মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক কামান by মোঃ আবুল বাশার
সিরাজগঞ্জের স্বাধীনতা স্কয়ারে সংরক্ষিত ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে পাক বাহিনী প্রতিরোধ যুদ্ধে ব্যবহৃত ঐতিহাসিক কামানটি এখন কোথায়? এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর যেমন মিলছে না, তেমনি এর দায়দায়িত্বও কেউ স্বীকার করছেন না। সবার একই কথা_ কামানটি খোয়া গেছে। কখন কীভাবে খোয়া গেল_ বিষয়টি নিয়ে কোনো উদ্বেগ নেই। এটি উদ্ধারের বিষয়ে সবাই দায়িত্বহীন ভূমিকা পালন করছেন।
লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত এ মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টির পেছনে প্রয়াত ও জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের নানা অবদানকে আমরা সবাই ভুলে যেতে বসেছি। তাদের অবদানের অনন্য প্রতীক, তাদের জীবনাচার সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার স্মৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সংরক্ষণের দায়বদ্ধতা যে নেই_ এটি বারবার নানাভাবে প্রমাণিত। সিরাজগঞ্জের অকুতোভয় ৬ সৈনিকের তৈরি কামানটি খোয়া যাওয়ার খবরটি সত্যিই বেনাদায়ক। সিরাজগঞ্জের স্বাধীনতা স্কয়ারের পশ্চিম পাশে তৈরি বেদিমূলে স্থাপিত ও সংরক্ষিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবহ সেই কামানটি তিন মাস আগে চুরি হয়ে গেছে। আশপাশের দোকানিরা তেমনটাই বলছেন। তাদের মন্তব্য, টোকাই অথবা হেরোইনসেবীরা কামানটি চুরি করে নিয়ে গেছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ব্যপারে টুঁ শব্দটি নেই। সিরাজগঞ্জ রেলস্টেশন চত্বরের স্বাধীনতা স্কয়ারে স্থাপিত সিরাজগঞ্জের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসনন্দিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবহ অনন্য এ প্রতীক কামানটি যে যথাস্থানে নেই_ সেটি প্রশাসনের গোচরে আছে কিনা_ এ নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। এ ব্যাপারে কামান তৈরির সঙ্গে সম্পৃৃক্ত মুক্তিযোদ্ধা ছানোয়ার হোসেন সিদ্দিক, আলতাব হোসেন ও তালুকদার শাহ আলী পনির দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে অনেকটা প্রতিবাদের ভাষায় বলেন, যে মুহূর্তে সরকার ৭১-এর নরঘাতক গোলাম আযম ও তার সহযোগীদের বিচারকার্য শুরু করেছে, ঠিক সেই মুহূর্তে মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক সেই ঐতিহাসিক কামানটি চুরির ঘটনা ঘটল। এ ছাড়া একই সময়ে সিরাজগঞ্জ জেলার ওয়েবসাইটের জেলা তথ্যবাতায়নে সিরাজগঞ্জ জেলার মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় প্রদর্শিত হচ্ছে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া গুটিকয়েক বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম, যারা মুক্তিযুদ্ধে কখনোই অংশ নেয়নি। উল্টো তারা পাক বাহিনীর সহযোগী ছিল।
কামান খোয়া যাওয়ার বিষয়টি বর্তমান জেলা প্রশাসক এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হলেও তাদের পক্ষ থেকে তা উদ্ধার কিংবা পুনঃস্থাপনে কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। অপরদিকে স্বাধীনতা স্কয়ারে সংরক্ষিত কামানের বেদিমূলকে ঢেকে গড়ে উঠেছে অবৈধ দোকানপাট। স্বাধীনতা স্কয়ার দোকানপাটসহ নানা জঞ্জালে পরিপূর্ণ। বিষয়টি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যেমন বেদনাদায়ক, তেমনি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণের ক্ষেত্রে দায়িত্বহীনতাও জাতির জন্য লজ্জাজনক। অনতিবিলম্বে ঐতিহাসিক কামানটি উদ্ধার করে যথাস্থানে স্থাপন এবং যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হোক_ প্রশাসনের কাছে এমনটাই দাবি রয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের।
য় মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক
কামান খোয়া যাওয়ার বিষয়টি বর্তমান জেলা প্রশাসক এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হলেও তাদের পক্ষ থেকে তা উদ্ধার কিংবা পুনঃস্থাপনে কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। অপরদিকে স্বাধীনতা স্কয়ারে সংরক্ষিত কামানের বেদিমূলকে ঢেকে গড়ে উঠেছে অবৈধ দোকানপাট। স্বাধীনতা স্কয়ার দোকানপাটসহ নানা জঞ্জালে পরিপূর্ণ। বিষয়টি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যেমন বেদনাদায়ক, তেমনি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণের ক্ষেত্রে দায়িত্বহীনতাও জাতির জন্য লজ্জাজনক। অনতিবিলম্বে ঐতিহাসিক কামানটি উদ্ধার করে যথাস্থানে স্থাপন এবং যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হোক_ প্রশাসনের কাছে এমনটাই দাবি রয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের।
য় মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক
No comments