনে আসিয়া জেলখানায় কাটিয়ে ফেলেছেন ১৮ মাস। গণমাধ্যমে তাঁর দুরবস্থা উঠে আসে। নারীরা তাঁর পক্ষে রাজপথে নেমে আসে। আর ব্লাসফেমি আইন সংশোধনের দাবি তোলেন তাসির ও তাঁর দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা শেরি রেহমান।
তাসির খেয়ালের বশে আসিয়ার বিষয়ে প্রচারণায় নামেননি। তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক এজেন্ডা ‘ধর্মান্ধ মোল্লাদের’ দ্বারা ছিনতাই হয়ে যাক, তা তিনি চান না। তাঁর নিজের জীবনের হুমকিকে পাশে ঠেলে তিনি এগিয়ে যান। আসিয়া যে কারাগারে বন্দী, সেটি তিনি পরিদর্শন করেন। পাঞ্জাবের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো গভর্নর জেলা কারাগারের ভেতরে গেলেন। পরে এক সংবাদ সম্মেলন ডেকে তিনি আসিয়ার প্রতি সংহতি জানান।
তাসিরের ব্যবসায়ীজীবন ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে আমি কখনো বিশেষ মাথা ঘামাইনি। গত ২০ বছর তাঁর সঙ্গে আমার কথাও হয়নি। তবে স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে তাসির ছিলেন আমার এক ঘনিষ্ঠতম বন্ধু। আমরা দুজন আর শাহিদ রেহমান এই তিনজনের সম্পর্ক ছিল অবিচ্ছেদ্য। শাহিদ অত্যন্ত মেধাবী আর বুদ্ধিদীপ্ত আইনজীবী ছিলেন; মদ খেয়ে খেয়ে মরে গেলেন বহু বছর আগে। তাসিরের ছবি যখন টিভি পর্দায় ভেসে ওঠে, তখন আমার সামনে সেই আনন্দমুখর দিনগুলোর স্মৃতি ভেসে ওঠে।
১৯৬০ সাল। দেশ তখন মার্কিনপন্থী সামরিক স্বৈরশাসনের অধীন। সব ধরনের বিরোধিতা নিষিদ্ধ। আমার মা-বাবা বহু দূরে। আমরা তিনজন ১৭ বছর বয়সী তরুণ আমার বাসায়। ঠিক করলাম, কিছু একটা করতে হবে আমাদের। লাল রং কিনলাম। রাত দুইটার দিকে গাড়ি নিয়ে গেলাম ক্যান্টনমেন্ট সেতুর ওপর। সাবধানতার সঙ্গে লিখলাম—‘ইয়াংকি গো হোম’। সুন্দর হোয়াইটওয়াশ করা দেয়ালের গায়ে। সকালবেলা ঘষেমেজে গাড়ি থেকে মুছে ফেললাম রঙের সব চিহ্ন। এ ঘটনার পর কয়েক দিন নগরজুড়ে উত্তেজনা। কোনো খবরের কাগজে আসেনি, কিন্তু সবার মুখে মুখে চাউর হয়ে গেল। কলেজে আমাদের সহপাঠীদের মুখে মুখে এ ঘটনা। পুলিশ ব্যস্ত দোষীদের খুঁজে বের করার কাজে। অবশেষে ধরা পড়ে গেলাম। শাহিদের বাবা তখন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আর আমার খালার বিয়ে হয়েছিল এক জেনারেলের সঙ্গে, যিনি আবার তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও। তাই স্বাভাবিকভাবেই আমরা ছাড়া পেয়ে গেলাম। শুধু সতর্ক করে দেওয়া হলো।
এ ঘটনার দুই বছর আগে (তখনো সামরিক স্বৈরতন্ত্র কায়েম হয়নি) আমরা জানতে পারি, জিমি উইলসন নামের এক আফ্রিকান-আমেরিকানকে এক ডলার চুরির অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে আমরা তিনজনে মিলে মার্কিন কনসুলেটের সামনে বিক্ষোভের আয়োজন করি। বহু বছর পর লন্ডন থেকে লাহোর বিমানযাত্রায় দৈবক্রমে তাসিরের সঙ্গে আমার দেখা হয়। অতীতের নানা বিষয় নিয়ে কথা হয়। সেদিন আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তিনি কেন রাজনীতিতে গেলেন। ব্যবসায়ী হওয়াই কি যথেষ্ট খারাপ কাজ নয়? তিনি বললেন, ‘তুমি কোনো দিন বুঝবে না। ব্যবসায়ীর পাশাপাশি যদি আমি রাজনীতিকও হই, তাহলে তো অনেক অর্থ বাঁচাতে পারব। ঘুষের খরচটা বেঁচে যাবে।’ তাসির চরম নৈরাশ্যবাদী হয়ে পড়েছিলেন। তবে নিজেকেও বিদ্রূপ করার ক্ষমতা তাঁর ছিল। তাঁর মৃত্যু মর্মান্তিক, কিন্তু মহৎ উদ্দেশ্যে। তাঁর দল ও সহকর্মীরা লোক দেখানো শোক করার বদলে তাঁর মৃত্যুতে মানুষের ক্রোধ থাকতে থাকতেই যদি ব্লাসফেমি আইন সংশোধনের সুযোগ কাজে লাগায়, সেটাই সবচেয়ে ভালো হবে। কিন্তু তারা তো পুরো উল্টো পথে চলেছে।
