স্বপ্নবৃক্ষ by মোঃ মাহবুবুল হক ওসমানী
স্বপ্নটা ঠিক কখন দানা বাঁধতে শুরু করেছিল, দিনক্ষণ হিসাবে সেটি মনে করতে পারব না। তবে স্বপ্নের শুরুটা এইচএসসি পরীক্ষার পরপরই মনে জাগে। যে ছোট্ট গাঁয়ে জন্ম নিয়েছি সেখানকার কেউই সে সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ূয়া ছিল না। তাই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি কিংবা ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি বিষয়ে ভর্তি হয়েও সেখানে
পড়া হলো না। প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব বলে ভর্তি হলাম গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে। যেন স্বপ্নের বীজ রোপিত হলো। এরপর শুরু হলো সে বীজের যত্ন নেওয়া। একটু একটু করে সে বীজে সার-পানি দিয়ে পরিচর্যা করা। নিয়মিত ক্লাস করা, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া, বিতর্ক কিংবা আবৃত্তি সংঘে অংশ নিয়ে নিজেকে ঝালিয়ে তোলা_ এসবই যেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকে আরও বেশি সার্থক করে তুলল। বিজ্ঞান বিভাগে পড়ে এসে এখানে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে পড়াটাকে প্রথম দিকে একটু বেমানান লাগত। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় সবকিছুর সঙ্গেই নিজেকে মানিয়ে নিতে পেরেছি। আর সেটা পেরেছি বলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা থেকে শুরু করে সবকিছুর প্রতিই এক ধরনের ভালোবাসা জন্ম নিল। স্বপ্নের সে বীজ থেকে অঙ্কুরিত চারাটি তখন ডালপালা ছড়িয়ে বড় একটি বটবৃক্ষ হওয়ার আগাম জানান দিচ্ছিল।
টিএসসি চত্বর, ডাকসু, মধুর ক্যান্টিন, হাকিম চত্বর, বসুনিয়ার চায়ের দোকান কিংবা কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারকে মনে হতে লাগল যেন নিজেরই বাড়ির আঙিনা। জহুরুল হক হলের পুকুর পাড়ের গাছের ছায়ায় বসে প্রকৃতির সঙ্গে মিলিয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান আহরণ করাটাও যেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাজীবনের অংশ হয়ে উঠেছিল। আর এই গণযোগাযোগ পড়তে গিয়ে 'যোগাযোগ' নামক শিশুটি কীভাবে পূর্ণতা পেল সেটি দেখেছিলাম। ঠিক তেমনিভাবেই আমার স্বপ্নের চারাটিও শিশু থেকে পূর্ণতা পাচ্ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে দীর্ঘ একটা সময় বন্ধুদের সঙ্গে কাটিয়েছি অপরাজেয় বাংলার সামনের ঘাসের বুকে। একসঙ্গে পড়াশোনা কিংবা ক্লাসের কোনো অ্যাসাইনমেন্ট তৈরির কাজে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটেছে এখানে। মনে পড়ে ২০০৭ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কথা। ২৮ অক্টোবরে রাজনৈতিক কোন্দলের কারণে ঈদের ছুটিতে বন্ধ থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস চালু হতে বেশ খানিকটা সময় নিল। তাই ছুটিতে বাড়ি গিয়েও ফিরতে হলো অনেক দিন পরে। একইভাবে ২০০৮ সালের ২০ আগস্ট দ্বিতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার শুরুর দিনটিতেই সেনাবাহিনীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হলো। পরিণতি আবারও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা। এক বছরের জায়গায় দ্বিতীয় বর্ষ শেষ হতে সময় লাগল দেড় বছর। তবে এরপরে আর সেশনজটে আটকে পড়ে থাকতে হয়নি। ২০০৫ সালের এপ্রিল মাসে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু করে সম্মান পরীক্ষায় অংশ নিলাম ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে। আর মাস্টার্স পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলো ২০১১ সালের এপ্রিলে।
স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর উভয় পরীক্ষাতেই কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে সমাপনী ঘটল বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার। কিন্তু আজও কোনো এক মায়ার বাঁধনে এখনও ছুটে আসি এখানে। বিগত ৫-৬টি বছর যেন কোনো এক অদৃশ্য ভালোবাসা আর মমতার জালে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা পড়ে গেছি। এ মায়ার বাঁধন কখনোই ছিন্ন হওয়ার নয়।
