রাজনৈতিক দলগুলোর মতৈক্য জরুরি-ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অবৈধ ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ প্রধানত দুটি অভিমত ব্যক্ত করেছেন। প্রথমত, আগামী দুটি নির্বাচন এ ব্যবস্থার অধীনে অনুষ্ঠিত হতে পারে। কারণ আইনের বহু পুরোনো নীতি হচ্ছে কোনো কিছু বেআইনি হলেও প্রয়োজনের তাগিদে তা আইনসম্মত। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও জনগণের নিরাপত্তাই হচ্ছে সর্বোচ্চ আইন।
দ্বিতীয়ত, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের প্রধান উপদেষ্টার পদে নিয়োগের বিধান সংশোধনের স্বাধীনতা সংসদের রয়েছে। অভিজ্ঞতা বলে, সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করার বিধান থাকলে বিচার বিভাগ পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ার আশঙ্কা জন্মে। সুতরাং সংসদে এই বিধান সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়াই যৌক্তিক।
সরকারি দল আওয়ামী লীগ উচ্চ আদালতের ব্যতিক্রমী এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে। বিশিষ্ট আইনজীবীদের অনেকে মোটামুটি সমর্থনসূচক মন্তব্য করেছেন। কিন্তু বিএনপি এই রায় প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা মনে করে, এমন রায়ে রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হবে। এটা পরিষ্কার যে এই রায়ের ব্যাপারে দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলে আপাতত মতৈক্য নেই। বিষয়টি বিশেষ বিবেচনার দাবি রাখে।
বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার অধীনে বিগত তিনটি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে দেশে ও বিদেশে সমাদৃত হয়েছে। কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচন বিলম্বিত হয়েছে এবং সে সময় ‘সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ কায়েম ও জরুরি আইন জারি হওয়ায় ব্যবস্থাটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংশোধন বা সংস্কারের বাস্তব প্রয়োজন এখান থেকেই এসেছে।
গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতাই মূল কথা। এ জন্য সব পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রয়োজন। এর প্রধান শর্ত হলো নির্বাচন কমিশনকে যথেষ্ট শক্তিশালী করা। এখন নির্বাচন কমিশন আগের তুলনায় অনেক শক্তিশালী হলেও এখনো অনেক কিছু করা বাকি। অন্যদিকে, রাজনৈতিক দলগুলোকে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চাও বাড়াতে হবে। দলের কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা ছাড়া গণতন্ত্র সাবলীল হবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতার পরিবেশ গড়ে না উঠলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে না—তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা থাকুক বা না থাকুক।
১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী সংসদে গৃহীত হয়েছিল দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মতৈক্যের ভিত্তিতে। দেশবাসীরও তাতে সমর্থন ছিল। এর আগে ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে স্বৈরশাসনবিরোধী গণ-অভ্যুত্থানের পটভূমিতে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছিল নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং তার অধীনে অনুষ্ঠিত হয় সুষ্ঠু নির্বাচন। সুতরাং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার পেছনে রাজনৈতিক দলগুলোর মতৈক্য ও জনসমর্থনই ছিল মুখ্য। সুতরাং এখন সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল বা সংশোধনের ক্ষেত্রে অন্তত মূল রাজনৈতিক দলগুলোর মতৈক্য জরুরি। এটি না হলে যেকোনো পদক্ষেপ, তা আপাতবিচারে যত ভালোই হোক, বাস্তবে কাজে দেবে না। সংসদকে বিষয়টি সব সময় মনে রাখতে হবে।
সরকারি দল আওয়ামী লীগ উচ্চ আদালতের ব্যতিক্রমী এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে। বিশিষ্ট আইনজীবীদের অনেকে মোটামুটি সমর্থনসূচক মন্তব্য করেছেন। কিন্তু বিএনপি এই রায় প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা মনে করে, এমন রায়ে রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হবে। এটা পরিষ্কার যে এই রায়ের ব্যাপারে দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলে আপাতত মতৈক্য নেই। বিষয়টি বিশেষ বিবেচনার দাবি রাখে।
বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার অধীনে বিগত তিনটি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে দেশে ও বিদেশে সমাদৃত হয়েছে। কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচন বিলম্বিত হয়েছে এবং সে সময় ‘সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ কায়েম ও জরুরি আইন জারি হওয়ায় ব্যবস্থাটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংশোধন বা সংস্কারের বাস্তব প্রয়োজন এখান থেকেই এসেছে।
গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতাই মূল কথা। এ জন্য সব পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রয়োজন। এর প্রধান শর্ত হলো নির্বাচন কমিশনকে যথেষ্ট শক্তিশালী করা। এখন নির্বাচন কমিশন আগের তুলনায় অনেক শক্তিশালী হলেও এখনো অনেক কিছু করা বাকি। অন্যদিকে, রাজনৈতিক দলগুলোকে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চাও বাড়াতে হবে। দলের কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা ছাড়া গণতন্ত্র সাবলীল হবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতার পরিবেশ গড়ে না উঠলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে না—তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা থাকুক বা না থাকুক।
১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী সংসদে গৃহীত হয়েছিল দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মতৈক্যের ভিত্তিতে। দেশবাসীরও তাতে সমর্থন ছিল। এর আগে ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে স্বৈরশাসনবিরোধী গণ-অভ্যুত্থানের পটভূমিতে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছিল নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং তার অধীনে অনুষ্ঠিত হয় সুষ্ঠু নির্বাচন। সুতরাং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার পেছনে রাজনৈতিক দলগুলোর মতৈক্য ও জনসমর্থনই ছিল মুখ্য। সুতরাং এখন সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল বা সংশোধনের ক্ষেত্রে অন্তত মূল রাজনৈতিক দলগুলোর মতৈক্য জরুরি। এটি না হলে যেকোনো পদক্ষেপ, তা আপাতবিচারে যত ভালোই হোক, বাস্তবে কাজে দেবে না। সংসদকে বিষয়টি সব সময় মনে রাখতে হবে।
No comments