কোপেনহেগেনে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন সমাপ্তঃ পর্বতের মূষিক প্রসবও হলো না
শেষ পর্যন্ত আগামী বছরের শেষ নাগাদ একটি বাধ্যতামূলক আইনি চুক্তি প্রণয়নের লক্ষ্যে মেক্সিকো সিটিতে সমবেত হওয়ার কথা বলে ‘সফল’ভাবে শেষ হয়েছে কোপেনহেগেনের বিশ্ব জলবায়ু সংক্রান্ত শীর্ষ সম্মেলন। ‘পর্বতের মূষিক প্রসব’ বলে একটা রসিকতা বাংলায় চালু আছে।
কিন্তু কোপেনহেগেন সম্মেলন সম্পর্কে এ রসিকতার প্রয়োগ ঘটানো যাচ্ছে না; কারণ বাস্তবে এ সম্মেলন কিছুই প্রসব করেনি। তবে একেবারে কিছু হয়নি বলা ঠিক হবে না। শিল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর পারস্পরিক দোষারোপের ফলে যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল, তা নিরসনে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ মুহূর্তে তড়িঘড়ি করে একটা চুক্তিতে সই করেছে। এই চুক্তি মান্য করা আবার বাধ্যতামূলক নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা প্রভৃতি শিল্পোন্নত দেশ এ চুক্তিতে সই করেনি। উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলো চুক্তিতে সই তো করেইনি, উপরন্তু চুক্তিটি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে কিউবা, বলিভিয়া, ভেনিজুয়েলা, কোস্টারিকা, সুদান, নিকারাগুয়াসহ তৃতীয় বিশ্বের আরও কিছু দেশ। সব মিলিয়ে এক লেজে-গোবরে অবস্থার মধ্য দিয়ে সম্মেলন শেষ হয়েছে।
কোপেনহেগেন সম্মেলনে যে তেমন কোনো অগ্রগতি হবে না, তার আলামত আগে থেকে বেশ ভালোভাবে পাওয়া যাচ্ছিল। বিভিন্ন ক্ষতিকর গ্যাস বিশেষ করে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও ক্লোরোফ্লুরো কার্বনের ক্রমবর্ধমান নিঃসরণ যে ভয়াবহ জলবায়ু বিপর্যয় ডেকে আনছে, তা নিয়ে বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। বিতর্ক হচ্ছে এ বিপদ থেকে উদ্ধারের উপায় নিয়ে। সাধারণভাবে শিল্পোন্নত দেশগুলো এবং বিশেষভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একান্ত ইচ্ছা হচ্ছে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করে উষ্ণায়ন রোধে ব্যবস্থা নিক। এর জন্য কী কী করতে হবে, তা তারা বাতলে দেবে। এর মধ্য দিয়ে তারা এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছিল। প্রথমত, এ ধরনের একটা চুক্তি করা গেলে তারা যে প্রতিনিয়ত গলগল করে গ্রিনহাউস গ্যাস ছড়াচ্ছে, তা থেকে দুনিয়ার দৃষ্টি সরিয়ে রাখা যাবে। দ্বিতীয়ত, জলবায়ু স্বাভাবিক রাখার নাম করে এ ব্যাপারে দ্রুত উন্নয়নশীল দেশগুলোকে যদি চেপে ধরা যায়, তবে চীন ও ভারতের মতো যেসব দেশের বর্ধিষ্ণু অর্থনীতি শিল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য হুমকির কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে, তাদের অগ্রগতি রোধ করা যাবে। শিল্পোন্নত দেশগুলোর এসব কুমতলবের কাছে তৃতীয় বিশ্ব আত্মসমর্পণ করেনি। অপরদিকে শিল্পোন্নত দেশগুলো ধরিত্রীকে বাসযোগ্য রাখার স্বার্থে নিজেদের স্বার্থের ছিটেফোঁটাও বিসর্জন দিতে রাজি হয়নি। ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে। কোপেনহেগেন সম্মেলন কার্যত ভণ্ডুল হয়ে গেছে।
