যে খবর নাড়া দেয়-এক বিঘা জমি
গণগ্রন্থাগারে গিয়ে বই পড়তে চাইছে পাঠক, অথচ নতুন বই নেই সেখানে। সেই ১০ বছর ধরে যে বইগুলো স্থির দাঁড়িয়ে আছে মরচেধরা তাকে, সেগুলোর ওপরই পড়েছে পাঠকতৃষ্ণা মেটানোর ভার। নতুন বই এসেছে বটে, কিন্তু তা রাখার জায়গা নেই, তাই মেঝেতেই হয়েছে আশ্রয়। নতুন বই পড়বে কী করে পাঠক?
একই বই বারবার পড়বে কি কেউ? চাই নতুন নতুন বই। নতুন ধরনের বই। তবেই তো মন ভরবে পাঠকের। কিন্তু গাজীপুরের রথখোলা রোডের সরকারি গণগ্রন্থাগারকে আকর্ষণীয় করে তোলার কোনো পরিকল্পনার বার্তা পাওয়া যাচ্ছে না। বেশির ভাগ জেলাতেই এক বিঘা জায়গার ওপর গণগ্রন্থাগার ভবন, কিন্তু গাজীপুরে জায়গা খুব কম—পাঁচ-ছয় শতাংশের বেশি নয়। শহরের মধ্যে এক বিঘা জমি খোঁজা হচ্ছে, কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না।
২৬ মার্চ প্রথম আলোর ‘বিশাল বাংলা’ পাতায় খবরটি পড়ে বই নিয়ে কিছু স্মৃতির ঝলকে উদ্ভাসিত হলো মন। টিফিনের পয়সা জমিয়ে একটি বই কিনে ফেলা কিংবা গ্রন্থাগারে নতুন বই এলে সেটি পড়ার জন্য ছটফট করতে থাকা, দোকানিকে এড়িয়ে নতুন গন্ধমাখা কোনো বই আদ্যোপান্ত পড়ে ফেলার প্রাণান্ত চেষ্টা—এই নিয়েই ছিল আমাদের শৈশব-কৈশোর। গাজীপুরের তরুণ পাঠকেরাও বই পড়ার তৃষ্ণা বুকে লালন করছে এখনো এই কম্পিউটার যুগে, এ বড় আনন্দসংবাদ। পাঠকের চাহিদা মেটানোর প্রয়াসে একটু জমিও কি পাওয়া যাবে না?
দুই মলাটে বন্দী এক-একটি জগৎ আবিষ্কারের আনন্দের সঙ্গে তুলনীয় আনন্দ কমই আছে। খুব ভালো লাগত, যদি পত্রিকা খুলে দেখতে পেতাম একটি সংবাদ: ‘গাজীপুর গণগ্রন্থাগারের জন্য এক বিঘা জমি পাওয়া গেছে’। আহা! কথাটি ভাবলেই কল্পিত সেই তৃষিত পাঠকের আনন্দে উদ্ভাসিত মুখ ভেসে উঠছে মনে! আহা! এই কল্পনাটুকু বাস্তব হোক না!
—জাহীদ রেজা নূর
No comments