কালান্তরের কড়চা-একজন লড়াকু অনুজপ্রতিম কলামিস্টকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা by আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
আজ ২৪ মে। আমার এক অনুজপ্রতিম কলামিস্টের জন্মদিন। প্রথমেই তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাই এবং দীর্ঘজীবন কামনা করছি। তাঁকে কেবল কলামিস্ট বললে সবটা পরিচয় দেওয়া হয় না। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ইতিহাসবিদ এবং লড়াকু রাজনৈতক কলামিস্ট।
এতগুলো পরিচয় দ্বারা যিনি সমৃদ্ধ তিনি আমার চেয়ে বয়সে অনেক ছোট হলেও তাঁকে নিয়ে তাঁর জন্মদিনে কিছুটা আলোচনা করা নিজের কর্তব্য মনে করি। কারণ এ ধরনের আলোচনা কোনো ব্যক্তিকেন্দ্রিক আলোচনা আর থাকে না। হয়ে ওঠে দেশের রাজনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতি নিয়েও বৃহত্তর পরিধির আলোচনা। আজ যাঁর জন্মদিনকে কেন্দ্র করে লিখছি, তিনি একজন সংস্কৃতিমনা মানুষও।
বাংলাদেশের পোস্ট ইনডিপেনডেন্টস সাংবাদিকতায় আমি অনেকের মধ্যে যে তিনজন অনুজপ্রতিম তরুণ বন্ধুকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিই, তাঁরা হলেন ড. মুনতাসীর মামুন, আবেদ খান এবং চট্টগ্রামের আবুল মোমেন। এঁরা লেখনী শক্তি বা পাণ্ডিত্যে তাঁদের সমসাময়িক অন্যান্য কলামিস্টের চেয়ে অনেক বড়, সে কথা আমি বলছি না। কিন্তু সাহস, নীতিনিষ্ঠা ও সত্য প্রকাশে তাঁরা যে অকুতোভয় ও অতুলনীয়_এ কথা আমার একার বলার দরকার নেই। দেশের সংবাদপত্র পাঠকমাত্রই এ কথা জানেন।
কয়েক বছর আগে এই 'থ্রি মাস্কোটিয়ার্সের' নামে আমার একটি বই উৎসর্গ করেছিলাম। এঁদের লেখা দেশের যেকোনো কাগজেই বের হোক আমি খুঁজে-পেতে পড়ি। আবেদ খান এককালে ছিলেন দুর্ধর্ষ ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টার, প্রতিবেদক ও কলামিস্ট। তাঁর প্রতিবেদন 'টক অব দ্য টাউন', কলাম 'কালের কণ্ঠ' একসময় বাজারে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিল। এখন তিনি একটি দৈনিকের সম্পাদক। লেখার চেয়ে সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বেশি। আবুল মোমেনও একটি জাতীয় দৈনিকের চট্টগ্রাম ব্যুরোর কর্তা। তাঁর লেখায় যুক্তি ও তর্কের যে সমারোহ তা পাঠকের মনকে আবিষ্ট করে, অন্তত আমাকে তো করেই। কিন্তু আবুল মোমেনও এখন বেশি লিখেন না।
এই তিনজনর মধ্যে ড. মুনতাসীর মামুনই এখন পর্যন্ত অক্লান্ত এবং বেপরোয়া। তিনি জানেন, কলমকে কী করে তলোয়ারের মতো ব্যবহার করতে হয়। আর সেই কলম আবার নির্ভীক দেশপ্রেম দ্বারা অভিষিক্ত। আজ ২৪ মে তাঁরই জন্মদিন। মামুন ৬০ বছরে পা দিলেন। মামুন, মোমেন, আবেদ_এই তিনজনই সমবয়সী অথবা কাছাকাছি বয়সের হবেন। আমি তাঁদের নামের আগে তরুণ কথাটি যুক্ত করতে এখনো ভুলি না। বাংলাদেশে এককালে ছিল পুরুষের জন্য চলি্লশেই বানপ্রস্থ এবং নারীদের জন্য কুড়িতেই বুড়ি হওয়ার প্রবাদ। সে যুগটা এখন আর নেই। আমার এই তিন অনুজপ্রতীম বন্ধু চেহারায়, লেখনিতে বা সাহসিকতায় প্রৌঢ়ত্বের দুয়ারেও পা দেননি। আমি তাঁদের জন্মদিনে এটি প্রার্থনাই করি, অমিতায়ু হও। বাংলাদেশে তোমাদের লেখনি আরো দীর্ঘকাল দরকার। কারো লেখনিতে দেশপ্রেমের সঙ্গে সাহস ও সততা যোগ হলে যা হয়, আমার বর্ণিত তিনজন শক্তিশালী কলামিস্টের মধ্যে তা আছে। আরো অনেকের মধ্যে আছে। তাঁদের নিয়ে আজ আলোচনা করছি না।