এখন আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবর্তনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটতে চলেছে। কিন্তু এই সমাপ্তি কেবল কাগজে-কলমে। স্বপ্নের বৃক্ষে এখন পুষ্পকলিদের মিলনমেলা। সেখানে আজ রঙবেরঙের বিহঙ্গের মুখরিত সুরের গুঞ্জরন। সমাবর্তনেও যেন সেসব স্বপ্ন সারথির মিলনমেলা। স্বপ্নের পুষ্পকলিদের সুরভি আজ তাই ছড়িয়ে পড়েছে বাংলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
স্নাতক : ২০০৪-০৫ (প্রথম শ্রেণীতে প্রথম) স্নাতকোত্তর : ২০০৮-০৯ (প্রথম শ্রেণীতে প্রথম) স্বর্ণপদক : আবুল মনসুর আহমদ স্বর্ণপদক এবং মসুদ খান স্ট্রাস্টের দিল নওশীন খানম স্মৃতি স্বর্ণপদক
টিএসসি চত্বর, ডাকসু, মধুর ক্যান্টিন, হাকিম চত্বর, বসুনিয়ার চায়ের দোকান কিংবা কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারকে মনে হতে লাগল যেন নিজেরই বাড়ির আঙিনা। জহুরুল হক হলের পুকুর পাড়ের গাছের ছায়ায় বসে প্রকৃতির সঙ্গে মিলিয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান আহরণ করাটাও যেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাজীবনের অংশ হয়ে উঠেছিল। আর এই গণযোগাযোগ পড়তে গিয়ে 'যোগাযোগ' নামক শিশুটি কীভাবে পূর্ণতা পেল সেটি দেখেছিলাম। ঠিক তেমনিভাবেই আমার স্বপ্নের চারাটিও শিশু থেকে পূর্ণতা পাচ্ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে দীর্ঘ একটা সময় বন্ধুদের সঙ্গে কাটিয়েছি অপরাজেয় বাংলার সামনের ঘাসের বুকে। একসঙ্গে পড়াশোনা কিংবা ক্লাসের কোনো অ্যাসাইনমেন্ট তৈরির কাজে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটেছে এখানে। মনে পড়ে ২০০৭ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কথা। ২৮ অক্টোবরে রাজনৈতিক কোন্দলের কারণে ঈদের ছুটিতে বন্ধ থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস চালু হতে বেশ খানিকটা সময় নিল। তাই ছুটিতে বাড়ি গিয়েও ফিরতে হলো অনেক দিন পরে। একইভাবে ২০০৮ সালের ২০ আগস্ট দ্বিতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার শুরুর দিনটিতেই সেনাবাহিনীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হলো। পরিণতি আবারও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা। এক বছরের জায়গায় দ্বিতীয় বর্ষ শেষ হতে সময় লাগল দেড় বছর। তবে এরপরে আর সেশনজটে আটকে পড়ে থাকতে হয়নি। ২০০৫ সালের এপ্রিল মাসে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু করে সম্মান পরীক্ষায় অংশ নিলাম ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে। আর মাস্টার্স পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলো ২০১১ সালের এপ্রিলে।
স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর উভয় পরীক্ষাতেই কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে সমাপনী ঘটল বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার। কিন্তু আজও কোনো এক মায়ার বাঁধনে এখনও ছুটে আসি এখানে। বিগত ৫-৬টি বছর যেন কোনো এক অদৃশ্য ভালোবাসা আর মমতার জালে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা পড়ে গেছি। এ মায়ার বাঁধন কখনোই ছিন্ন হওয়ার নয়।
এখন আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবর্তনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটতে চলেছে। কিন্তু এই সমাপ্তি কেবল কাগজে-কলমে। স্বপ্নের বৃক্ষে এখন পুষ্পকলিদের মিলনমেলা। সেখানে আজ রঙবেরঙের বিহঙ্গের মুখরিত সুরের গুঞ্জরন। সমাবর্তনেও যেন সেসব স্বপ্ন সারথির মিলনমেলা। স্বপ্নের পুষ্পকলিদের সুরভি আজ তাই ছড়িয়ে পড়েছে বাংলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
স্নাতক : ২০০৪-০৫ (প্রথম শ্রেণীতে প্রথম) স্নাতকোত্তর : ২০০৮-০৯ (প্রথম শ্রেণীতে প্রথম) স্বর্ণপদক : আবুল মনসুর আহমদ স্বর্ণপদক এবং মসুদ খান স্ট্রাস্টের দিল নওশীন খানম স্মৃতি স্বর্ণপদক
No comments