তাসিরকে হত্যার আগেই পাকিস্তান দাঁড়িয়ে ছিল আরেকটি সামরিক ক্ষমতা দখলের দ্বারপ্রান্তে। এই ক্ষমতা দখলের নামটা যদি শুধু তারা পাল্টে ‘সামরিক গণতন্ত্র’-এর মতো কোনো নাম দিতে পারত, তাহলেই হয়তো তাদের জন্য সবকিছু অনেক সহজ হয়ে যেত। গত বছর জেনারেল কায়ানির দায়িত্বের মেয়াদ বাড়ানো হলো। এতে পেন্টাগনের জোরালো সমর্থন ছিল। বলা হচ্ছে, কায়ানির কাছে হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ‘দেশ রক্ষার’ দরখাস্ত যাচ্ছে প্রতিদিন। যাঁরা কায়ানির কাছে আবেদন জানাচ্ছেন, তাঁরা খুব ভালোমতোই জানেন, জারদারিকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় মুসলিম লিগের মনোনীত কাউকে বসালে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটার সম্ভাবনা তেমন নেই। আবেদন-নিবেদনের পাশাপাশি এক বা একাধিক স্তরে আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙে পড়ার (পেশোয়ারে আত্মঘাতী হামলা, করাচিতে সহিংস জাতিগত হত্যাকাণ্ড) সংবাদের পরপর সাধারণত সংবাদ আসে যে অনিচ্ছুক জেনারেল জনতার চাপ অগ্রাহ্য করে বসে থাকতে আর পারেন না এবং নিরুপায় মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে উর্দি পরা এক প্রেসিডেন্ট ক্ষমতাসীন হন। আমরা চারবার এ অবস্থা দেখেছি। দেশকে এগিয়ে নিতে সামরিক বাহিনী একবারও সফল হয়নি। সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করলে শুধু একটাই বদল ঘটে, রাজনীতিকদের জায়গায় সামরিক কর্মকর্তাদের ঘরে যায় ভাগের ফসল। সামরিক হস্তক্ষেপের হুমকিকে সরকার স্পষ্টতই গুরুতর মনে করে। জারদারির একান্ত সহচরদের কেউ কেউ এখন ডিনার পার্টিতে খোলাখুলিভাবে বলছেন, বেনজিরের হত্যাকাণ্ডে সামরিক বাহিনীর সম্পৃক্ত থাকার সাক্ষ্যপ্রমাণ আছে। আসলেই যদি প্রমাণ থাকে, তাহলে তা দেখানো হোক। আগামী দিনে কী ঘটতে যাচ্ছে, তার আরও এক ইঙ্গিত পাওয়া গেল আইএসআই-ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক দলগুলো সম্প্রতি হঠাৎ করে কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘটনায়। সমর্থন ফিরিয়ে নেওয়ার সময় শাসক দলের ঔদাসীন্য ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়। অভিযোগ সত্য, তবে একেবারে নতুন কোনো ব্যাপার তো নয়।
দুর্নীতিপরায়ণ, অযোগ্য ও অক্ষম বেসামরিক সরকারের প্রতি জনঅসন্তোষ সামরিক অভ্যুত্থানের আরেকটি আবশ্যিক শর্ত। অসন্তোষ এখন চরমে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশ বিপর্যস্ত হওয়ার পাশাপাশি আছে আঞ্চলিক লড়াই, নির্যাতন, অপরাধ, নিত্যপণ্যের বিরাট মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, মৌলিক সেবা খাতগুলো ভেঙে পড়া—প্রধান প্রধান নগরে একটানা কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। ছোট শহরে তেলের বাতির চাহিদা বাড়ছে—অনেক সময় গ্যাস ও বিদ্যুৎ থাকে না ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত। ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’-এর গতি পরিবর্তনের অংশ হিসেবে সম্প্রতি আইএমএফ আরোপিত ঋণের শর্তাবলির ফলস্বরূপ কয়েকটি নগরে জ্বালানির মূল্য বেড়ে যাওয়ায় দাঙ্গা লেগে গেছে। এর সঙ্গে যোগ করুন জারদারির অনিয়ন্ত্রিত লোভ-লালসা আর তাঁর দাসানুদাসদের প্রভুকে অনুকরণ করার দুর্দমনীয় বাসনা। পাকিস্তানে আজ দুর্বৃত্ততন্ত্র কায়েম হয়েছে।