আমার লেখার যাঁরা প্রশংসা করেন (নিন্দুকেরা নন), তাঁরা বলেন, আমি খুব সাহসী কলামিস্ট। কথাটা সঠিক নয়। ব্যক্তিগত জীবনে আমি খুব ভীরু। দেশের বাইরে আছি এবং খালেদা-নিজামীর লেঠেলদের নাগালের বাইরে আছি বলে কলমে সাহস আছে। কিন্তু 'জাহান্নামের আগুনে বসে' মুনতাসীর মামুনরা কী করে নির্ভয়ে 'পুষ্পের হাসি' হাসেন, তা আমি জানি না। খালেদা-নিজামীর গত জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশে অসংখ্য সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী নির্যাতনের নৃশংসতা হিটলারের গেস্টাপো শিবিরের কাহিনীকে হার মানায়। এই আমলে বহু সাংবাদিক, রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়েছে। মুনতাসীর মামুনরা যে প্রাণে বেঁচে গেছেন, এটা একটা বিরাট ব্যাপার।
আমি তখন দেশে ছিলাম না। ঢাকার কাগজে খবরগুলো পড়েই ভয়ে শিহরিত হয়েছি। আবেদ খান তখন সম্পাদক নন, কেবল কলামিস্ট। এক দিন ঢাকার এক শপিং মলে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁকে ধাওয়া করল জামায়াত-শিবিরের একদল সশস্ত্র ক্যাডার। আবেদ খানকে ম্যারাথন দৌড় দিয়ে প্রাণ বাঁচাতে হয়েছিল। চট্টগ্রামে আবুল মোমেন যে দৈনিকটির ব্যুরোপ্রধান, তার একটি অফিসে আগুন লাগানো হয়েছিল। প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি তো ছিলই। আর মুনতাসীর মামুনকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করে জেলে নিয়ে ডাকাত ও খুনিদের নোংরা সেলে রেখে তৃতীয় শ্রেণীর কয়েদির মতো তাঁর সঙ্গে আচরণ করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, সর্বজন পরিচিত বুদ্ধিজীবী, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট মামুনকে ময়মনসিংহের এক সিনেমা হলে আগুন লাগানোর মতো মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে, জামিন না দিয়ে, নৃশংস খুনি ও সন্ত্রাসীদের সেলে নোংরা পরিবেশে দিনের পর দিন রেখে যে নির্যাতনের শিকার করা হয়েছে, তা কোনো সভ্য ও গণতান্ত্রিক দেশে কি সম্ভব? মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ধ্যানধারণার অনুসারী হওয়ায় শুধু ড. মুনতাসীর মামুনকে নয়, তাঁর প্রায় গোটা পরিবারকেই নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষতা ও মানবাধিকার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত আরো অনেক সাংবাদিক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীকে গ্রেপ্তার হয়ে শারীরিক ও মানসিক দুই ধরনের নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। কেউ কেউ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
