ইন্টারনেটের নিয়ন্ত্রণ! by একরামুল হক শামীম
ইন্টারনেটের নিয়ন্ত্রণ এখন আলোচিত একটি বিষয়। সোপা আর পিপা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবাদ হয়েছে। সেই প্রতিবাদের ঢেউ বাংলাদেশেও এসে পড়েছিল। উইকিপিডিয়া, গুগল, ওয়ার্ডপ্রেসের মতো সাইটগুলোর প্রতিবাদের মুখে আপাত স্থগিত করা হয়েছে সোপা আর পিপা বিল। কথা হচ্ছে, ইন্টারনেটের নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে কেন এক দেশের আন্দোলন অন্য দেশে ছড়িয়ে পড়ে? উত্তরটা জানা, ইন্টারনেটের কোনো সীমানা নেই।
এই জানা উত্তরটিই আরেকবার মনে করিয়ে দিল গুগল কর্তৃপক্ষ। কিছুদিন আগে ভারতের একটি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট ২১টি ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছিলেন। এর মধ্যে ফেসবুক, গুগল, ইয়াহু, মাইক্রোসফট এবং ইউটিউবের মতো সাইট ছিল। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট সমনে জানিয়েছিলেন, ২০১২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ২১টি ওয়েবসাইট থেকে সব মর্যাদাহানিকর তথ্য মুছে ফেলতে হবে। এ কাজে ব্যর্থ হলে এসব ওয়েবসাইটকে আপত্তিকর বিষয়বস্তু ওয়েবকাস্ট করার দায়ে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলো এসব কাজ না করলে কিংবা করতে ব্যর্থ হলে তা আদালতের অবমাননা হিসেবে বিবেচিত হবে। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের এই সমন জারির কয়েক দিন আগে আরেকটি কোর্ট কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ সাইটের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ নির্দেশ অনুযায়ী ফেসবুক, গুগল ও ইউটিউবসহ অন্যান্য ওয়েবসাইট থেকে ধর্মবিরোধী ও সমাজবিরোধী যা ঘৃণা ও সাম্প্রদায়িক বিরোধ ছড়ায় তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে গুগল নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। গুগলের দাবি অনুযায়ী, ওয়েবসাইটের সবকিছু মনিটর করা অসম্ভব একটি কাজ।
গুগলের চিফ বিজনেস অফিসার নিকেশ আরোরা অবস্থান পরিষ্কার করেছেন সংবাদমাধ্যমের কাছে। তার মতে, একতরফা দোষারোপ কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না। ইন্টারনেটের সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য প্রয়োজন সঠিক আলোচনা ও বিতর্ক। একটি বিষয় নিয়ে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিতর্ক হলেই কেবল সঠিক ফলাফলে পেঁৗছানো সম্ভব। তাহলে কি গুগল ওয়েবের সেন্সর করতে রাজি হতে যাচ্ছে? নিকেশ আরোরার বক্তব্য, আমরা ওয়েবের সেন্সর করতে পারি না। পৃথিবীব্যাপী মানুষ যেভাবে ওয়েবে নিজেদের মতো তুলে ধরছে তার নিয়ন্ত্রণ আমরা করতে পারি না। আদালত আমাদের ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের সেন্সর করতে বলেছেন। কিন্তু যে বিষয়টি মনে রাখতে হবে, ওয়েবের কোনো সীমানা নেই। ভারতের মতো দেশে ওয়েবের সেন্সর করা হলে তা দেশটির বিকাশমান অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। গুগলের চিফ বিজনেস অফিসারের কথায় এটি স্পষ্ট যে, গুগল ওয়েব সেন্সরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে যাচ্ছে। তবে আগামী ১৩ মার্চ দিলি্লর আদালত থেকে এ ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত আসে তার ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু। ভারতের এই আলোচনা এমন এক সময় হচ্ছে যখন বাংলাদেশেও ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণের প্রসঙ্গ আলোচনায় উঠে এসেছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এক দফা এগিয়ে সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে একটি বিশেষ টিম গঠন করেছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ কম্পিউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (সিএসআইআরটি)। নামে সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ থাকলেও আদতে এই বিশেষ টিমের মূল কাজ হবে_ রাষ্ট্রীয়, সমাজ, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ায় এমন ওয়েবসাইটগুলো শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া। মূল কাজের পরিধি বিশ্লেষণ করলেই বোধগম্য হয়, বিশেষ এই টিম বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। পৃথিবীজুড়ে যে বিষয়গুলো সাইবার ক্রাইম হিসেবে আলোচিত সে ব্যাপারে কার্যপরিধিতে কোনো আলোচনা নেই; অথচ আলোচনা আছে রাষ্ট্রীয়, সমাজ, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিদ্বেষের ব্যাপারে। এর মাধ্যমে আদতে ইন্টারনেটের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে। ওয়েবে নাগরিকের স্বাধীন মত প্রকাশ এতে বাধাগ্রস্ত হবে। গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য নাগরিকের স্বাধীন মত প্রকাশ কতটা জরুরি তা নিশ্চয়ই আমাদের নীতিনির্ধারকরা উপলব্ধি করবেন।
গুগলের চিফ বিজনেস অফিসার নিকেশ আরোরা অবস্থান পরিষ্কার করেছেন সংবাদমাধ্যমের কাছে। তার মতে, একতরফা দোষারোপ কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না। ইন্টারনেটের সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য প্রয়োজন সঠিক আলোচনা ও বিতর্ক। একটি বিষয় নিয়ে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিতর্ক হলেই কেবল সঠিক ফলাফলে পেঁৗছানো সম্ভব। তাহলে কি গুগল ওয়েবের সেন্সর করতে রাজি হতে যাচ্ছে? নিকেশ আরোরার বক্তব্য, আমরা ওয়েবের সেন্সর করতে পারি না। পৃথিবীব্যাপী মানুষ যেভাবে ওয়েবে নিজেদের মতো তুলে ধরছে তার নিয়ন্ত্রণ আমরা করতে পারি না। আদালত আমাদের ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের সেন্সর করতে বলেছেন। কিন্তু যে বিষয়টি মনে রাখতে হবে, ওয়েবের কোনো সীমানা নেই। ভারতের মতো দেশে ওয়েবের সেন্সর করা হলে তা দেশটির বিকাশমান অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। গুগলের চিফ বিজনেস অফিসারের কথায় এটি স্পষ্ট যে, গুগল ওয়েব সেন্সরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে যাচ্ছে। তবে আগামী ১৩ মার্চ দিলি্লর আদালত থেকে এ ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত আসে তার ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু। ভারতের এই আলোচনা এমন এক সময় হচ্ছে যখন বাংলাদেশেও ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণের প্রসঙ্গ আলোচনায় উঠে এসেছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এক দফা এগিয়ে সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে একটি বিশেষ টিম গঠন করেছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ কম্পিউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (সিএসআইআরটি)। নামে সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ থাকলেও আদতে এই বিশেষ টিমের মূল কাজ হবে_ রাষ্ট্রীয়, সমাজ, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ায় এমন ওয়েবসাইটগুলো শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া। মূল কাজের পরিধি বিশ্লেষণ করলেই বোধগম্য হয়, বিশেষ এই টিম বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। পৃথিবীজুড়ে যে বিষয়গুলো সাইবার ক্রাইম হিসেবে আলোচিত সে ব্যাপারে কার্যপরিধিতে কোনো আলোচনা নেই; অথচ আলোচনা আছে রাষ্ট্রীয়, সমাজ, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিদ্বেষের ব্যাপারে। এর মাধ্যমে আদতে ইন্টারনেটের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে। ওয়েবে নাগরিকের স্বাধীন মত প্রকাশ এতে বাধাগ্রস্ত হবে। গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য নাগরিকের স্বাধীন মত প্রকাশ কতটা জরুরি তা নিশ্চয়ই আমাদের নীতিনির্ধারকরা উপলব্ধি করবেন।
No comments