অবৈধ বিলবোর্ড-পোস্টার-আইন অমান্যকারীরা কেমন নেতৃত্ব দেবেন?

নির্বাচন এখনও অনেক দূরে। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচন হবে ২৪ ও ২৫ মে। কিন্তু প্রচার শুরু হয়েছে বহু আগে। ঢাকা সিটি করপোরেশন ভাগের আগে থেকেই নতুন ও সমৃদ্ধ নগর গড়ার স্বপ্ন দেখিয়ে নগরবাসীকে শুভেচ্ছা জানাতে শুরু করেছেন অনেকে।


সিটি করপোরেশনের নেতৃত্ব দেওয়ার বাসনা প্রকাশ করে নাগরিকদের দোয়াও চাওয়া হয়েছে। সিটি করপোরেশনের উত্তর ও দক্ষিণে সম্ভাব্য প্রার্থীরা রীতিমতো আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছেন। দেয়ালে, যানবাহনে বহু বর্ণিল পোস্টার পড়েছে। বিশালকায় বিলবোর্ড-হোর্ডিংয়ে সহাস্য ও সচিত্র প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন প্রার্থীরা। হয়তো দলীয় সমর্থন পেতে প্রার্থীরা মরিয়া। চাইছেন যাতে ভোটার ও রাজনৈতিক দলের নজর তাদের ওপর পড়ে। কিন্তু তফসিল ঘোষণার আগেই আত্মপ্রচারের এই আতিশয্য কেন? সিটি করপোরেশনের নিয়ম অনুসারে, যত্রতত্র পোস্টার-বিলবোর্ড লাগানো নিষেধ। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুসারেও নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে প্রচারকে নিরুৎসাহিত করা হয়। আর বৈধ নির্বাচনী প্রচারেও অধিক ব্যয় নিষিদ্ধ। কিন্তু নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরুর আগেই একেকজন প্রার্থী যেভাবে বহু বর্ণিল পোস্টার-বিলবোর্ড প্রচার করছেন, তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। প্রশ্ন হলো, নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরুর আগেই যারা সিটি করপোরেশন ও নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন করছেন, তারা কি সিটি করপোরেশনকে সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারবেন? অবৈধ এ প্রচারের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনা এলেও প্রার্থীরা তা মানছেন না। সিটি করপোরেশনও বিশেষ উদ্যোগী নয়। আমরা মনে করি, হাইকোর্টের নির্দেশনা দ্রুত কার্যকর হওয়া উচিত। আর রাজনৈতিক দল, হবু প্রার্থীসহ সব পক্ষের উচিত আইনের দিকে মনোযোগ দেওয়া। সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হওয়া দরকার। আধুনিক একটি শহরে পোস্টার-বিলবোর্ডের মতো প্রচার কৌশল পরিহার করে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকে মনোযোগ দেওয়া যেতে পারে। প্রয়োজনে টিভি চ্যানেলগুলোকে প্রচারের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। নির্বাচন কমিশনও উদ্যোগী হয়ে প্রার্থীদের বক্তব্য ও বিতর্কের ব্যবস্থা করতে পারে। আর পোস্টার-ব্যানার-বিলবোর্ডের মাধ্যমে এমন আত্মপ্রচারের প্রবণতা এখনই বন্ধ হওয়া উচিত।

No comments

Powered by Blogger.