মুনতাসীর মামুনের লেখা আমি সুযোগ পেলেই পড়ি। তাঁর লেখা আমাকে ইতিহাস শেখায়, সঠিক ও অনেক অজানা তথ্য জানায় এবং সাহস জোগায়। দেশের রাজনীতিতে হিংস্র মৌলবাদের তাণ্ডব এবং গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে অনৈক্য ও দুর্বলতা দেখে যখন হতাশা বোধ করি তখন তাঁর লেখা আশা জাগ্রত করে। তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, জহুর হোসেন চৌধুরী, আবদুস সালাম, কাজী ইদরিস প্রমুখ সম্পাদক ও কলামিস্টের মৃত্যুর পর পোস্ট ইন্ডিপেন্ডেন্স বাংলাদেশের সাহসী সাংবাদিকতায় যে বিরাট শূন্যতা দেখা দিয়েছিল তা পরবর্তীকালে পঞ্চাশের দশকের অবশিষ্ট দুই-একজন কলামিস্ট (বর্তমানে প্রবীণ) পূরণ করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সেই বিরাট শূন্যতা পূরণে মামুনদের মতো তরুণ প্রজন্মের হাতেগোনা কয়েকজন কলামিস্ট সেই সামরিক ও স্বৈরাচারী শাসনামলে দুর্জয় সাহস নিয়ে এগিয়ে না এলে নব্য ফ্যাসিস্টকবলিত বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ক্ষুদ্র দীপশিখাও জ্বলে উঠতে পারত কি না সন্দেহ।
মানিক মিয়া, জহুর চৌধুরী প্রমুখ কিংবদন্তিতুল্য সম্পাদক পাকিস্তান আমলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, নাগরিক অধিকার, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সর্বোপরি অসাম্প্রদায়িক দেশ ও সমাজ গড়ার লক্ষ্যে বিদেশি শাসকদের সঙ্গে লড়াই করেছেন এবং নির্যাতিত হয়েছেন। একই নাগরিক অধিকার ও গণঅধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সেক্যুলার ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দেশের তরুণ প্রজন্মের সাহসী কলামিস্টরা, বিশেষ করে মামুন, আবেদ, মোমেনরাও লড়াই করেছেন স্বদেশি শাসকদের সঙ্গে। তবে এই স্বদেশি শাসকদের (মৌলবাদী জামায়াত এবং তথাকথিত জাতীয়তাবাদী বিএনপি) হিংস্রতা ও নির্যাতন ছিল আরো ভয়ংকর। সেই ভয়ংকর নির্যাতনের বছরগুলোতে মামুনের মতো যেসব দেশপ্রেমিক এবং সাহসী কলামিস্ট, যাঁরা সব ধরনের নির্যাতন সয়ে দেশের মানুষের মনে আশার বাতি জ্বালিয়ে রেখেছেন, তাঁরা বয়সে আমার ছোট কিংবা বড় হোন, তাঁদের সবাইকে 'আমি করি গো নমস্কার'। ড. মুনতাসীর মামুনকে তাই আজ তাঁর ৬০ বছর বয়সে পা দেওয়ার দিনটিতে বহু দূর থেকে আমার শুভেচ্ছা ও প্রীতি জানালাম।
কেবল মুনতাসীর মামুনের সঙ্গে নয়, তাঁর গোটা পরিবারের সঙ্গে আমার পরিচয় ও সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই পরিচয়ের সূচনা ১৯৫০ সালে, আমি যখন মেট্রিক পরীক্ষা পাস করে ঢাকা কলেজে ভর্তি হই। মামুনের বড় চাচা বোরহানউদ্দীন খান জাহাঙ্গীরও একই সময়ে ঢাকা কলেজে এসে ভর্তি হন। আমরা দুজনেই ছিলাম একই আর্টস সাবজেক্টের ছাত্র এবং সাহিত্যচর্চায় রত। ফলে বন্ধুতা গড়ে উঠতে দেরি হয়নি।
আমি তখন কবিতাও লিখি এবং একজন নবিস কবি। বোরহান ওই কিশোর বয়সেই কবি হিসেবে স্বীকৃত এবং পঞ্চাশের নতুন কবিদের কবিতা নিয়ে 'নতুন কবিতা' নামে যে সঙ্কলন বেরিয়েছে, তাতে বোরহান ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ কবি। সঙ্কলনটি সম্পাদনা করেছিলেন আশরাফ সিদ্দিকী ও আবদুর রশীদ খান। এই গ্রন্থেই কবি শামসুর রাহমান ও কবি হাসান হাফিজুর রহমান এই দুই কবিবন্ধুর পরস্পরকে নিবেদিত কবিতা সঙ্কলিত হয়েছিল।
বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীরের সঙ্গে সেই যে সখ্য ও পরিচয় তা আর কখনো ছিন্ন হয়নি। চিন্তাভাবনায় দুজনেই ছিলাম গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের অনুসারী। ধর্মনিরপেক্ষতায় গভীরভাবে বিশ্বাসী। ফলে আমাদের সম্পর্কে কখনো চিড় ধরার কারণ ঘটেনি।