আমাদের মনে রাখতে হবে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ওজোন স্তরে ক্রমবর্ধমান ফাটল, মেরু অঞ্চল ও বিভিন্ন পর্বতশৃঙ্গে বরফ গলতে শুরু করাসহ পরিবেশগত হরেক বিপর্যয় মানুষের অতিলোভের স্বাভাবিক পরিণতি। যে জাতি যত বেশি ‘সভ্য’, তারা তত বেশি শিল্পোন্নত এবং তাদের এই ‘উন্নতি’ পৃথিবী নামক গ্রহটির পরিবেশে এমন নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে যে, এই গ্রহটি প্রাণীকুলের জন্য প্রতিকূল হয়ে উঠছে অতি দ্রুত। কিন্তু মুনাফার স্বাদ পাওয়া ‘সভ্যরা’ এসবের পরোয়া করতে রাজি নয়। তাদের সাফ কথা হচ্ছে—মুনাফার পাহাড়কে যদি পর্বতে পরিণত করা না যায়, তবে দুনিয়া থাকা আর না থাকা সমান কথা। এসব স্বার্থান্ধ চক্রকে দমন করা না গেলে গ্রিনহাউস গ্যাস ছড়ানো কমানো যাবে না। তাই পৃথিবী নামক গ্রহটিকে বাঁচাতে হলে জরুরি ভিত্তিতে বিশ্বব্যাপী সমঐক্য গড়ে তুলে মুনাফাখোর বহুজাতিক দৈত্যদের ধ্বংস করতে হবে। সরল জীবনযাপনের মধ্য দিয়ে সুখে থাকার হারানো অভ্যাস ফিরিয়ে আনতে হবে। এছাড়া বাঁচার জন্য কোনো পথ খোলা নেই।
কোপেনহেগেন সম্মেলনে যে তেমন কোনো অগ্রগতি হবে না, তার আলামত আগে থেকে বেশ ভালোভাবে পাওয়া যাচ্ছিল। বিভিন্ন ক্ষতিকর গ্যাস বিশেষ করে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও ক্লোরোফ্লুরো কার্বনের ক্রমবর্ধমান নিঃসরণ যে ভয়াবহ জলবায়ু বিপর্যয় ডেকে আনছে, তা নিয়ে বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। বিতর্ক হচ্ছে এ বিপদ থেকে উদ্ধারের উপায় নিয়ে। সাধারণভাবে শিল্পোন্নত দেশগুলো এবং বিশেষভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একান্ত ইচ্ছা হচ্ছে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করে উষ্ণায়ন রোধে ব্যবস্থা নিক। এর জন্য কী কী করতে হবে, তা তারা বাতলে দেবে। এর মধ্য দিয়ে তারা এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছিল। প্রথমত, এ ধরনের একটা চুক্তি করা গেলে তারা যে প্রতিনিয়ত গলগল করে গ্রিনহাউস গ্যাস ছড়াচ্ছে, তা থেকে দুনিয়ার দৃষ্টি সরিয়ে রাখা যাবে। দ্বিতীয়ত, জলবায়ু স্বাভাবিক রাখার নাম করে এ ব্যাপারে দ্রুত উন্নয়নশীল দেশগুলোকে যদি চেপে ধরা যায়, তবে চীন ও ভারতের মতো যেসব দেশের বর্ধিষ্ণু অর্থনীতি শিল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য হুমকির কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে, তাদের অগ্রগতি রোধ করা যাবে। শিল্পোন্নত দেশগুলোর এসব কুমতলবের কাছে তৃতীয় বিশ্ব আত্মসমর্পণ করেনি। অপরদিকে শিল্পোন্নত দেশগুলো ধরিত্রীকে বাসযোগ্য রাখার স্বার্থে নিজেদের স্বার্থের ছিটেফোঁটাও বিসর্জন দিতে রাজি হয়নি। ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে। কোপেনহেগেন সম্মেলন কার্যত ভণ্ডুল হয়ে গেছে।
আমাদের মনে রাখতে হবে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ওজোন স্তরে ক্রমবর্ধমান ফাটল, মেরু অঞ্চল ও বিভিন্ন পর্বতশৃঙ্গে বরফ গলতে শুরু করাসহ পরিবেশগত হরেক বিপর্যয় মানুষের অতিলোভের স্বাভাবিক পরিণতি। যে জাতি যত বেশি ‘সভ্য’, তারা তত বেশি শিল্পোন্নত এবং তাদের এই ‘উন্নতি’ পৃথিবী নামক গ্রহটির পরিবেশে এমন নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে যে, এই গ্রহটি প্রাণীকুলের জন্য প্রতিকূল হয়ে উঠছে অতি দ্রুত। কিন্তু মুনাফার স্বাদ পাওয়া ‘সভ্যরা’ এসবের পরোয়া করতে রাজি নয়। তাদের সাফ কথা হচ্ছে—মুনাফার পাহাড়কে যদি পর্বতে পরিণত করা না যায়, তবে দুনিয়া থাকা আর না থাকা সমান কথা। এসব স্বার্থান্ধ চক্রকে দমন করা না গেলে গ্রিনহাউস গ্যাস ছড়ানো কমানো যাবে না। তাই পৃথিবী নামক গ্রহটিকে বাঁচাতে হলে জরুরি ভিত্তিতে বিশ্বব্যাপী সমঐক্য গড়ে তুলে মুনাফাখোর বহুজাতিক দৈত্যদের ধ্বংস করতে হবে। সরল জীবনযাপনের মধ্য দিয়ে সুখে থাকার হারানো অভ্যাস ফিরিয়ে আনতে হবে। এছাড়া বাঁচার জন্য কোনো পথ খোলা নেই।
No comments