এর চেয়ে খারাপ কিছু ঘটা কি সম্ভব? হ্যাঁ, সব ক্ষেত্রেই সম্ভব। আফ-পাক যুদ্ধের কথাই ধরুন। যুদ্ধের তীব্রতা বৃদ্ধি পাকিস্তানকে আরও অস্থিতিশীল করেছে, এ ব্যাপারে দ্বিমত করার লোক এখন বিশেষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। যুদ্ধের ফলে আত্মঘাতী বোমারু বাড়ছে। পাকিস্তানের প্রতি সিআইএর নতুন বছরের বার্তা হয়ে এল উত্তর ওয়াজিরিস্তানে তিনটি ড্রোন (মানবহীন বিমান দিয়ে পরিচালিত) হামলা। মারা পড়ল ১৯ জন। ২০১০ সালে ড্রোন হামলা ঘটেছে ১১৬টি, প্রেসিডেন্ট ওবামার প্রথম বছরের দ্বিগুণ। পাকিস্তানের পত্রিকা ডন ও নিউজ দাবি করেছে, গত পাঁচ বছরে এসব হামলায় যত মানুষ মারা গেছে, তাদের ৯৮ শতাংশই বেসামরিক ব্যক্তি। আর মোট মৃতের সংখ্যা দুই-তিন হাজারের মধ্যে। এত অধিক হারে বেসামরিক মানুষ মারা যাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন জেনারেল পেট্রোউসের সাবেক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ডেভিড কিলকালেনও।
এখনই ক্ষমতা দখল করা থেকে সামরিক বাহিনী নিবৃত্ত থাকার কারণ, তারা ক্ষমতায় বসলে ড্রোন হামলা বন্ধ করা আর বিদ্রোহ দমনের দায় তাদের ওপরই এসে পড়বে। সামরিক বাহিনীর পক্ষে তা করা সম্ভব নয়। এ কারণে জেনারেলরা হয়তো সবকিছুর দায় বেসামরিক সরকারের ওপর চাপিয়ে যেতে থাকবেন। কিন্তু পরিস্থিতি যদি খারাপের দিকে যায়; জন-অসন্তোষ ও অর্থনৈতিক মরিয়াপনার ক্রমবৃদ্ধির ফলে আরও বড় মাপের বিক্ষোভ তৈরি হয় আর শহরে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে, তখন সামরিক বাহিনী বাধ্য হয়েই হস্তক্ষেপ করবে। তা ছাড়া ওবামা প্রশাসনের হুমকিমতো পাকিস্তান সীমান্ত বরাবর যুক্তরাষ্ট্র যদি প্রটেক্ট-অ্যান্ড-ডেসট্রয় মিশনে সেনা পাঠায়, তখনো পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ক্রিয়া করতে বাধ্য হবে। তা যদি ঘটে, তাহলে সেনাবাহিনীর ভেতরকার ভিন্নমত মোকাবিলায় সেনাবাহিনীর সামনে হয়তো একমাত্র পথ খোলা থাকবে ক্ষমতা দখল করে সেনাসদস্যদের দিকে কালো টাকা ও ঘুষ প্রবাহিত করা (বর্তমানে এ ক্ষেত্রে রাজনীতিবিদদের একচেটিয়া কায়েম আছে)।
এ মাসের শুরুর দিকে কাবুল সফরে গিয়ে মার্কিন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তামন্ত্রী জ্যানেট ন্যাপোলিটানো ঘোষণা দিয়েছেন, ৫২ জন নিরাপত্তা ঘটককে আফ-পাক সীমান্তে পাঠানো হয়েছে, যাদের কাজ হলো মাঠপর্যায়ে আফগান পুলিশ ও নিরাপত্তা ইউনিটগুলোকে প্রশিক্ষণ প্রদান। বিদ্রোহীরা তাতে খুশিই হবে। বিশেষত যেহেতু বিদ্রোহীদের একাংশ এসব ইউনিটের ভেতরে ঢুকে গেছে। ঠিক যেমনটি ঘটেছে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে।
লন্ডন রিভিউ অব বুকস থেকে নেওয়া। ইংরেজি থেকে অনুবাদ: আহসান হাবীব
তারিক আলী: পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ সাংবাদিক।
No comments