বাংলাদেশে একই রাজনৈতিক মতাদর্শে অনুপ্রাণিত একটি পরিবারের একাধিক সদস্যের অত্যাচার ও নির্যাতন বরণের উদাহরণ খুব কম। এই ব্যাপারে উল্লেখ করার মতো একটি পরিবার অবশ্যই বোরহান ও মামুনদের পরিবার। বোরহানের বড় ভাই এবং মামুনের বাবা ছিলেন আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং পার্লামেন্ট সদস্যও হয়েছিলেন। তাঁকেও ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ রাজনৈতিক জীবন কাটাতে হয়েছে।
বোরহানও উচ্চশিক্ষা শেষে কিছুকাল সরকারি চাকরি করে পেশা হিসেবে শিক্ষকতা বেছে নেন। কিন্তু কাব্যচর্চা ও সাহিত্যচর্চা অব্যাহত রাখেন। ফলে পঞ্চাশের সামনের সারির কবি ও লেখকদের মধ্যে তিনিও একজন বলে স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত। তিনি একজন নিয়মিত কলাম লেখকও। সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে অনবরত কলম চালনার জন্য তাঁকেও নানাভাবে নিগৃহীত হতে হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের পদ থেকে তাঁকে কর্মজীবন শেষ করে অবসর জীবনে যেতে হয়েছে। তাঁর যোগ্যতা ও দেশসেবায় সাহসী ভূমিকার জন্য তিনি আরো স্বীকৃতি ও সম্মান পেতে পারেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারও সেটা তাঁকে এখন পর্যন্ত দেয়নি।
মামুনের ছোট চাচা ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীরকেও তাঁর কৈশোরকাল থেকেই আমি চিনি। তাঁর কাছ থেকে বড় ভাইয়ের সম্মান ও শ্রদ্ধা আমি পাই। আলমগীর একজন যোগ্য ব্যুরোক্রাট, রাজনীতিক এবং চিন্তাশীল লেখক। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা ও রাজনীতি সম্পর্কে তাঁর লেখা ইংরেজি বইগুলো দেশ-বিদেশে সমানভাবে আদৃত। তাঁর স্বাধীন ও অসাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনা এবং দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সাহসী ভূমিকার জন্য তিনি বিএনপি-জামায়াত জোট শাসন এবং ওয়ান-ইলেভেনের আধাসামরিক শাসনামলেও দারুণভাবে নির্যাতিত হয়েছেন। কিন্তু অশুভ শক্তির কাছে মাথা হেট করেননি।
এই অতুলনীয় পারিবারিক ঐতিহ্যের অধিকারী ড. মুনতাসীর মামুনও। তাঁর কথা আগেই বলেছি। দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও প্রগতিশীল রাজনীতির কোনো আন্দোলন থেকে তাঁকে কখনো দূরে সরে থাকতে দেখা যায়নি। তাঁর বন্ধুমহলটিও তাঁরই মতো। মামুনের বন্ধু শাহরিয়ার কবিরের ঘাতক দালাল নির্মূল ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে কখনো কখনো দুঃসাহসী একলা চলার ভূমিকা আমাকে বিস্মিত করেছে। তবে তাঁর পাশে সবসময় দেখা গেছে মুনতাসীর মামুনকে।
একেবারে সাম্প্রতিককালে ক্ষুদ্রঋণ ব্যবসায়ী এবং নোবেলজয়ী ড. ইউনূসকে কেন্দ্র করে দেশের তথাকথিত সুশীল সমাজ ও দুটি তথাকথিত নিরপেক্ষ মিডিয়া দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করে দেশি-বিদেশি কায়েমী স্বার্থ রক্ষার 'কমিশনপ্রাপ্ত' ভূমিকায় নেমেছিল। তখন মুনতাসীর মামুন ও শাহরিয়ার কবিরের তথ্য ও যুক্তিপূর্ণ ধারাবাহিক লেখা এই বিভ্রান্তি দূর করার ব্যাপারে বিরাট অবদান রেখেছে।
দেশের মানুষের মনে আশা, বিশ্বাস ও সাহস চরম দুর্দিনেও জাগিয়ে রাখার কাজে ড. মুনতাসীর মামুন ও তাঁর সমমনা কলামিস্টরা যে অবদান রাখছেন, সে জন্য অনেকের মতো আমারও কৃতজ্ঞতার অন্ত নেই। তাঁর ৬০ বছরে পা দেওয়ার দিনটিতে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই এবং প্রার্থনা করি, 'তুমি সুস্থ, নিরাপদ, সৃষ্টিশীল দীর্ঘজীবনের অধিকারী হও।'
লন্ডন, ২৩ মে সোমবার, ২০১১
বাংলাদেশের পোস্ট ইনডিপেনডেন্টস সাংবাদিকতায় আমি অনেকের মধ্যে যে তিনজন অনুজপ্রতিম তরুণ বন্ধুকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিই, তাঁরা হলেন ড. মুনতাসীর মামুন, আবেদ খান এবং চট্টগ্রামের আবুল মোমেন। এঁরা লেখনী শক্তি বা পাণ্ডিত্যে তাঁদের সমসাময়িক অন্যান্য কলামিস্টের চেয়ে অনেক বড়, সে কথা আমি বলছি না। কিন্তু সাহস, নীতিনিষ্ঠা ও সত্য প্রকাশে তাঁরা যে অকুতোভয় ও অতুলনীয়_এ কথা আমার একার বলার দরকার নেই। দেশের সংবাদপত্র পাঠকমাত্রই এ কথা জানেন।
কয়েক বছর আগে এই 'থ্রি মাস্কোটিয়ার্সের' নামে আমার একটি বই উৎসর্গ করেছিলাম। এঁদের লেখা দেশের যেকোনো কাগজেই বের হোক আমি খুঁজে-পেতে পড়ি। আবেদ খান এককালে ছিলেন দুর্ধর্ষ ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টার, প্রতিবেদক ও কলামিস্ট। তাঁর প্রতিবেদন 'টক অব দ্য টাউন', কলাম 'কালের কণ্ঠ' একসময় বাজারে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিল। এখন তিনি একটি দৈনিকের সম্পাদক। লেখার চেয়ে সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বেশি। আবুল মোমেনও একটি জাতীয় দৈনিকের চট্টগ্রাম ব্যুরোর কর্তা। তাঁর লেখায় যুক্তি ও তর্কের যে সমারোহ তা পাঠকের মনকে আবিষ্ট করে, অন্তত আমাকে তো করেই। কিন্তু আবুল মোমেনও এখন বেশি লিখেন না।
এই তিনজনর মধ্যে ড. মুনতাসীর মামুনই এখন পর্যন্ত অক্লান্ত এবং বেপরোয়া। তিনি জানেন, কলমকে কী করে তলোয়ারের মতো ব্যবহার করতে হয়। আর সেই কলম আবার নির্ভীক দেশপ্রেম দ্বারা অভিষিক্ত। আজ ২৪ মে তাঁরই জন্মদিন। মামুন ৬০ বছরে পা দিলেন। মামুন, মোমেন, আবেদ_এই তিনজনই সমবয়সী অথবা কাছাকাছি বয়সের হবেন। আমি তাঁদের নামের আগে তরুণ কথাটি যুক্ত করতে এখনো ভুলি না। বাংলাদেশে এককালে ছিল পুরুষের জন্য চলি্লশেই বানপ্রস্থ এবং নারীদের জন্য কুড়িতেই বুড়ি হওয়ার প্রবাদ। সে যুগটা এখন আর নেই। আমার এই তিন অনুজপ্রতীম বন্ধু চেহারায়, লেখনিতে বা সাহসিকতায় প্রৌঢ়ত্বের দুয়ারেও পা দেননি। আমি তাঁদের জন্মদিনে এটি প্রার্থনাই করি, অমিতায়ু হও। বাংলাদেশে তোমাদের লেখনি আরো দীর্ঘকাল দরকার। কারো লেখনিতে দেশপ্রেমের সঙ্গে সাহস ও সততা যোগ হলে যা হয়, আমার বর্ণিত তিনজন শক্তিশালী কলামিস্টের মধ্যে তা আছে। আরো অনেকের মধ্যে আছে। তাঁদের নিয়ে আজ আলোচনা করছি না।
আমার লেখার যাঁরা প্রশংসা করেন (নিন্দুকেরা নন), তাঁরা বলেন, আমি খুব সাহসী কলামিস্ট। কথাটা সঠিক নয়। ব্যক্তিগত জীবনে আমি খুব ভীরু। দেশের বাইরে আছি এবং খালেদা-নিজামীর লেঠেলদের নাগালের বাইরে আছি বলে কলমে সাহস আছে। কিন্তু 'জাহান্নামের আগুনে বসে' মুনতাসীর মামুনরা কী করে নির্ভয়ে 'পুষ্পের হাসি' হাসেন, তা আমি জানি না। খালেদা-নিজামীর গত জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশে অসংখ্য সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী নির্যাতনের নৃশংসতা হিটলারের গেস্টাপো শিবিরের কাহিনীকে হার মানায়। এই আমলে বহু সাংবাদিক, রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়েছে। মুনতাসীর মামুনরা যে প্রাণে বেঁচে গেছেন, এটা একটা বিরাট ব্যাপার।
আমি তখন দেশে ছিলাম না। ঢাকার কাগজে খবরগুলো পড়েই ভয়ে শিহরিত হয়েছি। আবেদ খান তখন সম্পাদক নন, কেবল কলামিস্ট। এক দিন ঢাকার এক শপিং মলে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁকে ধাওয়া করল জামায়াত-শিবিরের একদল সশস্ত্র ক্যাডার। আবেদ খানকে ম্যারাথন দৌড় দিয়ে প্রাণ বাঁচাতে হয়েছিল। চট্টগ্রামে আবুল মোমেন যে দৈনিকটির ব্যুরোপ্রধান, তার একটি অফিসে আগুন লাগানো হয়েছিল। প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি তো ছিলই। আর মুনতাসীর মামুনকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করে জেলে নিয়ে ডাকাত ও খুনিদের নোংরা সেলে রেখে তৃতীয় শ্রেণীর কয়েদির মতো তাঁর সঙ্গে আচরণ করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, সর্বজন পরিচিত বুদ্ধিজীবী, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট মামুনকে ময়মনসিংহের এক সিনেমা হলে আগুন লাগানোর মতো মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে, জামিন না দিয়ে, নৃশংস খুনি ও সন্ত্রাসীদের সেলে নোংরা পরিবেশে দিনের পর দিন রেখে যে নির্যাতনের শিকার করা হয়েছে, তা কোনো সভ্য ও গণতান্ত্রিক দেশে কি সম্ভব? মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ধ্যানধারণার অনুসারী হওয়ায় শুধু ড. মুনতাসীর মামুনকে নয়, তাঁর প্রায় গোটা পরিবারকেই নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষতা ও মানবাধিকার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত আরো অনেক সাংবাদিক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীকে গ্রেপ্তার হয়ে শারীরিক ও মানসিক দুই ধরনের নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। কেউ কেউ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
মুনতাসীর মামুনের লেখা আমি সুযোগ পেলেই পড়ি। তাঁর লেখা আমাকে ইতিহাস শেখায়, সঠিক ও অনেক অজানা তথ্য জানায় এবং সাহস জোগায়। দেশের রাজনীতিতে হিংস্র মৌলবাদের তাণ্ডব এবং গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে অনৈক্য ও দুর্বলতা দেখে যখন হতাশা বোধ করি তখন তাঁর লেখা আশা জাগ্রত করে। তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, জহুর হোসেন চৌধুরী, আবদুস সালাম, কাজী ইদরিস প্রমুখ সম্পাদক ও কলামিস্টের মৃত্যুর পর পোস্ট ইন্ডিপেন্ডেন্স বাংলাদেশের সাহসী সাংবাদিকতায় যে বিরাট শূন্যতা দেখা দিয়েছিল তা পরবর্তীকালে পঞ্চাশের দশকের অবশিষ্ট দুই-একজন কলামিস্ট (বর্তমানে প্রবীণ) পূরণ করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সেই বিরাট শূন্যতা পূরণে মামুনদের মতো তরুণ প্রজন্মের হাতেগোনা কয়েকজন কলামিস্ট সেই সামরিক ও স্বৈরাচারী শাসনামলে দুর্জয় সাহস নিয়ে এগিয়ে না এলে নব্য ফ্যাসিস্টকবলিত বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ক্ষুদ্র দীপশিখাও জ্বলে উঠতে পারত কি না সন্দেহ।
মানিক মিয়া, জহুর চৌধুরী প্রমুখ কিংবদন্তিতুল্য সম্পাদক পাকিস্তান আমলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, নাগরিক অধিকার, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সর্বোপরি অসাম্প্রদায়িক দেশ ও সমাজ গড়ার লক্ষ্যে বিদেশি শাসকদের সঙ্গে লড়াই করেছেন এবং নির্যাতিত হয়েছেন। একই নাগরিক অধিকার ও গণঅধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সেক্যুলার ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দেশের তরুণ প্রজন্মের সাহসী কলামিস্টরা, বিশেষ করে মামুন, আবেদ, মোমেনরাও লড়াই করেছেন স্বদেশি শাসকদের সঙ্গে। তবে এই স্বদেশি শাসকদের (মৌলবাদী জামায়াত এবং তথাকথিত জাতীয়তাবাদী বিএনপি) হিংস্রতা ও নির্যাতন ছিল আরো ভয়ংকর। সেই ভয়ংকর নির্যাতনের বছরগুলোতে মামুনের মতো যেসব দেশপ্রেমিক এবং সাহসী কলামিস্ট, যাঁরা সব ধরনের নির্যাতন সয়ে দেশের মানুষের মনে আশার বাতি জ্বালিয়ে রেখেছেন, তাঁরা বয়সে আমার ছোট কিংবা বড় হোন, তাঁদের সবাইকে 'আমি করি গো নমস্কার'। ড. মুনতাসীর মামুনকে তাই আজ তাঁর ৬০ বছর বয়সে পা দেওয়ার দিনটিতে বহু দূর থেকে আমার শুভেচ্ছা ও প্রীতি জানালাম।
কেবল মুনতাসীর মামুনের সঙ্গে নয়, তাঁর গোটা পরিবারের সঙ্গে আমার পরিচয় ও সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই পরিচয়ের সূচনা ১৯৫০ সালে, আমি যখন মেট্রিক পরীক্ষা পাস করে ঢাকা কলেজে ভর্তি হই। মামুনের বড় চাচা বোরহানউদ্দীন খান জাহাঙ্গীরও একই সময়ে ঢাকা কলেজে এসে ভর্তি হন। আমরা দুজনেই ছিলাম একই আর্টস সাবজেক্টের ছাত্র এবং সাহিত্যচর্চায় রত। ফলে বন্ধুতা গড়ে উঠতে দেরি হয়নি।
আমি তখন কবিতাও লিখি এবং একজন নবিস কবি। বোরহান ওই কিশোর বয়সেই কবি হিসেবে স্বীকৃত এবং পঞ্চাশের নতুন কবিদের কবিতা নিয়ে 'নতুন কবিতা' নামে যে সঙ্কলন বেরিয়েছে, তাতে বোরহান ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ কবি। সঙ্কলনটি সম্পাদনা করেছিলেন আশরাফ সিদ্দিকী ও আবদুর রশীদ খান। এই গ্রন্থেই কবি শামসুর রাহমান ও কবি হাসান হাফিজুর রহমান এই দুই কবিবন্ধুর পরস্পরকে নিবেদিত কবিতা সঙ্কলিত হয়েছিল।
বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীরের সঙ্গে সেই যে সখ্য ও পরিচয় তা আর কখনো ছিন্ন হয়নি। চিন্তাভাবনায় দুজনেই ছিলাম গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের অনুসারী। ধর্মনিরপেক্ষতায় গভীরভাবে বিশ্বাসী। ফলে আমাদের সম্পর্কে কখনো চিড় ধরার কারণ ঘটেনি।
বাংলাদেশে একই রাজনৈতিক মতাদর্শে অনুপ্রাণিত একটি পরিবারের একাধিক সদস্যের অত্যাচার ও নির্যাতন বরণের উদাহরণ খুব কম। এই ব্যাপারে উল্লেখ করার মতো একটি পরিবার অবশ্যই বোরহান ও মামুনদের পরিবার। বোরহানের বড় ভাই এবং মামুনের বাবা ছিলেন আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং পার্লামেন্ট সদস্যও হয়েছিলেন। তাঁকেও ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ রাজনৈতিক জীবন কাটাতে হয়েছে।
বোরহানও উচ্চশিক্ষা শেষে কিছুকাল সরকারি চাকরি করে পেশা হিসেবে শিক্ষকতা বেছে নেন। কিন্তু কাব্যচর্চা ও সাহিত্যচর্চা অব্যাহত রাখেন। ফলে পঞ্চাশের সামনের সারির কবি ও লেখকদের মধ্যে তিনিও একজন বলে স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত। তিনি একজন নিয়মিত কলাম লেখকও। সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে অনবরত কলম চালনার জন্য তাঁকেও নানাভাবে নিগৃহীত হতে হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের পদ থেকে তাঁকে কর্মজীবন শেষ করে অবসর জীবনে যেতে হয়েছে। তাঁর যোগ্যতা ও দেশসেবায় সাহসী ভূমিকার জন্য তিনি আরো স্বীকৃতি ও সম্মান পেতে পারেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারও সেটা তাঁকে এখন পর্যন্ত দেয়নি।
মামুনের ছোট চাচা ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীরকেও তাঁর কৈশোরকাল থেকেই আমি চিনি। তাঁর কাছ থেকে বড় ভাইয়ের সম্মান ও শ্রদ্ধা আমি পাই। আলমগীর একজন যোগ্য ব্যুরোক্রাট, রাজনীতিক এবং চিন্তাশীল লেখক। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা ও রাজনীতি সম্পর্কে তাঁর লেখা ইংরেজি বইগুলো দেশ-বিদেশে সমানভাবে আদৃত। তাঁর স্বাধীন ও অসাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনা এবং দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সাহসী ভূমিকার জন্য তিনি বিএনপি-জামায়াত জোট শাসন এবং ওয়ান-ইলেভেনের আধাসামরিক শাসনামলেও দারুণভাবে নির্যাতিত হয়েছেন। কিন্তু অশুভ শক্তির কাছে মাথা হেট করেননি।
এই অতুলনীয় পারিবারিক ঐতিহ্যের অধিকারী ড. মুনতাসীর মামুনও। তাঁর কথা আগেই বলেছি। দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও প্রগতিশীল রাজনীতির কোনো আন্দোলন থেকে তাঁকে কখনো দূরে সরে থাকতে দেখা যায়নি। তাঁর বন্ধুমহলটিও তাঁরই মতো। মামুনের বন্ধু শাহরিয়ার কবিরের ঘাতক দালাল নির্মূল ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে কখনো কখনো দুঃসাহসী একলা চলার ভূমিকা আমাকে বিস্মিত করেছে। তবে তাঁর পাশে সবসময় দেখা গেছে মুনতাসীর মামুনকে।
একেবারে সাম্প্রতিককালে ক্ষুদ্রঋণ ব্যবসায়ী এবং নোবেলজয়ী ড. ইউনূসকে কেন্দ্র করে দেশের তথাকথিত সুশীল সমাজ ও দুটি তথাকথিত নিরপেক্ষ মিডিয়া দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করে দেশি-বিদেশি কায়েমী স্বার্থ রক্ষার 'কমিশনপ্রাপ্ত' ভূমিকায় নেমেছিল। তখন মুনতাসীর মামুন ও শাহরিয়ার কবিরের তথ্য ও যুক্তিপূর্ণ ধারাবাহিক লেখা এই বিভ্রান্তি দূর করার ব্যাপারে বিরাট অবদান রেখেছে।
দেশের মানুষের মনে আশা, বিশ্বাস ও সাহস চরম দুর্দিনেও জাগিয়ে রাখার কাজে ড. মুনতাসীর মামুন ও তাঁর সমমনা কলামিস্টরা যে অবদান রাখছেন, সে জন্য অনেকের মতো আমারও কৃতজ্ঞতার অন্ত নেই। তাঁর ৬০ বছরে পা দেওয়ার দিনটিতে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই এবং প্রার্থনা করি, 'তুমি সুস্থ, নিরাপদ, সৃষ্টিশীল দীর্ঘজীবনের অধিকারী হও।'
লন্ডন, ২৩ মে সোমবার, ২০১১
No comments